আজকের বিষয়: সূরা রুম সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল রুম আলমল ও ফজিলত, সূরা রুম কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা রুম নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৩০ সূরা আল – রুম
কুরআনের আলো অনুষ্ঠানের এই পর্বে সূরা আর- রুমের ৩০ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই সূরার ৩০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন:
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ (30)
“তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে এই ধর্মে প্রতিষ্ঠিত করো। এটা আল্লাহর প্রকৃতি; যার ভিত্তিতে তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর প্রকৃতির কোনো পরিবর্তন নেই, এটাই সরল ধর্ম, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তা জানে না।” (৩০:৩০)
গত কয়েকটি পর্বে আমরা মহান আল্লাহর অস্তিত্ব এবং আসমান ও জমিন সৃষ্টিতে তাঁর জ্ঞান ও ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকের এই আয়াতে বলা হচ্ছে: প্রকৃতির রূপ দেখার পাশাপাশি মানুষ যদি নিজের অন্তরের কাছে প্রশ্ন করে তাহলেও সে আল্লাহকে চিনতে পারবে। কারণ, মানুষের বিবেক সব সময় একজন শক্তিশালী সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব উপলব্ধি করে এবং তার জানান দেয়।
মহান আল্লাহ এই আয়াতে বিশ্বনবী (সা.)-সহ সব ঈমানদার ব্যক্তিকে শুধু মুখের কথায় নয় সেইসঙ্গে অন্তর দিয়েও দ্বীন ইসলামে প্রবেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি যেকোনো ধরনের পথভ্রষ্টতা ও ভ্রান্তি পরিহার করতে বলেছেন। নিঃসন্দেহে প্রতিটি ঐশী ধর্ম আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে নাজিল হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ইসলামের আগের সবগুলো ধর্ম প্রকৃত সত্য পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
এই আয়াতে বলা হচ্ছে: একমাত্র যে ধর্ম সঠিক পথে আছে এবং সব ধরনের বিচ্যুতি থেকে রক্ষা পেয়েছে তা হলো ইসলাম। এই ধর্ম মানব সৃষ্টিতে মহান আল্লাহর প্রকৃতির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। মানুষের প্রকৃতি যেমন সময়ের পরিবর্তনে পরিবর্তিত হয় না এবং সকল যুগের সকল মানুষ এক আদমের সন্তান হিসেবে একই প্রকৃতির অধিকারী, তেমনি এই মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য আল্লাহ যে ধর্ম নাজিল করেছেন তাও অপরিবর্তনীয় ও স্থায়ী। যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ যে ধর্ম নিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন তার পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রকাশ পেয়েছে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলামে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এই সত্য উপলব্ধি করে না। তারা ইসলামকে বাদ দিয়ে মানবরচিত এমন সব মতাদর্শ অনুসরণ করে যেগুলো অপূর্ণাঙ্গ ও ভুলে ভরা। অথবা তারা এমন সব ধর্মের অনুসরণ করে যেগুলো সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাবে না।
এই আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো:
১. মহান আল্লাহ মানুষকে এমন প্রকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যা সব সময় সত্যকে অনুসন্ধান এবং মিথ্যাকে ঘৃণা করে।
২. অনুশীলনের মাধ্যমে এই প্রকৃতিকে শানিত করে তুলতে হবে। তা না হলে আমাদেরকে উদাসীনতায় পেয়ে বসবে। মৌলিক ভিত্তি হিসেবে প্রত্যেকের অন্তরে ধর্মের অস্তিত্ব আছে। তবে আল্লাহর রাসূলের দেখানো পথে জীবন পরিচালনার মাধ্যমে এই শিক্ষাকে শানিত করতে হবে যাতে তা আমাদের অন্তরে স্থায়ী আসন গড়তে পারে।
এই সূরার ৩১ ও ৩২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন:
مُنِيبِينَ إِلَيْهِ وَاتَّقُوهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ (31) مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ (32)
“(তোমরাও) বিশুদ্ধচিত্তে তাঁরই অভিমুখী হও;তাঁকে ভয় করো,নামাজ কায়েম করো এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।” (৩০:৩১)
“(মুশরিক তারাই) যারা দ্বীন সম্পর্কে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে। (এদের) প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে সন্তুষ্ট।” (৩০:৩২)
আগের আয়াতে আমরা বলেছি, ধর্ম মানুষের প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হলেও অনুশীলন না থাকলে যেকোনো সময় মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ কারণে এই আয়াতে বলা হচ্ছে: যখনই মনে করবে ভ্রান্ত পথে চলে গেছো তখনই আল্লাহর রাস্তায় ফিরে এসো। এই পথ হচ্ছে তোমাদের একত্ববাদী প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পথ। এরপর ধর্ম রক্ষার জন্য কয়েকটি নির্দেশনা জারি করে বলা হচ্ছে: প্রথমত তাকওয়া অবলম্বন করতে হবে এবং গোনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, নামাজ আদায় ও আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই দুই নিদের্শ মেনে চলতে পারলে মানুষ তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও আমলের দিক দিয়ে শিরককারীদের অন্তর্ভূক্ত হবে না।
পরের আয়াতে শিরকের একটি পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করে বলা হচ্ছে: শিরকের কারণে সমাজ বহুধাবিভক্ত হয়ে যায় এবং প্রত্যেক দল নিজেদের মিথ্যা উপাস্যকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। তারা যার যার উপাস্যের কাছে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে। অথচ বিশ্বের সব মানুষ যদি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করত তাহলে সমাজে কোনো বিভক্তি থাকত না এবং বিশ্বব্যাপী ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠিত হতো।
এই দুই আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো হলো:
১. মানুষের ভেতরে থাকা ধর্মীয় অনুভূতি তখনই প্রস্ফুটিত হয় যখন সে তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের চেষ্টা করে।
২. মানব সমাজে ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার একমাত্র মাধ্যম তৌহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ। অন্যদিকে শিরক হচ্ছে সমাজে বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রধান কারণ।
সূরা রুমের ৩৩ ও ৩৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
وَإِذَا مَسَّ النَّاسَ ضُرٌّ دَعَوْا رَبَّهُمْ مُنِيبِينَ إِلَيْهِ ثُمَّ إِذَا أَذَاقَهُمْ مِنْهُ رَحْمَةً إِذَا فَرِيقٌ مِنْهُمْ بِرَبِّهِمْ يُشْرِكُونَ (33) لِيَكْفُرُوا بِمَا آَتَيْنَاهُمْ فَتَمَتَّعُوا فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ (34)
“মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন ওরা বিশুদ্ধচিত্তে তাদের প্রতিপালককে ডাকে;অতঃপর তিনি যখন ওদের প্রতি অনুগ্রহ করেন তখন ওদের একদল ওদের প্রতিপালকের সঙ্গে শরীক করে।” (৩০:৩৩)
“ওদের আমি যা দিয়েছি- তা অস্বীকার করার জন্য। সুতরাং উপভোগ করো, শীঘ্রই জানতে পারবে।” (৩০:৩৪)
এই আয়াতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির একটি উদাহরণ তুলে ধরে বলা হচ্ছে: যখন মানুষ এমন কোনো সমস্যা ও বিপদ পড়ে যে অন্য কারো পক্ষে তার সাহায্যে এগিয়ে আসা সম্ভব নয় তখন সে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। আল্লাহ তায়ালাকে তার সমস্যার সমাধান করে দিতে বলে। এর আগে সুখের সময়ে নিজের ধর্মীয় অনুভূতিকে অস্বীকার করে যে আল্লাহকে সে ভুলে ছিল বিপদের সময় সেই আল্লাহর কথা তার মনে পড়ে যায়। এ কারণে তখন সে এর আগে আল্লাহকে ভুলে থাকার জন্য তওবা ও অনুশোচনা করে এবং তাঁর কাছে বিপদ থেকে মুক্তি চায়। কিন্তু আল্লাহ তার অনুনয়-বিনয় গ্রহণ করে তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করে দেয়ার পর সে আবার আল্লাহকে ভুলে যায়। বিপদ থেকে আল্লাহ মুক্ত করে দিলেও সে নিজে এর কৃতিত্ব দাবি করে এবং অন্য অনেক যুক্তি দাঁড় করিয়ে আল্লাহর সাহায্যের বিষয়টিকে অস্বীকার করার চেষ্টা করে। একজন মানুষের জীবনে যদি এ ধরনের অকৃতজ্ঞতার ঘটনা বারবার ঘটতে থাকে তাহলে এক সময় সে আল্লাহর নেয়ামতের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যায়। অনেক সময় এ ধরনের মানুষ পার্থিব ধনসম্পদ ভোগ করলেও এদের চূড়ান্ত পরিণতি ভালো হয় না।
এই দুই আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো হলো:
১. কিছু মানুষ বিপদে পড়লেই কেবল আল্লাহকে স্মরণ করে। তাদের আচরণ দেখলে মনে হয় আল্লাহ কেবল বিপদ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্যই বসে আছেন এবং তারা যদি বিপদে না পড়ত তাহলে আল্লাহকে তাদের প্রয়োজনই হতো না।
২. বিপদ ও সংকটের সময় আল্লাহর প্রতি মানুষের উদাসিনতা কেটে যায় এবং সে তার প্রকৃতির দিকে ফিরে আসে।
৩. পার্থিব জীবনে সম্পদের প্রাচুর্য মানুষকে আল্লাহর স্মরণ থেকে ভুলিয়ে রাখে এবং তাকে অকৃতজ্ঞতা ও কুফরের দিকে টেনে নিয়ে যায়
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
নামকরণঃ
প্রথম আয়াতের ‘গ্বুলিবাতির রুম’ থেকে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
নাযিলের সময়কালঃ
শুরতেই যে ঐতিহাসিক ঘটনার কথা বলা হয়েছে তা থেকে নাযিলের সময় কাল চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়ে যায়। এখানে বলা হয়েছে যে, “নিকটবর্তী দেশে রোমীয়রা পরাজিত হয়েছে।” সে সময় আরবের সন্নিহিত রোম অধিকৃত এলাকা ছিল জর্দান, সিরিয়া ও ফিলিস্তীন। এসব এলাকায় রোমানদের ওপর ইরানীদের বিজয় ৬১৫ খৃষ্টাব্দে পূর্ণতা লাভ করেছিল। এ থেকে পূর্ণ নিশ্চয়তা সহকারে বলা যেতে পারে যে, এ সূরাটি সে বছরই নাযিল হয় এবং হাবশায় হিজরাতও এ বছরই অনুষ্ঠিত হয়।
ঐতিহাসিক পটভূমিঃ
এ সূরার প্রথম দিকের আয়াতগুলোতে যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে তা কুরআন মজীদের আল্লাহর কালাম এবং মুহাম্মদ (সা) এর সত্য রসূল হবার সুস্পষ্ট প্রমাণগুলোর অন্যতম। এটি অনুধাবন করার জন্য এ আয়াতগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর একটু বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন।
নবী (সা) এর নবুওয়াত লাভের ৮ বছর আগের একটি ঘটনা । রোমের কায়সার মরিসের (Mauric) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়। ফোকাস (phocas) নামক এক ব্যক্তি রাজ সিংহাসন দখল করে। সে প্রথমে কায়সারের চোখের সামনে তাঁর পাঁচ পুত্রকে হত্যা করায় তাঁরপর নিজে কায়সারকে হত্যা করে পিতা ও পুত্রদের কর্তিত মস্তকগুলো কনস্ট্যান্টিনোপলে প্রকাশ্য রাজপথে টাঙিয়ে দেয়। এর কয়েকদিন পর সে কায়সারের স্ত্রী ও তাঁর তিন কন্যাকেও হত্যা করে। এ ঘটনার ফলে ইরানের বাদশাহ খসরু পারভেজ রোম আক্রমণ করার চমৎকার নৈতিক ওজুহাত খুঁজে পান। কায়সার মরিস ছিলেন তাঁর অনুগ্রাহক। তাঁর সহায়তায় পারভেজ ইরানের সিংহাসন দখল করেন। তাই তিনি তাকে নিজের পিতা বলতেন। এ কারণে তিনি ঘোষণা করেন , বিশ্বাসঘাতক ফোকাস আমার পিতৃতুল্য ব্যক্তি ও তাঁর সন্তানদের প্রতি যে জুলুম করেছে আমি তাঁর প্রতিশোধ নেবো। ৬০৩ খৃষ্টাব্দে তিনি রোম সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন এবং কয়েক বছরের মধ্যে ফোকাসের সেনাবাহিনীর একের পর এক পরাজিত করে একদিকে এশিয়া মাইনরের এডেসার (বর্তমান উরফা) এবং অন্যদিকে সিরিয়ার হালব ও আন্তাকিয়ায় পৌঁছে যান। রোমের রাজ পরিষদ যখন দেখলো ফোকাস দেশ রক্ষা করতে পারছে না তখন তারা আফ্রিকার গবর্ণরের সাহায্য চাইলো। গবর্ণর তাঁর পুত্র হিরাক্লিয়াসকে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী সহকারে কনস্ট্যান্টিনোপলে পাঠান। তার সেখানে পৌঁছে যাবার সাথে সাথেই ফোকাসকে পদচ্যুত করা হয়। তাঁর পরিবর্তে হিরাক্লিয়াসকে কায়সার পদে অভিষিক্ত করা হয়। তিনি ক্ষমতাসীন হয়েই ফোকাসের সাথে একই ব্যবহার করেন যা সে ইতিপূর্বে মরিসের সাথে করেছিল। এটি ছিল ৬১০ খৃষ্টাব্দের ঘটনা এবং এ বছর নবী (সা) আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত লাভ করেন।
খসরু পারভেজ যে নৈতিক বাহানাবাজির ভিত্তিতে যুদ্ধ করেছিলেন। ফোকাসের পদচ্যুতি ও তাঁর হত্যার পর তা খতম হয়ে গিয়েছিল। যদি সত্যিই বিশ্বাসঘাত ফোকাসের থেকে তাঁর জুলুমের প্রতিশোধ গ্রহণ করাই তাঁর উদ্দেশ্যে থাকতো তাহলে তাঁর নিহত হবার পর নতুন কায়সারের সাথে পারভেজের সন্ধি করে নেয়া উচিত ছিল । কিন্তু তিনি এরপরও যুদ্ধ জারি রাখেন। বরং এরপর তিনি এ যুদ্ধকে অগ্নি উপাসক ও খৃষ্টবাদের মধ্যে ধর্মীয় যুদ্ধের রূপ দেন। খৃষ্টানদের যেসব সম্প্রদায়কে ধর্মচ্যুত ও নাস্তিক গণ করে রোমান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় গীর্জা বছরের পর বছর ধরে তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল (অর্থাৎ নাস্তুরী, ইয়াকূবী ইত্যাদি) তারাও আক্রমণকারী অগ্নি উপাসকদের প্রতি সর্বাত্মক সহানুভূতি দেখাতে থাকে। এদিকে ইহুদীরাও অগ্নি উপাসকদেরকে সমর্থন দেয়। এমন কি খসরু পারভেজের সেনাবাহিনীতে অংশ গ্রহণকারী ইহুদী সৈন্যদের সংখ্যা ২৬ হাজারে পৌঁছে যায়।
হিরাক্লিয়াস এসে এ বাঁধা ভাঙ্গা স্রোত রোধ করতে পারেন নি। সিংহাসনে আরোহণের পরপরই পূর্বদেশ থেকে প্রথম যে খবরটি তাঁর কাছে পৌঁছে সেটি ছিল ইরানীদের হাতে আন্তাকিয়ার পতন। তাঁরপর ৬১৩ খৃষ্টাব্দে তারা দামেশক দখল করে। ৬১৪ খৃষ্টাব্দে বায়তুল মাকদিস দখল করে ইরানীরা সমগ্র খৃষ্টান জগতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ৯০ হাজার খৃষ্টানকে এই শহরে হত্যা করা হয়। তাদের সবচেয়ে পবিত্র আল কিয়ামাহ গীর্জা (Holy sepulchre) ধ্বংস করে দেয়া হয়। আসল ক্রুশ দণ্ডটি, যে সম্পর্কে খৃষ্টানদের বিশ্বাস হযরত মসীহকে তাতেই শূলীবিদ্ধ করা হয়েছিল , ইরানীরা ছিনিয়ে নিয়ে মাদায়েন পৌঁছিয়ে দেয়। আর্যবিশপ যাকারিয়াকেও পাকড়াও করা হয় এবং শহরের সমস্ত বড় বড় গীর্জা তারা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। খসরু পারভেজ বিজয়ের নেশায় যেভাবে পাগল হয়ে গিয়েছিলেন তা বায়তুল মাকদিস থেকে হিরাক্লিয়াসকে তিনি যে পত্রটি লিখেছিলেন তা থেকে আন্দাজ করা যায়। তাতে তিনি বলেনঃ
“সকল খোদার বড় খোদা, সমগ্র পৃথিবীর অধিকারী খসরুর পক্ষ থেকে তাঁর নীচ ও মূর্খ অজ্ঞ বান্দা হিরাক্লিয়াসের নামে –
“তুমি বলে থাকো, তোমার খোদার প্রতি তোমার আস্থা আছে। তোমার খোদা আমার হাত থেকে জেরুশালেম রক্ষা করলেন না কেন ? ”
এ বিজয়ের পর এক বছরের মধ্যে ইরানী সেনাদল জর্দান, ফিলিস্তীন ও সমগ্র সিনাই উপদ্বীপ দখল করে পারস্য সাম্রাজ্যের সীমানা মিসর পর্যন্ত বিস্তৃত করে। এটা এমন এক সময় ছিল যখন মক্কা মু’ আযযামায় এর চাইতে আরো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধ চলছিল। এখানে মুহাম্মদ (সা) এর নেতৃত্বাধীনে তাওহীদের পতাকাবাহীরা কুরাইশ সরদারদের নেতৃত্বে শিরকের পতাকাবাহীদের সাথে যুদ্ধরত ছিল। এ অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, ৬১৫ খৃষ্টাব্দে বিপুল সংখ্যক মুসলমানকে স্বদেশ ত্যাগ করে হাবশার খৃষ্টান রাজ্যে (রোম সাম্রাজ্যের মিত্র দেশ) আশ্রয় নিতে হয়। এ সময় রোম সাম্রাজ্যে ইরানের বিজয় অভিযানের কথা ছিল সবার মুখেমুখে, মক্কার মুশরিকরা এসব কথায় আহলাদে আটখানা হয়ে উঠেছিল। তারা মুসলমানদের বলতো, দেখো, ইরানের অগ্নি উপাসকরা বিজয় লাভ করেছে এবং অহী ও নবুওয়াত অনুসারী খৃষ্টানরা একের পর এক পরাজিত হয়ে চলছে। অনুরূপভাবে আমরা আরবের মূর্তিপূজারীরাও তোমাদেরকে এবং তোমাদের দ্বীনকে ধ্বংস করে ছাড়বো।
এ অবস্থায় কুরআন মাজীদের এ সূরাটি নাযিল হয় এবং এখানে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়ঃ “নিকটবর্তী দেশে রোমানরা পরাজিত হয়েছে কিন্তু এ পরাজয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যেই আবার তারা বিজয়ী হবে।” এর মধ্যে একটির পরিবর্তে দুটি ভবিষদ্বাণী করা হয়েছে। একটি হচ্ছে , রোমানরা জয়লাভ করবে এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে, মুসলমানরাও একই সময় বিজয় লাভ করবে। আপাতদৃষ্টিতে এ দুটি ভবিষদ্বাণীর কোন একটিরও কয়েক বছরের মধ্যে সত্যে পরিণত হবার কোন দূরতম সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছিল না। একদিকে ছিল মুষ্টিমেয় কয়েকজন মুসলমান। তারা মক্কায় নির্যাতিত হয়ে চলছিল। এ ভবিষদ্বাণীর পরও আট বছর পর্যন্ত কোন দিক থেকে তাদের বিজয় লাভের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না। অন্যদিকে রোমের পরাজয়ের বহর দিনের দিন বেড়েই চলছিল। ৬১৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র মিশর পারস্য সাম্রাজ্যের অধীনে চলে এসেছিল। অগ্নি উপাসক সেনাদল ত্রিপোলির সন্নিকটে পৌঁছে তাদের পতাকা গেড়ে দিয়েছিল । এশিয়া মাইনরে ইরানী সেনাদল রোমানদের বিতাড়িত ও বিধ্বস্ত করতে করতে বসফোরাস প্রণালীতে পৌঁছে গিয়েছিল। ৬১৭ সালে তারা কনস্ট্যান্টিনোপলের সামনে খিলকদুন (chalcedon:বর্তমানে কাযীকোই) দখল করে নিয়েছিল। কায়সার খসরুর কাছে দূত পাঠিয়ে অত্যন্ত বিনয় ও দীনতা সহকারে আবেদন করলেন, আমি যে কোন মূল্যে সন্ধি করতে প্রস্তুত।কিন্তু তিনি জবাব দিলেনঃ “ এখন আমি কায়সারকে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপত্তা দেবো না যতক্ষণ না তিনি শৃঙ্খলিত অবস্থায় আমার সামনে হাজির হন এবং তাঁর শূলী বিদ্ধ ঈশ্বরকে ত্যাগ করে অগ্নি খোদার উপাসনা করেন।” অবশেষে কায়সার এমনই পরাজিত মনোভাব সম্পন্ন হয়ে পড়লেন যে, তিনি কনস্ট্যান্টিনোপল ত্যাগ করে কার্থেজে (carthage:বর্তমান টিউনিস ) চলে যাবার পরিকল্পনা করলেন। মোটকথা ইংরেজ ঐতিহাসিক গীবনের বক্তব্য অনুযায়ী কুরআন মাজীদের এ ভবিষদ্বাণীর পরও সাত আট বছর পর্যন্ত এমন অবস্থা ছিল যার ফলে রোমানরা ইরানীদের ওপর বিজয় লাভ করবে এ ধরনের কোন কথা কোন ব্যক্তি কল্পনাও করতে পারতো না । বরং বিজয় তো দূরের কথা তখন সামনের দিকে এ সাম্রাজ্য আর টিকে থাকবে এ আশাও কারো ছিল না।
কুরআন মাজীদের এ আয়াত নাযিল হলে মক্কার কাফেররা এ নিয়ে খুবই ঠাণ্ডা বিদ্রুপ করতে থাকে। উবাই ইবনে খালফ হযরত আবু বকরের (রা) সাথে বাজী রাখে। সে বলে, যদি তিন বছরের মধ্যে রোমানরা জয়লাভ করে তাহলে আমি তোমাকে দশটা উট দেবো অন্যথায় তুমি আমাকে দশটা উট দেবে। নবী (সা) এর বাজীর কথা জানতে পেরে বলেন, কুরআনে বলা হয়েছে ‘ফী বিদ্বঈসিনিন’ আর আরবী ভাষায় ‘বিদঈ’ শব্দ বললে দশের কম বুঝায়। কাজেই দশ বছরের শর্ত রাখো এবং উটের সংখ্যা দশ থেকে বাড়িয়ে একশো করে দাও। তাই হযরত আবু বকর (রা) উবাইর সাথে আবার কথা বলেন এবং নতুনভাবে শর্ত লাগানো হয় যে, দশ বছরের মধ্যে উভয় পক্ষের যার কথা মিথ্যা প্রমাণিত হবে সে অন্যপক্ষকে একশোটি উট দেবে।
৬২২ সালে একদিকে নবী (সা) হিজরাত করে মদীনা তাইয়েবায় চলে যান অন্যদিকে কায়সার হিরাক্লিয়াস নীরবে কনস্ট্যান্টিনোপল থেকে বের হয়ে কৃষ্ণসাগরের পথে ত্রাবিজুনের দিকে রওয়ানা দেন। সেখানে গিয়ে তিনি পেছন দিক থেকে ইরানের ওপর আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এই প্রতি আক্রমণের প্রস্তুতির জন্য কায়সার গীর্জার কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানান। ফলে খৃষ্টীয় গীর্জার প্রধান বিশপ সারজিয়াস (sergius) খৃষ্টবাদকে মাজুসীবাদের (অগ্নিপূজা) হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গীর্জাসমূহে ভক্তদের নজরানা বাবদ প্রদত্ত অর্থ সম্পদ সুদের ভিত্তিতে ঋণ দেন। হিরাক্লিয়াস ৬২৩ খৃষ্টাব্দে আর্মেনিয়া থেকে নিজের আক্রমণ শুরু করেন। দ্বিতীয় বছর ৬২৪ সালে তিনি আজারবাইজানে প্রবেশ করে জরথুষ্ট্রের জন্মস্থান আরমিয়াহ (clorumia) ধ্বংস করেন এবং ইরানীদের সর্ববৃহৎ অগ্নিকুণ্ড বিধ্বস্ত করেন। আল্লাহর মহিমা দেখুন, এই বছরেই মুসলমানরা বদর নামক স্থানে মুশরিকরা মোকাবিলায় প্রথম চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে। এভাবে সূরা রূমে উল্লেখিত দু’ টি ভবিষ্যদ্বাণীর দশ বছরের সময়সীমা শেষ হবার আগেই একই সঙ্গে সত্য প্রমাণিত হয়।
এরপর রোমান সৈন্যরা অনবরত ইরানীদেরকে পর্যুদস্ত করে যেতেই থাকে। ৬২৭ খৃষ্টাব্দে নিনেভার যুদ্ধে তারা পারস্য সাম্রাজ্যের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়। এরপর পারস্য সম্রাটদের আবাসস্থল বিধ্বস্ত করে। হিরাক্লিয়াসের সৈন্যদল সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে এবং তারা তদানীন্তন ইরানের রাজধানী তায়াসফুনের (ctesiphon) দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। ৬২৮ সালে খসরু পারভেজের পরিবার তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দেয়। তাকে বন্ধী করা হয়। তাঁর চোখের সামনে তাঁর ১৮ জন পুত্র সন্তানকে হত্যা করা হয়। কয়েকদিন পরে কারা যন্ত্রণায় কাতর হয়ে তিনি নিজেও মৃত্যুবরণ হত্যা করা হয়।এ বছরই হুদাইবিয়ার চুক্তি সম্পাদিত হয়, যাকে কুরআন মহা বিজয় নামে আখ্যায়িত করেছে এবং এ বছরই খসরুর পুত্র দ্বিতীয় কুবাদ সমস্ত রোম অধিকৃত এলাকার ওপর থেকে অধিকার ত্যাগ করে এবং আসল ক্রুশ ফিরিয়ে দিয়ে রোমের সাথে সন্ধি করে। ৬২৯ সালে “পবিত্র ক্রুশ” কে স্বস্থানে স্থাপন করার জন্য কায়সার নিজে “বায়তুল মাকদিস” যান এবং এ বছরই নবী (সা) কাযা উমরাহ আদায় করার জন্য হিজরাতের পর প্রথম বার মক্কা মু’আযযমায় প্রবেশ করেন।
এরপর কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণী যে, পুরোপুরি সত্য ছিল এ ব্যাপারে কারো সামান্যতম সন্দেহের অবকাশই ছিল না। আরবের বিপুল সংখ্যক মুশরিক এর প্রতি ঈমান আনে। উবাই ইবনে খালফের উত্তরাধিকারীদের পরাজয় মেনে নিয়ে হযরত আবু বকরকে (রা) বাজীর একশো উট দিয়ে দিতে হয়। তিনি সেগুলো নিয়ে নবী (সা) এর খেদমতে হাজির হন। নবী (সা) হুকুম দেন , এগুলো সাদকা করে দাও। কারণ বাজী যখন ধরা হয় তখন শরীয়াতে জুয়া হারাম হবার হুকুম নাযিল হয়নি।কিন্তু এখন তা হারাম হবার হুকুম এসে গিয়েছিল। তাই যুদ্ধের মাধ্যমে বশ্যতা স্বীকারকারী কাফেরদের থেকে বাজীর অর্থ নিয়ে নেয়ার অনুমতি তো দিয়ে দেয়া হয়েছে কিন্তু এই সঙ্গে হুকুম দেয়া হয়, তা নিজে ভোগ না করে সাদকা করে দিতে হবে।
বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্যঃ
এ সূরায় বক্তব্য এভাবে শুরু করা হয়েছে, আজ রোমানরা পরাজিত হয়েছে এবং সমগ্র বিশ্ববাসী মনে করছে এ সাম্রাজ্যের পতন আসন্ন।কিন্তু কয়েক বছর অতিবাহিত হতে না হতেই সবকিছুর পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং আজ যে পরাজিত সেদিন সে বিজয়ী হয়ে যাবে।
এ ভুমিকা থেকে একথা প্রকাশিত হয়েছে যে, মানুষ নিজের বাহ্য দৃষ্টির কারণে শুধুমাত্র তাই দেখে যা তাঁর চোখের সামনে থাকে।কিন্তু এ বাহ্যিক পর্দার পেছনে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। এ বাহ্যদৃষ্টি যখন দুনিয়ার সামান্য সামান্য ব্যাপারে বিভ্রান্তি ও ভ্রান্ত অনুমানের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং যখন শুধুমাত্র “আগামীকাল কি হবে”এতটুকু কথা না জানার কারণে মানুষ ভুল হিসেব করে বসে তখন সামগ্রিকভাবে সমগ্র জীবনের ব্যাপারে ইহকালীন বাহ্যিক জীবনের ওপর নির্ভরশীল এবং এরি ভিত্তিতে নিজের সমগ্র জীবন পুঁজিকে বাজী রাখা মস্ত বড় ভুল , তাতে সন্দেহ নেই।
এভাবে রোম ইরানের বিষয় থেকে ভাষণ আখেরাতের বিষয়ের দিকে মোড় নিয়েছে এবং ক্রমাগত তিন রুকু পর্যন্ত বিভিন্নভাবে একথা বুঝাবার চেষ্টা করা হয়েছে যে, আখেরাতের জীবন সম্ভব, যুক্তিসঙ্গত এবং এর প্রয়োজনও আছে। মানুষের জীবন ব্যবস্থাকে সুস্থ ও সুন্দর করে রাখার স্বার্থেও তাঁর জন্য আখেরাতে বিশ্বাস করে বর্তমান জীবনের কর্মসূচী নেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় বাহ্যদৃষ্টির ওপর নির্ভর করে কর্মসূচী গ্রহণ করার যে পরিণাম হয়ে থাকে তাই হতে বাধ্য।
এ প্রসঙ্গে আখেরাতের পক্ষে যুক্তি পেশ করতে গিয়ে বিশ্ব- জগতের যেসব নিদর্শনকে সাক্ষ্য- প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে সেগুলো তাওহীদেরও প্রমাণ পেশ করে। তাই চতুর্থ রুকুর শুরু থেকে তাওহীদের সত্য ও শিরককে মিথ্যা প্রমাণ করাই ভাষণের লক্ষ হয়ে দাঁড়ায় এবং বলা হয় , মানুষের জন্য পুরোপুরি এক নিষ্ঠ হয়ে এক আল্লাহর বন্দেগী করা ছাড়া আর কোন প্রাকৃতিক ধর্ম নেই। শিরক বিশ্ব প্রকৃতি ও মানব প্রকৃতির বিরোধী। তাই যেখানেই মানুষ এ ভ্রষ্টতাঁর পথ অবলম্বন করেছে সেখানেই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে । এ সুযোগে আবার সেই মহা বিপর্যয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যা সে সময় দুনিয়ার দুটি সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধের কারণে সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। বলা হয়েছে, এ বিপর্যয়ও শিরকের অন্যতম ফল এবং মানব জাতির অতীত ইতিহাসে যতগুলো জাতি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে তারা সবাই ছিল মুশরিক।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে উপমার মাধ্যমে লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে, যেমন মৃত পতিত যমীন আল্লাহ প্রেরিত বৃষ্টির স্পর্শে সহসা জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং জীবন ও ফসলের ভাণ্ডার উদগীরণ করতে থাকে, ঠিক তেমনি আল্লাহ প্রেরিত অহী ও নবুওয়াতও মৃত পতিত মানবতাঁর পক্ষে রহমতের বারিধারা স্বরূপ এবং নাযিল হওয়া তাঁর জন্য জীবন, বৃদ্ধি, বিকাশ এবং কল্যাণের উৎসের কারণ হয়। এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করলে আরবের এ অনুর্বর ভূমি আল্লাহর রহমতে শস্য শ্যামল হয়ে উঠবে এবং সমস্ত কল্যাণ হবে তোমাদের নিজেদেরই জন্য। আর এর সদ্ব্যবহার না করলে নিজেদেরই ক্ষতি করবে। তাঁরপর অনুশোচনা করেও কোন লাভ হবে না এবং ক্ষতিপূরণ করার কোন সুযোগই পাবে না।
- নামাজে আমরা যা বলি , তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- “লা আদওয়া” সংক্রমন নেই!হাদীসটি কী বুঝায়?
- রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যত পরামর্শ
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন
- আজহারী: কোন ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙে
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
সুরা নং- ০৩০ : আর-রুম
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
الٓمٓ ١
আরবি উচ্চারণ ৩০.১। আলিফ্ লা-ম্ মী-ম্ ।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১আলিফ-লাম-মীম।
غُلِبَتِ ٱلرُّومُ ٢
আরবি উচ্চারণ ৩০.২। গুলিবার্তি রূম্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২ রোমানরা পরাজিত হয়েছে।
فِىٓ أَدۡنَى ٱلۡأَرۡضِ وَهُم مِّنۢ بَعۡدِ غَلَبِهِمۡ سَيَغۡلِبُونَ ٣
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩। ফী য়আদ্নাল্ র্আদ্বি অহুম্ মিম্ বা’দি গলাবিহিম্ সাইয়াগ্লিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩ নিকটবর্তী অঞ্চলে , আর তারা তাদের এ পরাজয়ের পর অচিরেই বিজয়ী হবে,
فِى بِضۡعِ سِنِينَۗ لِلَّهِ ٱلۡأَمۡرُ مِن قَبۡلُ وَمِنۢ بَعۡدُۚ وَيَوۡمَٮِٕذٍ۬ يَفۡرَحُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٤
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪। ফী বিদ্ব্‘ই সিনীন্; লিল্লা-হিল্ আম্রু মিন্ ক্বব্লু অমিম্ বা’দ্; অ ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াফ্রহুল্ মু’মিনূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪ কয়েক বছরের মধ্যেই । পূর্বের ও পরের সব ফয়সালা আল্লাহরই। আর সেদিন মুমিনরা আনন্দিত হবে,
بِنَصۡرِ ٱللَّهِۚ يَنصُرُ مَن يَشَآءُۖ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ ٥
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫। বিনাছ্রিল্লা-হ্; ইয়ান্ছুরু মাইঁ ইয়াশা-য়্; অহুওয়াল্ ‘আযীর্যু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫ আল্লাহর সাহায্যে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
وَعۡدَ ٱللَّهِۖ لَا يُخۡلِفُ ٱللَّهُ وَعۡدَهُ ۥ وَلَـٰكِنَّ أَڪۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعۡلَمُونَ ٦
আরবি উচ্চারণ ৩০.৬। অ’দাল্লা-হ্; লা-ইয়ুখ্লিফু ল্লা-হু অ’দাহূ অলা-কিন্না আক্ছারান্না-সি লা-ইয়া’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৬ আল্লাহর ওয়াদা। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা খেলাফ করেন না। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।
يَعۡلَمُونَ ظَـٰهِرً۬ا مِّنَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَهُمۡ عَنِ ٱلۡأَخِرَةِ هُمۡ غَـٰفِلُونَ ٧
আরবি উচ্চারণ ৩০.৭। ইয়া’লামূনা জ্বোয়া-হিরম্ মিনাল্ হাইয়া-তিদ্ দুন্ইয়া-অহুম্ ‘আনিল্ আ-খিরতি হুম্ গ-ফিলূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৭ তারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিক সম্পর্কে জানে, আর আখিরাত সম্পর্কে তারা গাফিল।
أَوَلَمۡ يَتَفَكَّرُواْ فِىٓ أَنفُسِہِمۗ مَّا خَلَقَ ٱللَّهُ ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَہُمَآ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَأَجَلٍ۬ مُّسَمًّ۬ىۗ وَإِنَّ كَثِيرً۬ا مِّنَ ٱلنَّاسِ بِلِقَآىِٕ رَبِّهِمۡ لَكَـٰفِرُونَ ٨
আরবি উচ্চারণ ৩০.৮। আঅলাম্ ইয়াতাফাক্কারূ ফী য় আন্ফুসিহিম্ মা-খলাক্বল্লা-হুস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্বোয়া অমা-বাইনা হুমা য় ইল্লা-বিল্ হাক্ব ক্বি অআজ্বালিম্ মুসাম্মা-অইন্না কাছীরাম্ মিনান্না-সি বিলিক্ব-য়ি রব্বিহিম্ লাকা-ফিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৮ তারা কি নিজদের অন্তরে ভেবে দেখে না, আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সব কিছুই যথাযথভাবে ও এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৃষ্টি করেছেন? আর নিশ্চয় বহু লোক তাদের রবের সাক্ষাতে অবিশ্বাসী।
أَوَلَمۡ يَسِيرُواْ فِى ٱلۡأَرۡضِ فَيَنظُرُواْ كَيۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ ڪَانُوٓاْ أَشَدَّ مِنۡہُمۡ قُوَّةً۬ وَأَثَارُواْ ٱلۡأَرۡضَ وَعَمَرُوهَآ أَڪۡثَرَ مِمَّا عَمَرُوهَا وَجَآءَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَيِّنَـٰتِۖ فَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيَظۡلِمَهُمۡ وَلَـٰكِن كَانُوٓاْ أَنفُسَہُمۡ يَظۡلِمُونَ ٩
আরবি উচ্চারণ ৩০.৯। আওয়ালাম্ ইয়াসীরূ ফিল্ র্আদ্বি ফাইয়ান্জুরূ কাইফা কা-না ‘আ-ক্বিবাতুল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিহিম্; কা-নূ য় আশাদ্দা মিন্হুম্ কুওয়্যাতাঁও অআছারুল্ র্আদ্বোয়া অ ‘আমারূহা য় আক্ছার মিম্মা-‘আমারূহা-অজ্বা-য়াত্হুম্ রুসুলুহুম্ বিল্বাইয়্যিনা-ত্ ফামা-কা-নাল্লা-হুলিইয়াজ্ লিমাহুম্ অলা-কিন্ কা-নূ য় আন্ফুসাহুম্ ইয়াজ্লিমূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৯ তারা কি যমীনে ভ্রমন করে না? তাহলে তারা দেখত যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল। তারা শক্তিতে তাদের চেয়েও প্রবল ছিল। আর তারা জমি চাষ করত এবং তারা এদের আবাদ করার চেয়েও বেশী আবাদ করত। আর তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট প্রমানাদিসহ এসেছিল। বস্তুতঃ আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তাদের প্রতি যুল্ম করবেন, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজদের প্রতি যুলম করত।
ثُمَّ كَانَ عَـٰقِبَةَ ٱلَّذِينَ أَسَـٰٓـُٔواْ ٱلسُّوٓأَىٰٓ أَن ڪَذَّبُواْ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ وَكَانُواْ بِہَا يَسۡتَهۡزِءُونَ ١٠
আরবি উচ্চারণ ৩০.১০। ছুম্মা কা-না ‘আ-ক্বিবাতাল্লাযীনা আসা-য়ুস্ সূ-য়া য় আন্ কায্যাবূ বিআ-ইয়া-তিল্লা-হি অকা-নূ বিহা-ইয়াস্তাহ্যিয়ূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১০ তারপর যারা মন্দ কাজ করেছিল তাদের পরিণাম মন্দ হয়েছিল। কারণ তারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছিল এবং সেগুলো নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করত।
ٱللَّهُ يَبۡدَؤُاْ ٱلۡخَلۡقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ ۥ ثُمَّ إِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ ١١
আরবি উচ্চারণ ৩০.১১। আল্লা-হু ইয়াব্দায়ুল্ খল্ক্ব ছুম্মা ইয়ু‘ঈদুহূ ছুম্মা ইলাইহি র্তুজ্বা‘ঊন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১১ আল্লাহ সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই তার পুনরাবৃত্তি করবেন। তারপর তাঁর কাছেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ يُبۡلِسُ ٱلۡمُجۡرِمُونَ ١٢
আরবি উচ্চারণ ৩০.১২। অইয়াওমা তাকুমুস্ সা-‘আতু ইয়ুব্লিসুল্ মুজরিমূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১২ আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন অপরাধীরা হতাশ হয়ে পড়বে।
وَلَمۡ يَكُن لَّهُم مِّن شُرَكَآٮِٕهِمۡ شُفَعَـٰٓؤُاْ وَڪَانُواْ بِشُرَكَآٮِٕهِمۡ ڪَـٰفِرِينَ ١٣
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৩। অলাম্ ইয়াকুল্লাহুম্ মিন্ শুরাকা-য়িহিম্ শুফা‘আ-য়ু অকা-নূ বিশুরকা-য়িহিম্ কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৩ আর তাদের শরীকরা তাদের জন্য সুপারিশকারী হবে না এবং তারা তাদের শরীকদেরকে অস্বীকার করবে।
وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ يَوۡمَٮِٕذٍ۬ يَتَفَرَّقُونَ ١٤
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৪। অইয়াওমা তাকুমুস্ সা- ‘আতু ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াতার্ফারকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৪ আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে পড়বে।
فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَهُمۡ فِى رَوۡضَةٍ۬ يُحۡبَرُونَ ١٥
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৫। ফাআম্মাল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া‘আমিলুছ্ ছোয়া-লিহা- তি ফাহুম্ ফী রাওদ্বোয়াতিঁই ইয়ুহ্বারূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৫ অতএব যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে জান্নাতে পরিতুষ্ট করা হবে।
وَأَمَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ وَكَذَّبُواْ بِـَٔايَـٰتِنَا وَلِقَآىِٕ ٱلۡأَخِرَةِ فَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ فِى ٱلۡعَذَابِ مُحۡضَرُونَ ١٦
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৬। অআম্মাল্লাযীনা কাফারূ অকায্যাবূ বিআ-ইয়া-তিনা- অ লিক্ব-য়িল্ আ-খিরতি ফাউলা-য়িকা ফীল্ ‘আযা-বি মুহ্দ্বোয়ারূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৬ আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াত ও আখিরাতের সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে, তাদেরকে আযাবের মধ্যে উপস্থিত করা হবে।
فَسُبۡحَـٰنَ ٱللَّهِ حِينَ تُمۡسُونَ وَحِينَ تُصۡبِحُونَ ١٧
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৭। ফাসুব্হা-না ল্লা-হি হীনা তুম্সূনা অহীনা তুছ্বিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৭ অতএব তোমরা আল্লাহর তাসবীহ কর, যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে এবং সকালে উঠবে । وَلَهُ ٱلۡحَمۡدُ فِى ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَعَشِيًّ۬ا وَحِينَ تُظۡهِرُونَ ١٨
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৮। অলাহুল্ হাম্দু ফিস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্বি অ‘আশিয়্যাঁও অহীনা তুজ্হিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৮ আর অপরাহ্নে ও যুহরের সময়ে; আর আসমান ও যমীনে সকল প্রশংসা একমাত্র তাঁরই।
يُخۡرِجُ ٱلۡحَىَّ مِنَ ٱلۡمَيِّتِ وَيُخۡرِجُ ٱلۡمَيِّتَ مِنَ ٱلۡحَىِّ وَيُحۡىِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَاۚ وَكَذَٲلِكَ تُخۡرَجُونَ ١٩
আরবি উচ্চারণ ৩০.১৯। ইয়ুখ্রিজুল্ হাইয়্যা মিনাল্ মাইয়্যিতি অ ইয়ুখ্রিজুল্ মাইয়্যিতা মিনাল্ হাইয়্যি অইয়ুহ্য়িল্ র্আদ্বোয়া বা’দা মাওতিহা-অকাযা-লিকা তুখ্রাজুন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.১৯ তিনি মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন এবং জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন। আর তিনি যমীনকে জীবিত করেন তার মৃত্যুর পর। আর এভাবেই তোমরা উত্থিত হবে।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦۤ أَنۡ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ۬ ثُمَّ إِذَآ أَنتُم بَشَرٌ۬ تَنتَشِرُونَ ٢٠
আরবি উচ্চারণ ৩০.২০। অ মিন্ আ-ইয়াতিহী য় আন্ খলাক্বকুম্ মিন্ তুরা-বিন্ ছুম্মা ইযা য়আন্তুম্ বাশারুন্ তান্তাশিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২০ আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তোমরা মানুষ হয়ে ছড়িয়ে পড়ছ।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦۤ أَنۡ خَلَقَ لَكُم مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ أَزۡوَٲجً۬ا لِّتَسۡكُنُوٓاْ إِلَيۡهَا وَجَعَلَ بَيۡنَڪُم مَّوَدَّةً۬ وَرَحۡمَةًۚ إِنَّ فِى ذَٲلِكَ لَأَيَـٰتٍ۬ لِّقَوۡمٍ۬ يَتَفَكَّرُونَ ٢١
আরবি উচ্চারণ ৩০.২১। অ মিন্ আ-ইয়া-তিহী য় আন্ খলাক্ব লাকুম্ মিন্ আন্ফুসিকুম্ আয্ওয়াজ্বাল লিতাসুকুনূ য় ইলাইহা-অজ্বা‘আলা বাইনাকুম্ মাওয়াদ্দাতাঁও অরহ্মাহ্; ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-ইয়া-তিল্ লিক্বওমিইঁ ইয়াতাফাক্কারূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২১ আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦ خَلۡقُ ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَـٰفُ أَلۡسِنَتِڪُمۡ وَأَلۡوَٲنِكُمۡۚ إِنَّ فِى ذَٲلِكَ لَأَيَـٰتٍ۬ لِّلۡعَـٰلِمِينَ ٢٢
আরবি উচ্চারণ ৩০.২২। অ মিন্ আ-ইয়াতিহী খল্ক্ব স্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্বি অখ্তিলা-ফু আল্সিনাতিকুম্ অ আল্ওয়া-নিকুম্; ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-ইয়া-তিল্ লিল্‘আ-লিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২২ আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আসমান ও যমীনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও তোমাদের বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য ।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦ مَنَامُكُم بِٱلَّيۡلِ وَٱلنَّہَارِ وَٱبۡتِغَآؤُكُم مِّن فَضۡلِهِۦۤۚ إِنَّ فِى ذَٲلِكَ لَأَيَـٰتٍ۬ لِّقَوۡمٍ۬ يَسۡمَعُونَ ٢٣
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৩। অমিন্ আ-ইয়া-তিহী মানা-মুকুম্ বিল্লাইলি অন্নাহা-রি অব্তিগ-য়ুকুম্ মিন্ ফাদ্ব্লিহ্; ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-ইয়া-তিল্ লিক্বওমিঁ ইয়াস্মা‘ঊন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৩ আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাতে ও দিনে তোমাদের নিদ্রা এবং তাঁর অনুগ্রহ থেকে তোমাদের (জীবিকা) অন্বেষণ। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা শোনে।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦ يُرِيڪُمُ ٱلۡبَرۡقَ خَوۡفً۬ا وَطَمَعً۬ا وَيُنَزِّلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً۬ فَيُحۡىِۦ بِهِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَآۚ إِنَّ فِى ذَٲلِكَ لَأَيَـٰتٍ۬ لِّقَوۡمٍ۬ يَعۡقِلُونَ ٢٤
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৪। অ মিন্ আ-ইয়া-তিহী ইয়ুরীকুমুল্ র্বাক্ব খওফাঁও অত্বোয়ামা‘আঁও অ ইয়ুনায্যিলু মিনাস্ সামা-য়ি মা-য়ান্ ফাইয়ুহ্য়ী বিহিল্ র্আদ্বোয়া বা’দা মাওতিহা- ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-ইয়া-তি ল্লিক্বওমি ইয়া’ক্বিলূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৪ আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে তিনি তোমাদেরকে ভয় ও ভরসাস্বরূপ বিদ্যুৎ দেখান, আর আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা অনুধাবন করে।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦۤ أَن تَقُومَ ٱلسَّمَآءُ وَٱلۡأَرۡضُ بِأَمۡرِهِۦۚ ثُمَّ إِذَا دَعَاكُمۡ دَعۡوَةً۬ مِّنَ ٱلۡأَرۡضِ إِذَآ أَنتُمۡ تَخۡرُجُونَ ٢٥
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৫। অ মিন্ আ-ইয়া-তিহী য় আন্ তাকুমাস্ সামা-য়ু অল্ র্আদ্ব ু বিআম্রিহ্; ছুম্মা ইযা-দা‘আ-কুম্ দা’ওয়াতাম্ মিনাল্ র্আদ্বি ইযা য় আন্তুম্ তাখ্রুজুন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৫ আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তাঁরই নির্দেশে আসমান ও যমীন স্থিতিশীল থাকে। তারপর তিনি যখন তোমাদেরকে যমীন থেকে বের হয়ে আসার জন্য একবার আহবান করবেন তখনই তোমরা বের হয়ে আসবে।
وَلَهُ ۥ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ ڪُلٌّ۬ لَّهُ ۥ قَـٰنِتُونَ ٢٦
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৬। অ লাহূ মান্ ফিস্সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্ব্; কুল্লুল্লাহূ ক্ব-নিতূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৬ আর আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে সব তাঁরই। সব কিছুই তাঁর অনুগত।
وَهُوَ ٱلَّذِى يَبۡدَؤُاْ ٱلۡخَلۡقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ ۥ وَهُوَ أَهۡوَنُ عَلَيۡهِۚ وَلَهُ ٱلۡمَثَلُ ٱلۡأَعۡلَىٰ فِى ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ٢٧
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৭। অহুওয়াল লাযী ইয়াব্দায়ুল্ খল্ক্ব ছুম্মা ইয়ু‘ঈদুহূ অহুওয়া আহ্ওয়ানু ‘আলাইহ্; অলাহুল্ মাছালুল্ আ’লা-ফিস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্বি অহুওয়াল্ ‘আযীযুল্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৭ আর তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তিনিই এর পুনরাবৃত্তি করবেন। আর এটা তো তাঁর জন্য অধিকতর সহজ। আসমান ও যমীনে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
ضَرَبَ لَكُم مَّثَلاً۬ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡۖ هَل لَّكُم مِّن مَّا مَلَكَتۡ أَيۡمَـٰنُكُم مِّن شُرَڪَآءَ فِى مَا رَزَقۡنَـٰڪُمۡ فَأَنتُمۡ فِيهِ سَوَآءٌ۬ تَخَافُونَهُمۡ كَخِيفَتِڪُمۡ أَنفُسَكُمۡۚ ڪَذَٲلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأَيَـٰتِ لِقَوۡمٍ۬ يَعۡقِلُونَ ٢٨
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৮। দ্বোয়ারবা লাকুম্ মাছালাম্ মিন্ আন্ফুসিকুম্ ;হাল্ লাকুম্ মিম্মা- মালাকাত্ আইমা-নুকুম্ মিন্ শুরাকা-য়া ফী মা-রযাক্ব্ না-কুম্ ফাআন্তুম্ ফীহি সাওয়া-য়ুন্ তাখ-ফূ নাহুম্ কাখীফাতিকুম্ আন্ফুসাকুম্; কাযা-লিকা নুফাছ্ ছিলুল্ আ-ইয়া-তি লিক্বওমিঁ ইয়া’ক্বিলূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৮ তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে একটি উপমা বর্ণনা করেছেন; আমি তোমাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তাতে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীরা কি অংশীদার? ফলে তোমরা কি এ বিষয়ে সমান? তোমরা কি তাদেরকে তেমনভাবে ভয় কর যেমনভাবে ভয় কর তোমাদের পরস্পরকে ? এভাবেই আমি নিদর্শনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করেছি সে কওমের জন্য যারা উপলব্ধি করে।
بَلِ ٱتَّبَعَ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓاْ أَهۡوَآءَهُم بِغَيۡرِ عِلۡمٍ۬ۖ فَمَن يَہۡدِى مَنۡ أَضَلَّ ٱللَّهُۖ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِينَ ٢٩
আরবি উচ্চারণ ৩০.২৯। বালিত্ তাবা‘আল্লাযীনা জোয়ালামূ য় আহ্ওয়া-য়াহুম্ বিগইরি ‘ইল্মিন্ ফামাইঁ ইয়াহ্দী মান্ অদ্বোয়ায়াল্লাল্লা-হ্; অমা-লাহুম্ মিন্ না-ছিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.২৯ বরং যালিমরা জ্ঞান ছাড়াই তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে। সুতরাং যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন কে তাকে হিদায়াত করবে? আর তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।
فَأَقِمۡ وَجۡهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفً۬اۚ فِطۡرَتَ ٱللَّهِ ٱلَّتِى فَطَرَ ٱلنَّاسَ عَلَيۡہَاۚ لَا تَبۡدِيلَ لِخَلۡقِ ٱللَّهِۚ ذَٲلِكَ ٱلدِّينُ ٱلۡقَيِّمُ وَلَـٰكِنَّ أَڪۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعۡلَمُونَ ٣٠ ۞
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩০। ফাআক্বিম্ অজ্বহাকা লিদ্দীনি হানীফা-; ফিত্বরতা ল্লা-হি ল্লাতী ফাত্বোয়ারন্ না-সা ‘আলাইহা-; লা-তাব্দীলা লিখল্ক্বিল্লা-হ্; যা-লিকাদ্দীনুল্ ক্বাইয়্যিমু অলা-কিন্না আক্ছারন্ না-সি লা ইয়া’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩০ অতএব তুমি একনিষ্ঠ হয়ে দীনের জন্য নিজকে প্রতিষ্ঠিত রাখ। আল্লাহর প্রকৃতি, যে প্রকৃতির উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
مُنِيبِينَ إِلَيۡهِ وَٱتَّقُوهُ وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَلَا تَكُونُواْ مِنَ ٱلۡمُشۡرِڪِينَ ٣١
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩১। মুনীবীনা ইলাইহি অত্তাকুহু অআক্বীমুছ্ ছলা-তা অলা-তাকূনূ মিনাল্ মুশ্রিকীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩১ তাঁর অভিমুখী হয়ে তাঁকে ভয় কর, সালাত কায়েম কর, আর মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
مِنَ ٱلَّذِينَ فَرَّقُواْ دِينَهُمۡ وَڪَانُواْ شِيَعً۬اۖ كُلُّ حِزۡبِۭ بِمَا لَدَيۡہِمۡ فَرِحُونَ ٣٢
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩২। মিনাল্ লাযীনা র্ফারকু দীনাহুম্ অকা-নূ শিয়া‘আ-; কুল্লু হিয্বিম্ বিমা-লাদাইহিম্ ফারিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩২ যারা নিজদের দীনকে বিভক্ত করেছে এবং যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে (তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না)। প্রত্যেক দলই নিজদের যা আছে তা নিয়ে আনন্দিত।
وَإِذَا مَسَّ ٱلنَّاسَ ضُرٌّ۬ دَعَوۡاْ رَبَّہُم مُّنِيبِينَ إِلَيۡهِ ثُمَّ إِذَآ أَذَاقَهُم مِّنۡهُ رَحۡمَةً إِذَا فَرِيقٌ۬ مِّنۡہُم بِرَبِّهِمۡ يُشۡرِكُونَ ٣٣
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৩। অ ইযা-মাস্সান্না-সা র্দুরুন্ দাআঁও রব্বাহুম্ মুনীবীনা ইলাইহি ছুম্মা ইযা য় আযা-ক্বহুম্ মিন্হু রহ্মাতান্ ইযা-ফারীকুম্ মিন্হুম্ বিরব্বিহিম্ ইয়ুশ্রিকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৩ আর মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে তখন তারা তাদের রবের প্রতি বিনীতভাবে ফিরে এসে তাকে ডাকে। তারপর যখন তিনি তাদের স্বীয় রহমত আস্বাদন করান, তখন তাদের মধ্যকার একটি দল তাদের রবের সাথে শরীক করে;
لِيَكۡفُرُواْ بِمَآ ءَاتَيۡنَـٰهُمۡۚ فَتَمَتَّعُواْ فَسَوۡفَ تَعۡلَمُونَ ٣٤
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৪। লিইয়াক্ফুরূ বিমা য় আ-তাইনা-হুম্; ফাতামাত্তা‘ঊ ফাসাওফা তা’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৪ ফলে আমি তাদের যা দিয়েছি তার প্রতি তারা অকৃতজ্ঞ হয়। সুতরাং তোমরা ভোগ করে নাও। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে।
أَمۡ أَنزَلۡنَا عَلَيۡهِمۡ سُلۡطَـٰنً۬ا فَهُوَ يَتَكَلَّمُ بِمَا كَانُواْ بِهِۦ يُشۡرِكُونَ ٣٥
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৫। আম্ আন্যাল্না ‘আলাইহিম্ সুল্ত্বোয়ানান্ ফাহুওয়া ইয়াতাকাল্লামু বিমা-কা-নূ বিহী ইয়ুশ্রিকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৫ আমি কি তাদের প্রতি এমন কোন প্রমাণ নাযিল করেছি, যা তাদের শরীক করতে বলে?
وَإِذَآ أَذَقۡنَا ٱلنَّاسَ رَحۡمَةً۬ فَرِحُواْ بِہَاۖ وَإِن تُصِبۡهُمۡ سَيِّئَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَيۡدِيہِمۡ إِذَا هُمۡ يَقۡنَطُونَ ٣٦
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৬। অইযা য় আযাক্ব নান্ না-সা রহ্মাতান্ ফারিহূ বিহা-; অইন্ তুছিব্হুম্ সাইয়িয়াতুম্ বিমা-ক্বদ্দামাত্ আইদীহিম্ ইযা-হুম্ ইয়াক্ব্ নাত্ব ন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৬ আর আমি যখন মানুষকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করাই তখন তারা তাতে আনন্দিত হয়। আর যদি তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের উপর অকল্যাণ পৌঁছে তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে।
أَوَلَمۡ يَرَوۡاْ أَنَّ ٱللَّهَ يَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقۡدِرُۚ إِنَّ فِى ذَٲلِكَ لَأَيَـٰتٍ۬ لِّقَوۡمٍ۬ يُؤۡمِنُونَ ٣٧
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৭। আওয়ালাম্ ইয়ারও আন্নাল্লা-হা ইয়াব্সুত্বর্ রিয্ক লিমাইঁ ইয়াশা-য়ু অ ইয়াক্বদি; ইন্না ফী যা-লিকা লা-আ-ইয়া-তিল্ লিক্বাওমিঁ ইয়ুমিনূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৭ তারা কি দেখেনি, নিশ্চয় আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা রিয্ক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। নিশ্চয় এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে সেই কওমের জন্য, যারা ঈমান আনে।
فَـَٔاتِ ذَا ٱلۡقُرۡبَىٰ حَقَّهُ ۥ وَٱلۡمِسۡكِينَ وَٱبۡنَ ٱلسَّبِيلِۚ ذَٲلِكَ خَيۡرٌ۬ لِّلَّذِينَ يُرِيدُونَ وَجۡهَ ٱللَّهِۖ وَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ٣٨
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৮। ফাআ-তি যাল্ ক্বর্ বা হাক্ব্ ক্বহূ অল্মিস্কীনা অব্নাস্ সাবীল্; যা-লিকা খইরুল্ লিল্ লাযীনা ইয়ুরীদূনা অজ্ব হাল্লা-হি অউলা-য়িকা হুমুল্ মুফ্লিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৮ অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম।
وَمَآ ءَاتَيۡتُم مِّن رِّبً۬ا لِّيَرۡبُوَاْ فِىٓ أَمۡوَٲلِ ٱلنَّاسِ فَلَا يَرۡبُواْ عِندَ ٱللَّهِۖ وَمَآ ءَاتَيۡتُم مِّن زَكَوٰةٍ۬ تُرِيدُونَ وَجۡهَ ٱللَّهِ فَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلۡمُضۡعِفُونَ ٣٩
আরবি উচ্চারণ ৩০.৩৯। অমা য় আ-তাইতুম্ র্মি রিবাল্লিইর্য়াবুওয়া ফী য় আম্ওয়া-লিন্না-সি ফালা-ইর্য়াবূ ‘ইন্দাল্লা-হি অমা য় আ-তাইতুম্ মিন্ যাকা-তিন্ তুরীদূনা অজহাল্লা-হি ফাউলা য় য়িকা হুমুল্ মুদ্ব্‘ইফূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৩৯ আর তোমরা যে সূদ দিয়ে থাক, মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তা মূলতঃ আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি পায় না। আর তোমরা যে যাকাত দিয়ে থাক আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে (তাই বৃদ্ধি পায়) এবং তারাই বহুগুণ সম্পদ প্রাপ্ত।
ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَكُمۡ ثُمَّ رَزَقَكُمۡ ثُمَّ يُمِيتُڪُمۡ ثُمَّ يُحۡيِيكُمۡۖ هَلۡ مِن شُرَكَآٮِٕكُم مَّن يَفۡعَلُ مِن ذَٲلِكُم مِّن شَىۡءٍ۬ۚ سُبۡحَـٰنَهُ ۥ وَتَعَـٰلَىٰ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٤٠
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪০। আল্লা-হুল্ লাযী খলাক্বকুম্ ছুম্মা রযাক্বকুম্ ছুম্মা ইয়ুমীতুকুম্ ছুম্মা ইয়ুহ্য়ীকুম্ ;হাল্ মিন্ শুরাকা-য়িকুম্ মাইঁ ইয়াফ্‘আলু মিন্ যা-লিকুম্ মিন্ শাইয়িন্; সুব্হা-নাহূ অতা‘আ-লা- ‘আম্মা- ইয়ুশ্রিকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪০ আল্লাহ সেই সত্তা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তোমাদেরকে রিয্ক দিয়েছেন। এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন, পরে আবার তোমাদের জীবন দেবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এ থেকে কোন কিছু করতে পারবে? তিনি পবিত্র এবং তারা যাদের শরীক করে তা থেকে তিনি ঊর্ধ্বে।
ظَهَرَ ٱلۡفَسَادُ فِى ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِ بِمَا كَسَبَتۡ أَيۡدِى ٱلنَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعۡضَ ٱلَّذِى عَمِلُواْ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ ٤١
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪১। জোয়াহারাল্ ফাসাদু ফিল্ র্বারি অল্বাহ্রি বিমা-কাসাবাত্ আইদিন্না-সি লিইয়ুযীক্বহুম্ বা’দ্বোয়াল্লাযী ‘আমিলূ লা‘আল্লাহুম্ ইর্য়াজ্বি‘ঊন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪১ মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।
قُلۡ سِيرُواْ فِى ٱلۡأَرۡضِ فَٱنظُرُواْ كَيۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلُۚ كَانَ أَڪۡثَرُهُم مُّشۡرِكِينَ ٤٢
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪২। কুল্ সীরূ ফিল্ র্আদ্বি ফান্জুরূ কাইফা কা-না ‘আ-ক্বিবাতুল্লাযীনা মিন্ ক্বব্ল্; কা-না আক্ছারুহুম্ মুশ্রিকীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪২ বল, ‘তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর। অতঃপর দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল’। তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।
فَأَقِمۡ وَجۡهَكَ لِلدِّينِ ٱلۡقَيِّمِ مِن قَبۡلِ أَن يَأۡتِىَ يَوۡمٌ۬ لَّا مَرَدَّ لَهُ ۥ مِنَ ٱللَّهِۖ يَوۡمَٮِٕذٍ۬ يَصَّدَّعُونَ ٤٣
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৩। ফাআক্বিম্ অজ্বহাকা লিদ্দীনিল্ ক্বাইয়্যিমি মিন্ কব্লি আইঁ ইয়াতিয়া ইয়াওমুল্ লা-মারদ্দা-লাহূ মিনাল্লা-হি ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াছ্ ছোয়াদ্দা‘ঊন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৩ তাই তুমি তোমার নিজকে সরল-সঠিক দীনের উপর কায়েম রাখ, আল্লাহর পক্ষ থেকে সেদিন আসার পূর্বে, যা ফেরানো যাবে না। সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে পড়বে।
مَن كَفَرَ فَعَلَيۡهِ كُفۡرُهُ ۥۖ وَمَنۡ عَمِلَ صَـٰلِحً۬ا فَلِأَنفُسِہِمۡ يَمۡهَدُونَ ٤٤
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৪। মান্ কাফার ফা‘আলাইহি কুফ্রুহূ অমান্ ‘আমিলা ছোয়া-লিহান্ ফালিআন্ফুসিহিম্ ইয়াম্হাদূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৪ যে কুফরী করে তার কুফরীর পরিণাম তার উপরই। আর যারা সৎকর্ম করে তারা তাদের নিজদের জন্য শয্যা রচনা করে।
لِيَجۡزِىَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ مِن فَضۡلِهِۦۤۚ إِنَّهُ ۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡكَـٰفِرِينَ ٤٥
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৫। লিইয়াজ্ব যিয়াল্লাযীনা আ-মানূ অ‘আমিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি মিন্ ফাদ্ব্লিহ্; ইন্নাহূ লা-ইয়ুহিব্বুল্ কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৫ যেন তিনি স্বীয় অনুগ্রহে প্রতিদান দেন, যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদেরকে। নিশ্চয় তিনি কাফিরদের ভালবাসেন না।
وَمِنۡ ءَايَـٰتِهِۦۤ أَن يُرۡسِلَ ٱلرِّيَاحَ مُبَشِّرَٲتٍ۬ وَلِيُذِيقَكُم مِّن رَّحۡمَتِهِۦ وَلِتَجۡرِىَ ٱلۡفُلۡكُ بِأَمۡرِهِۦ وَلِتَبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِهِۦ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ٤٦
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৬। অমিন্ আ-ইয়া-তিহী য় আইঁ ইর্য়ুসির্লা রিয়া-হা মুবাশ্শির-তিঁও অলিইয়ুযীক্বকুম্ র্মি রহমাতিহী অলিতাজ্ব রিয়াল্ ফুল্কু বিআম্রিহী অলিতাব্তাগূ মিন্ ফাদ্ব্লিহী অলা‘আল্লাকুম্ তাশ্কুরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৬ আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে, তিনি বাতাস প্রেরণ করেন [বৃষ্টির] সুসংবাদ বহনকারী হিসেবে এবং যাতে তিনি তোমাদেরকে তাঁর রহমত আস্বাদন করাতে পারেন এবং যাতে তাঁর নির্দেশে নৌযানগুলো চলাচল করে, আর যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ থেকে কিছু সন্ধান করতে পার। আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।
وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ رُسُلاً إِلَىٰ قَوۡمِهِمۡ فَجَآءُوهُم بِٱلۡبَيِّنَـٰتِ فَٱنتَقَمۡنَا مِنَ ٱلَّذِينَ أَجۡرَمُواْۖ وَكَانَ حَقًّا عَلَيۡنَا نَصۡرُ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٤٧
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৭। অলাক্বদ্ র্আসাল্না-মিন্ ক্বব্লিকা রুসুলান্ ইলা- ক্বওমিহিম্ ফাজ্বা-য়ুহুম্ বিল্বাইয়্যিনা-তি ফান্তাক্বম্না-মিনাল্লাযীনা আজরমূ অকা-না হাক্ব্ ক্বান্ ‘আলাইনা- নাছ্রুল্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৭ আর অবশ্যই আমি তোমার পূর্বে রাসূলগণকে তাদের কওমের নিকট পাঠিয়েছিলাম। অতঃপর তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিল। অতঃপর যারা অপরাধ করেছিল আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম। আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা তো আমার কর্তব্য।
ٱللَّهُ ٱلَّذِى يُرۡسِلُ ٱلرِّيَـٰحَ فَتُثِيرُ سَحَابً۬ا فَيَبۡسُطُهُ ۥ فِى ٱلسَّمَآءِ كَيۡفَ يَشَآءُ وَيَجۡعَلُهُ ۥ كِسَفً۬ا فَتَرَى ٱلۡوَدۡقَ يَخۡرُجُ مِنۡ خِلَـٰلِهِۦۖ فَإِذَآ أَصَابَ بِهِۦ مَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦۤ إِذَا هُمۡ يَسۡتَبۡشِرُونَ ٤٨
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৮। আল্লা-হুল্লাযী ইর্য়ুসির্লু রিয়া-হা ফাতুছীরু সাহা-বান্ ফাইয়াব্সুত্ব হূ ফিস্ সামা-য়ি কাইফা ইয়াশা-য়ু অইয়াজ্ব ‘আলুহূ কিসাফান্ ফাতারল্ অদ্ক্ব ইয়াখ্রুজু মিন্ খিলা-লিহী ফাইযা য় আছোয়া-বা বিহী মাইঁ ইয়াশা-য়ু মিন্ ‘ইবাদিহী য় ইযা-হুম্ ইয়াস্তাব্শিরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৮ আল্লাহ, যিনি বাতাস প্রেরণ করেন ফলে তা মেঘমালাকে ধাওয়া করে; অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে খণ্ড- বিখণ্ড করে দেন, ফলে তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে নির্গত হয় বারিধারা। অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের উপর ইচ্ছা বারি বর্ষণ করেন, তখন তারা হয় আনন্দিত।
وَإِن كَانُواْ مِن قَبۡلِ أَن يُنَزَّلَ عَلَيۡهِم مِّن قَبۡلِهِۦ لَمُبۡلِسِينَ ٤٩
আরবি উচ্চারণ ৩০.৪৯। অইন্ কা-নূ মিন্ ক্বব্লি আইঁ ইয়ুনায্যালা ‘আলাইহিম্ মিন্ ক্বব্লিহী লামুব্লিসীন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৪৯ যদিও এর আগে তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বে তারা ছিল নিরাশ।
فَٱنظُرۡ إِلَىٰٓ ءَاثَـٰرِ رَحۡمَتِ ٱللَّهِ ڪَيۡفَ يُحۡىِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَآۚ إِنَّ ذَٲلِكَ لَمُحۡىِ ٱلۡمَوۡتَىٰۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىۡءٍ۬ قَدِيرٌ۬ ٥٠
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫০। ফার্ন্জু ইলা য় আ-ছা-রি রহ্মাতিল্লা-হি কাইফা ইয়ুহ্য়িল্ র্আদ্বোয়া বা’দা মাওতিহা-; ইন্না যা-লিকা লামুহ্য়িল্ মাওতা- অহুওয়া ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বর্দী।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫০ অতএব তুমি আল্লাহর রহমতের চিহ্নসমূহের প্রতি দৃষ্টি দাও। কিভাবে তিনি যমীনের মৃত্যুর পর তা জীবিত করেন। নিশ্চয় এভাবেই তিনি মৃতকে জীবিত করেন এবং তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
وَلَٮِٕنۡ أَرۡسَلۡنَا رِيحً۬ا فَرَأَوۡهُ مُصۡفَرًّ۬ا لَّظَلُّواْ مِنۢ بَعۡدِهِۦ يَكۡفُرُونَ ٥١
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫১। অলায়িন্ র্আসাল্না-রীহান্ ফারয়াওহু মুর্ছ্ফারল্ লাজোয়াল্লু মিম্ বা’দিহী ইয়াক্ফুরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫১ আর যদি আমি এমন বাতাস প্রেরণ করি যার ফলে তারা শস্যকে হলুদ রঙের দেখতে পায়। তখন তো তারা অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে।
فَإِنَّكَ لَا تُسۡمِعُ ٱلۡمَوۡتَىٰ وَلَا تُسۡمِعُ ٱلصُّمَّ ٱلدُّعَآءَ إِذَا وَلَّوۡاْ مُدۡبِرِينَ ٥٢
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫২। ফাইন্নাকা লা-তুস্মি‘উল্ মাওতা- অলা- তুস্মি‘উছ্ ছুম্মাদ্ দু‘আ-য়া ইযা-অল্লাও মুদ্বিরীন্। বাংলা অনুবাদ ৩০.৫২ নিশ্চয় তুমি মৃতকে শুনাতে পারবে না, না পারবে বধিরকে আহ্বান শুনাতে, যখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে ফিরে যায়।
وَمَآ أَنتَ بِهَـٰدِ ٱلۡعُمۡىِ عَن ضَلَـٰلَتِهِمۡۖ إِن تُسۡمِعُ إِلَّا مَن يُؤۡمِنُ بِـَٔايَـٰتِنَا فَهُم مُّسۡلِمُونَ ٥٣ ۞
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৩। অমা য় আন্তা বিহা-দিল্ ‘উম্য়ি ‘আন্ দ্বোলা-লাতিহিম্ ইন্ তুস্মি‘উ ইল্লা-মাইঁ ইয়ুমিনু বিআ-ইয়া-তিনা- ফাহুম্ মুস্লিমূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৩ আর তুমি অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে হিদায়াতে আনতে পারবে না, তুমি শুধু তাদেরই শুনাতে পারবে যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে, কারণ তারা আত্মসমর্পনকারী।
ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن ضَعۡفٍ۬ ثُمَّ جَعَلَ مِنۢ بَعۡدِ ضَعۡفٍ۬ قُوَّةً۬ ثُمَّ جَعَلَ مِنۢ بَعۡدِ قُوَّةٍ۬ ضَعۡفً۬ا وَشَيۡبَةً۬ۚ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۖ وَهُوَ ٱلۡعَلِيمُ ٱلۡقَدِيرُ ٥٤
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৪। আল্লা-হুল্ লাযী খলাক্বকুম্ মিন্ দ্বু’ফিন্ ছুম্মা জ্বা‘আলা মিম্ বা’দি দ্বু’ফিন্ কুওয়্যাতান্ ছুম্মা জ্বা‘আলা মিম্ বা’দি কুওয়্যাতিন্ দ্বু’ফাঁও অশাইবাহ্; ইয়াখ্লুকু মা-ইয়াশা-য়ু অহুওয়াল্ ‘আলীমুল্ ক্বর্দী।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৪ আল্লাহ, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন দুর্বল বস্তু থেকে এবং দুর্বলতার পর তিনি শক্তি দান করেন। আর শক্তির পর তিনি আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।
وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ يُقۡسِمُ ٱلۡمُجۡرِمُونَ مَا لَبِثُواْ غَيۡرَ سَاعَةٍ۬ۚ كَذَٲلِكَ كَانُواْ يُؤۡفَكُونَ ٥٥
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৫। অইয়াওমা তাকু মুস্ সা- ‘আতু ইয়ুক্বসিমুল্ মুজরিমূন মা-লাবিছূ গইরা সা-‘আহ্; কাযা-লিকা কা-নূ ইয়ুফাকূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৫ আর যেদিন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে সেদিন অপরাধীরা কসম করে বলবে যে, তারা মুহূর্তকালের বেশী অবস্থান করেনি। এভাবেই তারা সত্যবিমুখ থেকেছে।
وَقَالَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡعِلۡمَ وَٱلۡإِيمَـٰنَ لَقَدۡ لَبِثۡتُمۡ فِى كِتَـٰبِ ٱللَّهِ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡبَعۡثِۖ فَهَـٰذَا يَوۡمُ ٱلۡبَعۡثِ وَلَـٰكِنَّڪُمۡ كُنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ٥٦
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৬। অক্বা-লাল্ লাযীনা ঊতুল্ ‘ইল্মা অল্ ঈমা-না লাক্বদ্ লাবিছ্তুম্ ফী কিতা-বিল্লা-হি ইলা-ইয়াওমিল্ বাছি ফাহা-যা- ইয়াওমুল্ বাছি অলা-কিন্নাকুম্ কুন্তুম লা-তা’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৬ আর যাদেরকে জ্ঞান ও ঈমান দেয়া হয়েছে তারা বলবে, ‘তোমরা আল্লাহর বিধান মত পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবস্থান করেছ। আর এটি পুনরুত্থান দিবস। কিন্তু তোমরা জানতে না।’
فَيَوۡمَٮِٕذٍ۬ لَّا يَنفَعُ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ مَعۡذِرَتُهُمۡ وَلَا هُمۡ يُسۡتَعۡتَبُونَ ٥٧
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৭। ফাইয়াওমায়িযিল্ লা-ইয়ান্ফা‘উ ল্লাযীনা জোয়ালামূ মা’যিরাতুহুম্ অলা-হুম্ ইয়ুস্তা’তাবূন্। বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৭ অতঃপর যারা যুলম করেছে, সেদিন তাদের কোন ওযর-আপত্তি উপকারে আসবে না এবং (আল্লাহকে) সন্তুষ্ট করতেও তাদেরকে বলা হবে না।
وَلَقَدۡ ضَرَبۡنَا لِلنَّاسِ فِى هَـٰذَا ٱلۡقُرۡءَانِ مِن كُلِّ مَثَلٍ۬ۚ وَلَٮِٕن جِئۡتَهُم بِـَٔايَةٍ۬ لَّيَقُولَنَّ ٱلَّذِينَ ڪَفَرُوٓاْ إِنۡ أَنتُمۡ إِلَّا مُبۡطِلُونَ ٥٨
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৮। অ লাক্বদ্ দ্বোয়ারাব্না-লিন্না-সি ফী হা-যাল্ ক্বর্ আ-নি মিন্ কুল্লি মাছাল্; অলায়িন্ জ্বি’’তাহুম্ বিআ-ইয়া-তিল্ লাইয়াকুলান্নাল্ লাযীনা কাফারূ য় ইন্ আন্তুম্ ইল্লা-মুব্ত্বিলূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৮ আর আমি তো মানুষের জন্য এই কুরআনে সব ধরনের দৃষ্টান্ত পেশ করেছি। আর যদি তুমি তাদের কাছে কোন আয়াত নিয়ে আস, তবে অবশ্যই কাফিররা বলবে, ‘তোমরা তো বাতিলপন্থী’।
كَذَٲلِكَ يَطۡبَعُ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَ ٥٩
আরবি উচ্চারণ ৩০.৫৯। কাযা-লিকা ইয়াত্ববা‘উল্লা-হু ‘আলা-কুলূবিল্ লাযীনা লা-ইয়া’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৩০.৫৯ এমনিভাবে আল্লাহ মোহর মেরে দেন তাদের হৃদয়সমূহে যারা জানে না।
فَٱصۡبِرۡ إِنَّ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقٌّ۬ۖ وَلَا يَسۡتَخِفَّنَّكَ ٱلَّذِينَ لَا يُوقِنُونَ ٦٠
আরবি উচ্চারণ ৩০.৬০। ফার্ছ্বি ইন্না ওয়া’দাল্লা-হি হাক্বকুঁও অলা-ইয়াস্তাখিফ্ফান্নাকাল্ লাযীনা লা-ইয়ূক্বিনূন্। বাংলা অনুবাদ ৩০.৬০ অতএব, তুমি সবর কর। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা হক। আর যারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে না তারা যেন তোমাকে অস্থির করতে না পারে
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
- ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব ও বিধান,ইসলামে কোরবানির যত ফজিলত গুরুত্ব ও শিক্ষা
- বৃষ্টির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, বৃষ্টির নামাজের পর আমল
- ইসতিসকার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, ইসতিসকার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, ইসতিসকার নামাজের পর আমল
- বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান,বাসর রাতের নামাজ
- তাসবিহ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, তাসবিহ সালাতের ফজিলত
- রমজানের ৩০ দিনের ৩০টি ফজিলতরমজানের ৩০ দিনের আমল ও ফজিলত