হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবােধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপর্ণ ভূমিকা রাখে

“হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবােধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপর্ণ ভূমিকা রাখে।” এই সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন লেখ। (অনু্ধ্ব -২৫০শব্দ)

সংকেত:

ক. ভূমিকা

খ, হিসাব বিজ্ঞানের ধারণা

গ. হিসাব বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য

ঘ. হিসাব বিজ্ঞানের উৎপত্তি ও. সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাব বিজ্ঞানের সম্পর্ক

চ. হিসাব বিজ্ঞান ও মূল্যবােধ

ছ. হিসাব বিজ্ঞান ও জাবাবদিহিতা

জ. উপসংহার

“হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবােধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপর্ণ ভূমিকা রাখে।” এই সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন

ভূমিকা

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন করা। কোন নির্দিষ্ট সময়ে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মুনাফা অর্জন করেছে না ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা জানা অপরিহার্য।

হিসাববিজ্ঞান শব্দটি ‘হিসাব’ ও ‘বিজ্ঞান’ শব্দ দুটির সম্মিলিত রূপ। আভিধানিক অর্থে হিসাব বলতে গণনা বুঝায়। পারিভাষিক অর্থে হিসাব বলতে অর্থের দ্বারা পরিমাপযোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি, দায় ও আয়-ব্যয় সংক্রান্ত লেনদেনের বিবরণকে বুঝায়।

অন্যদিকে বিজ্ঞান বলতে কোন বিষয়ে সুসংবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল জ্ঞানকে বুঝায়। সুতরাং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে লিপিবদ্ধকরণ, সংরক্ষণ, আর্থিক ফলাফল ও অবস্থা নির্ণয় এবং বিশ্লেষণ করার সুসংবদ্ধ জ্ঞানকে হিসাববিজ্ঞান বলে।

তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেন-দেনসমূহের সঠিক হিসাব রাখা, আর্থিক অবস্থা, সম্পত্তি ও মূলধনের পরিমাণ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা প্রয়োজন হয়।

হিসাব বিজ্ঞানের ধারণা

হিসাববিজ্ঞান হল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যবসায় বা সংঘবদ্ধ দলের আর্থিক ও অনার্থিক তথ্য পরিমাপণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও যোগাযোগের মাধ্যম।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

হিসাব বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য

হিসাব বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য লেনদেন সমূহকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিকভাবে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা।

প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ, নির্ণয়ের মাধ্যমে আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা লাভ করা আর একটি অন্যতম উদ্দেশ্য।

স্থায়ী লিপিবদ্ধকরণ: কোন প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন গুলো স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করাই হিসাব বিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য।

হিসাববিজ্ঞানের সাহায্যে এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবেশন করা যায়। ব্যবস্থাপক কর্তৃক এই সমস্ত তথ্য সঠিক বিশেষণ ও ব্যবহারের উপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে। তাই হিসাববিজ্ঞান ব্যবসায় ব্যবস্থাপনার মৌলিক উপাদান হিসেবে স্বীকৃত।

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, এনজিও এবং অ-মুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠানে তথা ব্যক্তিক, পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন লিখে রাখা, আর্থিক অবস্থা, লাভক্ষতি ও দেনা-পাওনা সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য।

হিসাব বিজ্ঞানের উৎপত্তি ও. সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাব বিজ্ঞানের সম্পর্ক

আধুনিক হিসাব বিজ্ঞানের উৎপত্তি ইতালিতে। ১৪৯৪ সালে ইতালিয়ান গনিতবিদ লুকা প্যাসিওলি গণিত শাস্ত্রের (সুম্মা ডি এরিথিমেটিকা, জিওমেট্রিকা, প্রপোরসোনিয়েট, প্রোপোরসনালিটা) উপর একটি বই লেখেন। এই বইয়ের পঞ্চম অধ্যায়ে তিনি হিসাববিজ্ঞানের মূল ভিত্তি দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেন।

আমাদের প্রতিদিনের কাজের সাথে কোন না কোন ভাবে আথিক লেনদেন যুক্ত থাকে । আমাদের প্রতিদিনের বাজার , বাড়ি ভাড়া, স্কুলে খরচ, নেট বিল , বিদ্যুাৎ বিল , পানির বিল সকল ক্ষেত্রে কোন না কোন ভাবে আথিক লেনদেন হয়ে থাকে । আর হিসাব বিজ্ঞান আমাদের এই সকল লেনদেন সুনিদিষ্ট ভাবে লিপিন্ধ করতে সাহায্যে করে আমাদের সমাজ ও দেশের সাথে সম্পক তৈরি করে ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

হিসাব বিজ্ঞান ও মূল্যবােধ

মূল্যবোধ হলো ব্যক্তি ও সমাজের চিন্তা চেতনা, বিশ্বাস, ধ্যান ধারনা প্রভৃতির সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠা মানদন্ড যা দ্বারা মানুষ কোন বিষয়ে ভালমন্দ বিচার করে থাকে।

মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাব বিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হিসাব বিজ্ঞান ও জাবাবদিহিতা

১. সততা ও দায়িত্ববোধের বিকাশ : হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানের রীতি – নীতি ও কলাকৌশল যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে আর্থিক দুর্নীতি, জালিয়াতি, সম্পদ ইত্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং হিসাবের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়। আর বছরের পর বছর এর অনুসরণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও দায়িত্ববোধ বিকশিত হয়।

২. ঋণ পরিশোধ সচেতনতা সৃষ্টি : হিসাববিজ্ঞান ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ঋণ পরিশোধে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং তাদের মূল্যবোধ জাগ্রত করে। ফলে ঋণখেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।

৩. ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি : সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় পরিহার ধর্মীয় মূল্যবোধের অংশ। সঠিক হিসাব সংরক্ষণ করলে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আয় বুঝে ব্যয় করার মানসিকতা সৃষ্টি ও সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

৪. সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধ সৃষ্টি : সরকারের আয়ের অন্যতম উৎসগুলো হচ্ছে ভ্যাট, কাষ্টমস ডিউটি, আয়কর প্রভতি। হিসাববিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সঠিক আয় ও ব্যয় নির্ণয় করা সম্ভব। ফলে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।

৫. জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রতিরোধ : সুষ্ঠু হিসাবব্যবস্থা প্রচলিত থাকলে সম্ভাব্য শাস্তি ও দুর্নামের ভয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে জালিয়াতি, তহবিল তছরুপ, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রবণতা হ্রাস পায়।

উপসংহার

 সঠিকভাবে হিসাব সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে অপচয় রোধ এবং আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য আয় অথবা সম্ভাব্য ব্যয় জানার জন্য হিসাব বিজ্ঞানের গুরুত্ব অনেক। ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনা এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ হিসাব রাখা খুবই প্রয়োজন। 

লেন্দেনসমূহ সঠিকভাবে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করতে না পারলে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত আর্থিক ফলাফল ও অবস্থা জানা সম্ভব নয়। তাই লেন্দেনসমূহ সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে হিসেবে বইতে লিপিবদ্ধ করতে হিসাব বিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম।

এছাড়া ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ব্যায় নিয়নয়রন ,প্রতারণা যায় জালিয়াতি রোধ ,আর্থিক ববরণ তুলনামূলক বিশ্লেষণ ,বিভিন্ন সেবামূলক অমুনাফা ভোগী প্ৰতিষ্ঠান ও সরকারের কার্যাবলী সুস্থভাবে সম্পাদনের জন্য হিসাববিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম নিয়ন্ত্রণ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Leave a Comment