স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ, স্বল্পমেয়াদি ঋণের বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা কর
অর্থায়ন ক্ষেত্রে চলতি মূলধন সংগ্রহের প্রধান মাধ্যম হলো স্বল্পমেয়াদি অর্থায়ন। স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে । নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ, স্বল্পমেয়াদি ঋণের বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা কর
১. সময় : স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সময় । এ অর্থ এক বছর বা তদাপেক্ষা কম সময়ের জন্য আদান- প্রদান করা হয় ৷
২. কম ব্যয় : এ ঋণ কম সময়ের জন্য গ্রহণ করা হয় এবং পরিশোধ করা হয়। তাই এ ঋণের সুদের হার কম হওয়ায় ব্যয়ও কম হয় ।
৩. মৌলিক লক্ষ্য : স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের মৌলিক লক্ষ্য হলো ফার্মের চলতি মূলধনের চাহিদা মিটানো। ফার্মের নিয়মিত কার্যাবলি যেমন : মাল ক্রয়, মজুরি প্রদান, বেতন প্রদান, ভাড়া প্রদান, দায় পরিশোধ প্রভৃতি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার জন্য স্বল্পমেয়াদি অর্থের সংস্থান করা হয়।
৪. নবায়ন : স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো ঋণগ্রহীতা ও দাতা পারস্পরিক আলাপ আলোচনা করে পুরাতন ঋণ পরিশোধ করে নতুন ঋণের জন্য ঋণচুক্তি করতে পারে। এতে পুরাতন ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়।
৫. ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের আকার ; ছোট, বড় ও মাঝারি সকল ধরনের ফার্ম ব্যবহারের উদ্দেশ্যে স্বল্পমেয়াদি উৎস হতে অর্থসংগ্রহ করে । তবে অধিক। ক্ষেত্রে ছোট ও মাঝারি ধরনের ফার্মগুলো স্বল্পমেয়াদি উৎস হতে বেশি অর্থসংগ্রহ করে ।
৬. জামানত : এক বছর বা তারও কম সময়ের জন্য এ ধরনের ঋণের আদান-প্রদান করা হয় বিধায় জামানতের প্রয়োজন হয় না। ঋণপ্রদানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছলতা, সুনাম, বিশ্বাস ও সততা যাচাই করে এ ঋণ প্রদান করে।
৭. ঋণের পরিমাণ : স্বল্পমেয়াদি উৎস হতে সংগৃহীত ঋণের পরিমাণ সাধারণত ছোট আকারে হয়। এ ঋণ চলতি মূলধন হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।
৮. নিয়ন্ত্রণ : স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের উপর ঋণগ্রহীতার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে। অর্থ যাতে সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় সেদিকে ঋণগ্রহীতা দৃষ্টি রাখে ।
৯. সংগ্রহ পদ্ধতি : স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এর সংগ্রহ পদ্ধতি অতি সহজ। এ ঋণ আদান-প্রদানের জন্য তেমন কোন আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় না ।
১০. ঋণের ধারাবাহিক উৎস : স্বল্পমেয়াদি ঋণ ধারাবাহিক উৎস হিসেবে কাজ করে। বাকিতে মাল ক্রয় করে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নিকট ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের যে দেনা সৃষ্টি হয় তা নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ করে পুনরায় বাকিতে মাল ক্রয় করা যায়।
১১. ঝুঁকি : স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের ঝুঁকি বেশি। কম সময়ের চুক্তিতে আবদ্ধ ঋণ গ্রহীতা সর্বদা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। কারণ নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে ঋণগ্রহীতা বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি, স্বল্পমেয়াদি প্রয়োজন মেটানোর জন্য স্বল্পমেয়াদি অর্থসংস্থান উপযোগী হলেও দীর্ঘমেয়াদি প্রয়োজন মেটানোর জন্য এরূপ অর্থসংস্থান সহায়ক নয় ।
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।