শুদ্ধ বাংলায় ঘুষের অন্য নাম উেকাচ। বাংলা অভিধানে ঘুষ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ‘নিজের কোনো অন্যায় কাজকে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে যে অর্থ প্রদান করা হয় বা কোনো কাজে সাহায্য লাভের জন্য বা কার্যসিদ্ধির জন্য গোপনে দেওয়া পুরস্কার বা অর্থ।’ যে ঘুষ নেয় তাকে বলে ঘুষখোর। ঘুষ একটি অভিশাপের নাম। সব আমলেই এই অভিশাপের অস্তিত্ব ছিল। প্রাচীন যুগের রাজা-বাদশাহদের দরবারে সাক্ষাতের সময় ভেট বা নজরানা-উপঢৌকন দেওয়ার প্রচলন ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সময় ঘুষ আদান-প্রদানের সাক্ষ্য পাওয়া যায়। মীরজাফরের মৃত্যুর পর মুন্নি বেগম তাঁর আপন পুত্রের জন্য সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির অধিনায়ক রবার্ট ক্লাইভকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়েছিলেন।
বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ঘুষ একটি বহুল পরিচিত শব্দ। আমাদের সমাজব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে এই সর্বনাশা অসুখ। অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জনের একটি পন্থা হলো ঘুষ। ঘুষ কখনো দিতে বাধ্য করা হয়। আবার কখনো নিজ উদ্যোগে প্রদান করা হয়।
ঘুষ এমন মারাত্মক ব্যাধি, যা দয়া-মায়া, নীতি-নৈতিকতা, আইন-কানুন, বিধি-বিধান সব কিছু বিনষ্ট করে দেয় এবং জাতীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে। ঘুষের কারণে যোগ্যতার মূল্যায়ন হয় না। অযোগ্য ব্যক্তি যোগ্য ব্যক্তির আসনে সমাসীন হয়। দুর্নীতির প্রধান কারণ হচ্ছে ঘুষ। ঘুষ দিয়ে দুর্নীতিবাজরা পার পেয়ে যায়।
বাংলাদেশে অফিস-আদালত থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত আজ ঘুষ প্রথা বিস্তার লাভ করেছে। ঘুষ ছাড়া অফিসের ফাইল নড়ে না। এমনকি একই অফিসে এক শাখা থেকে আরেক শাখায়, এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বদলির জন্যও তার নিজের অফিসের কাউকে না কাউকে ঘুষ দিতে হয়। সারা জীবন চাকরি করে পেনশনের টাকা তোলার জন্য তাঁর নিজের অফিসে অফিসারকে ক্ষেত্রবিশেষ ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ নামের অবৈধ লেনদেন লজ্জার বিষয় হলেও বাংলাদেশে এর বিস্তার এত বেশি যে বর্তমানে কেউ তাতে লজ্জাবোধ করে না। বরং কোনো চাকরিজীবী তার পরিচয় দিতে গেলে অপরদিক থেকে প্রশ্ন আসে, উপরি কেমন আছে?
ঘুষ মানুষের সীমাহীন লোভ সৃষ্টি করে এবং দানশীলতার মতো মহৎ গুণকে দূর করে দেয়। ঘুষ মানুষের উদারতা, সহনশীলতা, দানশীলতা মনোভাবের পরিবর্তে স্বার্থপরতা, সংকীর্ণতা, কৃপণতা, নির্মমতা ও প্রতিশোধমূলক মনোভাবের জন্ম দেয়। মোট কথা, ঘুষ হচ্ছে মানুষের উন্নত ও আদর্শ চরিত্র গঠনের প্রতিবন্ধক।
দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা অনুসারে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক কোনো সরকারি কাজ বৈধ পারিশ্রমিক ছাড়া অন্য কোনো রকম বকশিশ নিয়ে করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বকশিশ গ্রহণ বা গ্রহণে সম্মত বা গ্রহণের চেষ্টা করলে সেই কর্মকর্তা-কর্মচারী যেকোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হতে পারে বা জরিমানা বা উভয় প্রকার দণ্ড হতে পারে। নিজে না করে অন্য কাউকে দিয়ে কোনো কাজ করে দেওয়ার জন্য বকশিশ গ্রহণও এই ধারা অনুসারে ঘুষের মধ্যে পড়ে। ঘুষ চাওয়া যেমন অপরাধ, তেমনি ঘুষ না দিলে বিপদ হবে এই ধরনের ধমক দেওয়াও ঘুষ নেওয়ার শামিল। আবার কাউকে ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাবও অপরাধ।
শিক্ষা
- HSC BM Business Math and statistics Assignment Answer, ব্যবসায় গণিত ও পরিসংখ্যান অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
- ২য় অধ্যায়: চলক, ধ্রুবক এবং তথ্য উপস্থাপনা, গণিতে 52 জন ছাত্র-ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বর দেওয়া হলাে
- পরিসংখ্যান কী? ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব আলোচনা কর।
- সেট কি? ৫টি সেটের সংজ্ঞা উদাহরণ সহ দাও। নির্দেশনা* সেট কাকে বলে লিখবে। *৫টি সেটের সংজ্ঞা দাও।
- HSC BM Computer Office Application 1 (1813) Assignment Answer
- ডিপ্লোমা ইন কমার্স কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন ১ (১৭১৩) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
- VIRUS এর পূর্ণরূপ কি ?, ফাইল ও ফোল্ডারের মধ্যে পার্থক্য লিখ?,ওয়ার্ড প্রসেসিং ও স্প্রেডশীট প্যাকেজ প্রােগ্রমের ২ টি
- অপারেটিং সিস্টেম কি? সিঙ্গেল ও মাল্টি ইউজার অপরেটিং সিস্টেম বর্ণনা কর
- ৪র্থ অধ্যায়: নম্বর সিস্টেম ও ডিজিটাল লজিক, সংখ্যা পদ্ধতি কি?
- তৃতীয় অধ্যায়: ষ্টোরেজ মিডিয়া, জিপ ড্রাইভ কি?
1 thought on “নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ঘুষ’”