স্থুল জন্মহার নির্ণয়ের পদ্ধতি লিখা জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

স্থূল জন্মহার নির্ণয়ের পদ্ধতি লিখা জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

উত্তর:

বর্তমান পৃথিবীতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, প্রতিষেধক আবিষ্কার, পুষ্টিকরুন খাবার, স্বাস্থ্যকরুন পরিবেশ, নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবহার ও শিক্ষার প্রসার ঘটেছে।

ফলে নবজাতক ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে জন্মহার বৃদ্ধি কিছুটা কমলেও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ হার কমেনি। এর ফলে পৃথিবীর জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক করুন্মকাণ্ডে জনসংখ্যার গুরুত্ব রয়েছে।

পরিমিত শ্রমশক্তি ব্যতীত উন্নয়ন সম্ভব নয় আবার জনাধিক্যতা অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে সমস্যা। প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক উপাদানগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানকে জনবহুল বা জনবিরল করে তোলে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এ সমস্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশ্বের জনসংখ্যার বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তনের ধারা(Present Situation of world population and its Changing pattern)
আমরা জানি এ পৃথিবী হাজার হাজার যুগ পেরিয়ে এসেছে। খ্রিষ্টীয় সালের প্রারম্ভ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পৃথিবীর জনসংখ্যা খুব ধীরে এবং পরবর্তীতে অপেক্ষাকৃত দ্র্রূত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই যে, সময়ের সঙ্গে জনসংখ্যা পরিবর্তনের তারতম্য হচ্ছে, তা হচ্ছে জনসংখ্যা পরিবর্তনের গতিধারা।

প্রতি দশ কিংবা পাঁচ বছর অন্তর বর্তমান বিশ্বে জাতীয় ভিত্তিতে লোক গণনা করার প্রচলন রয়েছে। ১৬৫৫ সালের আগে তা ছিল না। ধীরে ধীরে এই লোক গণনা প্রসার লাভ করে, বর্তমানে সকল দেশেই জাতীয়ভাবে লোক গণনা করা হয়। লোক গণনায় দেখা যায় যে পৃথিবীর জনসংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছিল কিন্তু সপ্তদশ শতাব্দীর পরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কিছুটা কমে আসে। তবে পরবর্তী ২০০ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। ১৬৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০ মিলিয়ন, ১৮৫০ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১.২ বিলিয়ন।

১৮৫০ সালের পর কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়, এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি আরও দ্রুত হয়। মাত্র ১০০ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা আবারও দ্বিগুণ হয়। ১৯৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২.৫৩ বিলিয়ন। যেটি ২০১৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৭.২৩ বিলিয়ন। যদি এই হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে তা হলে ২০৫০ সালে অনুমিত জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮ বিলিয়নের উপরে

সাধারণ জন্মহার =(নির্দিষ্ট বছরে জন্মিত সন্তান/নির্দিষ্ট বছরের প্রজননক্ষম নারীর সংখ্যা)x ১০০০

স্থূল জন্মহার (Crude birth rate)
সাধারণ জন্মহারের চেয়ে স্থূল জন্মহার (Crude birth rate) বহুল প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। এই পদ্ধতি হাজারে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। কোনো বছরে জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে স্থূল জন্মহার নির্ণয় করা হয়। একে নিম্নোক্তরূপে দেখানো যেতে পারে।

স্থূল জন্মহার = (কোনো বছরে জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যা/বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা) x ১০০০
কোনো একটি স্থান বা দেশের মোট জনসংখ্যা এবং ঐ বছরে জন্মিত সন্তান ও জনসংখ্যা জানা থাকলে স্থূল জন্মহার বের করা সহজ।
পৃথিবীর বিভিন্ন জনসংখ্যার মধ্যে প্রজননশীলতার ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। একেক দেশের জন্মহার একেক রকমের। এর কারণ হিসেবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার ভিন্নতা প্রধান। সাধারণত নিম্ন্নোক্ত বিষয়াবলির প্রভাবেই জন্মহারের ভিন্নতা দেখা যায়।

১। বৈবাহিক অবস্থাগত বৈশিষ্ট্য :
বিবাহের বয়স, বহুবিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ প্রভৃতি কারণ জন্মহার কম বা বেশির উপর প্রভাব ফেলে।

২। শিক্ষা :
সাধারণ শিক্ষার মানবৃদ্ধি পেলে প্রজননশীলতা হ্রাস পায় এবং শিক্ষার মান ও হার কম হলে প্রজননশীলতা বেশি হয়।

৩। পেশা :
সাধারণভাবে কৃষিকাজে নিয়োজিত করুন্মী এবং শ্রমজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্মহার বেশি হতে দেখা যায়। অন্যদিকে শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী প্রভৃতি পেশাদার শ্রেণি এবং প্রশাসক, ব্যবস্থাপক ও চাকরিজীবীদের মধ্যে জন্মহার কম দেখা যায়।

৪। গ্রাম-শহর আবাসিকতা :
গ্রাম এলাকায় সাধারণত জন্মহার বেশি এবং শহর এলাকায় জন্মহার কম দেখা যায়। তবে এই উপাদানটি আবার শিক্ষা ও পেশার সঙ্গে সম্পর্কিত।


মানব জন্মহারের তারতম্য একটি সামাজিক বিষয়। সমাজ, ব্যক্তি-জীবনের বহুবিধ বিষয়, বিশেষ করে সামাজিক অবস্থান, সামাজিক ভূমিকা, ভৌগোলিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈবাহিক ধারা, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসন, সমাজবৈশিষ্ট্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয় মানব প্রজননশীলতা তথা জন্মহারের সঙ্গে সম্পর্কিত।

মৃত্যুহার (Death Rate)
মানুষ মরণশীল। মরণশীলতা জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকেই শুধু প্রভাবিত করে না, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পরিমাপ করা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য মৃত্যুহার জানা বিশেষ প্রয়োজন।

স্থূল মৃত্যুহার (Crude Death Rate)
স্থূল মৃত্যুহার মরণশীলতা (Mortality) পরিমাপের বহুল প্রচলিত গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। নির্দিষ্ট কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারীদের মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয় করা হয়।

স্থূল মৃত্যুহার=(কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যা/বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা) x১০০০
কোনো স্থান বা দেশের মৃতের সংখ্যা এবং মোট জনসংখ্যার তথ্য পাওয়া গেলে স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয় করা যায়। তবে মৃত্যুহার নির্ণয়ের জন্য, বয়স-নির্দিষ্ট মৃত্যুহার (Age-specific death rate) গুরুত্বপূর্ণ। যেটি বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন সংখ্যার মৃত্যুহার নির্দেশ করে, ফলে এই হার থেকে বার্ধক্য ও অকালমৃত্যু প্রভৃতি বোঝা যায়।


পরিণত বয়সে সামান্য অসুখ-বিসুখ বা আঘাতেই মানুষের মৃত্যু ঘটে। একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে। আবার অনেক সময় পরিণত বয়সের পূর্বেই মারা যায়। একে অকাল বা অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে। মৃত্যুহারের পার্থক্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।

১। প্রাকৃতিক দুর্যোগ :
ঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ইত্যাদি অস্বাভাবিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ।

২। যুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা :
যুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়। কুয়েত, আফগানিস্তান, ইরাক যুদ্ধে দেখা যায় মৃত্যুহার অনেক বেশি। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ লোক শহিদ হয়।

৩। রোগ ও দুর্ঘটনা :
সংক্রামক, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ, ক্যান্সার, রক্ত সঞ্চালন সংক্রান্ত রোগ, আঘাত বা দুর্ঘটনা প্রভৃতির কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়।
অঞ্চলভেদে মরণশীলতার পার্থক্য রয়েছে। অনুন্নত দেশগুলোতে মৃত্যুহার অনেক বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মৃত্যুহার কিছুটা কমে এসেছে এবং উন্নত দেশগুলোতে স্বাভাবিক মৃত্যুহার রয়েছে। আবার নারী-পুরুষের মৃত্যুহারের পার্থক্য দেখা যায়। সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রজননকালীন নারীদের মৃত্যুহার বেশি পরিলক্ষিত হয়। আবার অনুন্নত দেশগুলোতে শিশু মৃত্যুহারও বেশি দেখা যায়।

অভিবাসন (Migration)
জীবনধারণের মৌলিক ও নানা প্রয়োজনে বহুলোক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। স্থায়ী বসবাসের উদ্দেশে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে অন্য শহরে, একদেশ থেকে অন্যদেশে অভিগমন করে। ফলে কোথাও জনসংখ্যা কমে আবার কোথাও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। অভিগমনে বাস্তুত্যাগীদের পরিমাণ বৃদ্ধি, গ্রাম বা শহরের মোট জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি, জনসংখ্যার কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। এতে সমগ্র দেশের জনসংখ্যা বণ্টনে পরিবর্তন দেখা দেয়।

সাধারণ করুন্মের মজুরি, পণ্যের মূল্য, চাষ পদ্ধতি, বাজার ব্যবস্থা, শহর বা গ্রামীণ উন্নয়ন, শিক্ষা ও সামাজিক পরিবেশের উন্নয়ন প্রভৃতি অভিবাসনকে প্রভাবিত করে। অনেক দেশে জন্মহার বেশি হয়। আবার জন্মহার বেশি এমন দেশের কিন্তু কিছু লোক অভিগমন করলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি নাও থাকতে পারে।

তাই দেখা যাচ্ছে যে, কোনো দেশের জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি ঐ দেশের জন্মহার, মৃত্যুহার অভিবাস দ্বারা নির্ধারিত হয়। জন্মহার, মৃত্যুহার ও অভিবাস প্রত্যেকটি বিষয় একটি অপরটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই শুধু জন্মহার বা শুধু মৃত্যুহার বা অভিবাসন দিয়ে কোনো দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি পরিমাপ করা যায় না। জনসংখ্যার সঠিক তথ্য বুঝতে হলে এই তিনটি বিষয়ই সমানভাবে পর্যালোচনা করতে হয়।

তোমার নিজের দেশের কোনো অঞ্চলে জনসংখ্যা বেশি, কোথাও একদম কম। এ বিষয়ে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবে কিছু প্রাকৃতিক, কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয় রয়েছে যেটি জনসংখ্যার ঘনত্ব কম বা বেশি হতে সাহায্য করে। এই বিষয়গুলোকে আমরা জনসংখ্যার ঘনত্ব বা বণ্টনের প্রভাবক বলছি। প্রথমত একে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-(১) প্রাকৃতিক প্রভাবক, (২) অপ্রাকৃতিক প্রভাবক।

১। প্রাকৃতিক প্রভাবক(Physical Factors)


ভূপ্রকৃতি
:
মানুষ সভাবতই সমভূমি অঞ্চলে যেখানে কৃষি, শিল্প গড়ে তোলা যায় সেখানে বসবাস করতে চায়। তাই পৃথিবীর সমভূমি অঞ্চলে ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। আবার পাহাড়ি জঙ্গলময় অঞ্চলে জীবনধারণ অনেক কষ্ট ফলে ঐ সকল অঞ্চলে জনবসতি কম। আমাদের দেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সুন্দরবন অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব খুবই কম।


জলবায়ু :
জলবায়ুর প্রভাব জনবসতির বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে। চরমভাবাপন্ন জলবায়ুর চেয়ে সমভাবাপন্ন জলবায়ুতে মানুষ বসবাস করতে পছন্দ করে।


মৃত্তিকা :
মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য মানব বসতির উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। উর্বর মৃত্তিকা কৃষিকাজের উপযুক্ত হওয়ায় এ সকল অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।

পানি :
যেখানে সুপেয় পানি পাওয়া যায় সেখানে জনবসতির ঘনত্ব বেশি হয়। এজন্য নদীর উপকূলবর্তী অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।


খনিজ :
খনিজ প্রাপ্তির উপরও জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ভর করে।

২।অপ্রাকৃতিক প্রভাবক


সামাজিক :
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং করুন্মসংস্থানের জন্য যেখানে বেশি সুযোগ রয়েছে সে সকল অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হয়। অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার মতো দেশসমূহে প্রাকৃতিক সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও সামাজিক সুবিধাবলি পাওয়ার জন্য অভিবাসনের মাধ্যমে জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।


সাংস্কৃতিক প্রভাব :
শিক্ষা, সংস্কৃতি আজকের যুগে মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করুনছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ও বিকাশের সুযোগ যেসব অঞ্চলে বেশি, সেসব অঞ্চলে জনবসতিও বেশি হয়।


অর্থনৈতিক :
শিল্পাঞ্চলে, যেখানে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং যেসব অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যায় সেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। যেমন- জাপানের ওসাকা, ভারতের মুম্বাই প্রভৃতি স্থানে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব
জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরাসরি প্রভাব পড়ে ভূমির উপর। একটি দেশের ভূমি সীমিত হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই দেশে উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রয়োজন দেখা দেয়। বেশি খাদ্য উৎপাদনের জন্য ভূমি অধিক ব্যবহার হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভূমির ব্যবহার নিম্নোক্তভাবে দেখানো যায়।
ভূমির অধিক ব্যবহার, খণ্ডিতকরুনণ প্রভৃতির কারণে প্রতিদিন উৎপাদনযোগ্য ভূমি কমে যাচ্ছে। বসতি বিস্তারের ফলে উন্মুক্তস্থান, জলাশয় প্রভৃতি কমে যাচ্ছে। মাটিতে যে সকল অণুজীব, ক্ষুদ্র জীব বাস করে তা বাধাগ্রসত্ম হয়। দূষিত মাটিতে উদ্ভিদ জন্মাতে পারে না। ফলে ভূমি মরূকরুনণ হতে থাকে। তাই যে কোনো দেশের ভূমি ব্যবহার সঠিকভাবে করার জন্য জনসংখ্যার ভারসাম্য থাকা দরকার।

ভূমি —-> অধিক ফসল চাষ —-> উর্বরতা হ্রাস –> মাটির জৈব উপাদান কমে
– অধিক ফলনের জন্য অধিক সার, কীটনাশক ব্যবহার —> মাটি দূষিত হয়ে পড়ে
– বন, পাহাড় কেটে আবাদি ভূমিকরুনণ —-> ভূমি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়
– কৃষিভূমি খন্ডিত হয়ে —-> বসতবাড়ি ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়
– ভূমি বিভাজন —-> নতুন অবকাঠামো স্থাপন, বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপন
– যোগাযোগের জন্য —-> ভূমি ব্যবহার বৃদ্ধি, স্কুল, কলেজ, প্রশাসন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভূমি ব্যবহার বৃদ্ধি

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পানির উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। পৃথিবীর শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ পানি, কিন্তু সকল পানির শতকরা ৯৭ ভাগ লবণাক্ত বা লোনা। তাহলে আমাদের খাবার উপযুক্ত পানি মাত্র শতকরা ৩ ভাগ। পানির ব্যবহার ও ক্ষতিকরুন দিক নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
পানি —-> কৃষিক্ষেত্রে,সেচ কার্যে ব্যবহার,এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।
– পানি বা খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার,ভূনিম্নস্থ পানি অধিক ব্যবহারর ফলে মাটির নিচের পানির স্তর নেমে যাচ্ছে এবং লোনা পানি তলদেশে প্রবেশ করুনছে যেটি পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকরুন।
– যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যবহার ও এতে তেল,বর্জ্য সংযুক্ত হচ্ছে
– শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার ও এতে রং,গ্রিজ,রাসায়নিক দ্রব্য সংযুক্ত

S.S.C

Leave a Comment