হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরির চিকিৎসা, লিগামেন্ট ইনজুরির কারণ ও চিকিৎসা, হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরি ও প্রতিকার

হাঁটুর ভেতরে দু’টি এবং বাইরে দু’টি লিগামেন্ট এবং দু’টি মিনিস্কাস থাকে, যা একে স্থিতিশীল করে রাখে। একজন খেলোয়াড়ের খেলতে গেলে বাইরে থেকে ভেতরের লিগামেন্ট পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাইরের লিগামেন্ট অল্প, মধ্যম এবং তীব্র পর্যায়ের আঘাত পেতে পারে।

বাইরে যদি তীব্র আঘাত পায়, তাহলে সাধারণত ভেতরের লিগামেন্টেও ওই তিন রকমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অনেক আশঙ্কা থাকে। এমনকি হাঁটুর ভেতরে লিগামেন্ট পুরোপুরি ছিঁড়ে যেতে পারে।

হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরির চিকিৎসা, লিগামেন্ট ইনজুরির কারণ ও চিকিৎসা, হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরি ও প্রতিকার


প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসায় অবশ্যই বরফ দিয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। এরপর এক্স-রে ও এমআরআইয়ের মাধ্যমে আঘাতের পরিমাণ বের করতে হয়।

বাইরের লিগামেন্টের আঘাত কম হলে কয়েকদিন বিশ্রাম এবং কিছু ব্যায়াম করলেই হয়। ভেতরের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে একজন খেলোয়াড়ের খেলায় ফিরতে সময় লাগবে। এগুলো একেবারে ছিঁড়ে গেলে জোড়া লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই। অত্যাধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার মাধ্যমে নতুন লিগামেন্ট লাগাতে হবে।

হাঁটু শরীরের বড় ও ওজন বহনকারী জোড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম। হাঁটুর জোড়া ওপরের দিক থেকে ঊরুর হাড় (ফিমার) ও প্যাটলা এবং নিচের দিক থেকে লেগের হাড়ের (টিবিয়া) সমন্বয়ে গঠিত। হাঁটুতে চারটি প্রধান লিগামেন্ট থাকে। এগুলো হলো ইলাসটিক টিস্যু, যা এক হাড় অন্য হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে, জোড়ার শক্তি প্রদান ও জোড়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

হাঁটুর লিগামেন্ট : এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট, পোসটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট, মিডিয়ার কোল্যাটারাল লিগামেন্ট, ল্যাটারাল কোল্যাটারাল লিগামেন্ট।

ইনজুরির কারণ : হঠাৎ মোচড়ানো গতি দ্বারা এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট সবচেয়ে বেশি ইনজুরি হয়। আঘাত, রিকশা থেকে পড়ে গেলে, গাড়ি বা মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় লিগামেন্ট ইনজুরি হয়। ফুটবল, বাস্কেটবল, কাবাডি ও হা-ডু-ডু খেলোয়াড়দের লিগামেন্ট ইনজুরি বেশি হয়। মই থেকে পড়ে গেলে, ওপর থেকে লাফ দিয়ে পড়লে, গর্তে পড়ে গেলে, সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এক স্টেপ ভুল করলে লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

ইনজুরির লক্ষণ : প্রথমে তীব্র ব্যথা পর ক্রমে ব্যথা কমে আসে। ব্যথা হাঁটুর বাইরের পাশে ও পেছনে অনুভূত হয়। হাঁটু ভাঁজ বা সোজা করতে গেলে ব্যথা বেড়ে যায়। আঘাতের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যেই হাঁটু ফুলে যায়। ফুলা ও ব্যথার জন্য হাঁটু নড়াচড়া করা যায় না। দাঁড়াতে বা হাঁটতে চেষ্টা করলে মনে হয় হাঁটু ছুটে যাচ্ছে বা বেঁকে যাচ্ছে। আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি ‘পপ’ বা ‘ক্র্যাক’ শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারবেন। সঙ্গে মেনিসকাস ইনজুরি থাকলে, রোগী বেশিক্ষণ বসলে হাঁটু সোজা করতে কষ্ট হয়। অনেক সময় হাঁটু আটকিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে লিগামেন্ট ইনজুরি থাকলে হাঁটুর পেশি শুকিয়ে যায় এবং হাঁটুর শক্তি কমে যায়। উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে এবং বসলে উঠতে কষ্ট হয়। হাঁটু ইনসিকিউর বা অস্থিতিশীল মনে হবে।

চিকিৎসা : হাঁটু পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। বরফের টুকরা টাওয়াল বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে লাগালে ব্যথা বা ফোলা কমে আসবে। প্রতিঘণ্টায় ১০ মিনিট বা দুঘণ্টা পর-পর ২০ মিনিট অনবরত লাগাতে হবে। তবে এটা সহ্যের মধ্যে রাখতে হবে। এ পদ্ধতি আঘাতের ৪৮-৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে। হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে হাঁটু হার্টের লেবেল থেকে উঁচুতে রাখলে ফোলা কম হবে। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এনালজেসিক বা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে ৭-১০ দিন।

ল্যাবরেটরি পরীক্ষা : প্রাথমিক চিকিৎসায় রোগীর ব্যথা ও ফোলা সেরে ওঠার পর, হাঁটুর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে কি কি লিগামেন্ট ইনজুরি হয়েছে এবং এর তীব্রতা নির্ণয় করা যায়। এক্স-রে ও এমআরআইয়ের সাহায্য নিতে হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও একটা পর্যায়ে সার্জারি করার প্রয়োজন হতে পারে।

করণীয় : হাঁটুর লিগামেন্ট আপনাআপনি জোড়া লাগে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাঁটুর পেশির ব্যায়াম ও দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়।

পরিশেষে : হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরির চিকিৎসা, লিগামেন্ট ইনজুরির কারণ ও চিকিৎসা, হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরি ও প্রতিকার

আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট

স্বাস্থ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী ঔষধি গুন গোপন সমস্যা রূপচর্চা রোগ প্রতিরোধ

Leave a Comment