১৯৫২, ১৯৬৬, ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সময়।
এর মাঝে কোন সালের ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অধিকতর প্রেরণা যুগিয়েছিল বলে তুমি মনে করো?
যুক্তিসহ তোমার মতামত তুলে ধরো।
১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়। জন্ম নেয় ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র।
পাকিস্তানের ছিল দুটি অংশ।
পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ অংশের নাম পূর্ব পাকিস্তান।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
অপর অংশটি পশ্চিম পাকিস্তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
পূর্ব বাংলার ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থা পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী নিজেদের করায়ত্ত করতে শুরু করে এবং বৈষম্য সৃষ্টি করে।
এর বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলে।
ঐতিহাসিক ছয় দফার ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে অর্থনৈতিক শোষণহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করে।
বাংলা ভাষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিগত পরিচয়ে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়। এই জাতীয় ঐক্যই বাঙালি জাতীয়তাবাদ।
১৯৫২ সাল ( ভাষা আন্দোলন )-
১৯৫২ সালের ২৬ শে জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর অনুকরণে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নতুন ঘোষণা প্রদান করেন।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
এর প্রতিবাদে ছাত্রসমাজ ৩০ শে জানুয়ারি ধর্মঘট পালন করে। আব্দুল মতিনকে আহ্বায়ক করে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুন ভাবে গঠিত হয়। নতুনভাবে আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে।
এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোও যুক্ত হয়। ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়।
২১ শে ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট এবং ঐদিন রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ভাষার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প ঘোষণা করা হয়।
কারাবন্দি নেতা শেখ মুজিব ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২১ শে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি পালনে ছাত্র ও আওয়ামী মুসলিম লীগের নেতা-কর্মীদের ডেকে পরামর্শ দেন।
দেশব্যাপী জনমত গড়ে উঠতে থাকে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
২০ শে ফেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘোষণায় একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সভা-সমাবেশ-মিছিল এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।
আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের পাশে) একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিক থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এগিয়ে চলে।
মিছিলের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীগণ।
পুলিশ প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে, মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
একপর্যায়ে পুলিশ গুলি বর্ষণ করলে আবুল বরকত, জব্বার, রফিক, সালামসহ আরও অনেকে শহিদ হন। অনেকে আহত হন। ঢাকায় ছাত্র হত্যার খবর দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
১৯৭০ সালের ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে প্রেরণা যুগিয়েছিল
২২ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশাল শোক র্যালি বের হয়। সেখানে পুলিশের হামলায় শফিউর রহমান শহীদ হন।
শহীদদের স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য ঢাকায় ২৩ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্রজনতা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে এবং শফিউরের পিতা কে নিয়ে ওইদিনই তা উদ্বোধন করা হয়।
ঢাকায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শীর্ষক প্রথম কবিতা রচনা করেন।
ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা সহ বিভিন্ন শহরের ছাত্র-যুবক সহ সাধারন মানুষ ভাষার দাবিতে আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা পোষণ করা শুরু করে। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ববাংলায় শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা মূল ধারার রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নেয়।
১৯৬৬ সাল ( ঐতিহাসিক ছয় দফা )-
পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নিজেদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য স্বায়ত্তশাসন এর গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করে।
উপরোক্ত ঘটনাবলি এবং আইয়ুব খানের নির্যাতন-নিপীড়নের পটভূমিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেছিলেন।
ঐতিহাসিক ছয় দফার প্রবক্তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরূদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম গভীর ঈ সুস্পষ্ট রূপ লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়।
১৯৬৬ সালের ৫-৬ ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের এক সম্মেলনে যোগদান করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান।
সেখানে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্যে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন।
৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক সহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে।
আইয়ুব সরকার একে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি‘ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনা মূলে বিস্ফোরণ ঘটায়।
এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ছয় দফা কর্মসূচি বাঙ্গালীদের স্বাধীনতার মন্ত্রে গভীরভাবে উজ্জীবিত করে।
এটি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং পাকিস্তানের এক নম্বর শত্রু বলে চিহ্নিত করে।
পাকিস্তান সরকার ছয় দফা গ্রহণ না করে দমন-পীড়ন শুরু করলে আন্দোলন অনিবার্য হয়ে ওঠে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
১৯৭০ সাল ( সাধারণ নির্বাচন )-
১৯৬৯ সালের ২৫ শে মার্চ আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন। ইয়াহিয়া খান উক্ত পদে আসীন হন।
তিনি ২৮ শে মার্চ এক ঘোষণায় পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
১৯৭০ সালের ৭ ই ডিসেম্বর সর্বপ্রথম ‘এক ব্যক্তির এক ভোটের ভিত্তিতে’ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (ওয়ালী), মুসলিম লীগ (কাইয়ুম), মুসলিম লীগ (কনভেনশন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জামায়াতে ইসলামী প্রভৃতি দল অংশগ্রহণ করে।
নির্বাচনে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ভোটারের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের ছিল ৩ কোটি ২২ লাখ।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে পূর্ববাংলার জন্য নির্ধারিত ১৬৩ টি আসনের ১৬০ টি আসন লাভ করে।
সংরক্ষিত মহিলা আসন ৭ টি সহ আওয়ামী লীগ ১৬৭ টি আসন লাভ করে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
আবার পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সংরক্ষিত দশটি মহিলা আসন সহ মোট ৩১০ টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৯৮ টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এ বিজয় ছিল নজিরবিহীন।
আমি মনে করি, ১৯৭০ সালের ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অধিকতর প্রেরণা যুগিয়েছিল।
১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
ফলে ৬ দফা ও ১১ দফার প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক বিজয় ঘটে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সরকার ও স্বার্থান্বেষী মহলের জন্য এটি ছিল বিরাট পরাজয়।
তারা বাঙালির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্র করতে থাকে।
পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান গ্রহণ করে।
১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পিছনে নির্বাচনের অপরিসীম গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এই নির্বাচন বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে মুক্তিযুদ্ধের চরিত্র দানে বিশাল ভূমিকা রাখে। পরিণতিতে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
Assignment
- Class 9 Subject: Bangla Assignment Solution, 1st Week Assignment Answer 2021
- ৭ম শ্রেণীর বিষয়: ইসলামী শিক্ষা।। ১ম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্টর উত্তর ২০২১
- ৭ম শ্রেণীর বিষয়: বাংলা ব্যাকরণ ।। ১ম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্টর উত্তর ২০২১
- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রকাশিত ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট
- ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি ১ম সপ্তাহের ১ম এস্যাইনমেন্ট প্রকাশ ২০২১ সালের
- Agricultural Education 1st Assignment Answer Class: 7
- ৭ম শ্রেণি কৃষি শিক্ষা সকল অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
- Madrasa Board Class: 8 Agricultural Education All Assignments Answer 2021
- ৮ম শ্রেণি কৃষি শিক্ষা সকল অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
- Class: 9 Bangla Assignment Answer 2021
- দাখিলা ৯ম শ্রেণি বাংলা অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
- HSC Vocational Specialization Electrical and Electronics (81318) Trade-1 Assignment Answer
- এইচএসসি ভোকেশনাল স্পেশালাইজেশন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স(৮১৩১৮) ট্রেড -১ এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
- স্পেশালাইজেশন/ বিশেষায়িত ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, ট্রেড -১ এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
- এইচএসসি বিএম সেক্রেটারিয়াল প্র্যাকটিসেস(২৫১৮) এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
6 thoughts on “৯ম শ্রেণীর বিষয়: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়।। ১ম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্টর উত্তর ২০২১”