যেকোনো ব্যক্তিরই প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। হঠাৎ প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া ক্ষতিকর না হলেও অনেক ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক কোনো রোগের কারণ হতে পারে। তাই শুরুতে রোগ শনাক্ত করে সঠিক চিকিৎসা নিলে জটিলতা কমে। প্রস্রাবে রক্ত যাওয়ার পেছনে সুনির্দিষ্ট বা একক কোনো কারণ নেই; বরং অনেক কারণে রক্ত যেতে পারে। তবে পুরো প্রস্রাবজুড়ে রক্ত গেলে ধরে নিতে হবে এর পেছনে জটিল কোনো কারণ রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো, প্রস্রাবে রক্ত আসে কোথা থেকে। মূত্রতন্ত্রের যেকোনো স্থান থেকেই রক্ত আসতে পারে। যেমন- কিডনি, মূত্রথলি, মূত্রনালি। প্রস্রাবে রক্তক্ষরণ অনেক কারণে হতে পারে। এর মধ্যে আছে-
* মূত্রথলির ইনফেকশন বা সিস্টাইটিস। এ ক্ষেত্রে সাধারণত প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থাকে।
* কিডনি ইনফেকশন। এ ক্ষেত্রে সাধারণত শরীরে জ্বর থাকে এবং পেটের এক বা দুই পাশে ব্যথা করে।
* কিডনির পাথর। সাধারণত কোনো লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াই কিডনিতে পাথর থাকতে পারে।
* ইউরেথ্রাইটিস বা মূত্রনালির ইনফ্ল্যামেশন। সাধারণত যৌনবাহিত রোগ, যেমন- ক্ল্যামাইডিয়া থেকে এমন হয়।
* প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া। সাধারণত বেশি বয়স্কদের এ সমস্যা দেখা দেয়।
* প্রস্টেট ক্যানসার।
* ব্লাডার বা মূত্রথলির ক্যানসার।
* কিডনি ক্যানসার।
* তলপেটে বা কিডনিতে আঘাত।
আমাদের দেশে মূত্রতন্ত্রের আঘাত, প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন, ক্যানসার এবং পাথরই সাধারণত প্রস্রাবে রক্তক্ষরণের জন্য দায়ী। বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবে রক্তপাত মারাত্মক রোগ হিসেবে বিবেচনা করে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে। আবার অতিরিক্ত ব্যায়ামের কারণে কখনো কখনো অতি অল্পমাত্রায় প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। অ্যাসপিরিনের মতো প্রচলিত ওষুধও এ ধরনের সমস্যার সূচনা করতে পারে, কিন্তু প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া সাধারণত মারাত্মক অসুখই নির্দেশ করে।
উপসর্গ এবং লক্ষণ
বেশি মাত্রায় রক্ত যাওয়ার প্রধান লক্ষণ হচ্ছে প্রস্রাবের রং গোলাপি, লাল বা কালো হওয়া। লোহিত রক্ত কণিকার উপস্থিতির কারণে এমন হয়ে থাকে। অনেক সময় প্রস্রাবে রক্তপাতের সময় প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। আবার কোনো ধরনের উপসর্গ বা লক্ষণ ছাড়াও প্রস্রাবে রক্ত যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত শুধু অণুুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যায়। তাই রক্ত না দেখা গেলেও যদি বারবার প্রস্রাবে ইনফেকশনের ইতিহাস থাকে, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, কোমরে ব্যথা হয়, জ্বর থাকে; তবে প্রস্রাব পরীক্ষা করে তাতে রক্ত যাচ্ছে কি না দেখা দরকার।
চিকিৎসা
* কী কারণে রক্ত যাচ্ছে তার ওপর চিকিৎসা নির্ভর করে। অনেক সময় প্রস্রাবে রক্তক্ষরণের কারণ বের করা খুব কঠিন হয়।
* প্রস্রাবে রক্তক্ষরণ হলে প্রাথমিকভাবে ইউরোলজিস্টের পরামর্শমতো প্রস্রাব পরীক্ষা করে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
* ব্যথা থাকলে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে। তবে কিডনি জটিলতা থাকলে সব ধরনের ব্যথানাশক সেবন করা যাবে না। তাই ব্যথানাশক সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
* রক্তক্ষরণ বেশি হলে রোগীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনও দেখা দিতে পারে।
ডাক্তারকে জানাতে হবে
* প্রস্রাবে রক্ত কখন প্রথম লক্ষ করলেন সে সময়টা
* প্রস্রাবের সময় তলপেটে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া বা অন্য কোনো অসুবিধা বোধ করেন কি না
* আগের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাব হচ্ছে কি না
* আগে কখনো, একবারের জন্য হলেও প্রস্রাবে রক্ত গেছে কি না
* প্রস্রাবের গন্ধ স্বাভাবিকের চেয়ে অন্য রকম কি না
* ধূমপান করেন কি না, করলে দিনে কতবার?
রক্ত না গেলেও ডাক্তারের কাছে যেতে হবে
* বারবার প্রস্রাবে সংক্রমণের ইতিহাস থাকলে
* বয়স ৫০-এর বেশি হলে সাধারণ চেকআপের জন্য
* তলপেটে বা পিঠের নিচের দিকে হঠাৎ আঘাত পেলে
* প্রস্টেটের সমস্যা থাকলে
- বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা কোনটি?
- যে কারণে পুরুষের গোপন অঙ্গের ক্ষমতা নষ্ট হয়
- লিভারেজ ইজারার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ
- হাঁপানি রোগী জন্য পরামর্শ ও হাঁপানি রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসা উপায়গুলো
- ২০২৫ এর সেরা ১০ জন তারকারা গুগলিং সার্চে করে