এফএওর পরিসংখ্যান বলছে- বিশ্বে বার্ষিক খাদ্য উৎপাদন হয় প্রায় ৪শ কোটি টন। বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা এখনো ৪শ কোটি টনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। প্রতি বছর বিশ্বে ১.৩ বিলিয়ন টন খাদ্য অপচয় বা নষ্ট হয়,
যার অর্থ মূল্য সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার। নষ্ট হওয়া খাবার থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হচ্ছে।
খাদ্য অপচয় বা নষ্ট করার দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও) এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক যৌথ গবেষণা থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৩০ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। অপচয়কৃত এ খাদ্যের আর্থিক মূল্য প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে ঢাকায় রেস্টুরেন্ট এবং বিয়ে বাড়িতে যে পরিমাণ খাদ্য তৈরি হয়, তার ১০ শতাংশই নষ্ট হয় বলে জানিয়েছে বাড়তি খাদ্য সংগ্রহ ও অসহায়দের মধ্যে বণ্টনকারী প্রতিষ্ঠান ‘পারি ফাউন্ডেশন’।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনিন আহমেদ ও ইকবাল আহমেদের তত্ত্বাবধানে হওয়া এক গবেষণা থেকে জানা যায়, ক্রয়কৃত খাদ্যের শতকরা সাড়ে ৫ শতাংশ অপচয় করেন একজন গ্রাহক। এর মধ্যে খাদ্য সংগ্রহ ও প্রস্তুত করা সময় তিন শতাংশ, খাবার প্রস্তুত থেকে পরিবেশনের সময় ১ দশমিক ৪ শতাংশ এবং খাবারের থালা থেকে অপচয় হয় ১ দশমিক ১ শতাংশ।
জরিপের তথ্য মতে, ৪০ শতাংশ মানুষ তাদের রান্না করা খাবার প্রতিদিন শেষ করে। বাকি ৬০ শতাংশ মানুষের খাবার উদ্বৃত্ত থেকে যায়। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ মানুষ পরের দিন এই খাবার খায়। ১৩ শতাংশ মানুষ খাবার অন্যদের দিয়ে দেয়। ৭ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ হাঁস-মুরগিকে খাওয়ায়। বাকি ৫ শতাংশ খাবার ফেলে দেয়।
এ ছাড়া কৃষি সম্প্রসারণের সরেজমিন উইং থেকে জানা যায়, ফসল সংগ্রহ করতে ৫ শতাংশ, স্টোরেজ করতে ৫ শতাংশ, সরবরাহ করতে ৫ শতাংশ, সঞ্চয় স্থান করতে ৪ শতাংশ, গ্রেডিং করতে ২ শতাংশ, বিপণনের সময় ৩ শতাংশ, ভোক্তা পর্যায়ে ১ শতাংশ শাকসবজি এবং মসলার অপচয় হয়ে থাকে।
খাদ্যের এই অপচয় নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল মুঈদ আমাদের সময়কে বলেন, আমরা যদি বিশ্বের পরিসংখ্যান দেখি তাহলে দেখা যায় মোট উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য অপচয় হচ্ছে। আমাদের দেশে ফলমূল ও শাকসবজির ক্ষেত্রে যদি বলি, তাহলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পচনে নষ্ট বা অপচয় হয়। এর মূল কারণ হলো পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি ঠিক মতো ব্যবহার না করা। জমি থেকে শাকসবজি তোলার পর ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত যে চেইনটা, সেটি ঠিক মতো মেইনটেন হচ্ছে না।
তিনি বলেন, সাধারণত অপরিষ্কার পানি দিয়ে শাকসবজি এবং ফলমূল ধোয়া হয়। যার কারণে পচনশীল ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণটাও বেশি হয়। আসলে ধোয়ার ক্ষেত্রে পরিষ্কার পানির ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য প্যাকেজিং ইউনিট প্রয়োজন।
সে ক্ষেত্রে ক্যারেট বা কার্টনে প্যাকেট করে সেটা কোল্ড ভ্যান করে পরিবহন করতে হবে। এ ছাড়া রেলওয়ের ওয়াগনে যদি আনা যায় তাহলে পচন বা অপচয় রোধ করা কিছুটা কমে আসত। তবে সে ওয়াগন কোল্ড হতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে বস্তায় সবজি ভরা হয়। পরে ট্রাকে তুলে তার ওপর মানুষও উঠে বসে। এ ছাড়া আরও কিছু ধাপে খাদ্যের অপচয় হচ্ছে।
জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও) এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণার তথ্যে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে ফসল কাটা-পরবর্তী সময়ে শস্যের অপচয় হয় বেশি পরিমাণে। খাদ্যশস্যভেদে এই অপচয়ের পরিমাণ ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। উৎপাদন-পরবর্তী পরিচর্যাকাজ সঠিকভাবে না হওয়ায় প্রতিবছর ১২ থেকে ১৫ শতাংশ চাল নষ্ট হয়। ফলমূল ও শাকসবজিতে অপচয় হয় ২৪ থেকে ৪০ শতাংশ।
- সোয়াপ (SWAP) কাকে বলে? , সোয়াপ (SWAP) কতো প্রকার বিস্তারিত আলোচনা করো
- ব্যবসায়িক ঝুকি বলতে কি বুঝায় উদাহরণ সহ আলোচনা করো
- বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রেডিং ব্যবস্থা আলোচনা করো
- মাইগ্রেন ব্যথার কারণ, মাইগ্রেন ব্যথার উপসর্গ,মাইগ্রেন ব্যথার প্রতিকার ,মাইগ্রেন ব্যথার প্রতিরোধ – বিস্তারিত গাইড
- মাথাব্যথার কারণ ও প্রতিকার: একটি সম্পূর্ণ গাইড