শেয়ার অবলেখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
শেয়ার অবলেখন (Share Buyback) হলো একটি কোম্পানি কর্তৃক তার নিজস্ব শেয়ার বাজারে থেকে বা সরাসরি শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে ফেরত ক্রয় করার প্রক্রিয়া। এটি মূলত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের কাছে অতিরিক্ত নগদ ফেরত দেওয়ার একটি পদ্ধতি। শেয়ার অবলেখনের মাধ্যমে কোম্পানি তার শেয়ারহোল্ডারদের সম্পদ বৃদ্ধি করে এবং শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে শেয়ার অবলেখন কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এবং সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) এর নিয়ম-কানুন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
শেয়ার অবলেখনের উদ্দেশ্য:
শেয়ারহোল্ডারদের সম্পদ বৃদ্ধি: শেয়ার অবলেখনের মাধ্যমে কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের কাছে অতিরিক্ত নগদ ফেরত দেয়।
শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল করা: শেয়ার অবলেখনের মাধ্যমে শেয়ারের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, যা শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখে।
অতিরিক্ত নগদ ব্যবস্থাপনা: কোম্পানির হাতে অতিরিক্ত নগদ থাকলে তা শেয়ার অবলেখনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়।
শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা বৃদ্ধি: শেয়ার অবলেখন কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্যের প্রতি শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা বৃদ্ধি করে।
শেয়ার অবলেখনের পদ্ধতি:
১. শেয়ার অবলেখনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ:
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার অবলেখনের প্রস্তাব করে।
শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ সভায় শেয়ার অবলেখনের প্রস্তাব অনুমোদন নেওয়া হয়।
২. SEC-এর অনুমোদন নেওয়া:
শেয়ার অবলেখনের জন্য SEC-এর অনুমোদন আবশ্যক।
কোম্পানিকে SEC-এর কাছে শেয়ার অবলেখনের প্রস্তাব জমা দিতে হয়, যাতে অবলেখনের উদ্দেশ্য, পরিমাণ এবং মূল্য উল্লেখ থাকে।
৩. শেয়ার অবলেখনের পদ্ধতি নির্ধারণ:
খোলা বাজার থেকে ক্রয়: কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে খোলা বাজার থেকে শেয়ার ক্রয় করতে পারে।
টেন্ডার অফার: কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের কাছে টেন্ডার অফার করে সরাসরি শেয়ার ক্রয় করতে পারে।
৪. শেয়ার ক্রয়:
কোম্পানি শেয়ার ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে।
শেয়ার ক্রয়ের পর কোম্পানি শেয়ার বাতিল করে বা ট্রেজারি শেয়ার হিসেবে রাখে।
৫. শেয়ারহোল্ডারদের অবহিতকরণ:
শেয়ার অবলেখনের পর কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করে এবং SEC ও স্টক এক্সচেঞ্জে রিপোর্ট জমা দেয়।
শেয়ার অবলেখনের শর্তাবলী:
কোম্পানির আর্থিক অবস্থা: কোম্পানির অবশ্যই শেয়ার অবলেখনের জন্য পর্যাপ্ত নগদ থাকতে হবে।
শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন: শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ সভায় শেয়ার অবলেখনের প্রস্তাব অনুমোদন নেওয়া আবশ্যক।
SEC-এর অনুমোদন: শেয়ার অবলেখনের জন্য SEC-এর অনুমোদন নেওয়া আবশ্যক।
শেয়ারের সর্বোচ্চ পরিমাণ: কোম্পানি একবারে তার মোট শেয়ারের একটি নির্দিষ্ট শতাংশের বেশি অবলেখন করতে পারে না।
শেয়ার অবলেখনের সুবিধা:
শেয়ারহোল্ডারদের সম্পদ বৃদ্ধি: শেয়ার অবলেখনের মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডাররা অতিরিক্ত নগদ পায়।
শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীলতা: শেয়ার অবলেখনের মাধ্যমে শেয়ারের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, যা শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখে।
কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য: শেয়ার অবলেখন কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে।
শেয়ার অবলেখনের অসুবিধা:
নগদ প্রবাহের অভাব: শেয়ার অবলেখনের জন্য কোম্পানিকে বড় অঙ্কের নগদ ব্যয় করতে হয়, যা ভবিষ্যতের বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বৈষম্য: টেন্ডার অফারের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয় করা হলে কিছু শেয়ারহোল্ডার বৈষম্যের শিকার হতে পারেন।
উপসংহার:
শেয়ার অবলেখন হলো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের কাছে অতিরিক্ত নগদ ফেরত দেওয়ার একটি কার্যকর পদ্ধতি। এটি শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখে এবং কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে। তবে শেয়ার অবলেখনের জন্য কোম্পানির অবশ্যই পর্যাপ্ত নগদ থাকতে হবে এবং SEC ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে।
উপসংহার : শেয়ার অবলেখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।
আর্টিকেলের শেষ কথাঃ শেয়ার অবলেখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন
আরো পড়ুন:
- শেয়ার অবলেখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
- শেয়ার বিক্রয় প্রাথমিক কার্যাবলী আলোচনা কর, শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতি আলোচনা কর
- পাবলিক ইস্যুর বিধানাবলি আলোচনা কর
- সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ সম্পর্কে আলোচনা কর
- সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বিধি ১৯৮৭ সম্পর্কে আলোচনা কর