হিন্দুধর্মে সংস্কারের ধারণা ও ধরন, বিবাহ, বিবাহ অনুষ্ঠানের পর্বসমূহ, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও অশৌচ ব্যাখ্যা করণ

শ্রেণি: ১০ম ভোকেশনাল 2022 বিষয়: হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা (২) এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 01 বিষয় কোডঃ 1222
বিভাগ: ভোকেশনাল শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ হিন্দুধর্মে সংস্কারের ধারণা ও ধরন, বিবাহ, বিবাহ অনুষ্ঠানের পর্বসমূহ, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও অশৌচ ব্যাখ্যা করণ।

শিখনফল/বিষয়বস্তু :

  • ধর্মীয় সংস্কার
  • বিবাহ অনুষ্ঠান
  •  বিবাহের পর্বসমূহ

নির্দেশনা (সংকেত/ ধাপ/ পরিধি): 

  • ধর্মীয় সংস্কারের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
  • বিবাহ সম্পর্কীত ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
  • বিবাহ অনুষ্ঠানের পর্বসমূহ আলোচনা করতে হবে
  • অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সর্ম্পকে ব্যাখ্যা করতে হবে

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

  • ধর্মীয় সংস্কারের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে

সংস্কার (সংস্কৃত: संस्कार) হিন্দুদের পালনীয় ষোলোটি প্রধান বৈদিক ধর্মীয় আচার। হিন্দুধর্মের বাইরেও জৈনধর্ম ও বৌদ্ধধর্মের কোনো কোনো শাখাসম্প্রদায়ে এই সব আচার-অনুষ্ঠানের মান্যতা রয়েছে।

এই সংস্কারগুলি গর্ভাবস্থা, শিশুর জন্ম, শিক্ষা, বিবাহ ও মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সংস্কারসমূহের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।। গার্হ্যসূত্র মতে সংস্কারের সংখ্যা ১২ থেকে ১৮টি। পরবর্তীকালে ১৬টি সংস্কার মান্যতা লাভ করে। এগুলিকেই ষোড়শ সংস্কার বলা হয়। এই সংস্কারগুলি হল: গর্ভাধান, পুংসবন, সীমন্তোন্নয়ন, জাতকর্ম, নামকরণ, নিষ্ক্রমণ, অন্নপ্রাশন, চূড়াকরণ, কর্ণভেদ, বিদ্যারম্ভ, উপনয়ন, বেদারম্ভ, কেশান্ত ও ঋতুশুদ্ধি, সমাবর্তন, বিবাহ ও অন্ত্যেষ্টি।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • বিবাহ সম্পর্কীত ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে

বিবাহ হল প্রায় সারা বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত একটি সম্পর্ক যেখানে সাধারণত একটি নারী ও একটি পুরুষ পরস্পরের প্রতি সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিপুল বৈচিত্রময়  এই পৃথিবীতে যেমন বিভিন্ন ধরনের মানবগোষ্ঠী বা সমাজ রয়েছে তেমনই গোষ্ঠী বা দেশ ভেদে বিবাহের রীতি নীতিও আলাদা।

এমনকি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে চলেছে বিবাহ সম্পর্কিত রীতি-রেওয়াজের। ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যেই বিভিন্ন রীতির বিবাহ প্রথা আছে তবে প্রধানত ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করলে উল্লেখযোগ্য বিবাহ রীতিগুলি হল হিন্দু বিবাহ, মুসলিম বিবাহ, খ্রীষ্টান বিবাহ ইত্যাদি। প্রতিটি রীতিরই আবার জাতি বা স্থান ভেদে অনেক আলাদা নিয়মরীতি আছে। এখানে আমরা পড়ব হিন্দু বিবাহ সম্পর্কিত নানান তথ্য।

পুরাণের দিকে চোখ রাখলে জানতে পারব হিন্দুশাস্ত্রে আট প্রকার বিয়ে কথা উল্লেখ করা হয়েছে –
১। ব্রাহ্ম বিবাহ
২। প্রজাপত্য বিবাহ
৩। আর্য্য বিবাহ
৪। দৈব বিবাহ
৫। অসুর বিবাহ বা আসুরিক বিবাহ
৬। গন্ধর্ব বিবাহ
৭। পিশাচ বিবাহ বা পৈশাচিক বিবাহ
৮। রাক্ষস বিবাহ

উপরে যে আট রকম বিয়ের কথা বলা হলো তার মধ্যে প্রথম চার রকম ব্রাহ্ম, প্রজাপত্য, আর্য্য ও দৈব বিয়ে হয়ে থাকে বিভিন্ন মন্ত্র ক্রমে। প্রজাপত্য বিয়ের চলন আমাদের সমাজে বেশী দেখা যায় যার পোশাকী নাম অ্যরেঞ্জ ম্যারেজ, এই প্রথায় পিতামাতা বা আত্নীয় স্বজনই বিয়ের ব্যবস্থা করে থাকেন।বিভিন্ন মন্ত্র অনুযায়ী বা পদ্ধতি অনুযায়ী উপরের নামকরণগুলি করা হয়েছে৷এ ছাড়া বাকী যে চারটি বিয়ের ধরন আছে, সেগুলির জন্য বর এবং কন্যার নিজের উদ্যোগে হয়ে থাকে। এ গুলিতে পিতামাতা বা আত্নীয় স্বজনের কোন দায়িত্ব থাকে না৷

বাঙালি হিন্দু বিবাহের রীতিনীতি দেখা যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্য এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বসবাসকারী বাঙালি হিন্দুদের বিবাহে। অতীতে বাঙালি হিন্দু সমাজে বাল্যবিবাহের ব্যাপক প্রচলন ছিল। বর্তমানে বাল্যবিবাহ আইনত নিষিদ্ধ করা হয়েছে । বর্তমান কালে নারীর বয়স সর্বনিম্ন আঠারো এবং পুরুষের বয়স একুশ হওয়া প্রয়োজন। তবে বিবাহে পণপ্রথা এখনও বহুল প্রচলিত। যদিও পণপ্রথা নিবারণী আইন বলবৎ আছে। তবুও সমাজে পণপ্রথা উপহার দেওয়া নেওয়ার মধ্য দিয়ে হয়ে থাকে৷

বিশুদ্ধিকরণেব জন্য হিন্দুদের যে দশবিধ সংস্কার আছে, বিবাহ তার মধ্যে শেষ সংস্কার।উচ্চবর্ণীয় হিন্দু সমাজের বিবাহে প্রধানত দুইটি আচারগত বিভাগ দেখা যায়, যথা – বৈদিক ও লৌকিক। লৌকিক আচারগুলি “স্ত্রী আচার” নামে পরিচিত।  বৈদিক আচারগুলির মধ্যে অবশ্য পালনীয় প্রথাগুলি হল কুশণ্ডিকা, লাজহোম, সপ্তপদী গমন, পাণিগ্রহণ, ধৃতিহোম ও চতুর্থী হোম প্রভৃতি । বৈদিক আচারগুলির সঙ্গে লৌকিক আচারগুলির কোনো সম্পর্ক থাকে না৷

 লৌকিক আচারগুলি অঞ্চল, বর্ণ বা উপবর্ণভেদে এক এক প্রকার হয়ে থাকে ।নিম্নবর্ণীয় হিন্দুদের মধ্যে লৌকিক আচার তো বটেই বিবাহের মৌলিক আচারগুলির ক্ষেত্রেও সম্প্রদায়ভেদে পার্থক্য দেখা যায়৷ এই লৌকিক আচারগুলি সধবা স্ত্রীদের দ্বারা সম্পাদিত হয়ে থাকে৷ বিবাহের মাধ্যমে নারীর গোত্রান্তর ঘটে সে পিতৃকুলের পরিচয় ছেড়ে স্বামীকূলের গোত্র গ্রহণ করে তাই বিবাহের সময় প্রতিটি নিয়ম যত্ন সহকারে পালন করা হয়ে থাকে৷ হিন্দুনারীর পক্ষে বিবাহ-জীবন চরম সন্ধিক্ষণ, এরূপ সন্ধিক্ষণে যাতে কোন বাধা-বিপত্তি না ঘটে তার উদ্দেশ্যেই আচার অনুষ্ঠান সমূহ পালিত হয়৷


হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী, বিবাহে ছেলে মেয়েটির সমস্ত পালনপোষণের দ্বায়িত্ব নেয় এবং মেয়েটি তাদের সংসারের খেয়াল রাখার দ্বায়িত্ব গ্রহন করে। তাই তো বিবাহের পরবর্তী অনুষ্ঠান হিসেবে ‘ভাত কাপড়’ এর অনুষ্ঠান সম্পাদিত হয়। এইভাবে তারা দুই আলাদা আলাদা মানুষ এক হয়ে নিজেদের বংশ এগিয়ে নিয়ে যায়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • বিবাহ অনুষ্ঠানের পর্বসমূহ আলোচনা করতে হবে

অতীতে বাঙালি হিন্দু সমাজে বাল্যবিবাহের ব্যাপক প্রচলন ছিল। বর্তমানে বাল্যবিবাহ আইনত নিষিদ্ধ। বর্তমান কালে পরিণত বয়সেই বিবাহ প্রথা প্রচলিত। তবে বিবাহে পণপ্রথা এখনও বহুল প্রচলিত। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে বাঙালি সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ আইনসিদ্ধ হয়। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়। নাগরিক সমাজে অসবর্ণ বিবাহও বর্তমানে প্রচলিত হয়েছে।

বিবাহে কন্যা সম্প্রদান করা হয়। তার মানে স্বামীই তার সকল দায়িত্ব নিয়ে নেন। তাই ধর্ম মতে কোন বিবাহ বিচ্ছেদ নেই। যদিও ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে বিবাহ বিচ্ছেদ আইনসিদ্ধ হয় যা কার্যকর করতে আদালতের আশ্রয় নিতে হয় । কারন বিচ্ছেদ সেখানেই সম্ভব যেখানে চুক্তি সম্পাদিত হয়। তাই হিন্দু আইনে স্ত্রী সারা জীবন স্বামীর কাছ থেকে সকলঅধিকার ভোগ করতে পারেন। স্বামীর সব কিছুই তার স্ত্রীর।

সংসারিক সকল সিদ্ধান্ত স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ- সিদ্ধান্তে হয়ে থাকে। স্ত্রীকে সত্যিকার অর্ধাঙ্গী বলা হয় কেননা স্বামীর যে কোন বিষয়ে স্ত্রীর মত গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু বিধান আনুসারে। স্ত্রী উপস্থিতি ছাড়া স্বামী যজ্ঞ বা কোন ধর্মীয় কার্যাদি পরিপূর্ণ করতে পারেন না। এছাড়া একমাত্র হিন্দু ইতিহাসেই দেখা যায় অনেক মহান রাজা তাঁর স্ত্রীর নিকট থেকে সিধান্ত নিয়ে রাজ্যপরিচালনার মত কাজও করেছেন।

বাঙালি সমাজে পাঁচটি শাখা রয়েছে – রাঢ়ী, বারেন্দ্র, বৈদিক, সপ্তশতী ও মধ্যশ্রেণী। বাঙালি কায়স্থ সমাজে রয়েছে চারটি শাখা – উত্তর রাঢ়ী, দক্ষিণ রাঢ়ী, বারেন্দ্র ও বঙ্গজ। এই সকল বর্ণ এবং তাদের শাখা ও উপশাখাগুলির মধ্যে বিবাহ প্রথায় দুটি বিভাগ দেখা যায় – বৈদিক ও লৌকিক। লৌকিক প্রথাগুলি মেয়েলি আচার। এই কারণে এগুলি স্ত্রী আচার নামে পরিচিত।

বৈদিক আচারে সাম, যজুঃ ও ঋক্ বেদত্রয়ের অনুসরণকারী ব্রাহ্মণদের মধ্যে বিবাহ প্রথায় আবার সামান্য পার্থক্য দেখা যায়। হিন্দু বিবাহের বৈদিক আচারগুলির মধ্যে অপরিহার্য হল কুশণ্ডিকা, লাজহোম (লাজ বা খই দিয়ে যজ্ঞানুষ্ঠান), সপ্তপদী গমন, পাণিগ্রহণ (কন্যার পাণি অর্থাৎ হস্ত গ্রহণ), ধৃতিহোম (ধারণ করার অর্থাৎ কন্যাকে ধরে রাখার যজ্ঞ) ও চতুর্থী হোম।এছাড়া পালিত হয় অরুন্ধতী নক্ষত্র দর্শন, ধ্রুব নক্ষত্র দর্শন, শিলারোহণ ইত্যাদি কয়েকটি বৈদিক প্রথাও। বৈদিক প্রথাগুলি বিধিবদ্ধ শাস্ত্রীয় প্রথা ও বিবাহের মূল অঙ্গ।

বাঙালি হিন্দু বিবাহের লৌকিক আচার বহুবিধ। এই প্রথাগুলি বর্ণ, শাখা, উপশাখা এবং অঞ্চল ভেদে ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের হয়। এগুলির সঙ্গে বৈদিক প্রথাগুলির কোনো যোগ নেই।

পাটিপত্র বিবাহের প্রথম আচার। এই আচার লগ্নপত্র বা মঙ্গলাচরণ নামেও পরিচিত। ঘটকের মাধ্যমে সম্বন্ধ করে বিবাহ স্থির হলে নগদ বা গহনাপত্রে যৌতুক ও অন্যান্য দেনাপাওনা চূড়ান্তভাবে স্থির করার জন্য যে অনুষ্ঠান হয়, তাকেই পাটিপত্র বলে। এই আচারের মাধ্যমেই বিবাহের অন্যান্য আচারের সূচনা ঘটে।

পানখিল বিবাহের দ্বিতীয় আচার। এটি পাটিপত্রের ঠিক পরেই পালিত হয়। পানখিলের অর্থ পান পাতায় আনুষ্ঠানিকভাবে খিল দেওয়া বা খড়কে বেঁধানো। এই আচারটি প্রথমে বরের বাড়িতে এবং পরে কনের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। পানখিল আচারে বাড়ির মেয়েরা এবং প্রতিবেশিনীরা বিয়ের গান গেয়ে থাকেন। এই গানের বিষয়বস্তু হল রাম ও সীতার বিবাহ।

দধি মঙ্গল: বিবাহের দিন বর ও কন্যার উপবাস। তবে উপবাস নির্জলা নয়। জল মিষ্টি খাওয়ার বিধান আছে। তাই সারাদিনের জন্য সূর্য্যোদয়ের আগে বর ও কন্যাকে চিড়ে ও দৈ খাওয়ানো হয়।

গায়ে হলুদ: সংস্কৃত ভাষায় এই রীতিকে বলা হয় গাত্রহরিদ্রা। হিন্দু ধর্মে কয়েকটি জিনিসকে শুভ বলা হয়। যেমন শঙ্খধ্বনি, হলুদ ইত্যাদি। প্রথমে বরকে ও নিতবরকে সারা গায়ে হলুদ মাখানো হয়। পরে সেই হলুদ কন্যার বাড়ী পাঠানো হয়। কন্যাকে সেই হলুদ মাখানো হয়।

শঙ্খ কঙ্কন:কন্যাকে শাখা পরানো হয়। এরপর বিকালে বিবাহের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।

বর বরণ: বর বিবাহ করতে এলে তাকে স্বাগত জানান কন্যাপক্ষ। সাধাবনত: কন্যার মা তার জামাতাকে একটি থালায় প্রদীপ, ধান দুর্ব্ব ও অন্যান্য কিছু বরণ সামগ্রী নিয়ে বরণ করেন। এরপর বরকে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় ও দুধ এবং মিষ্টি খাওয়ানো হয় ।

সাত পাক: বিবাহের মন্ডপে প্রথমে বরকে আনা হয়। এরপর কন্যাকে পিঁড়িতে বসিয়ে আনা হয়। সাধারণত: কন্যার জামাইবাবুরা পিঁড়ি ধরে থাকেন। কন্যা পান পাতা দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখেন। কন্যাকে পিঁড়িতে করে বরের চারপাশে সাতপাক ঘোরানো হয়।

শুভদৃষ্টি: বিবাহের মন্ডপে জনসমক্ষে বর ও কন্যা একে অপরের দিকে চেয়ে দেখন।

মালা বদল: কন্যা ও বর মালাবদল করেন। এই রীতির অর্থ হচ্ছে দুজন একে অন্যকে জীবনসঙ্গী হিসাবে মেনে নিলেন। অর্থাৎ অগ্নি সাক্ষী রেখে পিতামাতা ও অন্যান্য স্বজনকে সাক্ষী সামনে বর ও কন্যা বিবাহে সন্মতি জানান।

সম্প্রদান: কন্যার পিতা কন্যাকে জামাতার হাতে সম্প্রদান করেন। হিন্দু সম্প্রদায়ে হৃদয়ের মূল্য অনেক ! হিন্দু সম্প্রদায়ে কন্যার পিতা কন্যাকে বেদমন্ত্রে জামাতার হাতে সম্প্রদান করেন। হৃদয় আবিষ্ট বেদমন্ত্রের বিবাহ মন্ত্র:- যদ্যেত হৃদয়ং তব, তদস্তু হৃদয়ং মম।যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব। আমার হূদয় তোমার জন্য, তোমার হূদয় আমার জন্য, আমাদের দুজনের মিলিত হূদয় হোক ঈশ্বরের জন্য’।

অঞ্জলি: কন্যা ও বর খৈ অগ্নাহুতি দেন। প্রচলিত বাংলায় একে বলে খৈ পোড়া। বৈদিক যুগে মানুষ নানা ধরনের শক্তির উপাসনা করতেন। অগ্নিও তাদের মধ্যে অন্যতম।

সিঁদুর দান: বিবাহের শেষ রীতি হল বর কন্যার কপালে সিঁদুর লেপন করেন। বাঙালি হিন্দু নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদুর পরেন। অঞ্চলভেদে এই রীতি কিছু পরিবর্তিত হয়।

প্রাচীন ভারতের শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে বিয়ের প্রকার বিন্যাস করা হয়েছিল। এর কয়েকটি ছিল সম্পূর্ণভাবে লোকাচার ভিত্তিক। তাতে কোন প্রকার মন্ত্রোচ্চারণ বা যাগযজ্ঞের প্রয়োজন হতো না। অন্যদিকে কয়েকটি বিয়ে ছিল শাস্ত্র অনুমোদিত। সেগুলোর মূল অনুষ্ঠান ছিল মন্ত্রপাঠ, যজ্ঞ অনুষ্ঠান এবং কনেকে নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী বরের হাতে সম্প্রদান।

চার প্রকার বিয়ে প্রচলিত ছিল মহাভারতীয় যুগে – ব্রাহ্ম, গান্ধর্ব, অসুর, রাক্ষস। এর মধ্যে একমাত্র ব্রাহ্ম বিয়েতেই মন্ত্রোচ্চারণ এবং যজ্ঞের আয়োজন হতো। বৈদিক যুগের পর এর সঙ্গে যোগ হয় আরো ৪ প্রকার বিয়ে। এগুলো হল ক) দৈব খ) আর্য গ) প্রজাপাত্য ঘ) পৈশাচ। পৈশাচ ছাড়া অন্য বিয়েগুলো ছিল যজ্ঞ ও মন্ত্র নির্ভর।

এ ৮ রকম বিয়ের মধ্যে বেশিরভাগ পন্ডিতরা ব্রাহ্ম,দৈব, আর্য ও প্রজাপাত্য বিয়েকে উন্নত ও আধ্যত্মিক বিয়ে নামে অভিহিত করেছেন। শাস্ত্রজ্ঞান সম্পন্ন পাত্রের কাছে যজ্ঞ ও মন্ত্রোচ্চারণসহ কন্যাদানের নাম ব্রাহ্মবিবাহ। যজ্ঞাদিসহ অলঙ্কারাদি দিয়ে সাজিয়ে কন্যাদান দৈববিবাহ। বরের কাছ থেকে এক বা একাধিক গোমিথুন নিয়ে কন্যাদান আর্যবিবাহ।

উভয়ে মিলিত হয়ে ধর্মাচারণ কর- এ উপদেশ দিয়ে অর্চনা সহকারে কন্যাদান প্রজাপাত্য বিবাহ। অর্থের বিনিময়ে মেয়ে কিনে তাকে বিয়ে করার নাম ছিল অসুর বিবাহ। গান্ধর্ব বিবাহ মূলত প্রেমের বিয়ে। পিতামাতার অজ্ঞাতে দুজন প্রাপ্তবয়স্কের সম্মতিক্রমে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হত। মহাভারতে অর্জুন চিত্রাঙ্গদার এ বিয়ে হয়। সমাজ মনোবিজ্ঞানী ওয়েস্টমার্ক রাক্ষস বিয়েকে ম্যারেজ বাই ক্যাপচার এবং অসুর বিবাহকে ম্যারেজ বাই পারচেজ নামে অভিহিত করেছেন। এদুটি বিবাহ ধর্ম মতে নিকৃষ্ট ও শাস্তি যোগ্য। একুশ শতকের প্রারম্ভকাল পর্যন্ত হিন্দু সমাজ বিশেষত বাঙালি সমাজে প্রজাপাত্য বিয়েই প্রচলিত।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সর্ম্পকে ব্যাখ্যা করতে হবে

জীবনের শেষ ক্রিয়াটি হলো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। অন্ত মানে শেষ,ইষ্টি মানে যজ্ঞ। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া মানে শেষ যজ্ঞ। মৃত্যুর পর শব দেহ দিয়ে যে যজ্ঞ অনুষ্ঠান করা হয়, তাই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। হিন্দু ধর্মের মতবাদ হলো যিনি দেহরক্ষা করেছেন, তিনি দেবলোক অর্থাৎ স্বর্গবাসী হয়েছেন। দেহ থেকে মুক্ত হয়ে চিরদিনের জন্যে ঈশ্বর সান্নিধানে চলে যান। কিন্তু যে আত্মা এ দেহ থেকে চলে গিয়েছে, এ দেহে এতদিন বাস করার পর, দেহটির প্রতি তার মোহ জন্মানো অসম্ভব নয়। আত্মা যদি দেহটি রক্ষিত দেখে,তবে দেহ ধারণের আকাঙ্ক্ষা তার মনে জাগ্ররুক হতে পারে। এই আকাঙ্ক্ষা বা মোহ থেকে মুক্ত করার জন্যই দেহটি দাহ করার বিধান দেয়া হয়েছে।

বৈদিক যুগে দেরলোকে প্রার্থনা জানাবার একমাত্র উপায় ছিল যজ্ঞ। অগ্নি হলেন দেবগণের পুরোহিত। অগ্নিতে দেবতার নাম বলে কোন কিছু আহুতি দিলে তা অগ্নিই দেবলোকে পৌঁছে দেবেন এ বিশ্বাস ছিল। দেহ থেকে আত্মা বের হয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে। সেই আত্মাকে অগ্নিতে সমর্পণের অনুষ্ঠান হলো মুখাগ্নি। মুখাগ্নি করেই আত্মাকে দেবলোকে প্রেরণ করা হয় এবং তার পর শবদাহ করে পুনর্জন্মের আকাঙ্ক্ষা থেকে বিদেহী আত্মাকে মোহমুক্ত করা হয়।

আধ্যাত্মিক ধ্যানধারণা, সামাজিক চেতনা এবং বৈজ্ঞানিক প্রয়োগ থেকে বিশ্লেষণ করলে এই বিধি হলো উৎকৃষ্ট এবং গ্রহণযোগ্য।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সাথে শবদাহ ছাড়াও আছে পিন্ডি দেবার প্রণালী, অশৌচ বিধি, পূরক পিণ্ড দান, আদ্যশ্রাদ্ধ বিধি ও সপিণ্ডকরণ বিধি। প্রত্যেকটি কর্মক্রিয়ার একটি আধ্যাত্মিক সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আছে। এ সমস্ত ব্যাখ্যা ও দর্শন এতই যুক্তিযুক্ত এবং গ্রহণযোগ্য যে আধুনিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি হতে বিশ্লেষণকারীগণও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

Leave a Comment