স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর করণীয়গুলো কি কি?
প্রশ্নঃ স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর গহনা খুলে ফেলতে হয়, নাকফুল, চুড়ি তারপর একদম হােকা রংয়ের সাদামাটা জামাকাপড় পড়তে হয়,-এসব নিয়ম কি ইসলামিক? বা এ বিষয়ে কি কোনো হাদীস আছে??
জবাবঃ
স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময়ে স্ত্রীর করণীয় সম্পর্কে হাদিসে যা এসেছে তা এইঃ স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময় (অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অন্যথায় ৪ মাস ১০ দিন) সব ধরনের সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব বিধান।
সহীহ বুখারীতে উম্মে হাবীবা রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য তার স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিনদিনের বেশি সময় হিদাদ (শোক করা ও সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা) বৈধ নয়। আর স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী ৪ মাস ১০ দিন হিদাদ পালন করবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৩৩৪] [
[অনেকে বলে থাকেন স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে ৩ মাস ১৩ দিন ইদ্দত করতে হবে, এটা সম্পুর্ণ ভুল, সহীহ বোখারীর ৫৩৩৪ নাম্বার হাদিসে স্পষ্ট করে বলা আছে ৪ মাস ১০ দিন ইদ্দত করতে হবে]
উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্ত্রী লোকের স্বামী মৃত্যুবরণ করে সে যেন ইদ্দতকালীন সময়ে রঙিন এবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় ও অলংকার পরিধান না করে। আর সে যেন খিযাব ও সুরমা ব্যবহার না করে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং: ২২৯৮]
আল্লামা কুরতুবী রাহ. তার বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘আলজামে লিআহকামিল কুরআন’ও ইদ্দত সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন, হিদাদ পালনের অর্থ হল, নারী তার ইদ্দতকালীন সময়ে সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদি,অলঙ্কারাদিসহ পোশাক-আশাকের ক্ষেত্রে যাবতীয় সাজসজ্জা ত্যাগ করবে। [আল জামে’ লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী ৩/১১৮]
অতএব, গর্ভবতী হলে সন্তান হওয়া পযর্ন্ত আর গর্ভবতী না হলে ৪ মাস ১০ দিন অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই ঘর থেকে বের হওয়া যাবেনা।
সুতরাং কোনো নারীর স্বামী মারা যাওয়ার পর ৪ মাস ১০ দিন অথবা অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত যে কোনো ধরনের সাজসজ্জা যা উৎসবাদিতে পরা হয় এমন চাকচিক্যপূর্ণ পোশাক পরিধান করা,সুগন্ধি ও অন্যান্য সাজসজ্জার প্রসাধনী ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। তদ্রুপ মেহেদি লাগানো, সুরমা দেওয়া থেকেও বিরত থাকা আবশ্যক।
অবশ্য ব্যবহৃত রঙিন কাপড় যদি চাকচিক্যপূর্ণ না হয় তাহলে তা পরিধান করতে কোনো অসুবিধা নেই। ইদ্দত অবস্থায় সাদা কাপড় পরা আবশ্যক নয়। সাদা কাপড় পরিধান করাকে জরুরি মনে করা ঠিক নয়।
ইদ্দত অবস্থায় নারীর জন্য সাজগোজ ত্যাগ করার বিধান একাধিক সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এ ব্যাপারে হাদীসে অত্যন্ত গুরুত্ব এসেছে।
এটি শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সুতরাং একে সামাজিক প্রথা বা কুসংস্কার মনে করা গুনাহ। বরং আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী সকল মুসলমানের উচিত উক্ত বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। নারীদের কর্তব্য উক্ত বিধান পালনে যত্নশীল হওয়া।
[আলমাবসূত, সারাখসী ৬/৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩০-৫৩২; মিরকাতুল মাফাতীহ ৬/৪৫২; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/২৩১; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৩০; ফাতহুল বারী ৯/৪০১, ৩৯৫]
- যে কারণে পুরুষের গোপন অঙ্গের ক্ষমতা নষ্ট হয়
- লিভারেজ ইজারার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ
- হাঁপানি রোগী জন্য পরামর্শ ও হাঁপানি রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসা উপায়গুলো
- ২০২৫ এর সেরা ১০ জন তারকারা গুগলিং সার্চে করে
- লিভারেজ ইজারা বলতে কি বুঝ বিস্তারিত আলোচনা করো