পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলি আলোচনা কর

পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলি আলোচনা কর

পাবলিক ইস্যু (Public Issue) বলতে কোনো কোম্পানি তার শেয়ার, ডিবেঞ্চার বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ জনসাধারণের কাছে বিক্রয় করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি মূলত কোম্পানিগুলোকে মূলধন সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। পাবলিক ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানি তার ব্যবসায় সম্প্রসারণ, ঋণ পরিশোধ বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে তহবিল সংগ্রহ করে। বাংলাদেশে পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলী কোম্পানি আইন ১৯৯৪, সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এবং সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) এর নির্দেশিকা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

পাবলিক ইস্যুর প্রকারভেদ:

প্রাথমিক পাবলিক অফারিং (Initial Public Offering – IPO):

    • যখন কোনো কোম্পানি প্রথমবারের মতো শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয় এবং জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রি করে।
    • IPO-এর মাধ্যমে কোম্পানি তহবিল সংগ্রহ করে এবং শেয়ার বাজারে প্রবেশ করে।

    রাইটস ইস্যু (Rights Issue):

      • যখন কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি তার বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের কাছে অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রি করে।
      • শেয়ারহোল্ডাররা তাদের শেয়ার অনুপাতে নতুন শেয়ার কিনতে পারেন।

      বোনাস ইস্যু (Bonus Issue):

        • যখন কোনো কোম্পানি তার মুনাফার অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বোনাস শেয়ার হিসেবে বিতরণ করে।
        • এটি কোনো তহবিল সংগ্রহ করে না, বরং শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে।

        প্রাইভেট প্লেসমেন্ট (Private Placement):

          • যখন কোনো কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বা ডিবেঞ্চার বিক্রি করে।
          • এটি সরাসরি জনসাধারণের কাছে বিক্রয় নয়।

          আরো ও সাজেশন:-

          Honors Suggestion Linksপ্রশ্ন সমাধান সমূহ
          Degree Suggestion LinksBCS Exan Solution
          HSC Suggestion Links2016 সাল থেকে সকল জব পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর
          SSC ‍& JSC Suggestion Linksবিষয় ভিত্তিক জব পরিক্ষার সাজেশন

          পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলী:

          ১. কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী বিধান:

          • তালিকাভুক্তির শর্ত: কোম্পানিকে অবশ্যই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হতে হবে এবং শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে।
          • শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন: কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ এবং শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ সভায় শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন নিতে হবে।
          • প্রসপেক্টাস জমা দেওয়া: কোম্পানিকে SEC-এর কাছে প্রসপেক্টাস (Prospectus) জমা দিতে হবে, যাতে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং ঝুঁকির বিবরণ থাকবে।

          ২. সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) এর বিধান:

          • SEC-এর অনুমোদন: পাবলিক ইস্যুর জন্য SEC-এর অনুমোদন আবশ্যক। SEC প্রসপেক্টাস পর্যালোচনা করে এবং কোম্পানির আর্থিক স্বচ্ছতা ও ব্যবসায়িক পরিকল্পনা যাচাই করে।
          • প্রসপেক্টাসের প্রয়োজনীয়তা: প্রসপেক্টাসে কোম্পানির ব্যবসায়িক মডেল, আর্থিক বিবরণী, ঝুঁকির বিবরণ, ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের তথ্য এবং তহবিল ব্যবহারের পরিকল্পনা উল্লেখ করতে হবে।
          • তালিকাভুক্তির শর্ত: কোম্পানিকে SEC এবং সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তির শর্ত পূরণ করতে হবে।

          ৩. স্টক এক্সচেঞ্জের বিধান:

          • তালিকাভুক্তির আবেদন: কোম্পানিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) বা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE)-এ তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে হবে।
          • শেয়ার ইস্যুর প্রক্রিয়া: স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে শেয়ার ইস্যু এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

          ৪. বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা:

          • প্রতারণা রোধ: SEC এবং স্টক এক্সচেঞ্জ পাবলিক ইস্যুতে প্রতারণা ও অনিয়ম রোধে কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করে।
          • তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা: কোম্পানিকে অবশ্যই সঠিক ও সময়মতো তথ্য প্রকাশ করতে হবে, যাতে বিনিয়োগকারীরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

          পাবলিক ইস্যুর ধাপসমূহ:

          পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি:

            • কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া।
            • আইনি ও আর্থিক পরামর্শক নিয়োগ।

            প্রসপেক্টাস প্রস্তুত ও জমা দেওয়া:

              • SEC-এর কাছে প্রসপেক্টাস জমা দেওয়া এবং অনুমোদন নেওয়া।

              বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রচার:

                • প্রসপেক্টাস বিতরণ এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে পাবলিক ইস্যুর তথ্য প্রচার।

                শেয়ার আবেদন ও বরাদ্দ:

                  • বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার জন্য আবেদন করে এবং কোম্পানি শেয়ার বরাদ্দ করে।

                  তালিকাভুক্তি ও ট্রেডিং শুরু:

                    • শেয়ার স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয় এবং ট্রেডিং শুরু হয়।

                    পাবলিক ইস্যুর গুরুত্ব:

                    • কোম্পানির জন্য: এটি কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের একটি কার্যকর পদ্ধতি।
                    • বিনিয়োগকারীদের জন্য: এটি বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির শেয়ার কিনে মালিকানা লাভের সুযোগ দেয়।
                    • অর্থনীতির জন্য: এটি পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখে।

                    উপসংহার:

                    পাবলিক ইস্যু হলো কোম্পানিগুলোর জন্য মূলধন সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ। এটি কঠোর নিয়ম-কানুন ও বিধানাবলীর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, যাতে বাজার স্বচ্ছ ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষিত থাকে। SEC, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং কোম্পানি আইনের সমন্বয়ে পাবলিক ইস্যুর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

                    উপসংহার : পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলি আলোচনা কর

                    আর্টিকেলের শেষ কথাঃ পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলি আলোচনা কর

                    আরো পড়ুন:

                    Leave a Comment