আজকের বিষয়: সূরা মুদ্দাছ্ছির সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল মুদ্দাছ্ছির আলমল ও ফজিলত, সূরা মুদ্দাছ্ছির কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা মুদ্দাছ্ছির নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৭৪ সূরা আল – মুদ্দাছ্ছির
নামকরণ
প্রথম আয়াতে ——আল মুদ্দাস্সির শব্দটিকে এ সূরার নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এটিও শুধু সূরার নাম। এর বিষয় ভিত্তিক শিরোনাম নয়।
নাযিল হওয়ার সময়-কাল
এর প্রথম সাতটি আয়াত পবিত্র মক্কা নগরীতে নবুওয়াতের একেবারে প্রাথমিক যুগে নাযিল হয়েছিল। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ বর্ণিত,বুখারী,মুসলিম, তিরমিযী এবং মুসনাদে আহমাদও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থের কোন কোন রেওয়ায়াতে এতদূর পর্যন্ত বলা হয়েছে, যে এগুলো রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাযিল হওয়া সর্বপ্রথম আয়াত। কিন্তু গোটা মুসলিম উম্মার কাছে এ বিষয়টি প্রায় সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর সর্বপ্রথম যে অহী নাযিল হয়েছিল তা ছিল————ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাযি খালাক থেকে—————–মালাম ইয়া’লাম পর্যন্ত। তবে বিশুদ্ধ রেওয়ায়াতসমূহ থেকে একথা প্রমাণিত যে, এ প্রথম অহী নাযিল হওয়ার পর কিছুকাল পর্যন্ত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অহী নাযিল হয়নি। এ বিরতির পর নতুন করে আবার অহী নাযিলের ধারা শুরু হলে সূরা মুদ্দাস্সিরের এ আয়াতগুলো থেকেই তা শুরু হয়েছিল । ইমাম যুহরী এর বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন এভাবেঃ
“কিছুকাল পর্যন্ত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অহী নাযিল বন্ধ রইল। সে সময় তিনি এতো কঠিন মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছিলেন যে, কোন কোন সময় পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সেখান থেকে নিজেকে নীচে নিক্ষেপ করতে বা গড়িয়ে ফেলে তিতে উদ্যত হতেন। কিন্তু যখনই তিনি কোন চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছতেন তখনই জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর সামনে এসে বলতেনঃ ‘আপনি তো আল্লাহর নবী’এতে তাঁর হৃদয় মন প্রশান্তিতে ভরে যেতো এবং তাঁর অশ্বস্তি ও অস্থিরতার ভাব বিদূরিত হতো” (ইবনে জারীর)
এরপর ইমাম যুহরী নিজে হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহর রেওয়ায়তেই এভাবে উদ্ধৃত করেছেনঃ
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম———— (অহী বন্ধ থাকার সময়)-এর কথা উল্লেখ করে বলেছেনঃ একদিন আমি পথে চলছিলাম । হঠাৎ আসমান থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। ওপরের দিকে তাকিয়েই দেখতে পেলাম হেরা গিরা গুহায় যে ফেরেশতা আমার কাছে এসেছিল সে ফেরেশতা আসমান ও যমীনের মাঝখানে একটি আসন পেতে বসে আছে। এ দৃশ্য দেখে আমি অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লাম এবং বাড়ীতে পৌছেই বললামঃ আমাকে চাদর দিয়ে আচ্ছাদিত করো।আমাকে চাদর দিয়ে আচ্ছাদিতো করো। সুতরাং বাড়ীর লোকজন আমাকে লেপ (অথবা কম্বল) দিয়ে আমাকে আচ্ছাদিত করলো। এ অবস্থায় আল্লাহ অহী নাযিল করলেনঃ…………… ইয়া আয়্যুহাল মুদ্দাস্সির “এরপর অব্যাহতভাবে অহী নাযিল হতে থাকলো।” (বুখারী,মুসলিম,মুসনাদে আহমাদ, ইবনে জারীর)।
প্রকাশ্যভাবে ইসলামের প্রচার শুরু হওয়ার পর প্রথমবার মক্কায় হজ্জের মওসুম সমাগত হলে সূরার অবশিষ্ট অংশ অর্থাৎ ৮ আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত নাযিল হয়। ‘সীরাতে ইবনে হিশাম’ গ্রন্থে এ ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা পরে তা উল্লেখ করবো।
বিষয়বস্তূ ও মূল বক্তব্য
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সর্বপ্রথম যে অহী পাঠানো হয়েছিল তা ছিল সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত। এতে শুধু বলা হয়েছিলঃ
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
- “লা আদওয়া” সংক্রমন নেই!হাদীসটি কী বুঝায়?
- রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যত পরামর্শ
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন
- আজহারী: কোন ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙে
- রমজান মাসের ৯টি ফজিলত
পড় তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘জমাট রক্ত’ থেকে। পড়, তোমার রব বড় মহানুভব। যিনি কলমের সাহায্যে জ্ঞান শিখিয়েছেন। তিনি মানুষকে এমন জ্ঞান শিখিয়েছেন যা সে জানতো না।”
এটা ছিল অহী নাযিল হওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহসা এ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলেন। কত বড় মহান কাজের জন্য তিনি আদিষ্ট হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আরো কি কি কাজ তাকে করতে হবে এ বাণীতে তাঁকে সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়েছিল না। বরং শুধু একটি প্রাথমিক পরিচয় দিয়েই কিছু দিনের জন্য অবকাশ দেয়া হয়েছিল যাতে অহী নাযিলের এ প্রথম অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর মন-মানসিকতার ওপর যে কঠিন চাপ পড়েছিল তার প্রভাব বিদূরিত হয়ে যায় এবং ভবিষ্যতে অহী গ্রহণ ও নবুওয়াতের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে যান।
এ বিরতির পর পুনরায় অহী নাযিলের ধারা শুরু হলে এ সূরার প্রথম সাতটি আয়াত নাযিল হয় এবং এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ মর্মে আদেশ দেয়া হয় যে, আপনি উঠুন এবং আল্লাহর বান্দারা এখন যেভাবে চলছে তার পরিণাম সম্পর্কে তাদের সাবধান করে দিন। আর এ পৃথিবীতে এখন যেখানে অন্যদের শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্ব জেঁকে বসেছে,সেখানে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের ঘোষণা দিন। এর সাথে সাথে তাঁকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, এখন থকে আপনাকে যে কাজ করতে হবে তার দাবী হলো আপনার নিজের জীবন যেন সব দিক থেকে পূত-পবিত্র হয় এবং আপনি সব রকমের পার্থিব স্বার্থ উপেক্ষা করে পূর্ণ নিষ্ঠা ও ঐক্যান্তিকতার সাথে আল্লাহর সৃষ্টির সংস্কার-সংশোধনের দায়িত্ব পালন করেন। অতপর শেষ বাক্যটিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যে কোন কঠিন পরিস্থিতি এবং বিপদ মুসিবতই আসুক না কেন আপনি আপনার প্রভুর উদ্দেশ্যে ধৈর্য অবলম্বন করুন।
আল্লাহর এ ফরমান কার্যকরী করার জন্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইসলামের প্রচার শুরু করলেন এবং একের পর এক কুরআন মজীদের যেসব সূরা নাযিল হচ্ছিলো তা শুনাতে থাকলেন তখন মক্কায় রীতিমত হৈ চৈ পড়ে গেল এবং বিরোধিতার এক তুফান শুরু হলো। এ অবস্থায় কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর হজ্জের মওসূম এসে পড়লে মক্কার লোকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলো।
তারা ভাবলো, এ সময় সমগ্র আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজীদের কাফেলা আসবে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি যদি এসব কাফেলার অবস্থান স্থলে হাজির হয়ে হাজীদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং বিভিন্ন স্থানে হজ্জের জনসমাবেশসমূহে দাঁড়িয়ে কুরআনের মত অতুনীয় এ মর্মস্পর্শী বাণী শুনাতে থাকেন তাহলে সমগ্র আরবের আনাচে কানাচে তাঁর আহবান পৌছে যাবে এবং নাজানি কত লোক তাতে প্রভাবিত হয়ে পড়বে। তাই কুরাইশ নেতারা একটি সম্মেলনের ব্যবস্থা করলো। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যে, মক্কায় হাজীদের আগমনের সাথে সাথে তাদের মধ্যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে প্রচার প্রোপাগাণ্ডা শুরু করতে হবে। এ বিষয়ে ঐক্যমত হওয়ার পর ওয়ালীদ ইবনে মুগীরা সমবেত সবাইকে উদ্দেশ করে বললোঃ আপনারা যদি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে লোকদের কাছে বিভিন্ন রকমের কথা বলেন, তাহলে আমাদের সবার বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই কোন একটি বিষয় স্থির করে নিন যা সবাই বলবে। কেউ কেউ প্রস্তাব করলো, আমরা মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)গণক বলবো।ওয়ালীদ বললোঃ তা হয় না।
আল্লাহর শপথ, সে গণক নয়। আমরা গণকের অবস্থা জানি। তারা গুণ গুণ শব্দ করে যেসব কথা বলে এবং যে ধরনের কথা বানিয়ে নেয় তার সাথে কুরআনের সামান্যতম সাদৃশ্যও নেই। তখন কিছু সংখ্যক লোক প্রস্তাব করলো যে,তাকে পাগল বলা হোক। ওয়ালীদ বললোঃ সে পাগলও নয়। আমরা পাগল ও বিকৃত মস্তিষ্ক লোক সম্পর্কেও জানি। পাগল বা বিকৃত মস্তিষ্ক হলে মানুষ যে ধরনের অসলংগ্ন ও আবোল তাবোল কথা বলে এবং খাপছাড়া আচরণ করে তা কারো অজানা নয়। কে একথা বিশ্বাস করবে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)যে বাণী পেশ করছে তা পাগলের প্রলাপ অথবা জিনে ধরা মানুষের উক্তি? লোকজন বললোঃ তাহলে আমরা তাকে কবি বলি। ওয়ালীদ বললোঃ সে কবিও নয়। আমরা সব রকমের কবিতা সম্পরর্কে অবহিত।
কোন ধরনের কবিতার সাথে এ বাণীর সাদৃশ্য নেই। লোকজন আবার প্রস্তাব করলোঃ তাহলে তাকে যাদুকর বলা হোক।ওয়ালীদ বললোঃ সে যাদুকরও নয়। যাদুকরদের সম্পর্কেও আমরা জানি। যাদু প্রদর্শনের জন্য তারা যেসব পন্থা অবলম্বন করে থাকে সে সম্পর্কেও আমাদের জানা আছে। একথাটিও মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ব্যাপারে খাটে না।এরপর ওয়ালীদ বললোঃ প্রস্তাবিত এসব কথার যেটিই তোমরা বলবে সেইকেই লোকেরা অযথা অভিযোগ মনে করবে। আল্লাহর শপথ, এ বাণীতে আছে অসম্ভব রকমের মাধুর্য।
এর শিঁকড় মাটির গভীরে প্রোথিত আর এর শাখা-প্রশাখা অত্যন্ত ফলবান। একথা শুনে আবু জেহেল ওয়ালীদকে পীড়াপীড়ি করতে লাগলো। সে বললোঃ যতক্ষণ না তুমি মুহাম্মাদ সম্পর্কে কোন কথা বলছো ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার কওমের লোকজন তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না। সে বললো তাহলে আমাকে কিছুক্ষণ ভেবে দেখতে দাও। এরপর সে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে বললোঃ তার সম্পর্কে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য যে কথাটি বলা যেতে পারে তা হলো,তোমরা আরবের জনগণকে বলবে যে, এ লোকটি যাদুকর।সে এমন কথা বলে যা মানুষকে তার পিতা,মাতা, স্ত্রী, পুত্র এবং গোটা পরিবার থেকেই বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ওয়ালীদের একথা গ্রহণ করলো। অতপর হজ্জের মওসূমে পরিকল্পনা অনুসারে কুরাইশদের বিভিন্ন প্রতিনিধি দল হাজীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো এবং বহিরাগত হজ্জযাত্রীদের তারা এ বলে সাবধান করতে থাকলো যে, এখানে একজন বড় যাদুকরের আর্বিভাব ঘটেছে । তার যদু পরিবারের লোকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দেয়। তার ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। কিন্তু এর ফল দাঁড়ালো এই যে, কুরইশ বংশীয় লোকেরা নিজেরাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম সমগ্র আরবে পরিচিত করে দিল।(সীরাতে ইবনে হিশাম,প্রথম খণ্ড ,পৃষ্ঠা ২৮৮-২৮৯।আবু জেহেলের পীড়াপীড়িতেই যে ওয়ালীদ এ উক্তি করেছিল, সে কথা ইবনে জারীর তার তাফসীরে ইকরিমার রেওয়ায়াত সূত্র উদ্ধৃত করেছেন)।
এ সূরার দ্বিতীয় অংশে এ ঘটনারই পর্যালোচনা করা হয়েছে। এর বিষয়বস্তুর বিন্যাস হয়েছে এভাবেঃ
৮ থেকে ১০আয়াত পর্যন্ত ন্যায় ও সত্যকে অস্বীকারকারীদের এ বলে সাবধান করা হয়েছে যে , আজ তারা যা করছে কিয়ামতের দিন তারা নিজেরাই তার খারাপ পরিণতির সম্মুখীন হবে।
১১ থেকে ২৬ আয়াত পর্যন্ত ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছেঃ মহান আল্লাহ এ বক্তিকে অঢেল নিয়ামত দান করেছিলেন। কিন্তু এর বিনিময়ে সে ন্যায় ও সত্যের সাথে চরম দুশমনী করেছে। এ পর্যায়ে তার মানসিক দ্বন্দ্বের পূর্ণাঙ্গ চিত্র অংকন করা হয়েছে। একদিকে সে মনে মনে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও কুরআনের প্রতি সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছিল। কিন্তু অপরদিকে নিজ গোত্রের মধ্যে সে তার নেতৃত্ব, মর্যাদা ও প্রভাব -প্রতিপত্তিও বিপন্ন করতে প্রস্তুত ছিল না। তাই সে শুধু ঈমান গ্রহণ থেকেই বিরত রইলো না। বরং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত নিজের বিবেকের সাথে বুঝা পড়া ও দ্বন্দ্ব -সংঘাতের পর আল্লাহর বান্দাদের এ বাণীর ওপর ঈমান আনা থেকে বিরত রাখার জন্য প্রস্তাব করলো যে, এ কুরআনকে যাদু বলে আখ্যায়িত করতে হবে। তার এ স্পষ্ট ঘৃণ্য মানসিকতার মুখোশ খুলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে যে, নিজের এতো সব অপকর্ম সত্ত্বেও এ বক্তি চায় তাকে আরো পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হোক। অথচ এখন সে পুরষ্কারের যোগ্য নয় বরং দোযখের শান্তির যোগ্য হয়ে গিয়েছে।
এরপর ২৭ থেকে ৪৮ আয়াত পর্যন্ত দোযখের ভয়াবহতার উল্লেখ করা হয়েছে এবং কোন ধরনের নৈতিক চরিত্র ও কর্মকাণ্ডের অধিকারী লোকেরা এর উপযুক্ত বলে গণ্য হবে তা বর্ণনা করা হয়েছে।
অতপর ৪৯-৫৩ আয়াতে কাফেরদের রোগের মূল ও উৎস কি তা বলে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যেহেতু তারা আখেরাত সম্পর্কে বেপরোয়া ও নির্ভীক এবং এ পৃথিবীকেই জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ বলে মনে করে, তাই তারা কুরআন থেকে এমনভাবে পালায়, যেমন বন্য গাধা বাঘ দেখে পালায়। তারা ঈমান আনার জন্য নানা প্রকারের অযৌক্তিক পূর্বশর্ত আরোপা করে। অথচ তাদের সব শর্ত পূরণ করা হলেও আখেরাতকে অস্বীকার করার কারণে তারা ঈমানের পথে এক পাও অগ্রসর হতে সক্ষম নয়।
পরিশেষে স্পষ্ট ভাষায় বলে দেয়া হয়েছে, আল্লাহর কারো ঈমানের প্রয়োজন নেই যে, তিনি তাদের শর্ত পূরণ করতে থাকবেন। কুরআন সবার জন্য এক উপদেশবাণী যা সবার সামনে পেশ করা হয়েছে। কারো ইচ্ছা হলে সে এ বাণী গ্রহণ করবে। আল্লাহই একমাত্র এমন সত্তা,যার নাফরমানী করতে মানুষের ভয় পাওয়া উচিত। তাঁর মাহাত্ম্য ও মর্যাদা এমন যে, যে ব্যক্তিই তাকওয়া ও আল্লাহভীতির পথ অনুসরণ করে তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন ।পূর্বে সে যতই নাফরমানী করে থাকুক না কেন।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ74.1
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১। ইয়া য় আইয়ুহাল্ মুদ্দাছ্ছিরু।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১ হে বস্ত্রাবৃত!
قُمْ فَأَنْذِرْ74.2
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২। কুম্ ফাআর্ন্যি।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২ উঠ, অতঃপর সতর্ক কর।
وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ74.3
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩। অরব্বাকা ফা কার্ব্বি
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩ আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।
وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ74.4
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪। অছিয়া-বাকা ফাত্বোয়ার্হ্হি।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪ আর তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র কর।
وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ74.5
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫। র্অরুজযা-ফাহজুর
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫ আর অপবিত্রতা বর্জন কর।
وَلَا تَمْنُنْ تَسْتَكْثِرُ74.6
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৬। অলা- তাম্নুন্ তাস্তাক্ছিরু।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৬ আর অধিক পাওয়ার আশায় দান করো না।
وَلِرَبِّكَ فَاصْبِرْ74.7
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৭। অলিরব্বিকা ফার্ছ্বি।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৭ আর তোমার রবের জন্যই ধৈর্যধারণ কর।
فَإِذَا نُقِرَ فِي النَّاقُورِ74.8
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৮। ফাইযা-নুক্বির ফিন্না-কুরি।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৮ অতঃপর যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে,
فَذَلِكَ يَوْمَئِذٍ يَوْمٌ عَسِيرٌ74.9
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৯। ফাযা-লিকা ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াওমুন্ ‘আসীরুন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৯ আর সেদিন হবে কঠিন দিন।
عَلَى الْكَافِرِينَ غَيْرُ يَسِيرٍ74.10
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১০। ‘আলাল্ কা-ফিরীনা গইরু ইয়ার্সী।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১০ কাফিরদের জন্য সহজ নয়।
ذَرْنِي وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًا74.11
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১১। র্যানী অমান্ খলাকতু অহীদাঁও।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১১ আমাকে এবং যাকে আমি সৃষ্টি করেছি তাকে একাকী ছেড়ে দাও।
وَجَعَلْتُ لَهُ مَالًا مَمْدُودًا74.12
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১২। অজ্বা‘আল্তু লাহূ মা-লাম্ মাম্দূদাঁও।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১২ আর আমি তাকে দিয়েছি অঢেল সম্পদ,
وَبَنِينَ شُهُودًا74.13
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৩। অবানীনা শুহূদাঁও
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৩ আর উপস্থিত অনেক পুত্র।
وَمَهَّدْتُ لَهُ تَمْهِيدًا 74.14
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৪। অমাহ্হাত্তু লাহূ তাম্হীদান্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৪ আর তার জন্য (জীবনকে) সুগম স্বাচ্ছন্দ্যময় করেছি।
ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ74.15
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৫। ছুম্মা ইয়াতমা‘ঊ আন্ আযীদা
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৫ এসবের পরেও সে আকাংখা করে যে, আমি আরো বাড়িয়ে দেই।
كَلَّا إِنَّهُ كَانَ لِآيَاتِنَا عَنِيدًا74.16
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৬। কাল্লা-; ইন্নাহূ কা-না লিআ-ইয়া-তিনা- ‘আনীদা-।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৬ কখনো নয়, নিশ্চয় সে ছিল আমার নিদর্শনাবলীর বিরুদ্ধাচারী।
سَأُرْهِقُهُ صَعُودًا74.17
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৭। সার্উহিকুহূ ছোয়া‘ঊদা-।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৭ অচিরেই আমি তাকে জাহান্নামের পিচ্ছিল পাথরে আরোহণ করতে বাধ্য করব।
إِنَّهُ فَكَّرَ وَقَدَّرَ74.18
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৮। ইন্নাহূ ফাক্কার অক্বদ্দার।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৮ নিশ্চয় সে চিন্তা-ভাবনা করল এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল।
فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ74.19
আরবি উচ্চারণ ৭৪.১৯। ফাকুতিলা কাইফা ক্বার্দ্দা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.১৯ অতঃপর সে ধ্বংস হোক! কীভাবে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল?
ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ74.20
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২০। ছুম্মা কুতিলা কাইফা ক্বার্দ্দা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২০ তারপর সে ধ্বংস হোক! কীভাবে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল?
ثُمَّ نَظَرَ74.21
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২১। ছুম্মা নাজোর্য়া
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২১ তারপর সে তাকাল।
ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ74.22
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২২। ছুম্মা ‘আবাসা ওয়াবাসার।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২২ তারপর সে ভ্রুকুঞ্চিত করল এবং মুখ বিকৃত করল।
ثُمَّ أَدْبَرَ وَاسْتَكْبَرَ74.23
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৩। ছুম্মা আদ্বার ওয়াস্তার্ক্বা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৩ তারপর সে পিছনে ফিরল এবং অহংকার করল।
فَقَالَ إِنْ هَذَا إِلَّا سِحْرٌ يُؤْثَرُ74.24
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৪। ফাক্ব-লা ইন্ হা-যা য় ইল্লা-সিহরুঁই ইয়ু”র্ছা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৪ অতঃপর সে বলল, ‘এ তো লোক পরম্পরায় প্রাপ্ত যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়’।
إِنْ هَذَا إِلَّا قَوْلُ الْبَشَرِ74.25
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৫। ইন্ হা-যা য় ইল্লা-ক্বওলুল্ বার্শা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৫ ‘এটা তো মানুষের কথামাত্র’।
سَأُصْلِيهِ سَقَرَ74.26
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৬। সাউছ্লীহি সার্ক্বা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৬ অচিরেই আমি তাকে জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করাব।
وَمَا أَدْرَاكَ مَا سَقَرُ74.27
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৭। অমা য় আদ্র-কা মা-সার্ক্বা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৭ কিসে তোমাকে জানাবে জাহান্নামের আগুন কী?
لَا تُبْقِي وَلَا تَذَرُ74.28
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৮। লা তুব্ক্বী অলা -তার্যা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৮ এটা অবশিষ্টও রাখবে না এবং ছেড়েও দেবে না।
لَوَّاحَةٌ لِلْبَشَرِ74.29
আরবি উচ্চারণ ৭৪.২৯। লাওয়্যা-হাতুল্লিল্বার্শা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.২৯ চামড়াকে দগ্ধ করে কালো করে দেবে।
عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ 74.30
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩০। ‘আলাইহা- তিস্‘আতা আ’র্শা
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩০ তার উপর রয়েছে ঊনিশজন (প্রহরী)।
وَمَا جَعَلْنَا أَصْحَابَ النَّارِ إِلَّا مَلَائِكَةً وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلَّا فِتْنَةً لِلَّذِينَ كَفَرُوا لِيَسْتَيْقِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَيَزْدَادَ الَّذِينَ آمَنُوا إِيمَانًا وَلَا يَرْتَابَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَالْمُؤْمِنُونَ وَلِيَقُولَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ وَالْكَافِرُونَ مَاذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهَذَا مَثَلًا كَذَلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي مَنْ يَشَاءُ وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ وَمَا هِيَ إِلَّا ذِكْرَى لِلْبَشَرِ74.31
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩১। অমা-জ্বা‘আল্না য় আছ্হা-বান্না-রি ইল্লা-মালা-য়িকাতাঁও অমা-জ্বা‘আল্না-ই‘দ্দাতাহুম্ ইল্লা-ফিত্নাতাল্ লিল্লাযীনা কাফারূ লিইয়াস্ তাইক্বিনা ল্লাযীনা ঊতুল্ কিতা-বা অইয়ায্দা-দাল্ লাযীনা আ-মানূ য় ঈমা-নাঁও অলা-ইর্য়াতা-বাল্ লাযীনা ঊতুল্ কিতা-বা অল্ মু”মিনূনা অলিইয়াকুলাল্ লাযীনা ফী কুলূ বিহিম্ মারদ্বুঁও অল্ কা-ফিরূনা মা-যা য় আরদাল্লা-হু বিহা-যা-মাছালা-; কাযা-লিকা ইয়ুদ্বিল্লুল্লা-হু মাইঁ ইয়াশা-য়ু অইয়াহ্দী মাইঁ ইয়াশা-য়্; অমা-ইয়া’লামু জুনূদা রব্বিকা ইল্লা-হূঅ ; অমা-হিয়া ইল্লা- যিক্রা-লিল্বার্শা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩১ আর আমি ফেরেশতাদেরকেই জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক বানিয়েছি। আর কাফিরদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ আমি তাদের সংখ্যা নির্ধারণ করেছি। যাতে কিতাবপ্রাপ্তরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে; আর মুমিনদের ঈমান বেড়ে যায় এবং কিতাবপ্রাপ্তরা ও মুমিনরা সন্দেহ পোষণ না করে। আর যেন যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা এবং অবশিষ্টরা বলে, এরূপ উপমা দ্বারা আল্লাহ কী ইচ্ছা করেছেন? এভাবেই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন আর যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আর তোমার রবের বাহিনী সম্পর্কে তিনি ছাড়া কেউ জানেন না। আর এ হচ্ছে মানুষের জন্য উপদেশমাত্র।
كَلَّا وَالْقَمَرِ74.32
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩২। কাল্লা-অল্ক্বার্মা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩২ কখনো নয়, চাঁদের কসম!
وَاللَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ74.33
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৩। অল্লাইলি ইয্ আর্দ্বা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৩ রাতের কসম, যখন তা সরে চলে যায়,
وَالصُّبْحِ إِذَا أَسْفَرَ 74.34
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৪। অছ্ছুব্হি ইযা য় আর্স্ফা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৪ প্রভাতের কসম, যখন তা উদ্ভাসিত হয়।
إِنَّهَا لَإِحْدَى الْكُبَرِ74.35
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৫। ইন্নাহা- লাইহ্দাল্ কুর্বা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৫ নিশ্চয় জাহান্নাম মহাবিপদসমূহের অন্যতম।
نَذِيرًا لِلْبَشَرِ74.36
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৬। নাযীরল্লিল্বার্শা ।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৬ মানুষের জন্য সতর্ককারীস্বরূপ।
لِمَنْ شَاءَ مِنْكُمْ أَنْ يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ74.37
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৭। লিমান্ শা-য়া মিন্কুম্ আইঁ ইয়াতাক্বাদ্দামা আওইয়াতায়াখ্র্ ।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৭ তোমাদের মধ্যে যে চায় অগ্রসর হতে অথবা পিছিয়ে থাকতে, তার জন্য।
كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ74.38
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৮। কুল্লু নাফ্সিম বিমা- কাসাবাত্ রহীনাহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৮ প্রতিটি প্রাণ নিজ অর্জনের কারণে দায়বদ্ধ।
إِلَّا أَصْحَابَ الْيَمِينِ74.39
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৩৯। ইল্লা য় আছ্হাবাল্ ইয়ামীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৩৯ কিন্তু ডান দিকের লোকেরা নয়,
فِي جَنَّاتٍ يَتَسَاءَلُونَ74.40
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪০। ফী জ্বান্না-ত্; ইয়াতাসা-য়ালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪০ বাগ-বাগিচার মধ্যে তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসা করবে,
عَنِ الْمُجْرِمِينَ74.41
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪১। ‘আনিল্ মুজ্ব্রিমীনা।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪১ অপরাধীদের সম্পর্কে
- নামাজে আমরা যা বলি তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ74.42
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪২। মা-সালাকাকুম্ ফী সার্ক্ব।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪২ কিসে তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করাল?
قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ74.43
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৩। ক্ব-লূ লাম্ নাকু মিনাল্ মুছোয়াল্লীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৩ তারা বলবে, ‘আমরা সালাত আদায়কারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না’।
وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِينَ74.44
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৪। অলাম্ নাকু নুত‘ইমুল্ মিসকীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৪ ‘আর আমরা অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করতাম না’।
وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ الْخَائِضِينَ74.45
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৫। অকুন্না-নাখূদু মা‘আল্ খ-য়িদ্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৫ ‘আর আমরা অনর্থক আলাপকারীদের সাথে (বেহুদা আলাপে) মগ্ন থাকতাম’।
وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّينِ74.46
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৬। অকুন্না নুকায্যিবু বিইয়াওমিদ্দীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৬ ‘আর আমরা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করতাম’।
حَتَّى أَتَانَا الْيَقِينُ74.47
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৭। হাত্তা য় আতা-নাল্ ইয়াক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৭ ‘অবশেষে আমাদের কাছে মৃত্যু আগমন করে’।
فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِينَ 74.48
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৮। ফামা-তান্ ফা‘ঊহুম্ শাফা-‘আতুশ্ শা-ফি‘ঈন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৮ অতএব সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন উপকার করবে না।
فَمَا لَهُمْ عَنِ التَّذْكِرَةِ مُعْرِضِينَ74.49
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৪৯। ফামা- লাহুম্ ‘আনিত্তায্কিরতি মু’রিদ্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৪৯ আর তাদের কী হয়েছে যে, তারা উপদেশ বাণী হতে বিমুখ?
كَأَنَّهُمْ حُمُرٌ مُسْتَنْفِرَةٌ74.50
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫০। কায়ান্নাহুম্ হুমুরুম্ মুস্তান্ফিরাহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫০ তারা যেন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পলায়নরত বন্য গাধা।
فَرَّتْ مِنْ قَسْوَرَةٍ74.51
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫১। র্ফারাত্ মিন্ ক্বাস্ ওয়ারাহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫১ যারা সিংহের ভয়ে পলায়ন করেছে।
بَلْ يُرِيدُ كُلُّ امْرِئٍ مِنْهُمْ أَنْ يُؤْتَى صُحُفًا مُنَشَّرَةً74.52
আরবি উচ্চারণ ৭৪. ৫২। বাল্ ইয়ুরীদু কুল্লুম্ রিয়িম্ মিন্হুম্ আইঁ ইয়ু”তা-ছুহুফাম্ মুনাশ্শারহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫২ বরং তাদের মধ্যকার প্রত্যেক ব্যক্তিই কামনা করে যে তাকে উন্মুক্ত গ্রস্ত প্রদান করা হোক।
كَلَّا بَلْ لَا يَخَافُونَ الْآخِرَةَ74.53
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫৩। কাল্লা-; বাল্ লা-ইয়াখ-ফূনাল্ আ-খিরাহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫৩ কখনও নয়! বরং তারা আখিরাতকে ভয় করে না।
كَلَّا إِنَّهُ تَذْكِرَةٌ74.54
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫৪। কাল্লা য় ইন্নাহূ তায্কিরাহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫৪ কখনও নয়! এটিতো উপদেশ মাত্র।
فَمَنْ شَاءَ ذَكَرَهُ74.55
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫৫। ফামান্ শা-য়া যাকারহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫৫ অতএব যার ইচ্ছা সে তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করুক।
وَمَا يَذْكُرُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ هُوَ أَهْلُ التَّقْوَى وَأَهْلُ الْمَغْفِرَةِ 74.56
আরবি উচ্চারণ ৭৪.৫৬। অমা-ইয়ায্কুরূনা ইল্লা য় আইঁ ইয়াশা-য়াল্লা-হ্; হুওয়া আহ্লুত্ তাক্ব্ওয়া অআহ্লুল্ মাগ্ফিরহ্।
বাংলা অনুবাদ ৭৪.৫৬ আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে পারে না। তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং ক্ষমার অধিকারী।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড
Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !!
- নামাজে আমরা যা বলি তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
- ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব ও বিধান,ইসলামে কোরবানির যত ফজিলত গুরুত্ব ও শিক্ষা
- বৃষ্টির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, বৃষ্টির নামাজের পর আমল
- ইসতিসকার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, ইসতিসকার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, ইসতিসকার নামাজের পর আমল