আজকের বিষয়: সূরা তাওবাহ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল তাওবাহ আলমল ও ফজিলত
উচ্চারণ : লাক্বাদ ঝা-আকুম রাসু-লুম মিন আংফুসিকুম আযিযুন আলাইহি মা- আনিত্তুম হারিছুন আলাইকুম বিলমু’মিনি-না রাউ’-ফুর রাহি-ম। ফা ইং তাওয়াল্লাও ফাক্বুল হাসবিয়াল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কাল্তু ওয়া হুয়া রাব্বুল আ’রশিল আজি-মি। (সুরা তাওবা : আয়াত ১২৮-১২৯ )
>> হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি لَقَدْ جَاءكُمْ হতে رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ পর্যন্ত প্রত্যেকদিন একশত (১০০) বার পাঠ করবে, সে পার্থিব ও পরকালীন সকল বিপদ-আপদ হতে মুক্তি পাবে।
>> অন্য এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি এ দুই আয়াত পাঠ করে কোনো বিচারকের সামনে যাবে বিচারক তার প্রতি সহৃদয়তা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।
>> অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি এ দু’ আয়াত দিনে কমপক্ষে দু’বার পাঠ করবে, সে দিন তার মৃত্যু হবে না।
পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুরা তাওবার শেষ দু আয়াতের ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
- নামাজে আমরা যা বলি , তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- “লা আদওয়া” সংক্রমন নেই!হাদীসটি কী বুঝায়?
- রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যত পরামর্শ
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন
- আজহারী: কোন ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙে
ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ও পরিভাষা হলো তাওবা। তাওবা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি ও প্রতিনিধি মানুষের জন্য বড় নেয়ামত, করুণা ও দয়া। এর মাধ্যমে মানুষ পাপ ও পঙ্কিলতা মোচন করে।
মুসলিমসমাজে তাওবা ব্যাপক পরিচিত বিষয় হলেও তাওবা কেন অপরিহার্য, কী এর গুরুত্ব ও কীভাবে তাওবা করতে হয় সে সম্পর্কে অনেকের স্পষ্ট ও সঠিক ধারণা নেই।
তাওবা শব্দের আক্ষরিক অর্থ ফিরে আসা ও প্রত্যাবর্তন করা।পারিভাষিক অর্থে তাওবা হলো, শরিয়ত বহির্ভূত নিষিদ্ধ কাজ ত্যাগ করে ইসলাম নির্দেশিত কাজ করার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ফিরে আসা এবং আল্লাহর বিধানের ওপর অটল-অবিচল থাকা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম ও অমুসলিম সবাইকে তাওবা করার আদেশ দিয়ে আহ্বান করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমার সকলেই আল্লাহর কাছে তাওবা করো; যাতে তোমরা সফল হতে পারো। ’ (সুরা আননূর, আয়াত: ৩১)
আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো; খাঁটি তাওবা। ’ (সুরা আত-তাহরিম, আয়াত:০৮)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘ইয়া আইয়্যুহান নাসু তুবু ইলাল্লাহি’ অর্থাৎ হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো—এর অর্থ হলো- আল্লাহর নিকট ফিরে আসো, প্রত্যাবর্তন করো। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ৭০৩৪)
বিশেষজ্ঞ আলেমগণ সর্বসম্মতিক্রমে বলেন, সর্বদা তাওবা করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ওয়াজিব। ইমাম কুরতুবি (রহ.) ও ইমাম নববি (রহ.) এই ঐক্যমতের কথা তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাওবা জান্নাত প্রাপ্তি ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও ভালোবাসা লাভের একটি বড় সুযোগ ও উপায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ বেশি বেশি তাওবাকারীকে ভালোবাসেন। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২২২)
আল্লাহর ভালোবাসার পাথেয় হলো তাওবা। আর এই তাওবা হতে হবে শুধু আল্লাহর জন্য। আমরা জানি যে, কর্মের ফলাফল নির্ভর করে নিয়তের ওপর। সুতরাং তাওবা আল্লাহর জন্য হলে আমরা তাওবার কাঙ্ক্ষিত ফজিলত লাভ করতো পারবো। তাওবা কীভাবে করতে হয়? মহান আল্লাহর হক বা অধিকার সম্পর্কিত হলে তিনটি শর্ত বাস্তবায়ন করলেই তাওবা হয়ে যাবে।
শর্ত তিনটি হলো—
এক. পাপ পুরোপুরিভাবে ছেড়ে দিতে হবে।
দুই. পাপের জন্য অনুশোচনা করতে হবে, লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতে হবে।
তিন. ঐ পাপ দ্বিতীয়বার না করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। এবং এর ওপর অটল ও অবিচল থাকতে হবে। আর মানুষের হক বা অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলে আরও একটি শর্ত যুক্ত হবে, তা হলো সেই ব্যক্তি মানুষের কাছে মাফ চেয়ে নিতে হবে অথবা তার পাওনা-প্রাপ্তি, হক ফিরিয়ে দিতে হবে। এই শর্তগুলো পূরণ করলেই তাওবা শুদ্ধ হবে। অন্যথায় তাওবা বিশুদ্ধ হবে না।
তাওবা করার নিয়ম-পদ্ধতি
তাওবা করার সুন্দর একটি পদ্ধতি হলো, তাওবা করার জন্য প্রথমে সুন্দর করে অজু করা চাই। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহ তাআলার কাছে মাগফিরাত ওক্ষমা চাইতে হবে। গত জীবনের সব পাপ এবং আদেশ অমান্য করার অপরাধ থেকে মার্জনা চাইতে হবে। তবে এই নফল নামাজ তাওবার জন্য জরুরি নয়। তাওবার সময়-সীমা হলো, মৃত্যুর নিদর্শন প্রকাশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত। এ সম্পর্কে নবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার বান্দার তাওবা কবুল করেন, যতক্ষণ না সে (মৃত্যু যন্ত্রণায়) গরগর করে। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং: ৩৫৩৭)
খেয়াল রাখা জরুরি—তাওবা মানে এই নয় যে, আমরা সেই শেষ সময়ের প্রতীক্ষা করবো আর মৃত্যুর সময় কাছাকাছি এলে তাওবা করে নেবো। প্রকৃত ব্যাপার হলো আমরা কেউ জানি না ঠিক কখন আমাদের মৃত্যুসময় এসে পড়বে। তাই পাপে মগ্ন থাকার সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ এই সময় সীমা মানুষের জন্য, আল্লাহর বান্দাদের জন্য বিশেষ ইহসান। আমরা যদি হাদিসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই রাসুল (সা.) বলেন, ‘হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো; কেননা আমি প্রতিদিনে শতবার তাঁর নিকট তাওবা করি। ’ (মুসলিম, হাদিস নং ৭০৩৪)।
সুতরাং মুহাম্মাদ (সা.) এর সুন্নত অনুযায়ী আমাদের প্রতিনিয়ত ও সার্বক্ষণিক তাওবার ওপর থাকা চাই। তাওবা ব্যক্তির একান্ত অনুভূতি, মন ও অন্তরের বিষয়। আমাদের সমাজে দেখা যায় তাওবা পড়ানোর রীতি প্রচলিত। কোনো একজন মানুষ খুবই মুমূর্ষ অবস্থায় আছে, বেঁচে থাকার আশা নেই—তখন মসজিদের ইমাম বা কোনো হুজুর ডেকে এনে তাওবা পড়ানো হয়। অথচ তাওবা কাউকে ডেকে এনে করানো বা পড়ানোর বিষয় নয় বরং তাওবা হলো ব্যক্তি মানুষের একান্ত হৃদয়-মনের ব্যাপার; ব্যক্তি নিজেই স্বয়ং আল্লাহর কাছে তাওবা করবে। আর অপ্রিয় হলেও সত্য যে, এরকম তাওবার কোনো দৃষ্টান্ত কোরআন-হাদিসে নেই। কোনো সাহাবি ও তাবেয়িদের জীবনে কিংবা মুসলিম উম্মাহর প্রাথমিক যুগের কোনো আল্লাহওয়ালা প্রাজ্ঞ ব্যক্তির কিতাবপত্র বা আমলেও নেই।
তাই আসুন, উপর্যুক্ত তাওবার শর্তগুলো পূর্ণ করার মাধ্যমে সুন্নতসম্মত তাওবা করে আল্লাহর ভালোবাসা হাসিল করি। আর সুযোগ পেলে মন দিয়ে ও অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে এই দোয়া পড়ি—‘আসতাগফিরুল্লাহ ওয়া আতু-বু ইলাইহি’। অর্থ: ‘আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি ও তার নিকট তাওবা করছি। ’ আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
নামকরণ, শানে নুজুল, পটভূমি ও বিষয়বস্তু নামকরণ এ সূরাটি দু’টি নামে পরিচিতঃ আত্ তাওবাহ ও আল বারাআতু। তাওবা নামকরণের কারণ, এ সূরার এক জায়গায় কতিপয় ঈমানদারের গোনাহ মাফ করার কথা বলা হয়েছে । আর এর শুরুতে মুশরিকদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের কথা ঘোষণা করা হয়েছে বলে একে বারাআত (অর্থাৎ সম্পর্কচ্ছেদ ) নামে অভিহিত করা হয়েছে। বিসমিল্লাহ না লেখার কারণ এ সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম লেখা হয় না। মুফাসসিরগণ এর বিভিন্ন কারণ বর্ণনা করেছেন। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু মতভেদ ঘটেছে।
তবে এ প্রসংগে ইমাম রাযীর বক্তব্যই সঠিক। তিনি লিখেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই এর শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখাননি, কাজেই সাহাবায়ে কেরামও লেখেননি এবং পরবর্তী লোকেরাও এ রীতির অনুসরণ অব্যাহত রেখেছেন। পবিত্র কুরআন যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হুবহু ও সামান্যতম পরিবর্তন -পরিবর্ধন ছাড়াই গ্রহণ করা হয়েছিল এবং যেভাবে তিনি দিয়েছিলেন ঠিক সেভাবেই তাকে সংরক্ষণ করার জন্য যে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে, এটি তার আর একটি প্রমাণ। নাযিলের সময়কাল ও সূরার অংশসমূহ এ সূরাটি তিনটি ভাষণের সমষ্টি । প্রথম ভাষণটি সূরার প্রথম থেকে শুরু হয়ে পঞ্চম রুকূর শেষ অবধি চলেছে। এর নাযিলের সময় হচ্ছে ৯ হিজরীর যিলকাদ মাস বা তার কাছাকাছি সময়। নবী (স) সে বছর হযরত আবু বকরকে (রা) আমীরুল হজ্জ নিযুক্ত করে মক্কায় রওয়ানা করে দিয়েছিলেন। এমন সময় এ ভাষণটি নাযিল হয়।
তিনি সংগে সংগেই হযরত আলীকে (রা) তার পিছে পিছে পাঠিয়ে দিলেন, যাতে হজ্জের সময় সারা আরবের প্রতিনিধিত্বশীল সমাবেশে তা শুনানো হয় এবং সে অনুযায়ী যে কর্মপদ্ধতি হয়েছিল তা ঘোষনা করা যায়। দ্বিতীয় ভাষণটি ৬ রুকূর শুরু থেকে ৯ রুকূর শেষ পর্যন্ত চলেছে। এটি ৯ হিজরীর রজব মাসে বা তার কিছু আগে নাযিল হয়। সে সময় নবী (সা) তাবুক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এখানে মুমিনদেরকে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে । আর যারা মুনাফিকী বা দুর্বল ঈমান অথবা কুড়েমি ও অলসতার কারণে আল্লাহর পথে ধন-প্রাণের ক্ষতি বরদাশত করার ব্যাপারে টালবাহানা করছিল তাদেরকে কঠোর ভাষায় তিরষ্কার করা হয়েছে। তৃতীয় ভাষণটি ১০ রুকু’ থেকে শুরু হয়ে সুরার শেষ পর্যন্ত চলেছে। তাবুক যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর এ অংশটি নাযিল হয়। এর মধ্যে এমনও অনেকগুলো খণ্ডিত অংশ রয়েছে যেগুলো ঐ দিনগুলোতে বিভিন্ন পরিবেশে নাযিল হয় এবং পরে নবী (সা) আল্লাহর ইংগিতে সেগুলো সব একত্র করে একই ধারাবাহিক ভাষণের সাথে সংযুক্ত করে দেন। কিন্তু যেহেতু সেগুলো একই বিষয়বস্তু ও একই ঘটনাবলীর সাথে সংশ্লিষ্ট তাই ভাষণের ধারাবাহিকতা কোথাও ব্যাহত হতে দেখা যায় না।
এখানে মুনাফিকদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। তাবুক যুদ্ধে যারা পেছনে রয়ে গিয়েছিলেন তাদেরকে ভৎর্সনা ও তিরস্কার করা হয়েছে। আর যে সাচ্চা ঈমানদার লোকেরা নিজেদের ঈমানের ব্যাপারে নিষ্ঠাবান ছিলেন ঠিকই কিন্তু আল্লাহর পথে জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিলেন তিরস্কার করার সাথে সাথে তাদের ক্ষমার কথাও ঘোষনা করা হয়েছে। আয়াতগুলো যে পর্যায়ক্রমিক ধারায় নাযিল হয়েছে তার প্রোক্ষিতে প্রথম ভাষণটি সবশেষে বসানো উচিত ছিল। কিন্তু বিষয়বস্তু গুরুত্বের দিক দিয়ে সেটিই ছিল সবার আগে। এ জন্য কিতাব আকারে সাজাবার ক্ষেত্রে নবী (সা) তাকে প্রথমে রাখেন এবং অন্য ভাষণ দুটিকে তার পরে রাখেন। ঐতিহাসিক পটভূমি নাযিলের সময়-কাল নির্ধারিত হবার পর এ সূরার ঐতিহাসিক পটভূমির ওপর একটু দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। এ সুরার বিষয়বস্তুর সাথে যে ঘটনা পরম্পরার সম্পর্ক রয়েছে, তার সূত্রপাত ঘটেছে হোদাইবিয়ার সন্ধি থেকে।
হোদাবিয়া পর্যন্ত ছ’ বছরের অবিশ্রান্ত প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের ফলে আরবের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ এলাকায় ইসলাম একটি সুসংঘটিত ও সংঘবদ্ধ সমাজের ধর্ম, একটি পূর্ণাঙ্গ সভ্যতা ও সংস্কৃতি এবং একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। হোদায়বিয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর এ ধর্ম বা দীন আরো বেশী নিরাপদ ও নির্ঝঞ্চাট পরিবেশে চারদিকে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পেয়ে যায়। ১ এরপর ঘটনার গতিধারা দু’টি বড় বড় খাতে প্রবাহিত হয়। আরো সামনে অগ্রসর হয়ে ঐ দু’টি খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে একটির সম্পর্ক ছিল আরবের সাথে এবং অন্যটির রোম সাম্রাজ্যের সাথে। আরব বিজয় হোদায়বিয়ার সন্ধির পর আরবে ইসলামের প্রচার, প্রসারের জন্য এবং ইসলামী শক্তি সুসংহত করার জন্য যেসব ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয় তার ফলে মাত্র দু’বছরের মধ্যেই ইসলামের প্রভাব বলয় এত বেড়ে যায় এবং তার শক্তি এতটা পরাক্রান্ত ও প্রতাপশালী হয়ে ওঠে যে, পুরাতন জাহেলিয়াত তার মোকাবিলায় অসহায় ও শক্তিহীন হয়ে পড়ে। অবশেষে কুরাইশদের অতি উৎসাহী লোকেরা নিজেদের পরাজয় আসন্ন দেখে আর সংযত থাকতে পারেনি। তারা হোদায়বিয়ার সন্ধি ভঙ্গ করে। এ সন্ধির বাঁধন থেকে মুক্ত হয়ে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে একটা চূড়ান্ত যুদ্ধ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু এ চুক্তি ভংগের পর নবী (সা) তাদেরকে আর গুছিয়ে নেবার কোন সুযোগ দেননি। তিনি ৮ হিজরীর রমযান মাসে আকম্মিকভাবে মক্কা আক্রমণ করে তা দখল করে নেন। ১ এরপর প্রাচীন জাহেলী শক্তি, হোনায়েনের ময়দানে তাদের শেষ মরণকামড় দিতে চেষ্টা করে। সেখানে হাওয়াযিন , সাকীফ, নদর, জুসাম , এবং অন্যান্য কতিপয় জাহেলিয়াতপন্থী গোত্র তাদের পূর্ণ শক্তির সমাবেশ ঘটায়। এভাবে তারা মক্কা বিজয়ের পর যে সংস্কারমূলক বিপ্লবটি পূর্ণতার পর্যায়ে পৌছে গিয়েছিল তার পথ রোধ করতে চাচ্ছিল।
কিন্তু তাদের এ প্রচেষ্টা ও ব্যর্থ হয়। হোনায়েন যুদ্ধে তাদের পরাজয়ের সাথে সাথেই আরবের ভাগ্যের চূড়ান্ত ফায়সালা হয়ে যায়। আর এ ফায়সালা হচ্ছে, আরবকে এখন দারুল ইসলাম হিসেবেই টিকে থাকতে হবে। এ ঘটনার পর পুরো এক বছর যেতে না যেতেই আরবের বেশীর ভাগ এলাকার লোকেরা ইসলাম গ্রহণ করে। এ অবস্থায় জাহেলী ব্যবস্থার শুধুমাত্র কতিপয় বিচ্ছিন্ন লোক দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। উত্তরে রোম সাম্রাজ্যের সীমান্তে সে সময় যেসব ঘটনা ঘটে চলছিল তা ইসলামের এ সম্প্রসারণ ও বিজয়কে পূর্ণতায় পৌঁছুতে আরো বেশী করে সাহায্য করে। সেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে দুঃসাহসিকতার সাথে ৩০ হাজারের বিরাট বাহিনী নিয়ে যান এবং রোমীয়রা যেভাবে তাঁর মুখোমুখি হবার ঝুকি না নিয়ে পিঠটান দিয়ে নিজেদের দুর্বলতার প্রকাশ ঘটায় তাতে সারা আরবে তাঁর ও তাঁর দীনের অপ্রতিরোধ্য প্রতাপ ও অজেয় ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
এর ফলশ্রুতিতে তাবুক থেকে ফিরে আসার সাথে সাথেই তার কাছে একের পর এক প্রতিনিধি দল আসতে থাকে আরবের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। তারা ইসলাম গ্রহণ করে এবং তাঁর বশ্যতা ও আনুগত্য স্বীকার করে। ২ এ অবস্থাটিকেই কুরআনে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, “যখন আল্লাহর সাহায্য এসে গেলো ও বিজয় লাভ হলো এবং তুমি দেখলে লোকেরা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করছে।” তাবুক অভিযান মক্কা বিজয়ের আগেই রোম সাম্রাজ্যের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়ে গিয়েছিল। হোদাইবিয়ার সন্ধির পর নবী (সা) ইসলামের দাওয়াত সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে আরবের বিভিন্ন অংশে যেসব প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন তার মধ্যে একটি দল গিয়েছিল উত্তর দিকে সিরিয়া সীমান্তের লাগোয়া গোত্রগুলোর মধ্য। তাদের বেশীর ভাগ ছিল খৃষ্টান এবং রোম সাম্রাজ্যের প্রভাবাধীন। তারা “যাতুত তালাহ” (অথবা যাতু -আতলাহ) নামক স্থানে ১৫ জন মুসলমানকে হত্যা করে। কেবলমাত্র প্রতিনিধি দলের নেতা হযরত কাব ইবনে উমাইর গিফারী প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে আসতে পেরেছিলেন। একই সময়ে নবী (সা) বুসরার গবর্ণর শুরাহবিল ইবনে আমরের নামেও দাওয়াত নামা পাঠিয়েছিলেন।
কিন্তু সেও তাঁর দূত হারেস ইবনে উমাইরকে হত্যা করে। এ সরদারও ছিল খৃষ্টান। এবং সরাসরি রোমের কাইসারের হুকুমের আনুগত। এসব কারণে নবী (সা) ৮ হিজরীর জমাদিউল উলা মাসে তিন হাজার মুজাহিদদের একটি সেনাবাহিনী সিরিয়া সীমান্তের দিকে পাঠান। ভবিষ্যতে এ এলাকাটি যাতে মুসলমানদের জন্য নিরাপদ হয়ে যায় এবং এখানকার লোকেরা মুসলমানদেরকে দুর্বল মনে করে তাদের ওপর জুলুম ও বাড়াবাড়ি করার সাহস না করে, এই ছিল তার উদ্দেশ্য । এ সেনাদলটি মা’আন নামক স্থানের কাছে পৌছার পর জানা যায় শুরাহবীল ইবনে আমর এক লাখ সেনার একটি বাহিনী নিয়ে মুসলমানদের মোকাবিলায় আসছে। ওদিকে রোমের কাইসার হিমস নামক স্থানে সশরীরে উপস্থিত। তিনি নিজের ভাই থিয়েডরের নেতৃত্বে আরো এক লাখের একটি সেনাবাহিনী রওয়ানা করে দেন। কিন্তু এসব আতংকজনক খবরাখবর পাওয়ার পরও তিন হাজারের এ প্রাণোৎসর্গী ছোট্ট মুজাহিদ বাহিনীটি অগ্রসর হতেই থাকে। অবশেষে তারা মুতা নামক স্থানে শুরাহবিলের এক লাখের বিরাট বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ অসম সাহসিকতা দেখানোর ফলে মুসলিম মুজাহিদদের পিষ্ট হয়ে চিঁড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক।
কিন্তু সারা আরব দেশ এবং সমগ্র মধ্য প্রাচ্য বিষ্ময়ে স্বম্ভিত হয়ে দেখলো যে, এক ও তেত্রিশের এ মোকাবিলায়ও কাফেররা মুসলমানদের ওপর বিজয়ী হতে পারলো না। এ জিনিসটিই সিরিয়া ও তার সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী আধা স্বাধীন আরব গোত্রগুলোকে এমনকি ইরাকের নিকটবর্তী এলাকায় বসবাসকারী পারস্য সম্রাটের প্রভাবাধিন নজদী গোত্রগুলোকেও ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করে। তাদের হাজার হাজার লোক ইসলাম গ্রহণ করে। বনী সুলাইম (আব্বাস ইবনে মিরদাস সুলামী ছিলেন তাদের সরদার) আশজা, গাতফান, যুবইয়ান ও ফাযারাহ গোত্রের লোকেরা এ সময়ই ইসলাম গ্রহণ করে। এ সময়ই রোম সাম্রাজ্যের আরবীয় সৈন্য দলের একজন সেনাপতি ফারওয়া ইবনে আমর আলজুযামী মুসলমান হন। তিনি নিজের ঈমানের এমন অকাট্য প্রমাণ পেশ করেন , যা দেখে আশেপাশের সব এলাকার লোকেরা বিস্ময়ে হতচকিত হয়ে পড়ে। ফারওয়ার ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে কাইসার তাকে গ্রেফতার করিয়ে নিজের দরবারে আনেন। তাঁকে দু’টি জিনিসের মধ্যে যে কোন একটি নির্বাচন করার ইখতিয়ার দেন। তাকে বলেন ইসলাম ত্যাগ করো। তাহলে তোমাকে শুধু মুক্তিই দেয়া হবে না বরং আগের পদমর্যাদাও বহাল করে দেয়া হবে। অথবা মুসলমান থোকো। কিন্তু এর ফলে তোমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।
তিনি ধীর স্থিরভাবে চিন্তা করে ইসালামকে নির্বাচিত করেন এবং সত্যের পথে প্রাণ বিসর্জন দেন। এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে কাইসার তার সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে উদ্ভুত এক ভয়াবহ হুমকির স্বরূপ উপলব্ধি করেন, যা আরবের মাটিতে সৃষ্ট হয়ে তার সাম্রাজ্যের দিকে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছিল। পরের বছর কাইসার মুসলমানদের মুতা যুদ্ধের শাস্তি দেবার জন্য সিরিয়া সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি শুরু করে দেন। তার অধীনে গাসসানী ও অন্যন্য আরব সরদাররা সৈন্য সমাবেশ করতে থাকে । নবী (সা) এ ব্যাপারে বেখবর ছিলেন না। একেবারেই নগণ্য ও তুচ্ছ যেসব ব্যাপার ইসলামী আন্দোলনের ওপর সামন্যমতও অনুকূল বা প্রতিকূল প্রভাব বিস্তার করে থাকে , তার প্রত্যেকেটি সম্পর্কে তিনি সর্বক্ষণ সচেতন ও সতর্ক থাকতেন। এ প্রস্তুতিগুলোর অর্থ তিনি সংগে সংগেই বুঝে ফেলেন। কোন প্রকার ইতস্তত না করেই কাইসারের বিশাল বিপুল শক্তির সাথে তিনি সংঘর্ষে লিপ্ত হবার ফায়সালা করে ফেলেন। এ সময় সামান্যতম ও দুর্বলতা দেখানো হলে এতদিনকার সমস্ত মেহনত ও কাজ বরবাদ হয়ে যেতো। একদিকে হোনায়েনে আরবের যে ক্ষয়িষ্ণু ও মুমূর্ষ জাহেলিয়াতের বুকে সর্বশেষ আঘাত হানা হয়েছিল তা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতো এবং অন্যদিকে মদীনার যে মুনাফীকরা আবু আমের রাহেবের মধ্যস্থতায় গাসসানের খ্রীস্টান বাদশাহ এবং স্বয়ং কাইসারের সাথে গোপন যোগসাজশে লিপ্ত হয়েছিল। উপরন্তু যারা নিজেদের দুস্কর্মের ওপর দীনদারীর প্রলেপ লাগাবার জন্য মদীনার সংলগ্ন এলাকায় “মসজিদে দ্বিরার” ( ইসলামী মিল্লাতকে ক্ষতিগ্রস্থ করার উদ্দেশ্যে তৈরী মসজিদ) নির্মাণ করেছিল, তারা পিঠে ছুরি বসিয়ে দিতো। সামনের দিক থেকে কাইসার আক্রমণ করতে আসছিল। ইরানীদের পরাজিত করার পর দূরের ও কাছের সব এলাকায় তার দোর্দণ্ড প্রতাপ ও দাপট ছড়িয়ে পড়েছিল। এ তিনটি ভয়ংকর বিপদের সম্মিলিত আক্রমণের মুখে ইসলামের অর্জিত বিজয় অকস্মাত পরাজয়ে রূপান্তিত হয়ে যেতে পারতো। তাই, যদিও দেশে দুর্ভিক্ষ চলছিল, আবহাওয়া ছিল প্রচণ্ড গরম, ফসল পাকার সময় কাছে এসে গিয়েছিল, সওয়ারী ও সাজ , সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা বড়ই কঠিন ব্যাপার ছিল। অর্থের অভাব ছিল প্রকট এবং দুনিয়ার দু’টি বৃহত্তম শক্তির একটির মোকাবিলা করতে হচ্ছিল তবুও আল্লাহর নবী এটাকে সত্যের দাওয়াতের জন্য জীবন-মৃত্যুর ফায়সালা করার সময় মনে করে এ অবস্থায়ই যুদ্ধ প্রস্তুতির সাধারণ ঘোষণা জারি করে দেন।
এর আগের সমস্ত যুদ্ধে নবী (সা) এর নিয়ম ছিল, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি কাউকে বলতেন না কোনদিকে যাবেন এবং কার সাথে মোকাবিলা করতে হবে। বরং তিনি মদীনা থেকে বের হবার পরও অভীষ্ট মনযিলের দিকে যাবার সোজা পথ না ধরে তিনি অন্য বাঁকা পথ ধরতেন। কিন্তু এবার তিনি এ আবরণটুকু ও রাখলেন না। এবার পরিস্কার বলে দিলেন যে, রোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে এবং সিরিয়ার দিকে যেতে হবে। এ সময়টি যে অত্যন্ত নাজুক ছিল তা আরবের সবাই অনুভব করছিল। প্রাচীন জাহেলিয়াতের প্রেমিকদের মধ্যে যারা তখনো বেঁচে ছিল তাদের জন্য এটি ছিল শেষ আশার আলো। রোম ও ইসলামের এ সংঘাতের ফলাফল কি দাঁড়ায় সে দিকেই তারা অধীর আগ্রহে দৃষ্টি নিবন্ধ করে রেখেছিল। কারণ তারা নিজেরাও জানতো, এরপর আর কোথাও কোন দিক থেকেই আশার সমান্যতম ঝলকও দেখা দেবার কোন সম্ভবনা নেই। মুনাফিকেরাও এরি পেছনে তাদের শেষ প্রচেষ্টা নিয়োজিত করেছিল ।
তারা নিজেদের মসজিদে দ্বিরার বানিয়ে নিয়েছিল। এরপর অপেক্ষা করছিল সিরিয়ার যুদ্ধে ইসলামের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটা মাত্রই তারা দেশের ভেতরে গোমরাহী ও অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দেবে। এখানেই শেষ নয়, বরং তারা তাবুকের এ অভিযানকে ব্যর্থ করার জন্য সম্ভাব্য সব রকমের কৌশলও অবলম্বন করে। এদিকে নিষ্ঠাবান মুসলমানরাও পুরোপুরি অনুভব করতে পেরেছিলেন, যে আন্দোলনের জন্য বিগত ২২বছর ধরে তারা প্রাণপাত করে এসেছেন বর্তমানে তার ভাগ্যের চূড়ান্ত ফায়সালা হবার সময় এসে পড়েছে। এ সময় সাহস দেখাবার অর্থ দাঁড়ায়, সারা দুনিয়ার ওপর এ আন্দোলনের দরজা খুলে যাবে অন্যদিকে এ সময় দুবর্লতা দেখাবার অর্থ দাড়ায় খোদ আরব দেশেও একে পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলতে হবে। কাজেই এ অনুভূতি সহকারে সত্যের নিবেদিত প্রাণ সিপাহীরা চরম উৎসাহ উদ্দীপনা সহকারে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। যুদ্ধের সাজ সরঞ্জাম যোগাড় করার ব্যাপারে প্রত্যেকেই নিজের সামর্থের চেয়ে অনেক বেশী পরিমাণে অংশগ্রহণ করেন। হযরত উসমান (রা) ও হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) বিপুল অর্থ দান করেন। হযরত উমর (রা) তার সারা জীবনের উপার্জনের অর্ধেক এনে রেখে দেন। হযরত আবু বকর (রা) তার সঞ্চিত সম্পদের সবটাই নবী (সা) এর সামনে পেশ করেন। গরীব সাহাবীরা মেহনত মজদুরী করে যা কামাই করতে পেরেছিলেন তার সবটুকু উৎসর্গ করেন। মেয়েরা নিজেদের গহনা খুলে নযরানা পেশ করেন। চারদিক থেকে দলে দলে আসতে থাকে প্রাণ উৎসর্গকারী স্বেচ্ছাসেবকদের বাহিনী। তারা আবেদন জানান, বাহন ও অস্ত্র শস্ত্রের ব্যবস্থা হয়ে গেলে আমরা প্রাণ দিতে প্রস্তুত। যারা সওয়ারী পেতেন না তারা কাঁদতে থাকতেন।
তারা এমনভাবে নিজেদের আন্তরিকতা মানসিক অস্থিরতা প্রকাশ করতে থাকতেন যার ফলে রাসূলে পাকের হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠতো ,এ ঘটনাটি কার্যত মুমিন ও মুনাফিক চিহ্নিতকরার একটি মানদণ্ডে পরিণত হয়ে গিয়েছিল ।
এমনকি এ সময় কোন ব্যক্তি পেছনে থেকে যাওয়ার অর্থ এ দাঁড়ায় যে, ইসলামের তার সম্পর্কের দাবী সত্য কিনা সেটাই সন্দেহজনক হয়ে পড়তো। কাজেই তাবুকের পথে যাওয়ার সময় সফরের মধ্যে যেসব ব্যক্তি পেছনে থেকে যেতো সহাবায়ে কেরাম নবী (সা) এর নিকট তাদের খবর পৌছিয়ে দিতেন। এর জবাবে তিনি সংগে সংগেই স্বতস্ফূর্তভাবে বলে ফেলতেন, “যেতে দাও ,যদি তার মধ্যে ভালো কিছু থেকে থাকে,তাহলে আল্লাহ তাকে আবার তোমাদের সাথে মিলিয়ে দেবেন। আর যদি অন্য কোন ব্যাপার হয়ে থাকে,তাহলে শোকর করো যে,আল্লাহ তার ভণ্ডামীপূর্ণ সাহচর্য থেকে তোমাদের বাঁচিয়েছেন”। ৯ হিজরীর রজব মাসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩০ হাজারের মুজাহিদ বাহিনী নিয়ে সিরিয়ার পথে রওয়ানা হন। তাঁর সাথে ছিল দশ হাজার সওয়ার। উটের সংখ্যা এত কম ছিল যে, এক একটি উটের পিঠে কয়েক জন পালাক্রমে সওয়ার হতেন। এর ওপর ছিল আবার গ্রীষ্মের প্রচণ্ডতা। পানির স্বল্পতা সৃষ্টি করেছিল আরো এক বাড়তি সমস্যা। কিন্তু এ নাজুক সময়ে মুসলমানরা যে সাচ্চা ও দৃঢ় সংকল্পের পরিচয় দেন তার ফল তারা তাবুকে পৌছে পেয়ে যান।
সেখানে পৌছে তারা জানতে পারেন, কাইসার ও তার অধিনস্থ সম্মুখ যুদ্ধ অবতীর্ণ হবার পরিবর্তে নিজেদের সেনা বাহিনী সীমান্ত থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এখন এ সীমান্তে আর কোন দুশমন নেই। কাজেই এখানে যুদ্ধেরও প্রয়োজন নেই। সীরাত রচয়িতারা এ ঘটনাটিকে সাধারণত এমনভাবে লিখে গেছেন যাতে মনে হবে যেন সিরিয়া সীমান্তে রোমীয় সৈন্যদের সমাবেশ সম্পর্কে যে খবর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পৌছে তা আদতে ভুলই ছিল। অথচ আসল ঘটনা এই যে, কাইসার সৈন্য সমাবেশ ঠিকই শুরু করেছিল। কিন্তু তার প্রস্তুতি শেষ হবার আগেই যখন রসূলুল্লাহ (সা) মোকাবিলা করার জন্য পৌছে যান তখন সে সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয়া ছাড়া আর কোন পথ দেখেনি। মুতার যুদ্ধে এক লাখের সাথে ৩ হাজারের মোকাবিলার যে দৃশ্য সে দেখেছিল তারপর খোদ নবী করীমের (সা) নেতৃত্বে ৩০ হাজারের যে বাহিনী এগিয়ে আসছিল সেখানে লাখ দুলাখ সৈন্য মাঠে নামিয়ে তার সাথে মোকাবিলা করার হিম্মাত তার ছিল না।
কাইসারের এভাবে পিছু হটে যাওয়ার ফলে যে নৈতিক বিজয় লাভ হলো, এ পর্যায়ে নবী (সা) তাকে যথেষ্ট মনে করেন। তিনি তাবুক থেকে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে সিরিয়া সীমান্তে প্রবেশ করার পরিবর্তে এ বিজয় থেকে যত দুর সম্ভব রাজনৈতিক ও সামরিক ফায়দা হাসিল করাকেই অগ্রাধিকার দেন্ সে জন্যেই তিনি তাবুকে ২০ দিন অব্স্থান করে রোম সাম্রাজ্য ও দারুল ইসলামের মধ্যবর্তী এলাকায় যে বহু সংখ্যক ছোট ছোট রাজ্য এতদিন রোমানদের প্রভাবাধীনে ছিল । সামরিক চাপ সৃষ্টি করে তাদেরকে ইসলামী সাম্রাজ্যের অনুগত করদ রাজ্যে পরিণত করেন। এভাবে দুমাতুল জানদালের খৃষ্টান শাসক উকাইদির ইবনে আবদুল মালিক কিনদী,আইলার খৃষ্টান শাসক ইউহান্না ইবনে রুবাহ এবং অনুরূপ মাকনা, জারবা , ও আযরূহের খৃষ্টান শাসকরাও জিযিয়া দিয়ে মদীনার বশ্যতা স্বীকার করে। এর ফলে ইসলামী সাম্রাজ্যের সীমানা সরাসরি রোম সাম্রাজ্যের সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে যায়। রোম সম্রাটরা যেসব আরব গোত্রকে এ পর্যন্ত আরবদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে আসছিল এখন বেশীর ভাগই রোমানদের মোকাবিলায় মুসলমানদের সহযোগী হয়ে গেল।
এভাবে রোম সাম্রাজ্যের সাথে একটি দীর্ঘ মেয়াদী সংঘর্ষে লিপ্ত হবার আগে ইসলাম সমগ্র আরবের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রন ও বাঁধন মজবুত করে নেবার পূর্ণ সুযোগ পেয়ে যায়।এটাই হয় এ ক্ষেত্রে তার সবচেয়ে বড় লাভ। এতদিন পর্যন্ত যারা প্রকাশ্যে মুশরিকদের দলভুক্ত থেকে অথবা মুসলমানদের দলে যোগদান করে পরদার অন্তরালে মুনাফিক হিসেবে অবস্থান করে প্রাচীন জাহেলিয়াতের পুনর্বহালের আশায় দিন গুণছিল তাবুকের এ বিনা যুদ্ধে বিজয় লাভের ঘটনা তাদের কোমর ভেংগে দেয়। এ সর্বশেষ ও চুড়ান্ত হতাশার ফলে তাদের অধিকাংশের জন্য ইসলামের কোলে আশ্রয় নেয়া ছাড়া গত্যন্তর ছিল না। আর যদি বা তাদের নিজেদের ইসলামের নিয়ামতলাভের সুযোগ নাও থেকে থাকে, তবে কমপক্ষে তাদের ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য সম্পর্ণরূপে ইসলামের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা ছিল না। এরপর একটি নামমাত্র সংখ্যালঘু গোষ্ঠী তাদের শিরক ও জাহেলী কার্যক্রমে অবিচল থাকে ।
কিন্তু তারা এত বেশী হীনবল হয়ে পড়ে যে, ইসলামের যে সংস্কারমূলক বিপ্লবের জন্য আল্লাহ তাঁর নবীকে পাঠিয়েছিলেন তার পূর্ণতা সাধনের পথে তারা সামান্যতমও বাধা সৃষ্টি করতে সমর্থ ছিল না। আলোচ্য বিষয় ও সমস্যাবলী এ পটভূমি সামনে রেখে আমরা সে সময় যেসব বড় বড় সমস্যা দেখা দিয়েছিল এবং সূরা তাওবায় যেগুলো আলোচিত হয়েছে, সেগুলো সহজেই চিহ্নিত করতে পারি। সেগুলো হচ্ছে।
১। এখন যেহেতূ সমগ্র আরবের শাসন ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে মুমিনেদের হাতে এসে গিয়েছিল এবং সমস্ত প্রতিবন্ধক শক্তি নির্জীব ও নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল , তাই আরবদেশকে পূর্নাঙ্গ দারুল ইসলামে পরিণত করার জন্য যে নীতি অবলম্বন করা অপরিহার্য ছিল তা সুষ্পষ্টভাবে বিবৃত করতে আর বিলম্ব করা চলে না ।তাই নিম্নোক্ত আকারে তা পেশ করা হয় : (ক) আরব থেকে শিরককে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করতে হবে। প্রাচীন মুশরিকী ব্যবস্থাকে পুরোপুরি খতম করে ফেলতে হবে। ইসলামের কেন্দ্র যেন চিরকালের জন্য নির্ভেজাল ইসলামী কেন্দ্রে পরিণত হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্য কোন অনৈসলামী উপাদান যেন সেখানকার ইসলামী মেজায ও প্রকৃতিতে অনুপ্রবেশ করতে এবং কোন বিপদের সময় আভ্যন্তরীন ফিতনার কারণ হতে না পারে। এ উদ্দেশ্যে মুশরিকদের সাথে সব রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করার এবং তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তিসমূহ বাতিল করার কথা ঘোষণা করা হয়।
(খ)কাবা ঘরের ব্যবস্থাপনা মুমিনদের হাতে এসে যাবার পর, একান্তভাবে আল্লাহর বন্দেগী করার জন্য উৎসর্গীত সেই ঘরটিতে আবারো আগের মত মূর্তিপূজা হতে থাকবে এবং তার পরিচালনা ও পৃষ্ঠপোষতার দায়িত্ব এখনো মুশরিকদের হাতে বহাল থাকবে এটা কোনক্রমেই সংগত হতে পারে না। তাই হুকুম দেয়া হয়ঃ আগামীতে কাবা ঘরের পরিচালনা ও অভিভাবকত্বের দায়িত্বেও তাওহীদদের হাতেই ন্যস্ত থাকা চাই।আর এ সংগে বায়তুল্লাহর চতুসীমানর মধ্যে শিরক ও জাহেলিয়াতের যাবতীয় রসম-রেওয়াজ বল প্রয়োগে বন্ধ করে দিতে হবে। বরং এখন থেকে মুশরিকরা আর এ ঘরের ত্রিসীমানায় ঘেঁসতে পারবে না। তাওহীদদের মহান অগ্রনী পুরুষ ইবরাহীমের হাতে গড়া এ গৃহটি আর শিরক দ্বারা কলুষিত হতে না পারে তার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করতে হবে।
(গ)আরবের সাংস্কৃতিক জীবনে জাহেলী রসম-রেওয়াজের যেসব চিহ্ন এখনো অক্ষুন্ন ছিল নতুন ইসলামী যুগে সেগুলোর প্রচলন থাকা কোনক্রমেই সমিচীন ছিল না। তাই সেগুলো নিশ্চিহ্ন করার প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে। নাসী (ইচ্ছাকৃতভাবে হারাম মাসকে হালাল ও হালাল মাসকে হারাম নির্দিষ্ট করে নেয়া)র নিয়মটা ছিল সবচেয়ে খারাপ প্রথা। তাই তার ওপরে সরাসরি আঘাত হানা হয়েছে। এ আঘাতের মাধ্যমে জাহেলিয়াতের অন্যান্য নিদর্শনগুলোর ব্যাপারে মুসলমানদের করনীয় কী।
তাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ২।আরবের ইসলাম প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম পূর্ণতায় পৌছে যাবার পর সামনে যে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়টি ছিল সেটি হলো, আরবের বাইরে আল্লাহর সত্য দীনের প্রভাব -বলয় বিস্তৃত করা। এ পথে রোম ও ইরানের রাজনৈতিক শক্তি ছিল সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। আরবের কার্যক্রম শেষ হবার পরই তার সাথে সংঘর্ষ বাধা ছিল অনিবার্য। তাছাড়া পরবর্তী পর্যায়ে অন্যান্য অমুসলিম রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাগুলোর সাথেও এমনি ধরনের সংঘাত ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হওয়া ছিল স্বাভাবিক । তাই মুসলমানদের নির্দেশ দেয়া হয়, আরবের বাইরে যারা সত্য দীনের অনুসারী নয়, তারা ইসলামী কর্তৃত্বের প্রতি বশ্যত ও আনুগত্যের স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত শক্তি প্রয়োগ করে তাদের স্বাধীন ও সার্বভৌম শাসন কর্তৃত্ব খতম করে দাও।
অবশ্য আল্লাহর সত্য দ্বীনের প্রতি ঈমান আনার ব্যাপরটি তাদের ইচ্ছাধীন। তারা চাইলে ইমান আনতে পারে, চাইলে নাও আনতে পারে। কিন্তু আল্লাহর যমীনে নিজেদের হুকুম জারি করার এবং মানব সমাজের কর্তৃত্ব ও পরিচালনা ব্যবস্থা নিজেদের হাতে রেখে মানুষের ওপর এবং তাদের ভবিষ্যত বংশধরদের ওপর নিজেদের গোমরাহীসমূহ জোরপূর্বক চাপিলে দেবার কোন অধিকার তাদের নেই। বড় জোর তাদের কে একটুকু স্বাধীনতা দেয়া যেতে পারে যে, তারা নিজেরা চাইলে পথভ্রষ্ট হয়ে থাকতে পারবে। কিন্তু সে জন্য শর্ত হচ্ছে, তাদের জিযিয়া আদায় করে ইসলামী শাসন কর্তৃত্বের অধীন থাকতে হবে। ৩।মুনাফিক সংক্রন্ত বিষয়টি ছিল তৃতীয় গুরুত্বপূর্ন বিষয়। সাময়িক বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে তাদের ব্যাপারে এ পর্যন্ত উপেক্ষাও এড়িয়ে যাবার নীতি অবলম্বন করা হচ্ছিল। এখন যেহেতু বাইরের বিপদের চাপ কম গিয়েছিল বরং একেবারে ছিলই না বললে চলে, তাই হুকুম দেয়া হয়, আগামীতে তাদের সাথে আর নরম ব্যবহার করা যাবে না। প্রকাশ্য সত্য অস্বীকারকারীদের সাথে যেমন কঠোর ব্যাবহার করা হয় তেমনি কঠোর ব্যবহার গোপন সত্য অস্বীকারকারীদের সাথেও করা হবে।
এ নীতি অনুযায়ী নবী (সা) তাবুক যুদ্ধের প্রস্তুতি পূর্বে সুওয়াইলিমের গৃহে আগুন লাগান্ সেখানে মুনাফিকদের একটি দল মুসলমানদেরকে যুদ্ধে যোগদান করা থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে প্রচারাভিযান চালাবার জন্য জামায়েত হতো। আবার এ নীতি অনুযায়ী নবী (সা) তাবুক থেকে ফিরে আসার পর সর্বপ্রথম মসজিদে দ্বিরার ভেংগে ফেলার ও জ্বালীয়ে দেবার হুকুম দেন। ৪।নিষ্ঠাবান মুমিনদের কতকের মধ্যে এখনো পর্যন্ত যে সামান্য কিছু সংকল্পের দুর্বলতা রয়ে গিয়েছিল তার চিকিৎসারও প্রয়োজন ছিল। কারণ ইসলাম এখন আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের ক্ষেত্রে প্রবেশ করতে চলেছে। যে ক্ষেত্রে মুসলিম আরবেকে একাকী সারা অমুসলিম দুনিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে হবে সে ক্ষেত্রে ইসলামী সংগঠনের জন্য ঈমানের দুর্বলতার চাইতে বড় কোন আভ্যন্তরীণ বিপদ থাকতে পারে না। তাই তাবুক যুদ্ধের সময় যারা অলসতা ও দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছিল অত্যন্ত কঠোর ভাষায় তাদের তিরস্কার ও নিন্দা করা হয়। যারা পিছনে রয়ে গিয়েছিল তাদের ন্যায়সংগত ওযর ছাড়াই পিছনে থেকে যাওয়াটাকে একটা মুনাফেকসূলভ আচরণ এবং সাচ্চা ঈমানদার না হওয়ার সুষ্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ভবিষ্যতের জন্য দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানিয়ে দেয়াহয়, আল্লাহর কালেমাকে বুলন্দ করার সংগ্রাম এবং কুফর ও ইসলামের সংঘাতই হচ্ছে মুমিনদের ঈমানদের দাবী যাচাই আসল মানদণ্ড । এ সংঘর্ষে যে ব্যক্তি ইসলামের জন্য ধন-প্রাণ সময় ও শ্রম ব্যয় করতে ইতস্তত করবে তার ঈমান নির্ভরযোগ্য হবে না। অন্য কোন ধর্মীয় কাজের মাধ্যমে এ ক্ষেত্রের কোন অভাব পূরণ করা যাবে না। এসব বিষয়ের প্রতি নজর রেখে সূরা তওবা অধ্যয়ন করলে এর যাবতীয় বিষয় সহজে অনুধাবন করা সম্ভব হবে।
আয়াতভিত্তিক শানে নুজুল এ সূরা সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরাগুলোর অন্যতম। এ সূরায় রাসূলুল্লাহ কাতিবে অহীকেও বিস্মিল্লাহ লিখবার নির্দেশ দেন নি। হযরত ওসমান (রা.) স্বীয় শাসনামলে কোরআনকে যখন গ্রন্থের রূপ দেন তখন এটা তাঁর নযরে পড়ে। কাজেই তিনি এইখানে বিসমিল্লাহ লিখতে নিষেধ করেন। (মারেফুল কোরান) আয়াত-১ : রাসূলুল্লাহ (সা.) মক্কার বিভিন্ন মুশরিক গোত্রের সাথে নির্ধারিত মেয়াদে চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন।
তাদের মধ্যে বনূ নযীর ও বনূ কেনানা ব্যতীত অন্য সকলেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই চুক্তি ভঙ্গ করে বসে। এই সময় নির্দেশ আসল যে, ১০ই যিলহজ্জ হতে ১০ই রবিউল আখের পর্যন্ত চার মাস নিরাপত্তার সাথে চলাফেরা কর। এর পর আর নিরাপত্তা থাকবে না। (মুঃ কোঃ) আযাত-১১ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, এ আয়াত সকল কেবলানুসারী মুসলমানের রক্তকে হারাম করে দিয়েছে। অর্থাৎ যারা নিয়মিত ছলাত ও যাকাত আদায় করে এবং তাদের নিকট থেকে ইসলামের পরিপন্থি কথা ও কুর্মের প্রমান পাওয়া যায় না, সর্বক্ষেত্রে তারা মুসলমান হিসাবে গণ্য হবে। তাদের অন্তরে সত্যিকার ঈমান বা কুফুরী যাই থাকুক না কেন। (মারেফুল কোরান) আয়াত-১২ : একদল মুফাস্সিরের মতে এখানে কাফের প্রধান বলতে মক্কায় সেই সব কোরাইশ প্রধানকে বুঝানো হয়েছে যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে লোকদেরকে উস্কানি প্রদানে ও রণ প্রস্তুতিতে নিয়োজিত ছিল। বিশেষতঃ এদের সাথে যুদ্ধ করবার আদেশ এ জন্য দেয়া হয়েছে যে, মক্কার উৎস ছিল এরাই। তাছাড়া এদের সাথে অনেক মুসলমানের আত্মীয়তা ছিল, যার ফলে এরা হয়ত প্রশ্রয় পেয়ে বসত।
(তাফসিরে মাজহারি) আয়াত-১৭ : হযরত আব্বাস (রা.)- কে বদর যুদ্ধের যুদ্ধ বন্দী হিসাবে আনয়ন করা হলে সাহাবায়ে কিরামরা (রা.) কুফুরী, শিরক ও সম্পর্কচ্ছেদের উপর যখন তাঁকে তিরস্কার করতে লাগলেন তখন তিনি বললেন, “আমাদের দোষের সাথে গুণের কথাও বর্ণনা কর।” ” হযরত আলী (রা.) বললেন, হে আব্বাস! র্শিক করা অবস্থায় কোন পূণ্যময় কাজ কি করেছে? তখন হযরত আব্বাস বললেন, কেন করব না? অনেক করেছি, মসজিদে হারামের রক্ষণাবেক্ষণ করেছি, হাজীদের পানি পান করায়ে থাকি, আল্লাহ্র ঘরের সম্মান করি, বন্দীদের মুক্তি দিয়ে থাকি। তখন এ আয়াতটি নাযিল হয় এবং বলা হয় কুফুরী অবস্থায় সমস্ত কর্মই পণ্ডু হয়ে গিয়েছে। আয়াত-১৮ : একদা হযরত তাল্হা গর্ব করে বললেন যে, তার নিকট কা’বা গৃহের চাবি থাকে এবং তিনি তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। হযরত আব্বাস উঠে বললেন, “আমি বারিধারক, হাজীদেরকে যমযমের পানি পান করাই “হযরত আলী (রা.) বললেন, আমি সর্ব প্রথম ঈমান এনেছি, সর্ব প্রথম নামায পড়েছি এবং রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। তখন আলোচ্য আয়াতটি নাযিল হয়। আয়াত-১৯ : মক্কার অনেক মুশরিক মুসলমানদের মোকাবেলায় গর্ব সহকারে বলত মসজিদুল হারামের আবাদ ও হাজীদের পানি সরবরাহের ব্যবস্থা আমরাই করে থাকি। এর উপর অন্য কারো আ’মল শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার হতে পারে না।
ইসলাম গ্রহণের পূর্বে হযরত আব্বাস (রা.) যখন বদর যুদ্ধে বন্দী হন এবং তাঁর মুসলিম আত্মীয়রা তাঁকে বাতিল ধর্মে বহাল থাকায় বিদ্রƒপের সঙ্গে বলেন, আপনি এখনও ঈমানের দৌলত হতে বঞ্চিত রয়েছেন? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা ঈমান ও হিজরতকে বড় শ্রেষ্ঠ কাজ বলে মনে করেছ। কিন্তু আমরাও তো মসজিদুল হারামের হেফাজত ও হাজীদের পানি সরবরাহের কাজ করে থাকি, তাই আমাদের সমান অন্য কারো আ’মল হতে পারে না। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উপরোক্ত আয়াতসমূহ নাযিল হয়। আয়াত-২৯ : কুফর ও র্শিক হল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে বিদ্রোহ। এ বিদ্রোহের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
কিন্তু আল্লাহ নিজের অসীম রহমত গুণে শাস্তির এ কঠোরতা হ্রাস করে ঘোষণা করেন যে, তারা ইসলামী রাষ্ট্রের প্রজারূপে ইসলামী আইন-কানুনকে মেনে থাকতে চাইলে তাদের হতে সামান্য জিযিয়া কর নিয়ে মৃত্যুদণ্ড হতে তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হবে এবং তাদের জান-মালের নিরাপত্তার বিধান থাকবে। শরীয়তের পরিভাষায় এটা হল জিযিয়া কর। শরীয়ত মূলতঃ এর কোন হার নির্দিষ্ট করে দেয় নি, বরং তা ইসলামী শাসকের সুবিবেচনার উপর নির্ভরশীল। তিনি অমুসলিমদের অবস্থা পর্যালোচনা করে যা সঙ্গত মনে হয় তাই ধার্য করবেন। অধিকাংশ ইমামের মতে জিযিয়া দিতে স্বীকার করলে সকল অমুসলিমের সাথেই যুদ্ধ বন্ধ করে দিতে হবে।
(মারেফুল কোরান) আয়াত-৩৪ : অনেকের মতে এই আয়াত ইহুদী-খৃষ্টানদের উদ্দেশে নযিল হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আয়াতটি মুসলমানদের মধ্যে যারা যাকাত এবং অন্যান্য আর্থিক দেনা পাওনাসমূহ আদায় করে না তাদের উদ্দেশে নাযিল হয়েছে। হযরত আবু যর (রা.) বলেন, আয়াতটি যারা যাকাত আদায় করে না তাদের সম্বন্ধে নাযিল হয়েছে , চাই তারা হউক মুসলমান অথবা অমুসলমান আহ্লে কিতাবী । বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু যর (রা.) ও হযরত মু’আবিয়া (রা.)-এর মধ্যে এ আয়াতটি সম্বন্ধে বিতর্ক হয়েছিল। হযরত মু’আবিয়া (রা.) এর মতে, আয়াতটি আহ্লে কিতাব সম্বন্ধে নাযিল হয়েছে, আর হযরত আবু যর (রা.)-এর মতে মুসলমান ও আহ্লে কিতাব উভয়ের সম্বন্ধেই অবতীর্ণ হয়েছে। আয়াত-৩৭ : চন্দ্র মাসসমূহ সাধারণত ঃ মৌসুম হিসাবে পরিবর্তন হতে থাকে। ফলে মাসগুলো ছয় ঋতুতে ঘুরে ঘুরে আসত। কোন সময় এমনও হয়, নিরাপত্তা ও সম্মানিত মর্যাদাবান চারি মাসের কোন মাসে তাদের পারস্পরিক যুদ্ধের সময় তদানীন্তন মুশরিকরা আপন খেয়াল-খুশী মত ঐসব মাসকে অগ্রপশ্চাত করেদিত, মুর্হরম মাসকে সফর মাস বানিয়ে দিত এবং ঘোষণা করে দিত যে, এ বছর সফর মুর্হরমের আগে হবে।
এরূপ টালবাহানা করে বরাবরই হারাম মাসসমূহে যুদ্ধ করে যেত। এ পরিপ্রেক্ষিতে আয়াতটি নাযিল হয়। আয়াত-৩৮ : নবম হিজরীতে আরবের খৃষ্টানেরা রোমের বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের নিকট এই মর্মে পত্র লিখল যে, “নবুওয়তের দাবীদার মুহাম্মদের (সা.) মৃত্যু ঘটেছে, তাঁর অনুচরবৃন্দকে অভাবে দুর্বল করে রেখেছে।” এই গুজবের উপর ভিত্তি করে রোম সম্রাটের আরব রাষ্ট্র করায়ত্ব করার সাধ হল এবং নিজের বিশেষ অন্তরঙ্গদের নেতৃত্বে চল্লিশ হাজার সৈন্য আরবের দিকে রওয়ানা করল। রাসূল (সা.) এই সংবাদ পেয়ে হযরত আলী (রা.)- কে আহ্লে বাইতের অর্থাৎ আপন পরিবার পরিজনদের উপর তত্ত্বাবধায়ক এবং হযরত ইবনে উম্মে মক্তুমকে ইমাম মনোনীত করে তদভিমুখে যাত্রা করলেন। তখন তাপমাত্রা এত উষ্ণ হয়েছিল, যেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিচ্ছুরিত হচিছল এবং যাত্রাও ছিল অতি দূর-পাল্লার, আর শত্র“ও ছিল শক্তিশালী, জীবিকার উপাদান অর্থাৎ খেজুর ইত্যাদি ফসল কাটার সময়ও সমাগত। তদুপরি মক্কা বিজয় ও হুনাইন যুদ্ধের অবসানও হয়েছিল সবেমাত্র। এসব কিছুর পরিপ্রেক্ষিতে মুনাফিকরা নানা টাল-বাহানা আরম্ভ করে দিল এবং কতিপয় মুসলমানও ভীত-সন্ত্রস্ত হল।
তখন মুসলমানদেরকে উদ্যোগী ও উৎসাহিত করে তোলার জন্য আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াতটি নাযিল করেন। আয়াত-৪৭ : বদর প্রান্তে যুদ্ধ করার জন্য মক্কার কোরাইশরা ও কাফেররা যখন মক্কা হতে মদীনা অভিমুখে যাত্রা করল, তখন কুচকাওয়াজ ও রং বেরঙ্গের নাটকের সাজ সরঞ্জামও সঙ্গে নিয়েছিল। পথে আবু সুফিয়ানের সংবাদ বাহকের সাক্ষাত হল; সে বলল, যে কাফেলার সাহায্যের জন্য তোমাদের এ অভিযান, তারা অক্ষত অবস্থায় রাস্তা এড়িয়ে চলে এসেছে, তোমরা ফিরে চল, আবু জেহেল বলল; না, যে পর্যন্ত বদর রণাঙ্গনে জয়যুক্ত হয়ে নাট্যোৎসব পালন এবং উট জবাই করে ভোজের আয়োজন না করব ততক্ষণ ফিরব না।” সুতরাং মুসলমানদের দম্ভ করা হতে বিরত রাখার জন্য এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। আয়াত-৫৬ : অত্র আয়াতে আল্লাহ তা’আলা কাফেরদের অন্যান্য কতিপয় বদভ্যাসের বিবরণ দিচ্ছেন। তন্মধ্যে প্রথম হল, তাদের মিথ্যা শপথ করা যে, “আমরা তোমাদের দলভুক্ত।”
অথচ তাদের এ শপথ ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর দ্বিতীয় হল, তারা অন্যত্র কোন আশ্রয় স্থল পেলে তথায় চলে যাবে। আয়াত-৫৮ : এ আয়াতটি মুনাফিক আবুল জওয়ায সম্বন্ধে নাযিল হয়। একদা সে বলেছিল “তোমাদের নবীকে দেখ, তিনি তোমাদের সদকার মালপত্রসমূহ ছাগল-মেষ চালক রাখালদেরকে ভাগ করে দিচ্ছেন, আরও দাবী করছেন যে, তিনি ন্যায় করছেন।” আর কেউ বলল, হুনাইন যুদ্ধলব্ধ গনীমতের মাল রাসূল (সা.) ভাগ-বন্টনের সময় মক্কাবাসী নব-মুসলিমদের হৃদয় জয়ের লক্ষ্যে তাদেরকে অধিক পরিমাণে দিচ্ছিলেন। তখন খারেজীদের নেতা আবুল খুওয়াইসরা এসে বলল, “হে মুহাম্মদ (সা.)! ইনসাফ কর।” রাসূল (সা.) তখন ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, হে হতভাগ্য! আমি যদি ইন্সাফ না করি তবে কে করবে? এতে আয়াতটি নাযিল হয়। আয়াত-৬৪ : কতিপয় মুনাফেক ইসলাম সম্পর্কে বিদ্রƒপাÍক উক্তি করেছিল, সাথে সাথে তাদের এ আশঙ্কাও হচ্ছিল যে, মুহাম্মদ (সা.) ওহীর মারফত তা জানতে পারলে বড় বিপদ হবে। কার্যতঃ তাই হল। রাসূলুল্লাহ (সা.) ওহীর মারফত তা জানতে পেরে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, আমরা কেবলমাত্র হাসি-তামাশা করছিলাম।
(বয়ানুল কোরান) আয়াত-৬৫ : আলোচ্য আয়াত থেকে জানা যায় যে, ইসলামের ব্যাপারে ইচ্ছাপূর্বক কৌতুক বা বিদ্রƒপ করা কুফুরীর মধ্যে গণ্য। আরও জানা আবশ্যক আল্লাহর প্রতি, রাসূল (সা.)-এর প্রতি এবং কোরআন ও তার আয়াতসমূহ নিয়ে উপহাস-এই ত্রিবিদ উপহাসই পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সুতরাং এর যে কোন একটির সাথে উপহাস করলে তিনটির সঙ্গেই উপহাস করা হয় এবং তা কুফর। (বয়ানুল কোরান) আযাত-৬৯ : ইতোপূর্বে আল্লাহ তা’আলা দুনিয়াবী ভোগ-বিলাস এবং আখেরাতের প্রতি উপেক্ষা জ্ঞাপনের মধ্যে মুনাফেকদেরকে কাফেরদের সাদৃশ্য বলে উল্লেখ করেন। এখানে তাদের উভয় দলকেই নবীদের অবিশ্বাস করার মধ্যে এবং ধোকাবাজীকে একদল অপরদলের সমপর্যায়ের বলে ঘোষণা করা হয়। আয়াত-৭০ : অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা কাফেরদেরকে ধ্বংস করে তাদের উপর কোন জুুলুম করেন নি। অধিকন্তু, তিনি যদি কোন অপরাধহীন কাউকেও ধ্বংস করতেন তার অবিচার হত না। কারণ, অবিচার হয় তখন, যখন কেউ অন্যের অধিকারে বিনা অনুমতিতে হস্তক্ষেপ করে।
আর এইদিকে তো সর্বত্রই আল্লাহর অধিকার, ওতে কারও কোন শরীক নেই, তিনিই একচ্ছত্রভাবে সর্বাধিনায়ক। সুতরাং এটা আল্লাহ তাআলার একমাত্র করুণা ও অনুগ্রহ যে, তিনি বিনা দোষে কাকেও শাস্তি দেন না। আর শরীয়তের অনুশাসন হিসাবে পরকালে কাকেও বিনা দোষে শাস্তি দেয়া আল্লাহর পক্ষে শোভনীয় নয় যদিও যুক্তিসম্মত বৈধ। আয়াত-৭২ : মু’মিন নর-নারীরা স্বীয় ঈমান ও আ’মলের বিনিময়ে অনন্য নেয়ামত বিশিষ্ট জান্নাত লাভ করবেন। আর জান্নাতের অপরিসীম নেয়ামত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নেয়ামত যা তারা প্রাপ্ত হবে তা হল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি। এর তুলনায় অন্যান্য যাবতীয় নেয়া’মতই অতি নগণ্য।
(মুঃ কোঃ) আয়াত-৭৩ : এ আয়াতে কাফের ও মুনাফিক উভয় সম্প্রদায়ের সাথে জেহাদ করতে এবং তাদের ব্যাপারে কঠোর হতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রকাশ্যভাবে যারা কাফের তাদের সাথে যুদ্ধ করার বিষয়টি তো সুস্পষ্ট, কিন্তু মুনাফিকদের সাথে জেহাদ করার অর্থ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কর্মধারায় প্রমাণিত হয়েছে।
অর্থাৎ তাদেরকে ইসলামের সত্যতা উপলব্ধি করবার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে যেন তারা ইসলামের দাবীতে নিষ্ঠাবান হয়ে যেতে পারে। (তাফসিরে মাজহারি, মারেফুল কোরান) আয়াত-৮০ : মুনাফিক আবদুল্লাহ্ ইবনে উবাই যখন পীড়িত হয় তখন তার পুত্র, আবদুল্লাহ্, যে সত্যিকার মুসলমান ছিল, বলল, হে আল্লাহর রাসূল! অনুগ্রহ পূর্বক আপনি আমার পিতার মাগফিরাতের জন্য দো’আ করুন, যেন তাকে আল্লাহ ক্ষমা করেন। হুযূর (সা.) দো’আ করেন তখন এ আয়াত নাযিল হয়।
আয়াত- ৮১ : তবুক যুদ্ধে যখন মুসলমানরা রওয়ানা হতে লাগল, তখন মুনাফিকরা রসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর নিকট কাকুতি-মিনতি করে অব্যাহতির অনুমতি নিয়ে সরে পড়তে লাগল, অত্যন্ত গরম পড়ছে, এমন উত্তপ্ত খরায় কেমন করে যাবে? তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়। আয়াত-৮৪ : মুনাফিক আবদুল্লাহ্ ইবনে উবাই যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তার ছেলে হযরত আবদুল্লাহ্ রাসূল (সা.)-এর নিকট তাঁর পবিত্র জামা তার পিতার কাফনের জন্য চাইলেন এবং জানাযার নামায পড়াবার আবেদন জানালেন। রাহ্মাতুল্লিল আলামীন ‘দয়াল নবী’ আপন জামা দিয়ে দিলেন এবং জানাযার সময় নামায পড়াতে দণ্ডায়মান হলেন তখন ওমর (রা.) জোরালো ভাষায় আবেদন জানালেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্! মুনাফিকদের জানাযার নামায না পড়াই উত্তম হবে। হুযূর (সা.) বললেন, হে ওমর! আল্লাহ্ তা’আলা মুনাফিকদের সম্বন্ধে সত্তরবার পর্যন্ত দোয়া কবুল না করার কথা বলেছেন। আমি ততোদিকবার দো’আ করব, হয়তো কবূল হবে।
তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়। তৎপর থেকে রাসূল (সা.) কোন মুনাফিকদের জানাযায় নামায পড়ান নি। আয়াত-৯৩ : এখানে যে সাতজন রোদনকারী ছাহাবীর কথা বলা হয়েছে, যারা তাবুক যুদ্ধের প্রাক্কালে মহানবী (সা.)-এর নিকট এসে বলল, আমরা জেহাদে অংশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, তবে আমাদের কোন বাহন নেই। বাহন পেলে আমরা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। নবী করীম (সা.) বললেন, তোমাদেরকে দেয়ার মত আমার নিকটও কোন বাহন নেই। এটা শুনে তারা ক্রন্দনরত অবস্থায় মহানবী (সা.)-এর দরবার হতে বের হয়ে গেল। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.), আব্বাস (রা.) ও ওসমান (রা.) তাদেরকে বাহন ও পথের সম্বল প্রদান করে সাথে নিয়ে গেলেন। তাঁদের ব্যাপারে আলোচ্য আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
২। উপরোক্ত আয়াতসমূহে সেই সকল নিষ্ঠাবান মুসলমানদের কথা আলোচনা করা হয়েছে যারা প্রকৃতপক্ষেই অপারগতার কারণে জেহাদে অংশ গ্রহণে অক্ষম ছিল। (মারেফুল কোরান, তাফসিরে মাজহারি) আয়াত-৯৪ : মুনাফিক জুদ ইবনে কাইছ, মা’তাব ইবনে কুশাইর এবং তাদের সঙ্গীদের সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা ছিল সংখ্যায় আশি জন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তবুক যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তনের পর আদেশ দিয়েছিলেন, কেউই যেন তাদের সাথে উঠা বসা না করে এবং কথাবার্তা না বলে। অপর বর্ণনায় আবদুল্লাহ্ ইবনে উবাই যখন রাসূল (সা.) কে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট শপথ করেছিল, এখন হতে কোন যুদ্ধে তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করবে না। আলোচ্য আয়াতটি তখন নাযিল হয়। আয়াত-১০৩ : ক্ষমা পাওয়ার পর তাঁরা তিন জনই তাদের সমস্ত মালপত্র নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, হে রাসূলুল্লাহ (সা.)! এ সম্পদই আমাদেরকে জিহাদে অংশ গ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে। সুতরাং আপনি এগুলো নিয়ে খয়রাত করে দিন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, সম্পদ নিবার জন্য আমি আদিষ্ট হই নি; তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়, অবশিস্ট তিনজন সম্বন্ধে পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত আদেশ মূলতবী ছিল। পরে তাদের তওবাও গৃহীত হওয়ার ব্যাপারে আদেশ নাযিল হয়। আয়াত-১১১ : বাইয়াতে ওকবায় সত্তর জন মহোদয় ব্যক্তিবর্গ বাইয়াত গ্রহণ করলেন তন্মধ্যে হয়রত আবদুল্লাহ্ ইবনে রওয়াহা বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্। আমাদের নিকট হতে আল্লাহ্র জন্য এবং আপনার জন্য কতক প্রতিশ্র“তি গ্রহণ করুন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহর জন্য প্রতিশ্র“তি হল , তাঁর ইবাদত করতে থাক এবং তাঁর সাথে কাউকেও শরীক সাব্যস্ত করবে না। আর আমার জন্য শর্ত হল, তোমরা আমাকে আপন জান মালের ন্যায় সংরক্ষণ করবে বরং ততোধিক। তখন তাঁরা এই প্রতিশ্র“তি পালন করলে, বিনিময়ে কি মিলবে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘জান্নাত’। তখন তাঁরা বললেন, কি সুন্দর সওদা এবং কেমন লাভজনক ব্যবসা। আমরা এই বিনিময় চুক্তি কখনও ভঙ্গ করব না। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে সুখবর প্রদানার্থে এ আয়াতটি নাযিল করেন। আয়াত-১২৩ : আলোচ্য আয়াতে মুসলমানদেরকে যুদ্ধ হতে পশ্চাদপদ থাকার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান পূর্বক সার্বিকরূপে যুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, প্রথমে আশে পাশের কাফিরদের সাথে যুদ্ধ আরম্ভ কর, তারপর তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তীদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক। এটার বিপরীতে যে সকল প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা স্পষ্টরূপে ব্যক্ত হয়েছে। তাই রাসূলুল্লাহ (সা.) স্বেচ্ছায় যে সকল যুদ্ধ করেছেন এবং তাঁর পরে ছাহাবীরাও ঠিক এ পদ্ধতিতেই যুদ্ধ করেছেন। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (সা.) সর্বপ্রথম আপন গোত্রের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন, তারপর আরবের অন্যান্য গোত্রের সঙ্গে, তৎপর সেখানকার কিতাবী-ইহুদী, খৃষ্টানদের সঙ্গে এরপর রোম ও সিরিয়াবাসীদের সঙ্গে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর ছাহাবীরা প্রথমে ইরাকীদের সঙ্গে , তারপর অন্যান্য রাষ্ট্র ও নগরবাসীদের সঙ্গে উক্ত পদ্ধতিতে যুদ্ধ করেছেন।
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
সুরা নং- ০০৯ : আত-তাওবাহ
بَرَاءَةٌ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى الَّذِينَ عَاهَدْتُمْ مِنَ الْمُشْرِكِين9.1
আরবি উচ্চারণ ৯.১। বারা-য়াতুম্ মিনাল্লা-হি অরসূলিহী য় ইলাল্লাযীনা ‘আহাত্তুম্ মিনাল্ মুশ্রিকীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা মুশরিকদের মধ্য থেকে সে সব লোকের প্রতি, যাদের সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলে।
فَسِيحُوا فِي الْأَرْضِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللَّهِ وَأَنَّ اللَّهَ مُخْزِي الْكَافِرِينَ9.2
আরবি উচ্চারণ ৯.২। ফাসীহূ ফিল্ র্আদ্বি র্আবা‘আতা আশ্হুরিঁও অ’লামূ য় আন্নাকুম্ গইরু মু’জ্বিযিল্লা-হি অআন্নাল্লা-হামুখ্যিল্ কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২ সুতরাং তোমরা যমীনে বিচরণ কর চার মাস, আর জেনে রাখ, তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করতে পারবে না, আর নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে অপদস্থকারী।
وَأَذَانٌ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ أَنَّ اللَّهَ بَرِيءٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ وَرَسُولُهُ فَإِنْ تُبْتُمْ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَإِنْ تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللَّهِ وَبَشِّرِ الَّذِينَ كَفَرُوا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ9.3
আরবি উচ্চারণ ৯.৩। অআযা-নুম্ মিনাল্লা-হি অরসূলিহী য় ইলান্ না-সি ইয়াওমাল্ হাজ্জ্বিল্ আক্বারি আন্নাল্লা-হা বারী – য়ুম্ মিনাল্ মুশ্রিকীনা অ রসূলুহ্; ফাইন্ তুব্তুম্ ফাহুঅ খাইরুল্লাকুম্ অইন্ তাওয়াল্লাইতুম্ ফা’লামূ য় আন্নাকুম্ গাইরু মু’জ্বিযি ল্লা-হ্; অবাশ্শিরিল্লাযীনা কাফারূ বি‘আযা-বিন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩ আর মহান হজ্জের দিন মানুষের প্রতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে ঘোষণা, নিশ্চয় আল্লাহ মুশরিকদের থেকে দায়মুক্ত এবং তাঁর রাসূলও। অতএব, যদি তোমরা তাওবা কর, তাহলে তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর যদি তোমরা ফিরে যাও, তাহলে জেনে রাখ, তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করতে পারবে না। আর যারা কুফরী করেছে, তাদের তুমি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।
إِلَّا الَّذِينَ عَاهَدْتُمْ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ثُمَّ لَمْ يَنْقُصُوكُمْ شَيْئًا وَلَمْ يُظَاهِرُوا عَلَيْكُمْ أَحَدًا فَأَتِمُّوا إِلَيْهِمْ عَهْدَهُمْ إِلَى مُدَّتِهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ9.4
আরবি উচ্চারণ ৯.৪। ইল্লাল্লাযীনা ‘আ-হাত্তুম্ মিনাল্ মুশ্রিকীনা ছুম্মা লাম্ ইয়ান্ক্ব ুছূকুম্ শাইয়াঁও অলাম্ ইয়ুজোয়া-হিরূ ‘আলাইকুম্ আহাদান্ ফাআতিম্মূ য় ইলাইহিম্ ‘আহ্দাহুম্ ইলা-মুদ্দাতিহিম্ ইন্নাল্লা-হা ইয়ুহিব্বুল্ মুত্তাক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪ তবে মুশরিকদের মধ্য থেকে যাদের সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছ, অতঃপর তারা তোমাদের সাথে কোন ত্র“টি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করেনি, তোমরা তাদেরকে দেয়া চুক্তি তাদের নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত পূর্ণ কর। নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের ভালবাসেন।
فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ 9.5
আরবি উচ্চারণ ৯.৫। ফাইযান্ সালাখাল্ আশ্হুরুল্ হুরুমু ফাক্বতুলুল্ মুশ্রিকীনা হাইছু অজ্বাত্তুমূ হুম্ অখুযূহুম্ ওয়াহ্ছুরূহুম্ অক্বউ’দূ লাহুম্ কুল্লা র্মাছোয়াদিন্ ফাইন্ তা-বূ অআক্বা-মুছ্ ছলা-তা অ আ-তাউয্ যাকা-তা ফাখাল্লূ সাবীলাহুম্; ইন্নাল্লা-হা গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫ অতঃপর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর এবং তাদেরকে পাকড়াও কর, তাদেরকে অবরোধ কর এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক। তবে যদি তারা তাওবা করে এবং সালাত কায়েম করে, আর যাকাত দেয়, তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَإِنْ أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّى يَسْمَعَ كَلَامَ اللَّهِ ثُمَّ أَبْلِغْهُ مَأْمَنَهُ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَعْلَمُونَ9.6
আরবি উচ্চারণ ৯.৬। অইন্ আহাদুম্ মিনাল্ মুশ্রিকী নাস্ তাজ্বা-রাকা ফাআর্জ্বিহু হাত্তা- ইয়াস্মা‘আ কালা-মাল্লা-হি ছুম্মা আব্লিগ্হু মামানাহ্; যা-লিকা বিআন্নাহুম্ ক্বওমুল্লা-ইয়া’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬ আর যদি মুশরিকদের কেউ তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাহলে তাকে আশ্রয় দাও, যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনে, অতঃপর তাকে পৌঁছিয়ে দাও তার নিরাপদ স্থানে। তা এই জন্য যে, তারা এমন এক কওম, যারা জানে না।
كَيْفَ يَكُونُ لِلْمُشْرِكِينَ عَهْدٌ عِنْدَ اللَّهِ وَعِنْدَ رَسُولِهِ إِلَّا الَّذِينَ عَاهَدْتُمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ فَمَا اسْتَقَامُوا لَكُمْ فَاسْتَقِيمُوا لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِين 9.7
আরবি উচ্চারণ ৯.৭। কাইফা ইয়াকূনু লিল্মুশ্রিক্বীনা ‘আহ্দুন্ ‘ইন্দাল্লা-হি অ‘ইন্দা রসূলিহী য় ইল্লাল্লাযীনা ‘আ-হাত্তুম্ ‘ইন্দাল্ মাস্জ্বিদিল্ হার-মি ফামাস্ তাক্ব-মূ লাকুম্ ফাস্তাক্বীমূ লাহুম্; ইন্নাল্লা-হা ইয়ুহিব্বুল্ মুত্তাকীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭ কীভাবে মুশরিকদের জন্য অঙ্গীকার থাকবে আল্লাহর কাছে ও তাঁর রাসূলের কাছে? অবশ্য যাদের সাথে মসজিদে হারামে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছ তাদের কথা আলাদা। অতএব যতক্ষণ তারা তোমাদের জন্য ঠিক থাকে, ততক্ষণ তোমরাও তাদের জন্য ঠিক থাক। নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের ভালবাসেন।
كَيْفَ وَإِنْ يَظْهَرُوا عَلَيْكُمْ لَا يَرْقُبُوا فِيكُمْ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً يُرْضُونَكُمْ بِأَفْوَاهِهِمْ وَتَأْبَى قُلُوبُهُمْ وَأَكْثَرُهُمْ فَاسِقُونَ 9.8
আরবি উচ্চারণ ৯.৮। কাইফা অ ইঁ ইয়াজ্হারূ ‘আলাইকুম্ লা-ইর্য়াকুবূ ফীকুম্ ইল্লাঁও অলা-যিম্মাহ্; ইর্য়ুদ্বুনাকুম্ বিআফ্ওয়া-হিহিম্ অ তাবা-কুলূবুহুম্ অ আক্ছারুহুম্ ফা-সিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮ কীভাবে থাকবে (মুশরিকদের জন্য অঙ্গীকার)? অথচ তারা যদি তোমাদের উপর জয়ী হয়, তাহলে তারা তোমাদের আত্মীয়তা ও অঙ্গীকারের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখে না। তারা তাদের মুখের (কথা) দ্বারা তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে, কিন্তু তাদের অন্তর তা অস্বীকার করে। আর তাদের অধিকাংশ ফাসিক।
اشْتَرَوْا بِآيَاتِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا فَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِهِ إِنَّهُمْ سَاءَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ9.9
আরবি উচ্চারণ ৯.৯। ইশ্তারাও বিআ-ইয়া-তি ল্লা-হি ছামানান্ ক্বালীলান্ ফাছোয়াদ্দূ ‘আন্ সাবীলিহ্; ইন্নাহুম্ সা – য়া মা-কা-নূ ইয়া’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯ তারা আল্লাহর আয়াতসমূহের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য খরিদ করে নিয়েছে। ফলত তারা তাঁর পথে বাধা দিয়েছে, নিশ্চয় তারা যে কাজ করত তা কতই না মন্দ!
لَا يَرْقُبُونَ فِي مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ9.10
আরবি উচ্চারণ ৯.১০। লা-ইর্য়াকুবূনা ফী মু”মিনিন্ ইল্লাওঁ অলা-যিম্মাহ্; অউলা – য়িকা হুমুল্ মু’তাদূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০ তারা কোন মুমিনের ব্যাপারে আত্মীয়তা ও অঙ্গীকারের খেয়াল রাখে না। আর তারাই হল সীমালঙ্ঘনকারী।
فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَنُفَصِّلُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ9.11
আরবি উচ্চারণ ৯.১১। ফাইন্ তা-বূ অআক্ব-মুছ্ ছলা-তা অ আ-তায়ুয্ যাকা-তা ফাইখ্ওয়া-নুকুম্ ফিদ্দীন্; অনুফাছ্ছিলুল্ আ-ইয়া-তি লিক্বওমিঁই ইয়া’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১ অতএব যদি তারা তাওবা করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত প্রদান করে, তবে দীনের মধ্যে তারা তোমাদের ভাই। আর আমি আয়াতসমূহ যথাযথভাবে বর্ণনা করি এমন কওমের জন্য যারা জানে।
وَإِنْ نَكَثُوا أَيْمَانَهُمْ مِنْ بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَطَعَنُوا فِي دِينِكُمْ فَقَاتِلُوا أَئِمَّةَ الْكُفْرِ إِنَّهُمْ لَا أَيْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَنْتَهُونَ 9.12
আরবি উচ্চারণ ৯.১২। অইন্ নাকাছূ য় আইমা-নাহুম্ মিম্ বা’দি ‘আহ্দিহিম্ অ ত্বোয়া‘আনূ ফী দীনিকুম্ ফাক্ব-তিলূ য় আয়িম্মাতাল্ কুফ্রি ইন্নাহুম্ লা য় আইমা-না লাহুম্ লা‘আল্লাহুম্ ইয়ান্তাহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২ আর যদি তারা তাদের অঙ্গীকারের পর তাদের কসম ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দীন সম্পর্কে কটূক্তি করে, তাহলে তোমরা কুফরের নেতাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর, নিশ্চয় তাদের কোন কসম নেই, যেন তারা বিরত হয়।
أَلَا تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَكَثُوا أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ وَهُمْ بَدَءُوكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ أَتَخْشَوْنَهُمْ فَاللَّهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَوْهُ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ9.13
আরবি উচ্চারণ ৯.১৩। আলা-তুক্ব-তিলূনা ক্বওমান্নাকাছূ য় আইমা-নাহুম্ অহাম্মূ বিইখ্র-র্জ্বি রাসূলি অহুম্ বাদায়ূ কুম্ আওওয়ালা র্মারাহ্; আতাখ্শাওনাহুম্ ফাল্লা-হু আহাক্বকু আন্ তাখ্শাওহু ইন্ কুন্তুম্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৩ তোমরা কেন এমন কওমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর না, যারা তাদের কসম ভঙ্গ করেছে এবং রাসূলকে বহিষ্কার করার ইচ্ছা পোষণ করেছে, আর তারাই প্রথমে তোমাদের সাথে আরম্ভ করেছে। তোমরা কি তাদেরকে ভয় করছ? অথচ আল্লাহ অধিক উপযুক্ত যে, তোমরা তাঁকে ভয় করবে, যদি তোমরা মুমিন হও।
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ9.14
আরবি উচ্চারণ ৯.১৪। ক্ব-তিলূহুম্ ইয়ু‘আয্যিব্হুমুল্লা-হু বিআইদীকুম্ অইয়ুখ্যিহিম্ অইয়ার্ন্ছুকুম্ ‘আলাইহিম্ অইয়াশ্ফি ছুদূরা ক্বওমিম্ মু”মিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৪ তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে আযাব দেবেন এবং তাদেরকে অপদস্থ করবেন, আর তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন এবং মুমিন কওমের অন্তরসমূহকে চিন্তামুক্ত করবেন।
وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ 9.15
আরবি উচ্চারণ ৯.১৫। অইয়ুয্হিব্ গইজোয়া কুলূ বিহিম্; অইয়াতূবুল্লা-হু ‘আলা- মাইঁ ইয়াশা – য়্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৫ আর তাদের অন্তরসমূহের ক্রোধ দূর করবেন এবং আল্লাহ যাকে চান তার তাওবা কবুল করেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تُتْرَكُوا وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلَا رَسُولِهِ وَلَا الْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةً وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ9.16
আরবি উচ্চারণ ৯.১৬। আম্ হাসিব্তুম্ আন্ তুত্রাকূ অলাম্মা- ইয়া’লামিল্লা-হু ল্লাযীনা জ্বা-হাদূ মিন্কুম্ অলাম্ ইয়াত্তাখিযূ মিন্ দূনিল্লা-হি অলা-রসূলিহী অলাল্ মুমিনীনা অলীজ্বাহ্; অল্লা-হু খবীরুম্ বিমা-তা’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৬ তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে? অথচ এখনও আল্লাহ যাচাই করেননি যে, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ ছাড়া কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেনি। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
مَا كَانَ لِلْمُشْرِكِينَ أَنْ يَعْمُرُوا مَسَاجِدَ اللَّهِ شَاهِدِينَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ بِالْكُفْرِ أُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ وَفِي النَّارِ هُمْ خَالِدُونَ9.17
আরবি উচ্চারণ ৯.১৭। মা-কা-না লিল্মুশ্রিকীনা আঁই ইয়া’মুরূ মাসা-জ্বিদাল্লা-হি শা-হিদীনা ‘আলা য় আন্ফুসিহিম্ বিল্কুফ্র্; উলা – য়িকা হাবিত্বোয়াত্ আ’মা-লুহুম্ অফিন্না-রি হুম্ খ-লিদূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৭ মুশরিকদের অধিকার নেই যে, তারা আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, নিজদের উপর কুফরীর সাক্ষ্য দেয়া অবস্থায়। এদেরই আমলসমূহ বরবাদ হয়েছে এবং আগুনেই তারা স্থায়ী হবে।
إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلَّا اللَّهَ فَعَسَى أُولَئِكَ أَنْ يَكُونُوا مِنَ الْمُهْتَدِينَ9.18
আরবি উচ্চারণ ৯.১৮। ইন্নামা- ইয়া”মুরু মাসা-জ্বিদাল্লা-হি মান্ আ-মানা বিল্লা-হি অল্ইয়াওমিল্ আ-খিরি অ আক্বা-মাছ্ ছলা-তা অআ-তা য্ যাকা-তা অ লাম্ ইয়াখ্শা ইল্লাল্লা-হা ফা‘আসা য় উলা – য়িকা আঁই ইয়াকূনূ মিনাল্ মুহ্তাদীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৮ একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, ওরা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا يَسْتَوُونَ عِنْدَ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ9.19
আরবি উচ্চারণ ৯.১৯। আজ্বা‘আল্তুম্ সিক্বা-ইয়াতাল্ হা – জ্জ্বি অ ‘ইমা-রতাল্ মাস্জ্বিদিল্ হারা-মি কামান্ আ-মানা বিল্লা-হি অল্ ইয়াওমিল্ আ-খিরি অজ্বা-হাদা ফী সাবীলিল্লা-হ্; লা-ইয়াস্তায়ূনা ‘ইন্দাল্লা-হ্; অল্লা-হু লা-ইয়াহ্ দিল্ ক্বওমাজ্জোয়া-লিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১৯ তোমরা কি হাজীদের পানি পান করান ও মসজিদুল হারাম আবাদ করাকে ঐ ব্যক্তির মত বিবেচনা কর, যে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে। তারা আল্লাহর কাছে বরাবর নয়। আর আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না।
الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ9.20
আরবি উচ্চারণ ৯.২০। আল্লাযীনা আ-মানূ অহা-জ্বারূ অজ্বা-হাদূ ফী সাবীলিল্লা-হি বিআম্ওয়া-লিহিম্ অআন্ফুসিহিম্ আ’জোয়ামু দারাজ্বাতান্ ‘ইন্দাল্লা-হ্; অউলা – য়িকা হুমুল্ ফা – য়িযূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২০ যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে, আর আল্লাহর পথে নিজদের মাল ও জান দিয়ে জিহাদ করেছে, আল্লাহর কাছে তারা বড়ই মর্যাদাবান আর তারাই সফলকাম।
يُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُمْ بِرَحْمَةٍ مِنْهُ وَرِضْوَانٍ وَجَنَّاتٍ لَهُمْ فِيهَا نَعِيمٌ مُقِيمٌ 9.21
আরবি উচ্চারণ ৯.২১। ইয়ুবাশ্শিরুহুম্ রব্বুহুম্ বিরহ্মাতিম্ মিন্হু অরিদ্ব্ওয়া-নিওঁ অজ্বান্না-তিল্ লাহুম্ ফীহা-না‘ঈমুম্ মুক্বীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২১ তাদের প্রতিপালক তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে সুসংবাদ দিচ্ছেন রহমত ও সন্তুষ্টির এবং এমন জান্নাতসমূহের যাতে রয়েছে তাদের জন্য স্থায়ী নিআমত।
خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ9.22
আরবি উচ্চারণ ৯.২২। খ-লিদীনা ফীহা য় আবাদা-; ইন্নাল্লা-হা ‘ইন্দাহু য় আজরুন্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২২ তথায় তারা থাকবে চিরকাল। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا آبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْإِيمَانِ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ9.23
আরবি উচ্চারণ ৯.২৩। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ লা-তাত্তাখিযূ য় আ-বা – য়াকুম্ অইখ্ওয়া-নাকুম্ আওলিয়া – য়া ইনিস্ তাহাব্বুল্ কুফ্রা ‘আলাল্ ঈমা-ন্; অমাইঁ ইয়াতাওয়াল্লাহুম্ মিন্কুম্ ফাউলা – য়িকা হুমুজ জোয়া-লিমূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৩ হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজদের পিতা ও ভাইদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরীকে প্রিয় মনে করে। তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারাই যালিম।
قُلْ إِنْ كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ9.24
আরবি উচ্চারণ ৯.২৪। কুল্ ইন্ কা-না আ-বা – য়ুকুম্ অ আব্না – য়ুকুম্ অ ইখ্ওয়া-নুকুম্ অ আয্ওয়া-জুকুম্ অ‘আশীরাতুকুম্ অ আম্ওয়া-লু নিক্ব তারাফ্তুমূহা-অ তিজ্বা-রাতুন্ তাখ্শাওনা কাসা-দাহা-অ মাসা-কিনু র্তাদ্বোয়াওনাহা য় আহাব্বা ইলাইকুম্ মিনাল্লা-হি অরসূলিহী অজ্বিহা-দিন্ ফী সাবীলিহী ফাতারব্বাছূ হাত্তা-ইয়াতিয়াল্লা-হু বিআম্রিহ্; অল্লা-হু লা-ইয়াহ্দিল্ ক্বওমাল্ ফা-সিক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৪ বল, ‘তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের সে সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর সে ব্যবসা যার মন্দা হওয়ার আশঙ্কা তোমরা করছ এবং সে বাসস্থান, যা তোমরা পছন্দ করছ, যদি তোমাদের কাছে অধিক প্রিয় হয় আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে, তবে তোমরা অপেক্ষা কর আল্লাহ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত’। আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।
لَقَدْ نَصَرَكُمُ اللَّهُ فِي مَوَاطِنَ كَثِيرَةٍ وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ9.25
আরবি উচ্চারণ ৯.২৫। লাক্বদ্ নাছোয়ারকুমু ল্লা-হু ফী মাওয়া-ত্বিনা- কাছীরতিঁও অইয়াওমা হুনাইনিন্ ইয্ আ’জ্বাবাত্কুম্ কাছ্রাতুকুম্ ফালাম্ তুগ্নি ‘আন্কুম্ শাইয়াঁও অ দ্বোয়া-ক্বাত্ ‘আলাইকুমুল্ র্আদ্বু বিমা-রাহুবাত্ ছুম্মা অল্লাইতুম্ মুদ্বিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৫ অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন বহু জায়গায় এবং হুনাইনের দিনে, যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য তোমাদেরকে উৎফুল্ল করেছিল, অথচ তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি। আর যমীন প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের উপর সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে।
ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَى رَسُولِهِ وَعَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَأَنْزَلَ جُنُودًا لَمْ تَرَوْهَا وَعَذَّبَ الَّذِينَ كَفَرُوا وَذَلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ9.26
আরবি উচ্চারণ ৯.২৬। ছুম্মা আন্যালাল্লা-হু সাকীনাতাহূ ‘আলা- রাসূলিহী অ‘আলাল্ মু”মিনীনা অআন্যালা জুনূদাল্ লাম্ তারাওহা-অ‘আয্যাবাল্লাযীনা কাফারূ; অযা-লিকা জ্বাযা – য়ুল্ কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৬ তারপর আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে প্রশান্তি নাযিল করলেন তাঁর রাসূলের উপর ও মুমিনদের উপর এবং নাযিল করলেন এমন সৈন্যবাহিনী যাদেরকে তোমরা দেখনি, আর কাফিরদেরকে আযাব দিলেন। আর এটা কাফিরদের কর্মফল।
ثُمَّ يَتُوبُ اللَّهُ مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ عَلَى مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ 9.27
আরবি উচ্চারণ ৯.২৭। ছুম্মা ইয়াতূবুল্ ল্লা-হু মিম্ বা’দি যা-লিকা ‘আলা- মাইঁ ইয়াশা-য়্; অল্লা-হু গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৭ এরপর আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা তাদের তাওবা কবূল করবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ نَجَسٌ فَلَا يَقْرَبُوا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَذَا وَإِنْ خِفْتُمْ عَيْلَةً فَسَوْفَ يُغْنِيكُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ إِنْ شَاءَ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ9.28
আরবি উচ্চারণ ৯.২৮। ইয়া য় আইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূয় ইন্নামাল্ মুশ্রিকূনা নাজ্বাসুন্ ফালা- ইয়াক্বরাবুল্ মাস্জ্বিদাল্ হারা-মা বা’দা ‘আ-মিহিম্ হা-যা-অইন্ খিফ্তুম্ ‘আইলাতান্ ফাসাওফা ইয়ুগ্নীকুমুল্লা-হু মিন্ফাদ্ব্লিহী য় ইন্ শা – য়্; ইন্নাল্লা-হা ‘আলীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৮ হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয় মুশরিকরা নাপাক, সুতরাং তারা যেন মসজিদুল হারামের নিকটবর্তী না হয় তাদের এ বছরের পর। আর যদি তোমরা দারিদ্র্যকে ভয় কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ অনুগ্রহে তোমাদের অভাবমুক্ত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ 9.29
আরবি উচ্চারণ ৯.২৯। ক্ব-তিলুল্লাযীনা লা-ইয়ু”মিনূনা বিল্লা-হি অলা-বিল্ ইয়াওমিল্ আ-খিরি অলা- ইয়ুর্হারিমূনা মা- র্হারমাল্লা-হু অরসূলুহূ অলা- ইয়াদীনূনা দীনাল্ হাক্বক্বি মিনাল্লাযীনা ঊতুল্ কিতা-বা হাত্তা- ইয়ুতুল্ জ্বিয্ ইয়াতা ‘আইঁ ইয়াদিঁও অহুম্ ছোয়া-গিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.২৯ তোমরা লড়াই কর আহলে কিতাবের সে সব লোকের সাথে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে না এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম মনে করে না, আর সত্য দীন গ্রহণ করে না, যতক্ষণ না তারা স্বহস্তে নত হয়ে জিয্য়া দেয়।
وَقَالَتِ الْيَهُودُ عُزَيْرٌ ابْنُ اللَّهِ وَقَالَتِ النَّصَارَى الْمَسِيحُ ابْنُ اللَّهِ ذَلِكَ قَوْلُهُمْ بِأَفْوَاهِهِمْ يُضَاهِئُونَ قَوْلَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَبْلُ قَاتَلَهُمُ اللَّهُ أَنَّى يُؤْفَكُونَ9.30
আরবি উচ্চারণ ৯.৩০। অক্ব-লাতিল্ ইয়াহূদু উ’যাইরুনিব্নুল্লা-হি অক্ব-লাতিন্নাছোয়া-রাল্ মাসীহুব্নুল্লা-হ্; যা-লিকা ক্বওলুহুম্ বিআফ্ওয়া-হিহিম্ ইয়ুদ্বোয়া-হিয়ূনা ক্বওলাল্লাযীনা কাফারূ মিন্ ক্বব্ল্; ক্ব-তালাহুমু ল্লা-হু আন্না-ইয়ু”ফাকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩০ আর ইয়াহূদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে, মাসীহ আল্লাহর পুত্র। এটা তাদের মুখের কথা, তারা সেসব লোকের কথার অনুরূপ বলছে যারা ইতঃপূর্বে কুফরী করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন, কোথায় ফেরানো হচ্ছে এদেরকে?
اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَهًا وَاحِدًا لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ9.31
আরবি উচ্চারণ ৯.৩১। ইত্তাখাযূ য় আহ্বা-রহুম্ অরুহ্বা-নাহুম্ র্আবা-বাম্ মিন্ দূনিল্লা-হি অল্ মাসী হাব্না র্মাইয়ামা অমা য় উমিরূ য় ইল্লা-লিইয়া’বুদূ য় ইলা-হাঁও ওয়া-হিদান্ লা য় ইলা-হা ইল্লা-হূ; সুব্হা-নাহূ ‘আম্মা- ইয়ুশ্রিকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩১ তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পণ্ডিতগণ ও সংসার-বিরাগীদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়ামপুত্র মাসীহকেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছে, তিনি ছাড়া কোন (হক) ইলাহ নেই। তারা যে শরীক করে তিনি তা থেকে পবিত্র।
يُرِيدُونَ أَنْ يُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَيَأْبَى اللَّهُ إِلَّا أَنْ يُتِمَّ نُورَهُ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ 9.32
আরবি উচ্চারণ ৯.৩২। ইয়ুরীদূনা আইঁ ইয়ুত্ব্ফিয়ূ নূরল্লা-হি বিআফ্ওয়া-হিহিম্ অইয়া”বা ল্লা-হু ইল্লা য় আইঁ ইয়ুতিম্মা নূরাহূ অলাও কারিহাল্ কা-ফিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩২ তারা আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায় তাদের মুখের (ফুঁক) দ্বারা, কিন্তু আল্লাহ তো তাঁর নূর পরিপূর্ণ করা ছাড়া অন্য কিছু চান না, যদিও কাফিররা অপছন্দ করে।
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ9.33
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৩। হুঅল্লাযী য় র্আসালা রাসূলাহূ বিল্হুদা- অদীনিল্ হাক্বক্বি লিইয়ুজ্ হিরাহূ ‘আলাদ্দীনি কুল্লিহী অলাও কারিহাল্ মুশ্রিকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৩ তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন সহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি একে সকল দীনের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা অপছন্দ করে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِنَ الْأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ9.34
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৪। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ য় ইন্না কাছীরাঁম্ মিনাল্ আহ্বা-রি র্অরুহ্ বা-নি লাইয়াকুলূনা আম্ওয়া-লান্ না-সি বিল্বা-ত্বিলি অ ইয়াছুদ্দূনা ‘আন্ সাবীলিল্লা-হ্; অল্লাযীনা ইয়াক্নিযূ নায্যাহাবা অল্ ফিদ্ব্দ্বোয়াতা অলা-ইয়ুন্ফিকুনাহা-ফী সাবীলিল্লা-হি ফাবার্শ্শি হুম্ বি‘আযা-বিন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৪ হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয় পণ্ডিত ও সংসার বিরাগীদের অনেকেই মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, আর তারা আল্লাহর পথে বাধা দেয় এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।
يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُونَ9.35
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৫। ইয়াওমা ইয়ুহ্মা-‘আলাইহা- ফী না-রি জ্বাহান্নামা ফাতুক্ওয়া- বিহা-জিবা-হুহুম্ অজুনূ বুহুম্ অ জুহূরুহুম্; হা-যা- মা- কানায্তুম্ লিআন্ফুসিকুম্ ফাযূকুমা-কুন্তুম্ তাক্নিযূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৫ যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর’।
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ9.36
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৬। ইন্না ‘ইদ্দাতাশ্ শুহূরি ‘ইন্দাল্লা-হিছ্ না- ‘আশারা শাহ্রান্ ফী কিতা-বিল্লা-হি ইয়াওমা খলাক্বাস্ সামাওয়া-তি অল্ র্আদ্বোয়া মিন্হা য় র্আবা‘আতুন্ হুরুম্; যা-লিকাদ্দীনুল্ ক্বাইয়্যিমু ফালা-তাজ্লিমূ ফীহিন্না আন্ফুসাকুম্ অক্ব-তিলুল্ মুশ্রিকীনা কা – ফ্ফাতান্ কামা-ইয়ুক্ব-তিলূনাকুম্ কা – ফ্ ফাহ্; অ’লামূ য় আন্নাল্লা-হা মা‘আল্ মুত্তাক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৬ নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি সম্মানিত, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন যুল্ম করো না, আর তোমরা সকলে মুশরিকদের সাথে লড়াই কর যেমনিভাবে তারা সকলে তোমাদের সাথে লড়াই করে, আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُوا يُحِلُّونَهُ عَامًا يُحِلُّونَهُ عَامًا وَيُحَرِّمُونَهُ عَامًا لِيُوَاطِئُوا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ فَيُحِلُّوا مَا حَرَّمَ اللَّهُ زُيِّنَ لَهُمْ سُوءُ أَعْمَالِهِمْ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ9.37
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৭। ইন্নামান্ নাসী – য়ু যিয়া-দাতুন্ ফীল্ কুফ্রি ইয়ুদ্দোয়াল্লু বিহিল্লাযীনা কাফারূ-ইয়ুহিল্লূনাহূ ‘আ-মাওঁ অইয়ুর্হারিমূনাহূ ‘আ-মাল্ লিইয়ুওয়া-ত্বিয়ূ ‘ইদ্দাতা মা-র্হারামাল্লা-হু ফাইয়ুহিল্লূ মা-র্হারামাল্লা-হ্; যুইয়্যিনা লাহুম্ সূ – য়ু আ’মা-লিহিম্; অল্লা-হু লা-ইয়াহ্দিল্ ক্বওমাল্ কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৭ নিশ্চয় কোন মাসকে পিছিয়ে দেয়া কুফরী বৃদ্ধি করে, এর দ্বারা কাফিররা পথভ্রষ্ট হয়, তারা এটি এক বছর হালাল করে এবং আরেক বছর হারাম করে, যাতে তারা আল্লাহ যা হারাম করেছেন তার সংখ্যা ঠিক রাখে। ফলে আল্লাহ যা হারাম করেছেন, তা তারা হালাল করে। তাদের মন্দ আমলসমূহ তাদের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে। আর আল্লাহ কাফির কওমকে হিদায়াত দেন না।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ 9.38
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৮। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ মা-লাকুম্ ইযা-ক্বীলা লাকুমুন্ ফিরূ ফী সাবীলিল্লা-হিছ্ ছা-ক্বল্তুম্ ইলাল্ র্আদ্ব্; আরাদ্বীতুম্ বিল্হাইয়া-তি দ্দুন্ইয়া-মিনাল্ আ-খিরতি ফামা- মাতা-ঊ’ল্ হাইয়া-তিদ্দুন্ইয়া- ফিল্ আ-খিরতি ইল্লা-ক্বালীল্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৮ হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কী হল, যখন তোমাদের বলা হয়, আল্লাহর রাস্তায় (যুদ্ধে) বের হও, তখন তোমরা যমীনের প্রতি প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়? তবে কি তোমরা আখিরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে সন্তুষ্ট হলে? অথচ দুনিয়ার জীবনের ভোগ-সামগ্রী আখিরাতের তুলনায় একেবারেই নগণ্য।
إِلَّا تَنْفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ9.39
আরবি উচ্চারণ ৯.৩৯। ইল্লা-তান্ফিরূ ইয়ু‘আয্যিব্কুম্ ‘আযা-বান্ ‘আলীমাঁও অ ইয়াস্তাব্দিল্ ক্বওমান্ গইরকুম্ ;অলা-তার্দ্বুরূহু শাইয়া-; অল্লা-হু ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বর্দী।
বাংলা অনুবাদ ৯.৩৯ যদি তোমরা (যুদ্ধে) বের না হও, তিনি তোমাদের বেদনাদায়ক আযাব দেবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক কওমকে আনয়ন করবেন, আর তোমরা তাঁর কিছুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
إِلَّا تَنْصُرُوهُ فَقَدْ نَصَرَهُ اللَّهُ إِذْ أَخْرَجَهُ الَّذِينَ كَفَرُوا ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَيْهِ وَأَيَّدَهُ بِجُنُودٍ لَمْ تَرَوْهَا وَجَعَلَ كَلِمَةَ الَّذِينَ كَفَرُوا السُّفْلَى وَكَلِمَةُ اللَّهِ هِيَ الْعُلْيَا وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ 9.40
আরবি উচ্চারণ ৯.৪০। ইল্লা- তান্ছুরূহু ফাক্বদ্ নাছোয়ারাহু ল্লা-হু ইয্ আখ্রজ্বাহুল্লাযীনা কাফারূ ছা-নিয়াছ্ নাইনি ইয্ হুমা-ফিল্ গ-রি ইয্ ইয়াকুলু লিছোয়া-হিবিহী লা-তাহ্যান্ ইন্নাল্লা-হা মা‘আনা- ফাআন্যালাল্লা-হু সাকীনাতাহূ ‘আলাইহি অআইয়্যাদাহূ বিজনু দিল্ লাম্তারাওহা-অজ্বা‘আলা কালিমাতাল্লাযীনা কাফারুস্ সুফ্লা-অকালিমাতু ল্লা-হি হিয়াল্ ‘উল্ইয়া-; অল্লা-হু ‘আযীযুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪০ যদি তোমরা তাকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহ তাকে সাহায্য করেছেন যখন কাফিররা তাকে বের করে দিল, সে ছিল দু’জনের দ্বিতীয়জন। যখন তারা উভয়ে পাহাড়ের একটি গুহায় অবস্থান করছিল, সে তার সঙ্গীকে বলল, ‘তুমি পেরেশান হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন’। অতঃপর আল্লাহ তার উপর তাঁর পক্ষ থেকে প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাকে এমন এক সৈন্য বাহিনী দ্বারা সাহায্য করলেন যাদেরকে তোমরা দেখনি এবং তিনি কাফিরদের বাণী অতি নিচু করে দিলেন। আর আল্লাহর বাণীই সুউচ্চ। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ9.41
আরবি উচ্চারণ ৯.৪১। ইন্ফিরূ খিফা-ফাঁও অছিক্ব-লাঁও অ জ্বা-হিদূ বিআম্ওয়া-লিকুম্ অ আন্ফুসিকুম্ ফী সাবীলি ল্লা-হ্; যা-লিকুম খইরুল্লাকুম্ ইন্ কুন্তুম্ তা’লামূন।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪১ তোমরা হালকা ও ভারী উভয় অবস্থায় যুদ্ধে বের হও এবং তোমাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।
لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا وَسَفَرًا قَاصِدًا لَاتَّبَعُوكَ وَلَكِنْ بَعُدَتْ عَلَيْهِمُ الشُّقَّةُ وَسَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَوِ اسْتَطَعْنَا لَخَرَجْنَا مَعَكُمْ يُهْلِكُونَ أَنْفُسَهُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ9.42
আরবি উচ্চারণ ৯.৪২। লাও কা-না ‘আরাদ্বোয়ান্ কারীবাঁও অসাফারান ক্ব-ছিদাল্ লাত্তাবাঊ’কা অলা-কিম্ বা‘ঊদাত্ ‘আলাইহিমুশ্ শুক্বক্বাহ্; অসাইয়াহ্লিফূনা বিল্লা-হি লাওয়িস্তাত্বোয়া’না- লাখারাজনা- মা‘আকুম্ ইয়ুহ্লিকূনা আন্ফুসাহুম্ অল্লা-হু ইয়া’লামু ইন্নাহুম্ লাকা-যিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪২ যদি তা নিকটলভ্য হত, আর সফর হত সহজসাধ্য, তবে তারা অবশ্যই তোমার অনুসরণ করত, কিন্তু তাদের জন্য দূরত্ব দীর্ঘ হল। আর অচিরেই তারা আল্লাহর কসম করবে, ‘যদি আমরা সক্ষম হতাম তাহলে অবশ্যই তোমাদের সাথে বের হতাম’, তারা তাদের নিজদেরকেই ধ্বংস করে। আর আল্লাহ জানেন, নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।
عَفَا اللَّهُ عَنْكَ لِمَ أَذِنْتَ لَهُمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَتَعْلَمَ الْكَاذِبِينَ 9.43
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৩। ‘আফাল্লা-হু ‘আন্কা লিমা আযিন্তা লাহুম্ হাত্তা-ইয়াতাবাইয়্যানা লাকাল্ লাযীনা ছদাকু অ তা’লামাল্ কা-যিবীন।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৩ আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করেছেন। তুমি তাদেরকে কেন অনুমতি দিলে, যতক্ষণ না তোমার কাছে স্পষ্ট হয় তারা যারা সত্য বলেছে এবং তুমি জেনে নাও মিথ্যাবাদীদেরকে।
لَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالْمُتَّقِينَ9.44
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৪। লা-ইয়াস্তাযিনুকাল্লাযীনা ইয়ুমিনূনা বিল্লা-হি অল্ইয়াওমিল্ আ-খিরি আঁই ইয়ুজ্বা-হিদূ বিআম্ওয়া-লিহিম্ অ আন্ফুসিহিম্; অল্লা-হু ‘আলীমুম্ বিল্মুত্তাক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৪ যারা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসে ঈমান রাখে, তারা তোমার কাছে তাদের মাল ও জান দিয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকার অনুমতি চায় না, আর আল্লাহ মুত্তাকীদের সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত।
إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ9.45
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৫। ইন্নামা-ইয়াস্তা”যিনুকাল্ লাযীনা লা-ইয়ুমিনূনা বিল্লা-হি অল্ ইয়াওমিল্ আ-খিরি র্অতাবাত্ কুলূবুহুম্ ফাহুম্ ফী রইবিহিম্ ইয়াতারদ্দাদূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৫ একমাত্র সেসব লোক অনুমতি চায় যারা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসে ঈমান রাখে না, আর তাদের অন্তরসমূহ সংশয়গ্রস্ত হয়ে গেছে। সুতরাং তারা তাদের সংশয়েই ঘুরপাক খেতে থাকে।
وَلَوْ أَرَادُوا الْخُرُوجَ لَأَعَدُّوا لَهُ عُدَّةً وَلَكِنْ كَرِهَ اللَّهُ انْبِعَاثَهُمْ فَثَبَّطَهُمْ وَقِيلَ اقْعُدُوا مَعَ الْقَاعِدِينَ9.46
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৬। অলাও আর-দুল্ খুরূজ্বা লাআ‘আদ্দূ লাহূ ‘উদ্দাতাঁও অলা-কিন্ কারিহা ল্লা-হুম্ বি‘আ-ছাহুম্ ফাছাব্বাত্বোয়াহুম্ অক্বীলাক্ব ‘ঊদূ মা‘আল্ ক্ব-‘ইদীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৬ আর যদি তারা বের হওয়ার ইচ্ছা করত, তবে তারা তার জন্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করত, কিন্তু আল্লাহ তাদের বের হওয়াকে অপছন্দ করলেন, ফলে তিনি তাদেরকে পিছিয়ে দিলেন, আর বলা হল, ‘তোমরা বসে পড়া লোকদের সাথে বসে থাক’।
لَوْ خَرَجُوا فِيكُمْ مَا زَادُوكُمْ إِلَّا خَبَالًا وَلَأَوْضَعُوا خِلَالَكُمْ وَلَأَوْضَعُوا خِلَالَكُمْ يَبْغُونَكُمُ الْفِتْنَةَ وَفِيكُمْ سَمَّاعُونَ لَهُمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ9.47
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৭। লাও খারাজ্বুফীকুম্ মা-যা-দূকুম্ ইল্লা-খব-লাওঁ অলা আওদ্বোয়া‘ঊ খিলা-লাকুম্ ইয়াব্গূনাকুমুল্ ফিত্নাতা অফীকুম্ সাম্মা-‘ঊনা লাহুম্; অল্লা-হু ‘আলীমুম্ বিজ্জোয়া-লিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৭ যদি তারা তোমাদের সাথে বের হত, তবে তোমাদের মধ্যে ফাসাদই বৃদ্ধি করত এবং তোমাদের মাঝে ছুটোছুটি করত, তোমাদের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টির অনুসন্ধানে। আর তোমাদের মধ্যে রয়েছে তাদের কথা অধিক শ্রবণকারী, আর আল্লাহ যালিমদের সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত।
لَقَدِ ابْتَغَوُا الْفِتْنَةَ مِنْ قَبْلُ وَقَلَّبُوا لَكَ الْأُمُورَ حَتَّى جَاءَ الْحَقُّ وَظَهَرَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ كَارِهُونَ9.48
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৮। লাক্বদিব্তাগায়ুল্ ফিত্নাতা মিন্ ক্বব্লু অক্বল্লাবূ লাকাল্ উমূরা হাত্তা-জ্বায়াল্ হাক্বক্ব ুঅজোয়াহারা আম্রুল্লা-হি অহুম্ কা-রিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৮ অবশ্য তারা ইতঃপূর্বে ফিতনা অনুসন্ধান করেছিল এবং তোমার কাজগুলো পালটে দিয়েছিল, অবশেষে হকের আগমন ঘটল এবং আল্লাহর দীন বিজয়ী হল, অথচ তারা ছিল অপছন্দকারী।
وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ ائْذَنْ لِي وَلَا تَفْتِنِّي أَلَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُوا وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ9.49
আরবি উচ্চারণ ৯.৪৯। অমিন্হুম্ মাইঁ ইয়াকুলু যাল্লী অলা-তাফ্তিন্নী; আলা-ফিল্ ফিত্নাতি সাক্বাত্বু; অইন্না জ্বাহান্নামা লামুহীত্বোয়াতুম্ বিল্কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৪৯ আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমাকে অনুমতি দিন এবং আমাকে ফিতনায় ফেলবেন না’। শুনে রাখ, তারা ফিতনাতেই পড়ে আছে। আর নিশ্চয় জাহান্নাম কাফিরদের বেষ্টনকারী।
إِنْ تُصِبْكَ حَسَنَةٌ تَسُؤْهُمْ وَإِنْ تُصِبْكَ مُصِيبَةٌ يَقُولُوا قَدْ أَخَذْنَا أَمْرَنَا مِنْ قَبْلُ وَيَتَوَلَّوْا وَهُمْ فَرِحُونَ 9.50
আরবি উচ্চারণ ৯.৫০। ইন্ তুছিব্কা হাসানাতুন্ তাসূহুম্ অইন্ তুছিব্কা মুছীবাতুঁই ইয়াকুলূ ক্বদ্ আখায্না য় আম্রনা-মিন্ ক্বব্লু অইয়াতাওয়াল্লাও অহুম্ ফারিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫০ যদি তোমার কাছে কোন কল্যাণ পৌঁছে, তবে তা তাদেরকে কষ্ট দেয়। আর যদি তোমাকে কোন বিপদ আক্রান্ত করে, তবে তারা বলে, পূর্বেই আমরা সতর্কতা অবলম্বন করেছি এবং তারা ফিরে যায় উল্লসিত অবস্থায়।
قُلْ لَنْ يُصِيبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ9.51
আরবি উচ্চারণ ৯.৫১। কুল্ লাইঁ ইয়ুসীবানা য় ইল্লা-মা-কাতাবা ল্লা-হু লানা-, হুঅ মাওলা-না- অ‘আলাল্লা-হি ফাল্ইয়াতা ওয়াক্কালিল্ মু”মিনূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫১ বল, ‘আমাদেরকে শুধু তা-ই আক্রান্ত করবে যা আল্লাহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন। তিনিই আমাদের অভিভাবক, আর আল্লাহর উপরই যেন মুমিনরা তাওয়াক্কুল করে’।
قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَنْ يُصِيبَكُمُ اللَّهُ بِعَذَابٍ مِنْ عِنْدِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا فَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُمْ مُتَرَبِّصُونَ9.52
আরবি উচ্চারণ ৯.৫২। কুল্ হাল্ তারাব্বাছূনা বিনা য় ইল্লা য় ইহ্দাল্ হুস্নাইয়াইন্; অনাহ্নু নাতারব্বাছু বিকুম্ আইঁ ইয়ুছীবাকুমুল্লা-হু বি‘আযা-বিম্ মিন্ ‘ইন্দিহী য় আও বিআইদীনা-ফাতারব্বাছূ য় ইন্না-মাআ’কুম্ মুতারব্বিছূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫২ বল, ‘তোমরা কেবল আমাদের জন্য দু’টি কল্যাণের একটির অপেক্ষা করছ, আর আমরাও তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছি যে, আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাত দ্বারা আযাব দেবেন। অতএব তোমরা অপেক্ষা কর, নিশ্চয় আমরা তোমাদের সাথে অপেক্ষমাণ’।
قُلْ أَنْفِقُوا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا لَنْ يُتَقَبَّلَ مِنْكُمْ إِنَّكُمْ كُنْتُمْ قَوْمًا فَاسِقِينَ9.53
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৩। কুল্ আন্ফিকু ত্বোয়াও‘আন আও র্কাহাল্ লাইঁ ইয়ুতাক্বব্বালা মিন্কুম্; ইন্নাকুম্ কুন্তুম্ ক্বাওমান্ ফা-সিক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৩ বল, ‘তোমরা খুশি হয়ে দান কর অথবা বাধ্য হয়ে, তোমাদের থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না। নিশ্চয় তোমরা হচ্ছ ফাসিক কওম।
وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ وَلَا يَأْتُونَ الصَّلَاةَ إِلَّا وَهُمْ كُسَالَى وَلَا يَأْتُونَ الصَّلَاةَ إِلَّا وَهُمْ كُسَالَى وَلَا يُنْفِقُونَ إِلَّا وَهُمْ كَارِهُونَ9.54
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৪। অমা-মান‘আহুম্ আন্ তুক্ববালা মিন্হুম্ নাফাক্ব-তুহুম্ ইল্লা য় আন্নাহুম্ কাফারূ বিল্লা-হি অবিরসূলিহী অলা- ইয়া”তূনাছ্ ছলা-তা ইল্লা- অহুম্ কুসা-লা- অলা-ইয়ুন্ফিকুনা ইল্লা- অহুম্ কা-রিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৪ আর তাদের দান কবূল থেকে একমাত্র বাধা এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে, আর তারা সালাতে আসে না, তবে অলস অবস্থায় এবং তারা দান করে না, তবে অপছন্দকারী অবস্থায়।
فَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنْفُسُهُمْ وَهُمْ كَافِرُونَ9.55
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৫। ফালা-তু’জ্বিব্কা আম্ওয়া-লুহুম্ অলা য় আওলা-দুহুম্; ইন্নামা-ইয়ুরীদুল্লা-হু লিইয়ু ‘আয্যিবাহুম্ বিহা- ফিল্হাইয়া-তিদ্ দুন্ইয়া-অতায্হাক্ব আন্ফুসুহুম্ অহুম্ কা-ফিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৫ অতএব তোমাকে যেন মুগ্ধ না করে তাদের ধন-সম্পদ এবং সন্তানাদি, আল্লাহ এর দ্বারা কেবল তাদের আযাব দিতে চান দুনিয়ার জীবনে এবং তাদের জান বের হবে কাফির অবস্থায়।
وَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ إِنَّهُمْ لَمِنْكُمْ وَمَا هُمْ مِنْكُمْ وَلَكِنَّهُمْ قَوْمٌ يَفْرَقُونَ9.56
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৬। অ ইয়াহ্লিফূনা বিল্লা-হি ইন্নাহুম্ লামিন্কুম্; অমা-হুম্ মিনকুম্ অলা-কিন্নাহুম্ ক্বওমুঁই ইয়াফ্রাকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৬ আর তারা আল্লাহর কসম করে যে, নিশ্চয় তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত, অথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং তারা এমন কওম যারা ভীত হয়।
لَوْ يَجِدُونَ مَلْجَأً أَوْ مَغَارَاتٍ أَوْ مُدَّخَلًا لَوَلَّوْا إِلَيْهِ وَهُمْ يَجْمَحُونَ 9.57
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৭। লাও ইয়াজ্বিদূনা মাল্জ্বায়ান্ আও মাগ-র-তিন্ আও মুদ্দাখলাল্ লাঅল্লাও ইলাইহি অহুম্ ইয়াজমাহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৭ যদি তারা কোন আশ্রয়স্থল, বা কোন গুহা অথবা লুকিয়ে থাকার কোন প্রবেশস্থল পেত, তবে তারা সেদিকেই দৌড়ে পালাত।
وَمِنْهُمْ مَنْ يَلْمِزُكَ فِي الصَّدَقَاتِ فَإِنْ أُعْطُوا مِنْهَا رَضُوا وَإِنْ لَمْ يُعْطَوْا مِنْهَا إِذَا هُمْ يَسْخَطُونَ9.58
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৮। অমিন্হুম্ মাঁই ইয়াল্মিযুকা ফিছ্ ছদাক্ব-তি ফাইন্ উ’ত্বু মিন্হা-রাদ্বূ অইল্লাম্ ইয়ু’ত্বোয়াও মিন্হা য় ইযা-হুম্ ইয়াস্খাত্বুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৮ আর তাদের মধ্যে কেউ আছে, যে সদাকা বিষয়ে তোমাকে দোষারোপ করে। তবে যদি তাদেরকে তা থেকে দেয়া হয়, তারা সন্তুষ্ট থাকে, আর যদি তা থেকে দেয়া না হয়, তখন তারা অসন্তুষ্ট হয়।
وَلَوْ أَنَّهُمْ رَضُوا مَا آتَاهُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ سَيُؤْتِينَا اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ وَرَسُولُهُ إِنَّا إِلَى اللَّهِ رَاغِبُونَ9.59
আরবি উচ্চারণ ৯.৫৯। অলাও আন্নাহুম্ রাদ্বূ মা য় আ-তা-হুমুল্লা-হু অ রসূলুহূ অ ক্ব-লূ হাস্বুনাল্লা-হু সাইয়ু”তী নাল্লা-হু মিন্ ফাদ্ব্লিহী অরসূলুহূ য় ইন্না য় ইলাল্লা-হি র-গিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৫৯ আর যদি তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের যা দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকত এবং বলত, ‘আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ দান করবেন এবং তাঁর রাসূলও। নিশ্চয় আমরা আল্লাহর দিকে ধাবিত’।
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَاِبْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ 9.60
আরবি উচ্চারণ ৯.৬০। ইন্নামাছ্ ছদাক্ব-তু লিল্ফুক্বারা – য়ি অল্মাসা-কীনি অল্‘আ-মিলীনা ‘আলাইহা- অল্ মুআল্লাফাতি কুলূবুহুম্ অর্ফি রিক্ব-বি অল্ গ-রিমীনা অফী সাবীলিল্লা-হি অব্নিস্ সাবীল্; ফারীদ্বোয়াতাম্ মিনাল্লা-হ্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬০ নিশ্চয় সদাকা হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
وَمِنْهُمُ الَّذِينَ يُؤْذُونَ النَّبِيَّ وَيَقُولُونَ هُوَ أُذُنٌ قُلْ أُذُنُ خَيْرٍ لَكُمْ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَيُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِينَ وَرَحْمَةٌ لِلَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ9.61
আরবি উচ্চারণ ৯.৬১। অ মিন্হুমুল্ লাযীনা ইয়ু”যূ নান্ নাবীইয়্যা অইয়াকুলূনা হুঅ উযুন্; কুল্ উযুনু খইরিল্লাকুম্ ইয়ু”মিনু বিল্লা-হি অইয়ু”মিনু লিল্ মু”মিনীনা অরহ্মাতুল্ লিল্লাযীনা আ-মানূ মিন্কুম্; অল্লাযীনা ইয়ু”যূনা রসূলাল্লা-হি লাহুম্ ‘আযা-বুন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬১ আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘তিনি (সব বিষয়ে) শ্রবণকারী’। বল, তোমাদের জন্য যা কল্যাণের তা শ্রবণকারী। সে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং মুমিনদের বিশ্বাস করে, আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তাদের জন্য সে রহমত এবং যারা আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
يَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ لِيُرْضُوكُمْ وَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَقُّ أَنْ يُرْضُوهُ إِنْ كَانُوا مُؤْمِنِينَ9.62
আরবি উচ্চারণ ৯.৬২। ইয়াহ্লিফূনা বিল্লা-হি লাকুম্ লিইর্য়ুদ্বুকুম্ অল্লা-হু অ রসূলুহূ য় আহাক্বকু আঁই ইর্য়ুদূহু ইন্ কা-নূ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬২ তারা তোমাদের কাছে আল্লাহর কসম করে, যাতে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক হকদার যে, তারা তাকে সন্তুষ্ট করবে, যদি তারা ঈমানদার হয়ে থাকে।
أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّهُ مَنْ يُحَادِدِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَأَنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا ذَلِكَ الْخِزْيُ الْعَظِيمُ 9.63
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৩। আলাম্ ইয়া’লামূ য় আন্নাহূ মাইঁ ইয়ুহা-দিদি ল্লা-হা অরসূলাহূ ফাআন্না লাহূ না-রা জ্বাহান্নামা খ-লিদান্ ফীহা-; যা-লিকাল্ খিয্ইয়ুল্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৩ তারা কি জানে না, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে, তবে তার জন্য অবশ্যই জাহান্নাম, তাতে সে চিরকাল থাকবে। এটা মহালাঞ্ছনা।
يَحْذَرُ الْمُنَافِقُونَ أَنْ تُنَزَّلَ عَلَيْهِمْ سُورَةٌ تُنَبِّئُهُمْ بِمَا فِي قُلُوبِهِمْ قُلِ اسْتَهْزِئُوا إِنَّ اللَّهَ مُخْرِجٌ مَا تَحْذَرُونَ9.64
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৪। ইয়াহ্যারুল্ মুনাফিকুনা আন্ তুনায্যালা ‘আলাইহিম্ সূরাতুন্ তুনাব্বিয়ুহুম্ বিমা-ফী কুলূবিহিম্; কুলিস্ তাহ্যিয়ূ ইন্নাল্লা-হা মুখ্রিযুম্ মা-তাহ্যারূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৪ মুনাফিকরা ভয় করে যে, তাদের বিষয়ে এমন একটি সূরা অবতীর্ণ হবে, যা তাদের অন্তরের বিষয়গুলি জানিয়ে দেবে। বল, ‘তোমরা উপহাস করতে থাক। নিশ্চয় আল্লাহ বের করবেন, তোমরা যা ভয় করছ’।
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ9.65
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৫। অ লায়িন্ সায়াল্তা হুম্ লাইয়াকু লুন্না ইন্নামা-কুন্না-নাখূদ্বু অনাল্‘আব্; কুল্ আবিল্লা-হি অআ-ইয়া-তিহী অরসূলিহী কুন্তুম্ তাস্তাহ্যিয়ুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৫ আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা আলাপচারিতা ও খেল-তামাশা করছিলাম। বল, ‘আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা বিদ্রƒপ করছিলে’?
لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِنْ نَعْفُ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْكُمْ نُعَذِّبْ طَائِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ9.66
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৬। লা-তা’তাযিরূ ক্বদ্ কার্ফাতুম্ বা’দা ঈমা-নিকুম্; ইন্ না’ফু ‘আন্ ত্বোয়া-য়িফাতিম্ মিন্কুম্ নু‘আয্যিব্ ত্বোয়া – য়িফাতাম্ বিআন্নাহুম্ কা-নূ মুজ্বুরিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৬ তোমরা ওযর পেশ করো না। তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ। যদি আমি তোমাদের থেকে একটি দলকে ক্ষমা করে দেই, তবে অপর দলকে আযাব দেব। কারণ, তারা হচ্ছে অপরাধী।
الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُمْ مِنْ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمُنْكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوفِ وَيَقْبِضُونَ أَيْدِيَهُمْ نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ هُمُ الْفَاسِقُونَ9.67
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৭। অল্ মুনা-ফিকুনা অল্মুনা-ফিক্বা-তু বা’দ্বুহুম্ মিম্ বা’দ্ব্; ইয়ামুরূনা বিল্মুন্কারি অইয়ান্হাওনা ‘আনিল্ মা’রূফি অইয়াক্ববিদ্বূনা আইদিয়াহুম্; নাসুল্লা-হা ফানাসিয়াহুম্; ইন্নাল্ মুনা-ফিক্বীনা হুমুল্ ফা-সিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৭ মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীরা একে অপরের অংশ, তারা মন্দ কাজের আদেশ দেয়, আর ভাল কাজ থেকে নিষেধ করে, তারা নিজদের হাতগুলোকে সঙ্কুচিত করে রাখে। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ভুলে গিয়েছেন, নিশ্চয় মুনাফিকরা হচ্ছে ফাসিক।
وَعَدَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا هِيَ حَسْبُهُمْ وَلَعَنَهُمُ اللَّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُقِيمٌ9.68
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৮। অ‘আদাল্লা-হুল্ মুনা-ফিক্বীনা অল্মুনা-ফিক্বা-তি অল্কুফ্ফা-রা না-রা জ্বাহান্নামা খ-লিদীনা ফীহা-; হিয়া হাস্বুহুম্ অলা‘আনাহুমুল্লা-হু অলাহুম্ ‘আযা-বুম্ মুক্বীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৮ আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন। তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটি তাদের জন্য যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের লা‘নত করেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।
كَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَانُوا أَشَدَّ مِنْكُمْ قُوَّةً وَأَكْثَرَ أَمْوَالًا وَأَوْلَادًا فَاسْتَمْتَعُوا بِخَلَاقِهِمْ فَاسْتَمْتَعْتُمْ بِخَلَاقِكُمْ كَمَا اسْتَمْتَعَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ بِخَلَاقِهِمْ وَخُضْتُمْ كَالَّذِي خَاضُوا أُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ9.69
আরবি উচ্চারণ ৯.৬৯। কাল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিকুম্ কা-নূ য় আশাদ্দা মিন্কুম্ কুওয়্যাতাঁও অআক্ছারা আম্ওয়ালাঁও অআওলা-দা-; ফাস্তাম্তা‘ঊ বিখলা-ক্বিহিম্ ফাস্তাম্তা’তুম্ বিখলা-ক্বিকুম্ কামাস্ তাম্তা‘আল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিকুম্ বিখলা-ক্বিহিম্ অখুদ্ব্তুম্ কাল্লাযী খ-দ্বূ ; উলা – য়িকা হাবিত্বোয়াত্ আ’মা-লুহুম্ ফিদ্দুন্ইয়া- অল্ আ-খিরতি অউলা-য়িকা হুমুল্ খ-সিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৬৯ তাদের মত, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল, তারা ছিল তোমাদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী, ধন-সম্পদ ও সন্তানাদিতে অধিক। ফলে তারা তাদের অংশ ভোগ করেছে, আর তোমরাও তোমাদের অংশ ভোগ করেছ, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তারা তাদের অংশ ভোগ করেছে। আর তোমরা খেল-তামাশায় মত্ত হয়েছ, যেমনিভাবে তারা মত্ত হয়েছে। এদেরই আমলসমূহ নষ্ট হয়ে গিয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে । আর তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
أَلَمْ يَأْتِهِمْ نَبَأُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَقَوْمِ إِبْرَاهِيمَ وَأَصْحَابِ مَدْيَنَ وَالْمُؤْتَفِكَاتِ أَتَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ فَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ9.70
আরবি উচ্চারণ ৯.৭০। আলাম্ ইয়া”তিহিম্ নাবায়ুল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিহিম্ ক্বওমি নূহিঁও অ‘আ-দিঁও অছামূদা অক্বওমি ইব্রাহীমা অআছ্হা-বি মাদ্ইয়ানা অল্ মু”তাফিকা-ত্; আতাত্ হুম্ রসুলুহুম্ বিল্বাইয়্যিনা-তি ফামা-কা-নাল্লা-হু লিইয়াজ্ লিমাহুম্ অলা-কিন্ কা-নূ য় আন্ফুসাহুম্ ইয়াজ্লিমূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭০ তাদের কাছে কি তাদের পূর্বের লোকদের সংবাদ পৌঁছেনি, নূহের কওম, আদ, সামূদ, ইবরাহীমের কওম, মাদায়েনবাসী ও বিধ্বস্ত নগরীর? তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ প্রমাণসমূহ নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। অতএব আল্লাহ তাদের উপর যুলম করার নন, বরং তারাই তাদের নিজদের উপর যুলম করছিল।
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ9.71
আরবি উচ্চারণ ৯.৭১। অল্মু”মিনূনা অল্মু”মিনা-তু বা’দ্বুহুম্ আওলিয়া – য়ু বা’দ্ব্। ইয়া”মুরূনা বিল্মা’রূফি অইয়ান্হাওনা ‘আনিল্ মুন্কারি অইয়ুক্বীমূনাছ্ ছলা-তা অইয়ু”তূনায্ যাকা-তা অইয়ুত্বী‘ঊনাল্লা-হা অরাসূলাহ্; উলা – য়িকা সাইর্য়াহামুহুমুল্লা-হ্; ইন্নাল্লা-হা ‘আযীযুন্ হাকীম্
বাংলা অনুবাদ ৯.৭১ আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়িম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ9.72
আরবি উচ্চারণ ৯.৭২। অ‘আদাল্লা-হুল্ মু”মিনীনা অল্ মু”মিনা-তি জ্বান্না-তিন্ তাজরী মিন্ তাহ্তিহাল্ আন্হা-রু খ-লিদীনা ফীহা- অমাসা-কিনা ত্বোয়াইয়িবাতান্ ফী জ্বান্না-তি ‘আদ্ন্; অরিদ্ব্ওয়া-নুম্ মিনাল্লা-হি আর্ক্বা; যা-লিকা হুঅল্ ফাওযুল্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭২ আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে এবং (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে পবিত্র বাসস্থানসমূহের। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড়। এটাই মহাসফলতা।
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ9.73
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৩। ইয়া য় আইয়্যুহান্ নাবিয়্যু জ্বা-হিদিল্ কুফ্ফা-রা অল্মুনা-ফিক্বীনা অগ্লুজ ‘আলাইহিম্; অমাওয়া-হুম্ জাহান্নাম্; অবি”সাল্ মার্ছী।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৩ হে নবী, কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর এবং তাদের উপর কঠোর হও, আর তাদের ঠিকানা হল জাহান্নাম; আর তা কতইনা নিকৃষ্ট স্থান।
يَحْلِفُونَ بِاللَّهِ مَا قَالُوا وَلَقَدْ قَالُوا كَلِمَةَ الْكُفْرِ وَكَفَرُوا بَعْدَ إِسْلَامِهِمْ وَهَمُّوا بِمَا لَمْ يَنَالُوا وَمَا نَقَمُوا إِلَّا أَنْ أَغْنَاهُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ مِنْ فَضْلِهِ فَإِنْ يَتُوبُوا يَكُ خَيْرًا لَهُمْ وَإِنْ يَتَوَلَّوْا يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ عَذَابًا أَلِيمًا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَمَا لَهُمْ فِي الْأَرْضِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ9.74
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৪। ইয়াহ্লিফূনা বিল্লা-হি মা-ক্বা-লূ; অলাক্বদ্ ক্ব-লূ কালিমাতাল্ কুফ্রি অকাফারূ বা’দা ইস্লা-মিহিম্ অহাম্মূ বিমা-লাম্ ইয়ানা-লূ অমা-নাকামূ য় ইল্লা য় আন্ আগ্নাহুমুল্লা-হু অ রসূলুহূ মিন্ ফাদ্ব্লিহী ফাইঁ ইয়্যাতূবূ ইয়াকু খইরাল্ লাহুম্ অইঁ ইয়াতাঅল্লাওঁ ইয়ু‘আয্যিব্ হুমুল্লা-হু ‘আযা-বান্ আলীমান্ ফিদ্দুন্ইয়া- অল্ আ-খিরতি অমা-লাহুম্ ফিল্ র্আদ্বি মিঁও অলিইঁয়্যিও অলা-নার্ছী।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৪ তারা আল্লাহর কসম করে যে, তারা বলেনি, অথচ তারা কুফরী বাক্য বলেছে এবং ইসলাম গ্রহণের পর কুফরী করেছে। আর মনস্থ করেছে এমন কিছুর যা তারা পায়নি। আর তারা একমাত্র এ কারণেই দোষারোপ করেছিল যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাঁর স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করেছেন। এরপর যদি তারা তাওবা করে, তবে তা হবে তাদের জন্য উত্তম, আর যদি তারা বিমুখ হয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে বেদনাদায়ক আযাব দেবেন, আর তাদের জন্য যমীনে নেই কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী।
وَمِنْهُمْ مَنْ عَاهَدَ اللَّهَ لَئِنْ آتَانَا مِنْ فَضْلِهِ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُونَنَّ مِنَ الصَّالِحِينَ9.75
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৫। অমিন্হুম্ মান্ ‘আ-হাদাল্লা-হা লায়িন্ আ-তা-না-মিন্ ফাদ্ব্লিহী লানাছ্ছোদ্দাক্বন্না অলানাকূনান্না মিনাছ্ ছোয়া-লিহীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৫ আর তাদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করে যে, যদি আল্লাহ তার স্বীয় অনুগ্রহে আমাদের দান করেন, আমরা অবশ্যই দান-খয়রাত করব এবং অবশ্যই আমরা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত হব ।
فَلَمَّا آتَاهُمْ مِنْ فَضْلِهِ بَخِلُوا بِهِ وَتَوَلَّوْا وَهُمْ مُعْرِضُونَ 9.76
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৬। ফালাম্মা য় আ-তা-হুম্ মিন্ ফাদ্ব্লিহী বাখিলূ বিহী অতাঅল্লাওঁ অহুম্ মু’রিদ্বূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৬ অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ দান করলেন, তারা তাতে কার্পণ্য করল এবং বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।
فَأَعْقَبَهُمْ نِفَاقًا فِي قُلُوبِهِمْ إِلَى يَوْمِ يَلْقَوْنَهُ بِمَا أَخْلَفُوا اللَّهَ مَا وَعَدُوهُ وَبِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ9.77
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৭। ফাআ’ক্ববাহুম্ নিফা-ক্বান্ ফী কুলূ বিহিম্ ইলা-ইয়াওমি ইয়াল্ক্বওনাহূ বিমা য় আখ্লাফুল্লা-হা মা- অ‘আদূহু অবিমা-কা-নূ ইয়াক্যিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৭ সুতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে নিফাক রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তারা আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারণে।
أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ وَأَنَّ اللَّهَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ9.78
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৮। আলাম্ ইয়া’লামূ য় আন্নাল্লা-হা ইয়া’লামু র্সিরাহুম্ অনাজ্ব্ওয়া-হুম্ অআন্নাল্লা-হা ‘আল্লা-মুল্ গুইয়ূব্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৮ তারা কি জানে না, নিশ্চয় আল্লাহ তাদের গোপনীয় বিষয় ও গোপন পরামর্শ জানেন? আর নিশ্চয় আল্লাহ গায়েবসমূহের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞাত।
الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِينَ لَا يَجِدُونَ إِلَّا جُهْدَهُمْ فَيَسْخَرُونَ مِنْهُمْ سَخِرَ اللَّهُ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ9.79
আরবি উচ্চারণ ৯.৭৯। আল্লাযীনা ইয়াল্মিযূনাল্ মুত্ত্বোয়াওয়্যি‘ঈনা মিনাল্ মুমিনীনা ফিছ্ ছদাক্ব-তি অল্লাযীনা লা-ইয়াজ্বিদূনা ইল্লা- জুহ্দাহুম্ ফাইয়াস্খারূনা মিন্হুম্; সাখিরাল্লা-হু মিন্হুম্ অলাহুম্ ‘আযাবুন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৭৯ যারা দোষারোপ করে সদাকার ব্যাপারে মুমিনদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাদানকারীদেরকে এবং তাদেরকে যারা তাদের পরিশ্রম ছাড়া কিছুই পায় না। অতঃপর তারা তাদেরকে নিয়ে উপহাস করে, আল্লাহও তাদেরকে নিয়ে উপহাস করেন এবং তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ9.80
আরবি উচ্চারণ ৯.৮০। ইস্তার্গ্ফি লাহুম্ আও লা-তাস্তার্গ্ফি লাহুম্; ইন্ তাস্তাগ্ র্ফিলাহুম্ সাব্‘ঈনা র্মারতান্ ফালাইঁ ইয়াগ্ফিরাল্লা-হু লাহুম্; যা-লিকা বিআন্নাহুম্ কাফারূ বিল্লা-হি অরসূলিহ্; অল্লা-হু লা-ইয়াহ্দিল্ ক্বওমাল্ ফা-সিক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮০ তুমি তাদের জন্য ক্ষমা চাও, অথবা তাদের জন্য ক্ষমা না চাও। যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বার ক্ষমা চাও, তবুও আল্লাহ তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবেন না। কারণ তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে, আর আল্লাহ ফাসিক লোকদেরকে হিদায়াত দেন না।
فَرِحَ الْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُولِ اللَّهِ وَكَرِهُوا أَنْ يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَقَالُوا لَا تَنْفِرُوا فِي الْحَرِّ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا لَوْ كَانُوا يَفْقَهُونَ9.81
আরবি উচ্চারণ ৯.৮১। ফারিহাল্ মুখল্লাফূনা বিমাক্ব‘আদিহিম্ খিলা-ফা রসূলিল্লা-হি অকারিহূ য় আঁই ইয়ুজ্বা-হিদূ বিআম্ওয়া-লিহিম্ অআন্ফুসিহিম্ ফী সাবীলিল্লা-হি অক্ব-লূ লা-তান্ফিরূ ফির্ল্হা; কুল্ না-রু জ্বাহান্নামা আশাদ্দু র্হার-; লাও কা-নূ ইয়াফ্ক্বাহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮১ পেছনে থাকা লোকগুলো আল্লাহর রাসূলের বিপক্ষে বসে থাকতে পেরে খুশি হল, আর তারা অপছন্দ করল তাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে এবং তারা বলল, ‘তোমরা গরমের মধ্যে বের হয়ো না’। বল, ‘জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, যদি তারা বুঝত’।
فَلْيَضْحَكُوا قَلِيلًا وَلْيَبْكُوا كَثِيرًا جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ9.82
আরবি উচ্চারণ ৯.৮২। ফাল্ইয়াদ্ব্হাকূ ক্বালীলাঁও অল্ ইয়াব্কূ কাছীরান্ জ্বাযা – য়াম্ বিমা- কা-নূ ইয়াক্সিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮২ অতএব তারা অল্প হাসুক, আর বেশি কাঁদুক, তারা যা অর্জন করেছে তার বিনিময়ে।
فَإِنْ رَجَعَكَ اللَّهُ إِلَى طَائِفَةٍ مِنْهُمْ فَاسْتَأْذَنُوكَ لِلْخُرُوجِ فَقُلْ لَنْ تَخْرُجُوا مَعِيَ أَبَدًا فَقُلْ لَنْ تَخْرُجُوا مَعِيَ أَبَدًا وَلَنْ تُقَاتِلُوا مَعِيَ عَدُوًّا إِنَّكُمْ رَضِيتُمْ بِالْقُعُودِ أَوَّلَ مَرَّةٍ فَاقْعُدُوا مَعَ الْخَالِفِينَ9.83
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৩। ফার্ই রাজ্বা‘আকাল্লা-হু ইলা-ত্বোয়া – য়িফাতিম্ মিন্হুম্ ফাস্ তা”যানূকা লিল্খুরূজ্বি ফাকুল্ লান্ তাখ্রুজ্বুমাই’ইয়া আবাদাঁও অলান্ তুক্ব-তিলূ মাই’ইয়া আদুওয়া-; ইন্নাকুম্ রাদ্বীতুম্ বিল্ক্ব ‘ঊদি আঅলা র্মারতিন্ ফাক্ব‘ঊদূ মা‘আল্ খ-লিফীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৩ অতএব যদি আল্লাহ তোমাকে তাদের কোন সম্প্রদায়ের কাছে ফিরিয়ে আনেন এবং তারা তোমার কাছে বের হওয়ার অনুমতি চায়, তবে তুমি বল, ‘তোমরা আমার সাথে কখনো বের হবে না এবং আমার সাথে কোন দুশমনের বিরুদ্ধে কখনও লড়াই করবে না। নিশ্চয় তোমরা প্রথমবার বসে থাকাই পছন্দ করেছ, সুতরাং তোমরা বসে থাকো পেছনে (বসে) থাকা লোকদের সাথে।
وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلَا تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ إِنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُوا وَهُمْ فَاسِقُونَ9.84
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৪। অলা-তুছোয়াল্লি ‘আলা য় আহাদিম্ মিন্হুম্ মা-তা আবাদাঁও অলা-তাকুম্ ‘আলা-ক্বাব্রিহ্; ইন্নাহুম্ কাফারূ বিল্লা-হি অরসূলিহী অমা-তূ অহুম্ ফা-সিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৪ আর তাদের মধ্যে যে মারা গিয়েছে, তার উপর তুমি জানাযা পড়বে না এবং তার কবরের উপর দাঁড়াবে না। নিশ্চয় তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে এবং তারা ফাসিক অবস্থায় মারা গিয়েছে ।
وَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَأَوْلَادُهُمْ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ أَنْ يُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِي الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنْفُسُهُمْ وَهُمْ كَافِرُونَ 9.85
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৫। অলা-তু’জ্বিব্কা আম্ওয়া-লুহুম্ অআওলা-দুহুম্; ইন্নামা- ইয়ুরীদুল্লা-হু আঁই ইয়ু ‘আয্যিবাহুম্ বিহা-ফি দ্দুন্ইয়া অতায্হাক্বা আন্ফুসূহুম্ অহুম্ কা-ফিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৫ আর তোমাকে যেন মুগ্ধ না করে তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি, আল্লাহ এর দ্বারা কেবল তাদের দুনিয়ার জীবনে আযাব দিতে চান এবং কাফির অবস্থায় তাদের জান বের হয়ে যাবে।
وَإِذَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ أَنْ آمِنُوا بِاللَّهِ وَجَاهِدُوا مَعَ رَسُولِهِ اسْتَأْذَنَكَ أُولُو الطَّوْلِ مِنْهُمْ وَقَالُوا ذَرْنَا نَكُنْ مَعَ الْقَاعِدِينَ9.86
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৬। অইযা য় উন্যিলাত্ সূরাতুন্ আন্ আ-মিনূ বিল্লা-হি অজ্বা-হিদূ মা‘আ রসূলিহিস্ তা”যানাকা উলুত্ত্বোয়াওলি মিন্হুম্ অক্ব-লূ র্যানা- নাকুম্ মা‘আল্ ক্ব-‘ইদীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৬ আর যখন কোন সূরা এ মর্মে নাযিল করা হয় যে, ‘তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন এবং তাঁর রাসূলের সাথে জিহাদ কর’, তখন তাদের সামর্থ্যবান লোকেরা তোমার কাছে অনুমতি চায় এবং বলে, ‘আমাদেরকে ছেড়ে দাও, আমরা বসে থাকা লোকদের সাথে থাকব’।
رَضُوا بِأَنْ يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ9.87
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৭। রাদ্বূ বি আইঁ ইয়াকূনূ মা‘আল্ খাওয়া-লিফি অত্বুবি‘আ ‘আলা- কুলূ বিহিম্ ফাহুম্ লা-ইয়াফ্ ক্বাহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৭ তারা পেছনে থাকা লোকদের সাথে থাকা বেছে নিল এবং তাদের অন্তরসমূহের উপর মোহর এঁটে দেয়া হল, ফলে তারা বুঝতে পারে না ।
لَكِنِ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ جَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ وَأُولَئِكَ لَهُمُ الْخَيْرَاتُ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ9.88
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৮। লা-কির্নি রসূলু অল্লাযীনা আ-মানূ মা‘আহূ জ্বা-হাদূ বিআম্ওয়া-লিহিম্ অআন্ফুসিহিম্; অউলা – য়িকা লাহুমুল্ খাইর-তু অউলা – য়িকা হুমুল্ মুফলিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৮ কিন্তু রাসূল ও তার সাথে মুমিনরা তাদের মাল ও জান দিয়ে জিহাদ করে, আর সে সব লোকের জন্যই রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ এবং তারাই সফলকাম।
أَعَدَّ اللَّهُ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ 9.89
আরবি উচ্চারণ ৯.৮৯। আ‘আদ্দা ল্লা-হু লাহুম্ জ্বান্না-তিন্ তাজরী মিন্ তাহ্তিহাল্ আন্হা-রু খ-লিদীনা ফীহা-; যা-লিকাল্ ফাওযুল্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৮৯ আল্লাহ তাদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাতসমূহ, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটিই মহাসফলতা।
وَجَاءَ الْمُعَذِّرُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ لِيُؤْذَنَ لَهُمْ وَقَعَدَ الَّذِينَ كَذَبُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ سَيُصِيبُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ9.90
আরবি উচ্চারণ ৯.৯০। অজ্বা – য়াল্ মু‘আয্যিরূনা মিনাল্ আ’র-বি লিইয়ু”যানা লাহুম্ অ ক্বা‘আদা ল্লাযীনা কাযাবুল্লা-হা অ রসূলাহ্; সাইয়ুসু বুল্লাযীনা কাফারূ মিন্হুম্ ‘আযা-বুন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯০ আর গ্রামবাসীদের থেকে ওযর পেশকারীরা আসল, যেন তাদের অনুমতি দেয়া হয় এবং (জিহাদ না করে) বসে থাকল তারা, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে মিথ্যা বলেছিল। তাদের মধ্য থেকে যারা কুফরী করেছে, তাদেরকে অচিরেই যন্ত্রণাদায়ক আযাব আক্রান্ত করবে।
لَيْسَ عَلَى الضُّعَفَاءِ وَلَا عَلَى الْمَرْضَى وَلَا عَلَى الَّذِينَ لَا يَجِدُونَ مَا يُنْفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُوا لِلَّهِ وَرَسُولِهِ مَا عَلَى الْمُحْسِنِينَ مِنْ سَبِيلٍ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ9.91
আরবি উচ্চারণ ৯.৯১। লাইসা আলাদ্ব্ দ্বু‘আফা -য়ি অলা-‘আলাল্ র্মাদ্বোয়া- অলা- ‘আলাল্লাযীনা লা-ইয়াজ্বিদূনা মা-ইয়ুন্ফিকুনা হারাজুন্ ইযা-নাছোয়াহূ লিল্লা-হি অরসূলিহ্; মা-‘আলাল্ মুহ্সিনীনা মিন্ সাবীল্; অল্লা-হু গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯১ কোন দোষ নেই দুর্বলদের উপর, অসুস্থদের উপর ও যারা দান করার মত কিছু পায় না তাদের উপর, যদি তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হিতাকাক্সক্ষী হয়। সৎকর্মশীলদের উপর (অভিযোগের) কোন পথ নেই, আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَلَا عَلَى الَّذِينَ إِذَا مَا أَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ قُلْتَ لَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ تَوَلَّوْا وَأَعْيُنُهُمْ تَفِيضُ مِنَ الدَّمْعِ حَزَنًا أَلَّا يَجِدُوا مَا يُنْفِقُونَ9.92
আরবি উচ্চারণ ৯.৯২। অলা-‘আলাল্লাযীনা ইযা-মা য় আতাওকা লিতাহ্মিলাহুম্ কুল্তা লা য় আজ্বিদু মা য় আহ্লিকুম্ ‘আলাইহি তাঅল্লাও অ‘আইয়ুনুহুম্ তাফীদ্বু মিনাদ্ দাম্‘ই হাযানান্ আল্লা- ইয়াজ্বিদূ মা-ইয়ুন্ফিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯২ আর তাদের উপরও কোন দোষ নেই, যারা তোমার কাছে আসে, যাতে তুমি তাদের বাহন জোগাতে পার। তুমি বললে, ‘আমি তোমাদেরকে বহন করানোর জন্য কিছু পাচ্ছি না, তখন তারা ফিরে গেল, তাদের চোখ অশ্র“তে ভেসে যাওয়া অবস্থায়, এ দুঃখে যে, তারা পাচ্ছে না এমন কিছু যা তারা ব্যয় করবে’।
إِنَّمَا السَّبِيلُ عَلَى الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ وَهُمْ أَغْنِيَاءُ رَضُوا بِأَنْ يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطَبَعَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ9.93
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৩। ইন্নামাস্ সাবীলু ‘আলা ল্লাযীনা ইয়াস্ তা”যিনূনাকা অহুম্ আগ্নিয়া-য়ু রদ্বূ বিআইঁ ইয়াকূনূ মা‘আল্ খাওয়া-লিফি অ ত্বোয়াবা‘আল্লা-হু ‘আলা-কুলূবিহিম্ ফাহুম্ লা-ইয়া’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৩ কিন্তু (অভিযোগের) পথ আছে তাদের উপর, যারা তোমার কাছে অনুমতি চায় অথচ তারা ধনী, তারা পেছনে থাকা লোকদের সাথে থাকা বেছে নিয়েছে আর আল্লাহ তাদের অন্তর- সমূহের উপর মোহর এঁটে দিয়েছেন, তাই তারা জানে না।
يَعْتَذِرُونَ إِلَيْكُمْ إِذَا رَجَعْتُمْ إِلَيْهِمْ قُلْ لَا تَعْتَذِرُوا لَنْ نُؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّأَنَا اللَّهُ مِنْ أَخْبَارِكُمْ وَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ9.94
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৪। ইয়া’তাযিরূনা ইলাইকুম ইযা-রাজ্বাতুম্ ইলাইহিম্; কুল্লা-তাতাযিরূ লান্ নুমিনা লাকুম্ ক্বদ্ নাব্বাআনাল্লা-হু মিন্ আখ্বা-রিকুম্; অসাইয়ারল্লা-হু ‘আমালাকুম্ অরসূলুহূ ছুম্মা তুরদ্দূনা ইলা-‘আ-লিমিল্ গইবি অশ্শাহা-দাতি ফাইয়ুনাব্বিউকুম্ বিমা-কুন্তুম্ তা’মালূন।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৪ তারা তোমাদের নিকট ওযর পেশ করবে যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে যাবে। বল, ‘তোমরা ওযর পেশ করো না, আমরা তোমাদেরকে কখনো বিশ্বাস করব না। অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের খবর আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। আর আল্লাহ তোমাদের আমল দেখবেন এবং তাঁর রাসূলও। তারপর তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে গায়েব ও প্রকাশ্যের পরিজ্ঞাতার নিকট। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা তোমরা আমল করতে সে সম্পর্কে’।
سَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ إِلَيْهِمْ لِتُعْرِضُوا عَنْهُمْ فَأَعْرِضُوا عَنْهُمْ إِنَّهُمْ رِجْسٌ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ9.95
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৫। সাইয়াহ্লিফূনা বিল্লা-হি লাকুম্ ইযান্ ক্বলাব্তুম্ ইলাইহিম্ লিতু’রিদ্বু ‘আন্হুম; ফাআ’রিদূ ‘আনহুম্; ইন্নাহুম্ রিজসুওঁ ওয়ামা ওয়া-হুম্ জ্বাহান্নামু জ্বাযা – য়াম্ বিমা-কা-নূ ইয়াক্সিবূন।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৫ যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে যাবে, তখন তারা শীঘ্রই তোমাদের কাছে আল্লাহর নামে শপথ করবে, যাতে তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর। সুতরাং তোমরা তাদেরকে উপক্ষো কর। নিশ্চয় তারা অপবিত্র এবং তারা যা অর্জন করত, তার প্রতিফলস্বরূপ জাহান্নাম হল তাদের আশ্রয়স্থল।
يَحْلِفُونَ لَكُمْ لِتَرْضَوْا عَنْهُمْ فَإِنْ تَرْضَوْا عَنْهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ 9.96
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৬। ইয়াহ্লিফূনা লাকুম্ লির্তাদ্বোয়াও ‘আন্হুম্ ফাইন র্তাদ্বোয়াও ‘আন্হুম্ ফাইন্নাল্লা-হা লা-ইর্য়াদ্বোয়া-‘আনিল ক্বওমিল্ ফা-সিক্বীন।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৬ তারা শপথ করবে তোমাদের নিকট, যাতে তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হও। অতএব তোমরা যদিও তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ফাসিক কওমের প্রতি সন্তুষ্ট হন না।
الْأَعْرَابُ أَشَدُّ كُفْرًا وَنِفَاقًا وَأَجْدَرُ أَلَّا يَعْلَمُوا حُدُودَ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ9.97
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৭। আল্ আ’রা-বু আশাদ্দু কুফ্রাওঁ অনিফা-ক্বওঁ অআজদারু আল্লা-ইয়া’লামূ হুদূদা মা য় আন্যালাল্লা-হু ‘আলা-রসূলিহ্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৭ বেদুঈনরা কুফর ও কপটতায় কঠিনতর এবং আল্লাহ তাঁর রাসূলের উপর যা নাযিল করেছেন তার সীমারেখা না জানার অধিক উপযোগী। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
وَمِنَ الْأَعْرَابِ مَنْ يَتَّخِذُ مَا يُنْفِقُ مَغْرَمًا وَيَتَرَبَّصُ بِكُمُ الدَّوَائِرَ عَلَيْهِمْ دَائِرَةُ السَّوْءِ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ9.98
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৮। অমিনাল্ আ’রা-বি মাইঁ ইয়াত্তাখিযু মা-ইয়ুন্ফিকু মাগ্রামাওঁ অ ইয়াতারব্বাছু বিকুমুদ দাওয়া – র্য়ি; ‘আলাইহিম্ দা – য়িরাতুস্ সাওয়ি অল্লা-হু সামী’উন্ ‘আলীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৮ আর বেদুঈনদের কেউ কেউ যা (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে, তা জরিমানা গণ্য করে এবং তোমাদের দুর্বিপাকের প্রতীক্ষায় থাকে। দুর্বিপাক তাদের উপরই এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
وَمِنَ الْأَعْرَابِ مَنْ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَيَتَّخِذُ مَا يُنْفِقُ قُرُبَاتٍ عِنْدَ اللَّهِ وَصَلَوَاتِ الرَّسُولِ أَلَا إِنَّهَا قُرْبَةٌ لَهُمْ سَيُدْخِلُهُمُ اللَّهُ فِي رَحْمَتِهِ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ 9.99
আরবি উচ্চারণ ৯.৯৯। অমিনাল্ আ’রা-বি মাইঁ ইয়ুমিনু বিল্লা-হি অল্ইয়াওমিল্ আ-খিরি ওয়া ইয়াত্তাখিযু মা- ইয়ুন্ফিকু কুরুবা-তিন্ ‘ইন্দাল্লা-হি অছলাওয়া-র্তি রসূল; ‘আলা য় ইন্নাহা-ক্বর্ ুবাতুল্লাহুম্; সাইয়ুদ্খিলুহুমুল্লা-হ্; ফী রহ্মাতিহ্; ইন্নাল্লা-হা গাফূরুর রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.৯৯ আর বেদুঈনদের কেউ কেউ আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এবং যা ব্যয় করে তাকে আল্লাহর নিকট নৈকট্য ও রাসূলের দো‘আর উপায় হিসেবে গণ্য করে। জেনে রাখ, নিশ্চয় তা তাদের জন্য নৈকট্যের মাধ্যম। অচিরেই আল্লাহ তাদেরকে তাঁর রহমতে প্রবেশ করাবেন। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ9.100
আরবি উচ্চারণ ৯.১০০। অস্সা-বিকুনাল্ আওয়্যালূনা মিনাল্ মুহা-জ্বিরীনা অল্ আন্ছোয়া-রি অল্লাযীনাত্ তাবা‘ঊহুম্ বিইহ্সা-র্নি রাদ্বিয়াল্লা-হু ‘আন্হুম্ অরাদ্বূ আন্হু অ‘আদ্দা লাহুম্ জ্বান্না-তিন্ তাজরী তাহ্তাহাল্ আন্হা-রু খ-লিদীনা ফীহা য় আবাদা-; যা-লিকাল্ ফাওযুল্ ‘আজীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০০ আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম ও অগ্রগামী এবং যারা তাদেরকে অনুসরণ করেছে সুন্দরভাবে, আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাতসমূহ, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। এটাই মহাসাফল্য।
وَمِمَّنْ حَوْلَكُمْ مِنَ الْأَعْرَابِ مُنَافِقُونَ وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ مَرَدُوا عَلَى النِّفَاقِ لَا تَعْلَمُهُمْ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ سَنُعَذِّبُهُمْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَى عَذَابٍ عَظِيمٍ 9.101
আরবি উচ্চারণ ৯.১০১। অমিম্মান্ হাওলাকুম্ মিনাল্ আ’র-বি মুনা-ফিকুন্; অমিন্ আহ্লিল্ মাদীনাতি মারাদূ ‘আলান্ নিফা-ক্বি লা-তা’লামুহুম্; নাহ্নু না’লামুহুম্; সানু‘আয্যিবুহুম্ র্মারাতাইনি ছুম্মা ইয়ুরাদ্দূনা ইলা-‘আযা-বিন্ ‘আজীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০১ আর তোমাদের আশপাশের মরুবাসীদের মধ্যে কিছু লোক মুনাফিক এবং মদীনাবাসীদের মধ্যেও কিছু লোক অতিমাত্রায় মুনাফিকীতে লিপ্ত আছে। তুমি তাদেরকে জান না। আমি তাদেরকে জানি। অচিরে আমি তাদেরকে দু’বার আযাব দেব তারপর তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে মহাআযাবের দিকে।
وَآخَرُونَ اعْتَرَفُوا بِذُنُوبِهِمْ خَلَطُوا عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا عَسَى اللَّهُ أَنْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ9.102
আরবি উচ্চারণ ৯.১০২। অ আ-খারূনা, তারাফূ বিযুনূবিহিম্ খালাত্বু ‘আমালান্ ছোয়া-লিহাওঁ অআ-খারা সাইয়্যিয়া-; ‘আসাল্লা-হু আইঁ ইয়াতূবা ‘আলাইহিম্ ইন্নাল্লা-হা গাফূর্রু রহীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০২ আর অন্য কিছু লোক তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে, সৎকর্মের সঙ্গে তারা অসৎকর্মের মিশ্রণ ঘটিয়েছে। আশা করা যায়, আল্লাহ্ তাদের তাওবা কবূল করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَهُمْ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ9.103
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৩। খুয্ মিন্ আমওয়া-লিহিম্ ছদাক্বাতান্ তুত্বোয়াহ্হিরুহুম্ অতুযাক্কীহিম্ বিহা- অছোয়াল্লি ‘আলাইহিম্; ইন্না ছলা-তাকা সাকানুল্লাহুম্; অল্লা-হু সামী‘ঊন ‘আলীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৩ তাদের সম্পদ থেকে সদাকা নাও। এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে। আর তাদের জন্য দো‘আ কর, নিশ্চয় তোমার দো‘আ তাদের জন্য প্রশান্তিকর। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ 9.104
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৪। আলাম্ ইয়া’লামূয় আন্নাল্লা-হা হুঅ ইয়াক্ববালুত তাওবাতা ‘আন ‘ইবা-দিহী অইয়া খুযুছ্ ছদাক্ব-তি অআন্নাল্লা-হা হুঅত্ তাওয়্যা-র্বু রহীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৪ তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তাওবা কবূল করেন এবং সদাকা গ্রহণ করেন। আর নিশ্চয় আল্লাহ তাওবা কবূলকারী, পরম দয়ালু।
وَقُلِ اعْمَلُوا فَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُؤْمِنُونَ وَسَتُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ9.105
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৫। অকুলি’মালূ ফাসা ইয়ারল্লা-হু ‘আমালাকুম্ অরসূলুহূ অল্ মু মিনূন্; অ-সাতুরদ্দূনা ইলা‘আ-লিমিল্ গাইবি অশ্ শাহা-দাতি ফাইয়ুনাব্বিউকুম্ বিমা-কুনতুম্ তা’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৫ আর বল, ‘তোমরা আমল কর। অতএব, অচিরেই আল্লাহ্ তোমাদের আমল দেখবেন, তাঁর রাসূল ও মুমিনগণও। আর অচিরেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে গায়েব ও প্রকাশ্যের পরিজ্ঞাতার নিকট। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জানাবেন যা তোমরা আমল করতে সে সম্পর্কে’।
وَآخَرُونَ مُرْجَوْنَ لِأَمْرِ اللَّهِ إِمَّا يُعَذِّبُهُمْ وَإِمَّا يَتُوبُ عَلَيْهِمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ9.106
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৬। অআ-খারূনা র্মুজ্বাওনা লিআম্রিল্লা-হি ইম্মা-ইয়ু‘আয্যিবুহুম্ অইম্মা-ইয়াতূবু ‘আলাইহিম্ অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৬ আর আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় অপর কিছু লোকের সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেয়া হলো। তিনি তাদেরকে আযাব দেবেন নয়তো তাদের তাওবা কবূল করবেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مَسْجِدًا ضِرَارًا وَكُفْرًا وَتَفْرِيقًا بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِرْصَادًا لِمَنْ حَارَبَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ مِنْ قَبْلُ وَلَيَحْلِفُنَّ إِنْ أَرَدْنَا إِلَّا الْحُسْنَى وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ9.107
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৭। অল লাযীনাত্তাখাযূ মাস্জ্বিদান দ্বিরা-রাওঁ অকুফ্রাওঁ অতাফ্রীক্বাম্ বাইনাল্ মুমিনীনা অর্ইছোয়া-দাল্ লিমান্ হা-রবাল্লা-হা অরসূলাহূ মিন্ ক্বব্ল্; অলা ইয়াহ্লিফুন্না ইন্ আরদ্না য় ইল্লাল্ হুস্না-; অল্লা-হু ইয়াশ্হাদু ইন্নাহুম্ লাকা-যিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৭ আর যারা মসজিদ বানিয়েছে ক্ষতিসাধন, কুফরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং ইতঃপূর্বে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যে লড়াই করেছে তার ঘাঁটি হিসেবে। আর তারা অবশ্যই শপথ করবে যে, ‘আমরা কেবল ভাল চেয়েছি’। আর আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
لَا تَقُمْ فِيهِ أَبَدًا لَمَسْجِدٌ أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَى مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ أَحَقُّ أَنْ تَقُومَ فِيهِ فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ9.108
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৮। লা-তাকুম্ ফীহি আবাদা-; লামাস্জ্বিদুন্ উস্সিসা ‘আলাত্তাক্বঅ-মিন্ আওয়্যালি ইয়াওমিন্ আহাক্বকু আন্ তাক্বমা ফীহ্; ফীহি রিজ্বা-লুইঁ ইয়ুহিব্বূনা আইঁ ইয়াতাত্বোয়াহ্হারূ; অল্লা-হু ইয়ুহিব্বুল মুত্ত্বোয়াহ্হিরীন।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৮ তুমি সেখানে কখনো (সালাত কায়েম করতে) দাঁড়িও না। অবশ্যই যে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাকওয়ার উপর প্রথম দিন থেকে তা বেশী হকদার যে, তুমি সেখানে সালাত কায়েম করতে দাঁড়াবে। সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ্ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।
أَفَمَنْ أَسَّسَ بُنْيَانَهُ عَلَى تَقْوَى مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٍ خَيْرٌ أَمْ مَنْ أَسَّسَ بُنْيَانَهُ عَلَى شَفَا جُرُفٍ هَارٍ فَانْهَارَ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ9.109
আরবি উচ্চারণ ৯.১০৯। আফামান্ আস্সাসা বুন্ইয়া-নাহূ ‘আলা-তাক্বঅ- মিনাল্লা-হি অরিদ্ব ওয়া-নিন্ খাইরুন্ আম্ মান্ আস্সাসা বুন্ইয়া-নাহূ ‘আলা- শাফা-জুরুফিন্ হা-রিন্ ফানহা-রা বিহী ফী না-রি জ্বাহান্নাম্; অল্লা-হু লা-ইয়াহ্দিল্ ক্বওমাজ্জোয়া-লিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১০৯ যে তার গৃহের ভিত্তি আল্লাহর তাকওয়া ও সন্তুষ্টির উপর প্রতিষ্ঠা করল, সে কি উত্তম না ঐ ব্যক্তি যে তার গৃহের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে এক গর্তের পতনোন্মুখ কিনারায়? অতঃপর তাকে নিয়ে তা ধসে পড়ল জাহান্নামের আগুনে। আর আল্লাহ্ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না।
لَا يَزَالُ بُنْيَانُهُمُ الَّذِي بَنَوْا رِيبَةً فِي قُلُوبِهِمْ إِلَّا أَنْ تَقَطَّعَ قُلُوبُهُمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ9.110
আরবি উচ্চারণ ৯.১১০। লা-ইয়াযা-লু বুন্ইয়া-নু হুমুল্লাযী বানাও রীবাতান্ ফী কুলূবিহিম্ ইল্লা য় আন্ তাক্বাত্ত্বো‘আ কুলূবুহুম; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১০ তাদের নির্মিত গৃহ, তাদের অন্তরে সন্দেহের কারণ হয়ে থাকবে, যে পর্যন্ত না তাদের হৃদয় টুকরো টুকরো হয়ে যায়। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ9.111
আরবি উচ্চারণ ৯.১১১। ইন্নাল্লাহাশ্ তারা- মিনাল্ মুমিনীনা আন্ফুসাহুম অআম্ওয়া-লাহুম্ বিআন্না-লাহুমুল্ জ্বান্নাহ্; ইয়ুক্ব-তিলূনা ফী সাবীলিল্লা-হি ফাইয়াক্বতুলূনা অইয়ুক্বতালূন; অ’দান্ ‘আলাইহি হাক্বক্বান্ ফিত্তাওর-তি অল্ইন্জ্বীলি অল্ক্বরুআ-ন্; অমান আওফা-বি‘আহদিহী মিনাল্লা-হি ফাস্তাব্শিরূ বিবাই‘ই কুমুল্লাযী বা-ইয়া’তুম্ বিহ্; অযা-লিকা হঅল্ ফাওযুল্ ‘আজীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১১ নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। অতএব তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে এ সম্পর্কে সত্য ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ ওয়াদা পূরণে আল্লাহর চেয়ে অধিক কে হতে পারে? সুতরাং তোমরা (আল্লাহর সংগে) যে সওদা করেছ, সে সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং সেটাই মহাসাফল্য।
التَّائِبُونَ الْعَابِدُونَ الْحَامِدُونَ السَّائِحُونَ الرَّاكِعُونَ السَّاجِدُونَ الْآمِرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّاهُونَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَالْحَافِظُونَ لِحُدُودِ اللَّهِ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ 9.112
আরবি উচ্চারণ ৯.১১২। আত্তা – য়িবূনাল্ ‘আ-বিদূনাল হা-মিদূনাস্ সা – য়িহূর্না র-কি‘উনাস্ সা-জ্বিদূনাল্ আ-মিরূনা বিল্মা’রূফি অন্না-হূনা ‘আনিল্ মুন্কারি অল্ হা-ফিজূনা লিহুদূদিল্লা-হ্; অবাশ্শিরিল্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১২ তারা তাওবাকারী, ইবাদাতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকূকারী, সিজ্দাকারী, সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাযতকারী। আর মুমিনদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও।
مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ9.113
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৩। মা-কা-না লিন্নাবিয়্যি অল্লাযীনা আ-মানূ য় আইঁ ইয়াস্তাগ্ফিরূ লিল্মুশ্রিকীনা অলাও কা-নূ য় ঊলী র্ক্ববা- মিম্ বা’দি মা- তাবাইয়্যানা লাহুম্ আন্নাহুম্ আছ্হা-বুল্ জ্বাহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৩ নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। যদিও তারা আত্মীয় হয়। তাদের নিকট এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে, নিশ্চয় তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী।
وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ إِلَّا عَنْ مَوْعِدَةٍ وَعَدَهَا إِيَّاهُ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ أَنَّهُ عَدُوٌّ لِلَّهِ تَبَرَّأَ مِنْهُ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَأَوَّاهٌ حَلِيمٌ9.114
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৪। অমা-কা-নাস্ তিগ্ফা-রু ইব্রা-হীমা লিআবীহি ইল্লা-‘আম্ মাও‘ই দাতিওঁ অ‘আদাহা য় ইয়্যা-হু ফালাম্মা-তাবাইয়্যানা লাহূয়আন্নাহূ ‘আদুওয়্যুল্লিল্লা-হি তার্বারায়া মিন্হু ইন্না ইব্রা-হীমা লাআওয়্যা-হুন্ হালীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৪ নিজ পিতার জন্য ইবরাহীমের ক্ষমা প্রার্থনা তো ছিল একটি ওয়াদার কারণে, যে ওয়াদা সে তাকে দিয়েছিল। অতঃপর যখন তার নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নিশ্চয় সে আল্লাহর শত্র“, সে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল। নিশ্চয় ইবরাহীম ছিল অধিক প্রার্থনাকারী ও সহনশীল।
وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِلَّ قَوْمًا بَعْدَ إِذْ هَدَاهُمْ حَتَّى يُبَيِّنَ لَهُمْ مَا يَتَّقُونَ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ9.115
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৫। অমা-কা-নাল্লা-হু লিইয়ুদ্বিল্লা ক্বওমাম্ বা’দা ইয্ হাদা-হুম্ হাত্তা-ইয়ুবাইয়্যিনা লাহুম্ মা-ইয়াত্তাকুন; ইন্নাল্লা-হা বিকুল্লি শাইয়িন্ ‘আলীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৫ আর আল্লাহ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে হিদায়াত দানের পর তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন। যতক্ষণ না তাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবেন, যা থেকে তারা সাবধান থাকবে। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
إِنَّ اللَّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ9.116
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৬। ইন্নাল্লা-হা লাহূ মুল্কুস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্ব্; ইয়ুহ্য়ী অইয়ুমীত্; অমা-লাকুম মিন্ দূনিল্লা-হিমিওঁ অলিয়্যিওঁ অলা-নার্ছী।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৬ নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর জন্যই আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য না আছে কোন অভিভাবক, না আছে কোন সাহায্যকারী।
لَقَدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِنْ بَعْدِ مَا كَادَ يَزِيغُ قُلُوبُ فَرِيقٍ مِنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ إِنَّهُ بِهِمْ رَءُوفٌ رَحِيمٌ9.117
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৭। লাক্বত্ তা-বাল্লা-হু ‘আলান্নাবিয়্যি অল্মুহা-জ্বিরীনা অল্আন্ছোয়া-রিল্ লাযীনাত্ তাবা‘ঊহু ফী সা-‘আতিল্ ‘উস্রতি মিম্ বা’দি মা-কা-দা ইয়াযীগু কুলূবু ফারীক্বিঁম্ মিন্হুম্ ছুম্মা তা-বা ‘আলাইহিম্; ইন্নাহূ বিহিম্ রাঊর্ফু রাহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৭ অবশ্যই আল্লাহ নবী, মুহাজির ও আনসারদের তাওবা কবুল করলেন, যারা তার অনুসরণ করেছে সংকটপূর্ণ মুহূর্তে। তাদের মধ্যে এক দলের হৃদয় সত্যচ্যূত হওয়ার উপক্রম হবার পর। তারপর আল্লাহ্ তাদের তাওবা কবূল করলেন। নিশ্চয় তিনি তাদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।
وَعَلَى الثَّلَاثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا حَتَّى إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنْفُسُهُمْ وَظَنُّوا أَنْ لَا مَلْجَأَ مِنَ اللَّهِ إِلَّا إِلَيْهِ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوبُوا إِنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ 9.118
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৮। অ‘আলাছ্ ছালা-ছাতিল্ লাযীনা খুল্লিফূ; হাত্তা য় ইযা- দ্বোয়া-ক্বাত্ ‘আলাইহিমুল্ র্আদ্বু বিমা-রহুবাত্ অদ্বোয়া-ক্বাত্ ‘আলাইহিম্ আন্ফুসুহুম্ অজোয়ান্নূ য় আল্লা-মাল্জ্বায়া মিনাল্লা-হ্ ইল্লা য় ইলাইহ্; ছুম্মা তা-বা ‘আলাইহিম্ লিইয়াতূবূ ইন্নাল্লা-হা হুঅত তাওয়্যা-র্বু রহীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৮ আর সে তিন জনের (তাওবা কবূল করলেন), যাদের বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছিল। এমনকি পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের নিকট তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল। আর তারা নিশ্চিত বুঝেছিল যে, আল্লাহর আযাব থেকে তিনি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল নেই। তারপর তিনি তাদের তাওবা কবুল করলেন, যাতে তারা তাওবায় স্থির থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবা কবূলকারী, পরম দয়ালু।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ9.119
আরবি উচ্চারণ ৯.১১৯। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানুত তাকুল্লা-হা অকূনূ মা‘আছ্ ছোয়া-দিক্বীন।
বাংলা অনুবাদ ৯.১১৯ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।
مَا كَانَ لِأَهْلِ الْمَدِينَةِ وَمَنْ حَوْلَهُمْ مِنَ الْأَعْرَابِ أَنْ يَتَخَلَّفُوا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ وَلَا يَرْغَبُوا بِأَنْفُسِهِمْ عَنْ نَفْسِهِ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ لَا يُصِيبُهُمْ ظَمَأٌ وَلَا نَصَبٌ وَلَا مَخْمَصَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَطَئُونَ مَوْطِئًا يَغِيظُ الْكُفَّارَ وَلَا يَنَالُونَ مِنْ عَدُوٍّ نَيْلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ بِهِ عَمَلٌ صَالِحٌ إِنَّ اللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ الْمُحْسِنِينَ 9.120
আরবি উচ্চারণ ৯.১২০। মা-কা-না লি আহ্লিল্ মাদীনাতি অমান্ হাওলাহুম্ মিনাল্ আ’র-বি আইঁ ইয়াতাখাল্লাফূ র্আ রসূলিল্লা-হি অলা-ইর্য়াগবূ বিআন্ফুসিহিম্ ‘আন্ নাফ্সিহ্; যা-লিকা বিআন্নাহুম্ লা-ইয়ুছীবুহুম্ জোয়ামাউওঁ অলা-নাছোয়াবুওঁ অলা-মাখ্মাছোয়াতুন ফী সাবীলিল্লা-হি অলা- ইয়াত্বোয়াঊনা মাওত্বিয়াইঁ ইয়াগীজুল্ কুফ্ফা-রা অলা-ইয়ানা-লূনা মিন্ ‘আদুওয়্যিন্ নাইলান্ ইল্লা-কুতিবা লাহুম বিহী ‘আমালুন্ ছোয়া-লিহ্; ইন্নাল্লা-হা লা-ইয়্যুদ্বী‘উ আজরাল্ মুহ্সিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২০ মদীনার অধিবাসী ও তার আশপাশের মরুবাসীদের জন্য সংগত নয় যে, রাসূলুল্লাহ থেকে পেছনে থেকে যাবে এবং রাসূলের জীবন অপেক্ষা নিজদের জীবনকে অধিক প্রিয় মনে করবে। এটা এ কারণে যে, তাদেরকে আল্লাহর পথে তৃষ্ণা, ক্লান্তি ও ক্ষুধায় আক্রান্ত করে এবং তাদের এমন পদক্ষেপ যা কাফিরদের ক্রোধ জন্মায় এবং শত্র“দেরকে তারা ক্ষতিসাধন করে, তার বিনিময়ে তাদের জন্য সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করা হয়। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট করেন না।
وَلَا يُنْفِقُونَ نَفَقَةً صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً وَلَا يَقْطَعُونَ وَادِيًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ9.121
আরবি উচ্চারণ ৯.১২১। অলা-ইয়ুন্ফিকুনা নাফাক্বাতান্ ছোয়াগীরাতাওঁ অলা-কাবীরাতাওঁ অলা-ইয়াক্বত্বোয়া‘ঊনা ওয়া-দিইয়ান্ ইল্লা-কুতিবা লাহুম্ লিইয়াজযিয়া হুমুল্লা-হু আহ্সানা মা-কা-নূ ইয়া’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২১ আর তারা স্বল্প কিংবা অধিক যা-ই ব্যয় করে এবং অতিক্রম করে যে প্রান্তরই, তা তাদের জন্য লিখে দেয়া হয়, যাতে তারা যা আমল করত, আল্লাহ তাদেরকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেন।
وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ9.122
আরবি উচ্চারণ ৯.১২২। অমা-কা-নাল্ মুমিনূনা লিইয়ান্ফিরূ কা – ফ্ফাহ্; ফালাওলা নাফারা মিন্ কুল্লি র্ফিক্বতিম্ মিন্হুম্ ত্বোয়া-য়িফাতুল্ লিইয়াতাফাক্বক্বাহূ ফিদ দীনি অলিইয়ুন্যিরূ ক্বাওমাহুম্ ইযা-রাজা‘উ য় ইলাইহিম্ লা‘আল্লাহুম্ ইয়াহ্যারূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২২ আর মুমিনদের জন্য সংগত নয় যে, তারা সকলে একসঙ্গে অভিযানে বের হবে। অতঃপর তাদের প্রতিটি দল থেকে কিছু লোক কেন বের হয় না, যাতে তারা দীনের গভীর জ্ঞান আহরণ করতে পারে এবং আপন সম্প্রদায় যখন তাদের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে, তখন তাদেরকে সতর্ক করতে পারে, যাতে তারা (গুনাহ থেকে) বেঁচে থাকে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُمْ مِنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ 9.123
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৩। ইয়া য় আইয়্যুহাল্ লাযীনা আ-মানূ ক্বা-তিলুল্লাযীনা ইয়ালূনাকুম্ মিনাল্ কুফ্ফা-রি অল্ইয়াজ্বিদূ ফীকুম্ গিল্জোয়াহ্; অ’লামূ য় আন্নাল্লা-হা মা‘আল্ মুত্তাক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৩ হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের নিকটবর্তী কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
وَإِذَا مَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ فَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ أَيُّكُمْ زَادَتْهُ هَذِهِ إِيمَانًا فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ9.124
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৪। অইযা- মা য় উন্যিলাত্ সূরাতুন ফামিন্হুম মাইঁ ইয়াকুলু আইয়্যুকুম্ যা-দাত্হু হা-যিহী য় ঈমা-নান্ ফাআম্মাল্লাযীনা আ-মানূ ফাযা-দাত্হুম্ ঈমা-নাওঁ অহুম্ ইয়াস্তাব্শিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৪ আর যখনই কোন সূরা নাযিল করা হয়, তখন তাদের কেউ কেউ বলে, ‘এটি তোমাদের কার ঈমান বৃদ্ধি করল’? অতএব যারা মুমিন, নিশ্চয় তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারা আনন্দিত হয়।
وَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ فَزَادَتْهُمْ رِجْسًا إِلَى رِجْسِهِمْ وَمَاتُوا وَهُمْ كَافِرُونَ9.125
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৫। অআম্মাল্লাযীনা ফী কুলূবিহিম্ মারাদ্বুন্ ফাযা-দাত্হুম রিজসান্ ইলা-রিজসিহিম্ অমা-তূ অহুম্ কা-ফিরূন।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৫ আর যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, এটি তাদের অপবিত্রতার সাথে অপবিত্রতা বৃদ্ধি করে এবং তারা মারা যায় কাফির অবস্থায়।
أَوَلَا يَرَوْنَ أَنَّهُمْ يُفْتَنُونَ فِي كُلِّ عَامٍ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ لَا يَتُوبُونَ وَلَا هُمْ يَذَّكَّرُونَ9.126
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৬। আঅলা-ইয়ারাওনা আন্নাহুম্ ইয়ুফ্তানূনা ফী কুল্লি ‘আ-মিম্ র্মারতান্ আও র্মারতাইনি ছুম্মা লা-ইয়াতূবূনা অলা-হুম্ ইয়ায্যাক্কারূন।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৬ তারা কি দেখে না যে, তারা প্রতি বছর এক বার কিংবা দু’বার বিপদগ্রস্ত হয় ? এর পরও তারা তাওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না।
وَإِذَا مَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ نَظَرَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ هَلْ يَرَاكُمْ مِنْ أَحَدٍ ثُمَّ انْصَرَفُوا صَرَفَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَفْقَهُونَ9.127
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৭। অইযা-মা য় উন্যিলাত্ সূরাতুন্ নাজোয়ারা বা’দ্বুহুম্ ইলা-বা’দ্ব্; হাল্ ইয়ারা-কুম্ মিন্ আহাদিন ছুম্মান্ ছোয়ারাফূ; ছোয়ারাফাল্লা-হু কুলূবাহুম বিআন্নাহুম্ ক্বওমুল্ লা-ইয়াফ্ক্বহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৭ আর যখনই কোন সূরা নাযিল করা হয়, তারা একে অপরের দিকে তাকায়। (এবং বলে) ‘তোমাদেরকে কি কেউ দেখছে’? অতঃপর তারা (চুপিসারে) প্রস্থান করে। আল্লাহ তাদের হৃদয়কে সত্যবিমুখ করে দেন। এ কারণে যে, তারা বোধশক্তিহীন কওম।
لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ9.128
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৮। লাক্বদ্ জ্বা – য়াকুম্ রসূলুম্ মিন আনফুসিকুম্ ‘আযীযুন্ ‘আলাইহি মা-‘আনিত্তুম্ হারীছুন ‘আলাইকুম্ বিল্মুমিনীনা রাঊর্ফু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৮ নিশ্চয় তোমাদের নিজদের মধ্য থেকে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন, তা তার জন্য কষ্টদায়ক যা তোমাদেরকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।
فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ 9.129
আরবি উচ্চারণ ৯.১২৯। ফাইন তাঅল্লাও ফাকুল্ হাস্বিয়াল্লা-হু লা য় ইলা-হা ইল্লা-হূ; ‘আলাইহি তাওয়াক্কাল্তু অহুঅ রব্বুল ‘র্আশিল্ ‘আজীম।
বাংলা অনুবাদ ৯.১২৯ অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে বল, ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আর তিনিই মহাআরশের রব’।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
- ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব ও বিধান,ইসলামে কোরবানির যত ফজিলত গুরুত্ব ও শিক্ষা
- বৃষ্টির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, বৃষ্টির নামাজের পর আমল
- ইসতিসকার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, ইসতিসকার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, ইসতিসকার নামাজের পর আমল
- বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান,বাসর রাতের নামাজ
- তাসবিহ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, তাসবিহ সালাতের ফজিলত
- রমজানের ৩০ দিনের ৩০টি ফজিলতরমজানের ৩০ দিনের আমল ও ফজিলত