বিষয়: ‘৭ই মার্চের ভাষণ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লিখুন, ৭ই মার্চের ভাষণ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা একটি অনুচ্ছেদ লিখুন, অনুচ্ছেদ ৭ই মার্চের ভাষণ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা
৭ই মার্চের ভাষণ অনুচ্ছেদ (২৫০ শব্দ)
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সােহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাখাে জনতার সামনে যে ভাষণ দেন, তা-ই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ হিসেবে পরিচিত। তাঁর ভাষণটি ছিল, “ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি… এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
জয় বালা।” বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণে নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তির বীজ, স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগের প্রেরণাশক্তি, নিপীড়িত ও দিশেহারা বাঙালির উজ্জীবনী মন্ত্র। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন, শােষণ আর নির্যাতনের সমাপ্তি ঘটাতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল অনিবার্য।
১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী আওয়ামী লীগের এ বিজয়কে সহজে মেনে নিতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩রা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডেকেও অপ্রত্যাশিতভাবে ১লা মার্চ তা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি ঘােষণা করেন।
এই খবর শুনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মার্চের সাত তারিখে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভার ডাক দেন। নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সমাবেশস্থল এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ১৮ মিনিটের ভাষণে তিনি চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহারসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের উপর গুরুত্বারােপ করেন।
তার এ ভাষণ ছিল জাতির মুক্তিসংগ্রামের এক পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনা। রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, গণমুক্তি ও সাহিত্যিকভাবে শেখ মুজিবের এ ভাষণ ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন পর্যন্ত ভাষণটি ১২টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ভাষণটি আরও ৪৩টি ভাষায় অনুবাদ করার চেষ্টা চলছে। নিউজউইক ম্যাগাজিন এ ভাষণের জন্য শেখ মুজিবকে ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ভাষণটি বাংলাদেশের সংবিধানের ৫ম তফসিল এর ১৫০ (২) অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর UNESCO এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘােষণা দিয়েছে। বাঙালি হিসেবে এ অর্জন আমাদের জন্য গর্ব ও অহংকারের।
আরো ও সাজেশন:-
৭ই মার্চের ভাষণ অনুচ্ছেদ (৩২০ শব্দ)
৭ই মার্চ বাংলার ইতিহাসে একমাত্র দিন, যা সংজ্ঞায়িত হয়েছে একটি মাত্র ভাষণের দ্বারা। সেই ভাষণটি বাংলার ইতিহাসে নতুন যুগের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিগণিত।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সােহরাওয়ার্দী উদ্যান) এ ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সম্প্রতি (৩০ অক্টোবর, ২০১৭) ইউনেস্কো ভাষণটিকে ‘মেমরি অব দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। এই ভাষণের বাস্তবতা বিশ্লেষণ করতে গেলে একটু পেছনে যেতে হবে ।
পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলার ওপরে শােষণ-নিপীড়ন শুরু করে। আর এমন ভেদ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়, রুখে দাড়ায় তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সামরিক একনায়ক আইয়ুব খান ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর ক্ষমতায় এসে নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। ১৯৭০ সালের সে নির্বাচনে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এমনকি কোনাে কারণ ছাড়াই ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘােষণা করেন। এই ষড়যন্ত্রমূলক ঘােষণা শুনেই পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঝড় ওঠে। তারই প্রেক্ষিতে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ তাঁর।
ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ১৮ মিনিটের ওই ভাষণে তিনি বাঙালির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান । তাঁর বজ্রকণ্ঠে ধ্বনিত হয় এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আবেগ, বক্তব্যের তীক্ষ্ণতা ও দিক-নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণটি ছিল অনবদ্য।
তাই এই ভাষণটিকে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ঐতিহাসিক ‘গেটিসবার্গ এ্যাড্রেস’ (১৮৬৩) ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়। বস্তুত, ৭ই মার্চের এ ভাষণটির মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি একটি শােষণমুক্ত, স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
আর বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েই তারা পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে, সত্যি হয় বাঙালি জাতির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব তাই অপরিসীম।
রচনা ,প্রবন্ধ | উত্তর লিংক | ভাবসম্প্রসারণ | উত্তর লিংক |
আবেদন পত্র | উত্তর লিংক | অনুচ্ছেদ রচনা | উত্তর লিংক |
চিঠি ও ইমেল | উত্তর লিংক | প্রতিবেদন | উত্তর লিংক |
Paragraph | উত্তর লিংক | Composition | উত্তর লিংক |
Application | উত্তর লিংক | উত্তর লিংক | |
Essay | উত্তর লিংক | Letter | উত্তর লিংক |
৭ই মার্চের ভাষণ
বাংলাদেশের মানুষের কাছে ৭ই মার্চের ভাষণ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) প্রায় দশ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।
এই ভাষণের বাস্তবতা বিশ্লেষণ করতে গেলে একটি পিছনে যেতে হবে। পাকিস্তানি নামক রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলার উপরে শোষণ – নিপীড়ন শুরু করে। আর এর বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ আন্দোলন করে শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সামরিক একনায়ক আইয়ুব খান ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর ক্ষমতায় এসে নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। ১৯৭০ সালের সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কোনো কারণ ছাড়াই ইয়াহিয়া ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চে ঢাকায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এই ষড়যন্ত্রমূলক ঘোষণা শুনেই পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঝড় ওঠে।
তারই প্রেক্ষিতে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণ দেন। ১৮মিনিটের ওই ভাষণে তিনি বাঙালির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের আহবান জানান। বঙ্গবন্ধুর আবেগ, বক্তব্যের তীক্ষ্ণতা ও দিক-নির্দেশনায় ওই ভাষণটি ছিল অনবদ্য।
তাই এই ভাষণটিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ঐতিহাসিক গেটিসবার্গ ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
- hsc/এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র সংক্ষিপ্ত সাজেশন, ফাইনাল সাজেশন এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র, hsc logic 1st paper suggestion 100% common guaranty, special short suggestion hsc suggestion logic 1st paper
- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সুপার সাজেশন ও উত্তর, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ভিত্তিক সাজেশন,প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সাজেশন,কম সময়ে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
- বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা ইংরেজি গণিত বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি কৌশল
৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত ভাষণ এক ঐতিহাসিক ভাষণ। বাঙালিরা তাদের মহান নেতার নির্দেশের অপেক্ষায় ছিল যা ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যে প্রকাশ পায়।
১৮ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। ভাষণটি ইতিমধ্যে ১২টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ৭ই মার্চের ভাষণের মাহাত্ম্য বিবেচনা করে কিউজউইক ম্যাগাজিন ১৯৭১ সালেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আর ২০১৭ সালের ৩০শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যা বাঙালি জাতির জন্য অহংকার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ৭ই মার্চের ভাষণে শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে গর্জে ওঠার আহবান জানানো হয়। জাতির জনক যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। কারণ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পাকিস্তানি শাসকরা ক্ষমতা নিজেদের মধ্যে কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা শুরু করে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩রা মার্চ জাতীয় পরিষদ আহ্বান করলেও ১লা মার্চ অপ্রত্যাশিতভাবে এই অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি ঘোষণা করেন।
প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২রা মার্চ ঢাকায় এবং ৩রা মার্চ সারাদেশে হরতাল পালিত হয়। ৩রা মার্চ তিনি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যেই প্রদান করা হয়েছিল।
ভাষণটিতে ৪টি দাবি তুলে ধরা হয় যা ছিল, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, হত্যার সুষ্ঠু বিচার, সামরিক বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যাওয়া, সামরিক আইন প্রত্যাহারের আহ্বান। বঙ্গবন্ধু বাঙালির বদনাম যেন না হয় সে বিষয়েও ভাষণটিতে সতর্ক করেছেন। ভাষণটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিটি কথা বিশ্লেষণধর্মী। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার পরোক্ষ ঘোষণা ছিল ৭ই মার্চের ভাষণ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রই ছিল ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। বাঙালি জাতির জনকের দেওয়া এই ঐতিহাসিক ভাষণটি সর্বকালের সেরা ভাষণ হিসেবে সারাবিশ্বে আলোচিত এর ফলস্বরূপ ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”
৭ ই মার্চ ১৯৭১ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান Suhrawardy Udyan) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। ভাষণটি শুরু হয়েছিল ২টা ৪৫ মিনিটে এবং শেষ হয়েছিলো বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে। এই ১৮ মিনটের ভাষণই যেন জাগিয়ে তুলেছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো (UNESCO) এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ভাষণের তাৎপর্য কতটা তা হয়তো ভাষণটি শুনলেই বুঝা যায়। ভাষণটি শুনলেই যেন শরীরের ভিতর আবারও যুদ্ধের বাসনা জেগে উঠে। ঠিক যেমন ১৯৭১ জেগে উঠে ছিল আমাদের দামাল ছেলেরা। মূলত ৭ ই মার্চের ভাষনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য অনেক গভীর। ভাষণটির প্রেক্ষাপট ছিল, ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ (Awami League) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ আসনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পায় ১৬৭টি আসন। পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা জেড এ ভুট্টো আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ১৯৭১ সালের পহেলা মার্চ যখন সারাদেশের মানুষ উৎসুক হয়ে অপেক্ষায় ছিল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের (Yahya Khan)ভাষণ শুনার জন্য কিন্তু ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বাতিল করায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তীব্র ক্ষোভে ফেটে পরলেন। এবং একে পাকিস্তানি শাসকদের স্বৈরাচারী মনোভাব বলে আখ্যায়িত করলেন। মানুষ ২ মার্চ ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতাল মিছিল পালন করলো।
এরপর প্রথমবারের মতো স্বাধীনতার ডাক এলো “বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।” শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন। গঠিত হলো স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। সারাদেশ ৭ই মার্চের অপেক্ষায় থাকলো। জাতির পিতা এমন একটি সংকটময় মুহূর্তে ভাষণ দেওয়ার জন্য উদ্দত হয়েছিলেন যেই সময়ে পূর্ব পাকিস্তান তাদের সমস্ত শক্তি নিয়ে প্ৰস্তুত ছিল এবং বলেছিলো বিশ্বাসঘাতকদের (বাঙালী) হত্যার জন্য ট্যাঙ্ক, কামান, মেশিনগান সবই প্রস্তুত রাখা হবে। প্রয়োজন হলে ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। শাসন করার জন্য কেউ থাকবে না কিংবা শাসিত হওয়ার জন্যও কিছু থাকবে না।’
বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে চারটি শর্ত দিয়ে ভাষণের শেষাংশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ভাষণটির কিছু অংশের বাখ্যা করা যাক। ভাষণটিতে শুধু যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়নি বরং সেই সাথে কিভাবে যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায় তাও বলা হয়েছে। ভাষণে তিনি বলেছেন ২৮ তারিখে কর্মচারীরা যেন তাদের বেতন নিয়ে আসে। এরপর বলেছেন যদি বেতন না দেয় আর আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের ওপর আমার অনুরোধ রইল প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।’ এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা যায় বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের অধিকারের এবং অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন। আর সেই অধিকার আসবে পাকিস্তানি গোলামদের শিকল ভেঙে। ওই সময়ে বঙ্গবন্ধুর প্রাণ সংশয় ছিল তাই তিনি বলেছিলেন আমি যদি হুকুম দিতে নাও পারি (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলেও) তাও যেন যুদ্ধ না থামে। ভাষণে আরও বলেছিলেন “ভাতে মারব, পানিতে মারব” এখানে তিনি পাকিস্তানী বাহিনীকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে উপর্যুদস্ত করার কথাই বলেছিলেন।
১৮ মিনিটের এই ভাষণের প্রভাব আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপর কতটা প্রভাবিত ছিল তা ১৮ দিন পর অর্থাৎ ২৫ মার্চ রাত আমাদের বলে দেয়। ওই দিন রাতে ঢাকা (Dhaka) শহরে শুরু হয় গণহত্যা, ধর্ষণ। তাজা প্রাণ লুটেছে মাটিতে। তারপর বাংলার দামাল ছেলেরা ভয় পায় নি। বরং ৯ মাস নিজের শেষ রক্ত দিয়ে লড়ে গেছে দেশের জন্য একটি সুন্দর লাল সবুজের পতাকার জন্য। এরপর পিছনে যে শক্তিটি কাজ করেছে তা হলো বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ যা আজ শুনলে গায়ে কাটা দিয়ে উঠে।
আজ আমরা পেয়েছি স্বাধীন ভূমি, পেয়েছি নিজেদের অধিকার, পেয়েছি লাল সবুজের দেশ আমার প্রিয় বাংলাদেশ। আজ যখন কিশোরীর হাতে পতাকা দেখি গর্বে বুক ভরে উঠে কিন্তু কেউ কি হিসেবে করেছি এমন কতো কিশোরীর প্রাণ অকুলেই ঝরে গেছে। আব্দুল লতিফ তাই বলেছেন –
“আমি দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা
কারো দানে পাওয়া নয়।
আমি দাম দিছি প্রাণ লক্ষ কোটি
জানা আছে জগৎময়,”
বস্তুত মুক্তিযুদ্ধের পিছনে যে বড় শক্তিটি কাজ করেছিলো তার অনেকটা অংশই ছিল ৭ই মার্চের ভাষণ। বাংলার মানুষ সেই ডাকেই গর্জে উঠেছিল। সেই ডাকেই অস্ত্র ধরেছিলো। সেই ডাকেই নিজের অধিকারকে চিনতে শিখেছিলো। সেই ডাকেই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙেছিলো। যতদিন বাংলা থাকবে ততদিন থাকবে ৭ই মার্চ থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কবি অন্নদাশংকরের ভাষায় বলতে হয়
যতকাল রবে পদ্মা-যমুনা-গৌরী-মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তােমার শেখ মুজিবুর রহমান।
এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
- শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যানিমে কী কী?, সর্বকালের সেরা ২০টি সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যানিমে
- বৃষ্টির আবহাওয়ায় আমার মোটরসাইকেলের যত্ন
- কিভাবে মরিচা থেকে আপনার মোটরসাইকেলকে রক্ষা করবেন?, বাইকে মরিচা কিভাবে দূর করা যায় ?