কিছু জানা অজানা তথ্য কিংবদন্তী অভিনেত্রী কবরীর

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবদন্তী অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাবেক সাংসদ সারাহ বেগম কবরী পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় নিলেন।
রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কবরী লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। কিছুক্ষণ আগে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।”

৭১ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়।

গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসার পর থেকে কবরী হাসপাতালে ছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় বলে তার ছেলে শাকের চিশতী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

সারাহ বেগম কবরী: (জন্ম: মিনা পাল; ১৯ জুলাই ১৯৫০―১৭ এপ্রিল ২০২১) একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র পরিচালক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকের বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন।

প্রাথমিক জীবন
চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলাতে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেত্রী কবরী সারোয়ার। জন্মস্থান বোয়ালখালী হলেও শৈশব ও কৈশোর বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম নগরীতে। তার আসল নাম মিনা পাল। পিতা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব কবরীর।

অভিনয় জীবন

সুতরাং চলচ্চিত্রে সুভাষ দত্তের সাথে কবরী (১৯৬৪) ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় সুতরাং ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় জীবনের শুরু করেন কবরী। এরপর অভিনয় করেছেন হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়, আগন্তুক -সহ জহির রায়হানের তৈরি উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উল্লেখযোগ্য ৷

রাজনৈতিক জীবন
তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

কবরী প্রথমে চিত্ত চৌধুরীকে বিয়ে করেন। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি সফিউদ্দীন সরোয়ারকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালে তাঁদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা ছিলেন। ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’ প্রকাশিত হয়।

পুরস্কার

বছর পুরস্কার বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
১৯৭৩ বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী লালন ফোকির বিজয়ী
১৯৭৫ বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সুজন সখী বিজয়ী
১৯৭৮ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সারেং বৌ বিজয়ী
বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সারেং বৌ বিজয়ী
১৯৮৮ বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী দুই জীবন বিজয়ী
২০০৮ বাচসাস পুরস্কার সম্মাননা পুরস্কার   বিজয়ী
২০০৯ বাচসাস পুরস্কার আজীবন সম্মাননা   বিজয়ী
২০১৩ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা   বিজয়ী

মৃত্যু
কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ১৩ দিনের মাথায়, ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল রাত ১২টা ২০ মিনিটে ঢাকার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সূত্র: উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

Leave a Comment