৮ম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য কণিকা বইয়ের ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে সন্দেশের উল্লেখ আছে

সন্দেশ দুধের ছানা দিয়ে তৈরি এক ধরনের উপাদেয় মিষ্টান্ন। ছানার সঙ্গে চিনি বা গুড় মিশিয়ে ছাঁচে ফেলে সন্দেশ প্রস্তুত করা হয়।

খাদ্যোপাদানের দিক থেকে এটি একটি পুষ্টিকর খাবার। বাঙালির উৎসব আয়োজনে এই নকশাদার উপাদেয় খাবারটির ব্যবহার অনেক প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে।

যদিও এখন সন্দেশ তৈরিতে ছানার ব্যবহার বেশি; কিন্তু ছানা আবিষ্কারের আগেও সন্দেশ ছিল। আগে সন্দেশ তৈরি হতো বেসন, নারকেল ও মুগ ডালের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে ক্ষীর তৈরি করে। ছানা আবিষ্কারের পরে সন্দেশে ক্ষীরের পরিবর্তে ছানারই ব্যবহার বেশি হয়।

বাঙালি ছানা তৈরি করতে শিখেছে পর্তুগিজদের কাছ থেকে। প্রথম দিকে ছানা ও ছানার মিষ্টি পরিত্যাজ্যই ছিল ধর্মীয় কারণে। বৈদিক যুগে দুধ ও দুধ থেকে তৈরি ঘি, দধি, মাখন ইত্যাদি ছিল দেবখাদ্য।

বিশেষ করে ননি ও মাখন অত্যন্ত প্রিয় ছিল শ্রীকৃষ্ণের। এ জন্য দুধ থেকে রূপান্তরিত ওই সব খাদ্য শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হতো; কিন্তু ছানা তৈরি হয় দুধ বিকৃত করে।

টকের সাহায্যে দুধ ফাটিয়ে যা তৈরি করা হয় তাকে বলা হয় ছানা। এ জন্য ধর্মীয়ভাবে ছানা বা ছানার তৈরি সন্দেশকে অখাদ্য ভাবা হতো। পরে ধীরে ধীরে সুস্বাদু এই ছানার সন্দেশ মানুষের পছন্দের তালিকায় চলে আসে।

১৬ শতকে বৈষ্ণব ধর্মের প্রসারের যুগে ছানার সন্দেশের ব্যবহার বেড়ে যায়। কারণ বৈষ্ণবরা ছিল নিরামিষভোজী। আর ছানার তৈরি সন্দেশে কোনো আমিষ ছিল না।

বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার মিষ্টি তৈরির কারিগররা এই সন্দেশ তৈরির ব্যাপারটিকে একটি শৈল্পিক ব্যাপারে পরিণত করে ফেলেছে। আমাদের দেশে বহু রকমের সন্দেশ তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে নাটোরের কাঁচাগোল্লা ও প্যারা সন্দেশ বাঙালিদের কাছে অতি প্রিয় একটি মিষ্টান্ন।

এ ছাড়া যশোরের খেজুরের নলেন গুড়ের সন্দেশ ও বরিশালের গুটি সন্দেশেরও সুনাম ছড়িয়েছে বেশ। কিছু কিছু সন্দেশ তৈরিতে দই বা পনিরও ব্যবহার করা হয়।

শিক্ষা

1 thought on “৮ম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য কণিকা বইয়ের ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে সন্দেশের উল্লেখ আছে”

Leave a Comment