আজকের বিষয়: সূরা নূর সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল নূর আলমল ও ফজিলত, সূরা নূর কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা নূর নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ২৪ সূরা আল – নূর
অত্যন্ত শক্তিশালী ও রহস্যজনক আয়াতঃ আয়াত আল নূর ( সূরা নূর- আয়াত ৩৫)
কুর’আন আল্লাহ “নিজে” সৃষ্টি করেছেন। এর ভাষা, ব্যাকরন, শব্দচয়ন, উপমা সবকিছু তাঁর সম্পূর্ন নিজের তৈরী। কুর’আনের একটি আয়াত শুধুমাত্র “একটি” আয়াত নয়, প্রত্যেকটি আয়াতের একটি করে DEEP MEANING আছে। এর কিছু কিছু মানুষ হাজার হাজার বছর করে গবেষনা করে বের করেছে, আর কিছু কিছু জিনিস আল্লাহ-ই ভাল জানেন। কুর’আন কারো পক্ষে সম্পূর্ন বুঝে ফেলা কোনদিন-ও সম্ভব নয়। সৃষ্টি কখনো স্রষ্টাকে পুরো বুঝতে পারেনা।
আল্লাহর গ্রামার এর ছোট্ট একটা উদাহরন-
” যালিকাল কিতাবু লা রাইবা ফিহী হুদাল্লিল মুত্তাকিন O “
“ওটা সেই বই যাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ [ভ্রান্তি, অনিশ্চয়তা, ভুল ধারণা] নেই। একটি পথ নির্দেশক (হুদা) আল্লাহর প্রতি পূর্ণ সচেতনদের (মুত্তাক্বী) জন্য।” ( সুরা বাকারা, আয়াত ২)
لَارَيْب—লা রাইবা—বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহ নেই। প্রচলিত আরবিতে এটা হওয়া উচিত ছিল ‘লা রাইবু’, যেটার অর্থ হতো—কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মহান আল্লাহ ﷻ এখানে বিশেষভাবে বলেছেন ‘লা রাইবা।’ শেষের ‘আ’ এর কারণে এর অর্থ হবে—এতে বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই!
সূরা নূর ২৪ নম্বর সূরা। এই সূরার ৩৫ নম্বর আয়াতকে বলা হয় আয়াত আল নূর ( The Verse of Light). এটি অত্যন্ত বিখ্যাত ও রহস্যজনক ও উপমামন্ডিত একটি আয়াত। আল্লাহ নিজেই এখানে কিছু উপমা দিয়েছেন এবং নিজেই নিজের একটা উদাহরন দিয়েছেন !! শুধু এটার অনুবাদ পড়লে আপনি এই আয়াতটি কতটা শক্তিশালী তা কখনই বুঝতে পারবেন না, বিশেষ করে বেশিরভাগ বাংলা অনুবাদ পড়লে আপনি সম্ভবত আয়াত টি এড়িয়ে যাবেন না বোঝার কারনে । এই আয়াতটি বোঝার জন্য আপনাকে অবশ্যই কল্পনা করতে হবে। আল্লাহর কাব্য !! Light upon light এই আয়াতের সবচে বিখ্যাত অংশ।
আমি চেষ্টা করেছি আয়াতটির আক্ষরিক ও ভাবার্থ চিত্রসহ তুলে ধরার। কতটুকু পেরেছি আল্লাহই ভাল জানেন। সুবিধার জন্য আমি আয়াতটিকে ৬টি ছোট ছোট অংশে ভেঙ্গে নিয়েছি। প্রয়োজনীয় আরবি শব্দগুলোর বাংলা দিয়ে দিয়েছি। উপমা গুলোকে সহজ উদাহরন দিয়ে লিখেছি যতটুকু আমার পক্ষে সম্ভব। তবে আসল কথা কি, আরবি না জানলে কোনভাবেই শুধু অর্থ পড়ে এই অসাধারন আয়াতটি বোঝা সম্ভব না। আমি নিজেও আরবি জানি না, খুজে খুজে অর্থ, তাফসির( ব্যাখ্যা) ও লেকচার দেখে তারপরে আমি লিখেছি।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
সূরা নূরের ফযিলত
- যদি কেউ সূরা নূরের তেলাওয়াত করে তাহলে খোদা তাকে দুনিয়ার সকল মুমিন ও মুমিনাতের যারা মারো গেছে এবং যারা জিবীত রযেছে তাদের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন।
- একজন বাবার দ্বায়িত্ব হচ্ছে সে যেন নিজের মেয়েকে সূরা নূরের শিক্ষা দান করে।
- ইমাম আলী (আ.) বলেছেন যে তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে সূরা নূরের শিক্ষা দাও কেননা তাতে অনেক ভাল নসীহত রয়েছে।
- ইমাম সাদেক্ব (আ.) বলেছেন তোমরা তোমাদের সম্পদ এবং নিজেদের যৌন শক্তিকে সূরা নূরের মাধ্যমে সংরক্ষণ কর। যদি কেউ উক্ত সূরাটি পাঠ করে তাহলে তার ঘরের সবাই জেনা করা থেকে বিরত থাকবে এবং তার মৃত্যুর সময় খোদা তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তাকে প্রেরণ করবেন যারা তার জানাযায় শরীক হবে এবং তার জন্য দোয়া ও আসতাগফার করবে।
- সূরা নূরের ৪০ নং আয়াতটি পাঠ করলে পলাতক ব্যাক্তি ফিরে আসে।
- সূরা নূরের ৪০ নং আয়াতটি লিখে এবং তা ধুয়ে তার পানি চোখে লাগানো হয় তাহলে তার চোখের দূর্বলতা ভাল হয়ে যাবে।
- ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত যে কেউ উক্ত সূরাটি পাঠ করবে সে মানুষের দেয়া অপবাদ থেকে রক্ষা পাবে।
- রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত যে কেউ সূরা নূর পাঠে করবে আল্লাহ তাকে ১০টি সৎ কাজের সওয়াব দান করবেন যা সমস্ত মুমিন ও মুমিনাতের সৎ আমলের সমপরিমাণ।
- আব্দল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত যে কেউ সূরা নূরের তেলাওয়াত করবে তার চোখের জ্যোতি কখনও কম হবে না।
- আয়াতে নূরকে যদি কেউ “بکل شیء علیم” পর্যন্ত পাঠ করে তাহলে ইমাম মাহদী (আ.) যিয়ারত হবে।
- যদি কেউ এশার নামাজের পরে আয়াতে নূরটি ২৫৬ বার পাঠ করে তাহলে তার রিযিক ও আধ্যাতিকতা বৃদ্ধি পাবে।
৩৫ নং আয়াতের ফযিলত: যদি কারো চোখে ব্যাথ্যা হয় তাহলে সে যদি সূরা নূরের ৩৫ নং আয়াতটি تا “نور علی نور” পর্যন্ত পাঠ করে এবং নিজের চোখে ফুক দেয় এবং এই আমলটি তিন দিন ধরে সম্পাদন করে তাহলে তার চোখের ব্যাথ্যা ভাল হয়ে যাবে ।
- “লা আদওয়া” সংক্রমন নেই!হাদীসটি কী বুঝায়?
- রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যত পরামর্শ
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন
- আজহারী: কোন ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙে
- রমজান মাসের ৯টি ফজিলত
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
নামকরণ
পঞ্চম রুকূ’র প্রথম আয়াত (আরবী) থেকে সূরা নাম গৃহীত হয়েছে ।
নাযিলের সময়-কাল
এ সূরাটি যে বনীল মুসতালিক যুদ্ধের সময় নাযিল হয়, এ বিষয়ে সবাই একমত । কুরআনের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, হযরত আয়েশার (রা) বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের ঘটনা প্রসংগে এটি নাযিল হয় । (দ্বিতীয় ও তৃতীয় রুকুতে এ ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে । আর সমস্ত নির্ভরযোগ্য বর্ণনা অনুযায়ী বনীল মুসতালিক যুদ্ধের সফরের মধ্যে এ ঘটনাটি ঘটে । কিন্তু এ যুদ্ধটি ৫ হিজরী সনে আহযাব যুদ্ধের আগে, না ৬ হিজরীতে আহযাব যুদ্ধের পরে সংঘটিত হয় সে ব্যাপারে মতবিরোধ দেখা যায় । আসল ঘটনাটি কি? এ ব্যাপারে অনুসন্ধানের প্রয়োজন এ জন্য দেখা দিয়েছে যে, পরদার বিধান কুরআন মজীদের দু’টি সূরাতেই বর্ণিত হয়েছে । এর মধ্যে একটি সূরা হচ্ছে এটি এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে সূরা আহযাব । আর আহযাব যুদ্ধের সময় সূরা আহযাব নাযিল হয় এ ব্যাপারে কারোর দ্বিমত নেই । এখন যদি আহযাব যুদ্ধ প্রথমে হয়ে থাকে তাহলে এর অর্থ এ দাঁড়ায় যে, পরদার বিধানের সূচনা হয় সূরা আহযাবে নাযিলকৃত নির্দেশসমূহের মাধ্যমে এবং তাকে পূর্ণতা দান করে এ সূরায় বর্ণিত নির্দেশগুলো । আর যদি বনীল মুসতালিক যুদ্ধ প্রথমে হয়ে থাকে তাহলে বিধানের বিন্যাস পরিবর্তিত হয়ে যায় । এ ক্ষেত্রে সূচনা সূরা নূর থেকে এবং তার পূর্ণতা সূরা আহযাবে বর্ণিত বিধানের মাধ্যমে বলে মেনে নিতে হয় । এভাবে হিজাব বা পরদার বিধানে ইসলামী আইন ব্যবস্থার যে যৌক্তিকতা নিহিত রয়েছে তা অনুধাবন করা কঠিন হয়ে পড়ে । এ উদ্দেশ্য আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবার আগে নাযিলের সময়কালটি অনুসন্ধান করে বের করে নেয়া জরুরী মনে করি ।
ইবনে সা’দ বর্ণনা করেন বনীল মুসতালিক যুদ্ধ হিজরী ৫ সনের শাবান মাসে অনুষ্ঠিত হয় এবং তারপর ঐ বছরেরই যিলকাদ মাসে সংঘটিত হয় ইহযাব (বা খন্দক) যুদ্ধ । এর সমর্থনে সবচেয়ে বড় সাক্ষ হচ্ছে এই যে, হযরত আয়েশার রিরুদ্ধে মিথ্যাচারের ঘটনা প্রসংগে হযরত আয়েশা (রা) থেকে যেসব হাদীস বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর কোন কোনটিতে হযরত সা’দ ইবনে উবাদাহ (রা) ও হযরত সা’দ ইবনে মু’আযের (রা) বিবাদের কথা পাওয়া যায় । আর সমস্ত নির্ভরযোগ্য হাদীস অনুযায়ী হযরত সা’দ ইবনে মু’আযের ইন্তিকাল হয় বনী কুরাইযা যুদ্ধে । আহযাব যুদ্ধের পরপরই এ যুদ্ধটি অনুষ্ঠিত হয় । কাজেই ৬ হিজরীতে তাঁর উপস্থিত থাকার কোন সম্ভাবনাই নেই ।
অন্যদিকে ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেন, আহযাব যুদ্ধ ৫ হিজরীর শওয়াল মাসের ঘটনা এবং বনীল মুসতালিকের যুদ্ধ হয় ৬ হিজরীর শাবান মাসে । এ প্রসংগে হযরত আয়েশা (রা) ও অন্যান্য লোকদের থেকে যে অসংখ্য নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে সেগুলো এর সমর্থন করে । সেগুলো থেকে জানা যায়, মিথ্যা অপবাদের ঘটনার পূর্বে হিজাব বা পরদার বিধান নাযিল হয় আর এ বিধান পাওয়ার যায় সূরা আহযাবে । এ থেকে জানা যায়, সে সময় হযরত যয়নবের (রা) সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল এবং এ বিয়ে ৫ হিজরীর যিলকদ মাসের ঘটনা । সূরা আহযাবে এ ঘটনারও উল্লেখ পাওয়া যায় । এ ছাড়া এ হাদীসগুলো থেকে একথাও জানা যায় যে, হযরত যয়নবের (রা) বোন হামনা বিনতে জাহশ হযরত আয়েশার (রা) বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ানোয় শুধুমাত্র এ জন্য অংশ নিয়েছিলেন যে, হযরত আয়েশা তাঁর বোনের সতিন ছিলেন । আর একথা সুস্পষ্ট যে, বোনের সতিনে বিরুদ্ধে এ ধরনের মনোভাব সৃষ্টি হবার জন্য সতিনী সম্পর্ক শুরু হবার পর কিছুকাল অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। এসব সাক্ষ ইবনে ইসহাকের বর্ণনাকে শক্তিশালী করে দেয় ।
মিথ্যাচারের ঘটনার সময় হরত সা’দ ইবনে মু’আযের (রা) উপস্থিত বর্ণনা থাকাটাই এ বর্ণনাটি মেনে নেবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । কিন্তু এ ঘটনা প্রসংগে হযরত আয়েশা (রা) থেকে যেসব হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার কোনটিতে হযরত সা’দা ইবনে মু’আযের কথা বলা হয়েছে আবার কোনটিতে বলা হয়েছে তাঁর পরিবর্তে হযরত উসাইদ ইবনে হুদ্বাইরের (রা) কথা , এ জিনিসটিই এ সংকট দূর করে দেয় । আর এ দ্বিতীয় বর্ণনাটি এ প্রসংগে হযরত আয়েশা বর্ণিত অন্যান্য ঘটনাবলীর সাথে পুরোপুরি খাপখেয়ে যায় । অন্যথায় নিছক সা’দ ইবনে মু’আযের জীবনকালের সাথে খাপ খাওয়াবার জন্য যদি বনীল মুসতালিক যুদ্ধ ও মিথ্যাচারের কাহিনীকে আহযাব ও কুরাইযা যুদ্ধের আগের ঘটনা বলে মেনে নেয়া হয়, তাহলে তো হিজাবের আয়াত নাযিল হওয়া ও যয়নবের (রা) বিয়ের ঘটনা তার পূর্বে সংঘটিত হওয়া উচিত ছিল । এ অবস্থায় এ জটিলতার গ্রন্থী উন্মোচন করা কোনক্রমেই সম্ভব হয় না । অথচ কুরআন ও অসংখ্য সহীহ হাদীস উভয়ই সাক্ষ দিচ্ছে যে, যয়নবের (রা) বিয়ে ও হিজাবের হুকুম আহযাব ও কুরাইযার পরবর্তী ঘটনা । এ কারণেই ইবনে হাযম ও ইবনে কাইয়েম এবং অন্য কতিপয় গবেষক মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাকের বর্ণনাকেই সঠিক গণ্য করেছেন এবং আমরাও একে সঠিক মনে করি ।
ঐতিহাসিক পটভূমি
এখন অনুসন্ধানের মাধ্যমে একথা প্রমাণিত হবার পর যে, সূরা নূর ৬ হিজরীর শেষার্ধে সূরা আহযাবের কয়েক মাস পর নাযিল হয়, যে অবস্থায় এ সূরাটি নাযিল হয় তার ওপর আমাদের একটু নজর বুলিয়ে নেয়া উচিত । বদর যুদ্ধে জয়লাভ করার পর আরবে ইসলামী আন্দোলনের যে উত্থান শুরু হয় খন্দকের যুদ্ধ পর্যন্ত পৌঁছুতে পৌঁছুতেই তা এত বেশী ব্যাপকতা লাভ করে যার ফলে মুশরিক, ইহুদী, মুনাফিক ও দোমনা সংশয়ী নির্বিশেষে সবাই একথা অনুভব করতে থাকে যে, এ নব উত্থিত শক্তিটিকে শুধুমাত্র অস্ত্র ও সমর শস্তির মাধ্যমে পরাস্ত করা যেতে পারে না । খন্দকের যুদ্ধে তারা এক জোট হয়ে দশ হাজার সেনা নিয়ে মদীনা আক্রমণ করেছিল । কিন্তু মদীনা উপকণ্ঠে এক মাস ধরে মাথা কুটবার পর শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ মনোরথ হয়ে চলে যায় । তাদের ফিরে যাওয়ার সাথে সাথেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করে দেনঃ
————————————-(আরবী)
“এ বছরের পর কুরাইশরা আর তোমাদের ওপর হামলা করবে না বরং তোমরা তাদের ওপর হামলা করবে । ”(ইবনে হিশাম ২৬৬ পৃষ্ঠা) ।
রসূল (সা)-এর এ উক্তি দ্বারা প্রকারান্তরে একথাই জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, ইসলাম বিরোধী শক্তির অগ্রগতির ক্ষমতা নিশেষ হয়ে গেছে,এবার থেকে ইসলাম আর আত্মরক্ষার নয় বরং অগ্রগতির লড়াই লড়বে এবং কুফরকে অগ্রগতির পরিবর্তে আত্মরক্ষার লড়াই লড়তে হবে । এটি ছিল অবস্থার একেবারে সঠিক ও বাস্তব বিশ্লেষণ । প্রতিপক্ষও ভালোভাবে এটা অনুভব করছিল ।
মুসলমানদের সংখ্যা ইসলামের এ উত্তরোত্তর উন্নতির আসল কারণ ছিল না । বদর থেকে খন্দক পর্যন্ত প্রত্যেক যুদ্ধে কাফেররা তাদের চাইতে বেশী শক্তির সমাবেশ ঘটায় । অন্যদিকে জনসংখ্যার দিক দিয়েও সে সময় মুসলমানরা আরবে বড় জোর ছিল দশ ভাগের এক ভাগ । মুসলমানদের উন্নত মানের অস্ত্রসম্ভারও এ উন্নতির মূল কারণ ছিল না । সব ধরনের অস্ত্র-শস্ত্র ও যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জামে কাফেরদের পাল্লা ভারী ছিল । অর্থনৈতিক শক্তি ও প্রভাব প্রতিপত্তির দিক দিয়েও তাদের সাথে মুসলমানদের কোন তুলনাই ছিল না । কাফেরদের কাছে ছিল সমস্ত আরবের আর্থিক উপায় উপকরণ । অন্যদিকে মুসলমানরা অনাহারে মরছিল । কাফেরদের পেছনে ছিল সমগ্র আরবের মুশরিক সমাজ ও আহলি কিতাব গোত্রগুলো । অন্যদিকে মুসলমানরা একটি নতুন জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়ে পুরাতন ব্যবস্থার সকল সমর্থকের সহানুভূতি হারিয়ে ফেলেছিল । এহেন অবস্থায় যে জিনিসটি মুসলমানদের ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সেটি ছিল আসলে তাদের চারিত্রিক ও নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব । ইসলামের সকল শত্রু দলই এটা অনুভব করছিল । একদিকে তারা দেখছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের নির্মল নিষ্কলুষ চরিত্র । এ চরিত্রের পবিত্রতা, দৃঢ়তা ও শক্তিমত্তার মানুষের হৃদয় জয় করে চলছে । অন্যদিকে তারা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিল ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক নৈতিক পবিত্রতা মুসলমানদের মধ্যে পরিপূর্ণ ঐক্য, শৃংখলা ও সংহতি সৃষ্টি করে দিয়েছে এবং এর সামনে মুশরিকদের শিথিল সামাজিক ব্যবস্থাপনা যুদ্ধ ও শান্তি উভয় অবস্থায়ই পরাজয় বরণ করে চলছে ।
নিকৃষ্ট স্বভাবের লোকদের বৈশিষ্ট হচ্ছে এই যে, তাদের চোখে যখন অন্যের গুণাবলী ও নিজেদের দুর্বলতাগুলো পরিষ্কারভাবে ধরা পড়ে এবং তারা এটাও যখন বুঝতে পারে যে, প্রতিপক্ষের সৎগুণাবলী তাকে এগিয়ে দিচ্ছে এবং তাদের নিজেদের দোষ-ত্রুটিগুলো দূর করে প্রতিপক্ষের গুণাবলীর আয়ত্ব করে নেবার চিন্তা জাগে না, বরং তারা চিন্তা করতে থাকে যেভাবেই হোক নিজেদের অনুরূপ দুর্বলতা তার মধ্যেও ঢুকিয়ে দিতে হবে । আর এটা সম্ভব না হলে কমপক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালাতে হবে, যাতে জনগণ বুঝতে পারে যে, প্রতিপক্ষের যত গুণই থাক, সেই সাথে তাদের কিছু না কিছু দোষ-ত্রুটিও আছে । এ হীন মানসিকতাই ইসলামের শত্রুদের কর্মতৎপরতার গতি সামরিক কার্যক্রমের দিক থেকে সরিয়ে নিকৃষ্ট ধরনের নাশকতা ও আভ্যন্তরীণ গোলযোগ সৃষ্টির দিকেই ফিরিয়ে দিয়েছে । আর যেহেতু এ কাজটি বাইরের শত্রুদের তুলনায় মুসলমানদের ভেতরের মুনাফিকরা সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে পারতো তাই পরিকল্পিতভাবে বা পরিকল্পনা ছাড়াই স্থিরিকৃত হয় যে, মদীনার মুনাফিকরা ভেতর থেকে গোলমাল পাকাবে এবং ইহুদী ও মুশরিকরা বাইর থেকে তার ফলে যত বেশি পারে লাভবান হবার চেষ্টা করবে ।
৫ হিজরী যিলকদ মাসে ঘটে এ নতুন কৌশলটির প্রথম আত্মপ্রকাশ । এ সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরব থেকে পালক পুত্র * সংক্রান্ত জাহেলী রীতি নির্মূল করার জন্য নিজেই নিজের পালক পুত্রের [যায়েদ (রা) ইবনে হারেস] তালাক দেয়া স্ত্রীকে [যয়নব (রা) বিনতে জাহশ] বিয়ে করেন । এ সময় মদীনার মুনাফিকরা অপপ্রচারের এক বিরাট তাণ্ডব সৃষ্টি করে । বাইর থেকে ইহুদী ও মুশরিকরাও তাদের কন্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে মিথ্যা অপবাদ রটাতে শুরু করে । তারা অদ্ভুত অদ্ভুত সব গল্প তৈরী করে চারদিকে ছড়িয়ে দিতে থাকে । যেমন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে তার পালক পুত্রের স্ত্রীকে দেখে তার প্রেমে পড়ে যান (নাউযুবিল্লাহ) । কিভাবে পুত্র তাঁর প্রেমের খবর পেয়ে যায় এবং তার পর নিজের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তার ওপর থেকে নিজের অধিকার প্রত্যাহার করে; তারপর কিভাবে তিনি নিজের পুত্রবধূকে বিয়ে করেন । এ গল্পগুলো এত ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয় যে, মুসলমানরাও এগুলোর প্রভাবমুক্ত থাকতে পারেনি । এ কারণে মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরদের একটি দল হযরত যয়নব ও যায়েদের সম্পর্কে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন সেগুলো মধ্যে আজো ঐসব মনগড়া গল্পের অংশ পাওয়া যায় । পশ্চিমের প্রাচ্যবিদরা খুব ভালো করে লবণ মরিচ মাখিয়ে নিজেদের বইতে এসব পরিবেশন করেছেন । অথচ হযরত যয়নব (রা) ছিলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আপন ফুফুর (উমাইমাহ বিনতে আবদুল মুত্তালিব) মেয়ে । তাঁর সমগ্র শৈশব থেকে যৌবনকাল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চোখের সামনে অতিবাহিত হয়েছিল । তাঁকে ঘটনাক্রমে একদিন দেখে নেয়া এবং নাউযুবিল্লাহ তাঁর প্রেমে পড়ে যাওয়ার কোন প্রশ্নই দেখা দেয় না । আবার এ ঘটনার মাত্র এক বছর আগে নবী (সা) নিজেই চাপ দিয়ে তাঁকে হযরত যায়েদকে (রা) বিয়ে করতে বাধ্য করেন । তাঁর ভাই আবদুল্লাহ ইবনে জাহশ এ বিয়েতে অসন্তুষ্ট ছিলেন । হযরত যয়নব (রা) নিজেও এতে রাজী ছিলেন না । কারণ কুরাইশদের এক শ্রেষ্ঠ অভিজাত পরিবারের মেয়ে একজন মুক্তিপ্রাপ্ত গোলামের পত্নী হওয়াকে স্বভাবতই মেনে নিতে পারতো না । কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবলমাত্র মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার সূচনা নিজের পরিবার থেকে শুরু করার জন্যই হযরত যয়নবকে (রা) এ বিয়েতে রাজী হতে বাধ্য করেন । এসব কথা বন্ধু ও শত্রু সবাই জানতো । আর এ কথাও সবাই জানতো, হযরত যয়নবের বংশীয় আভিজাত্যবোধই তাঁর ও যায়েদ ইবনে হারেসার মধ্যকার দাম্পত্য সম্পর্ক স্থায়ী হতে দেয়নি এবং শেষ পর্যন্ত তালাক হয়ে যায় । কিন্তু এসব সত্ত্বেও নির্লজ্জ মিথ্যা অপবাদকারীরা নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জঘন্য ধরনের নৈতিক দোষারোপ করে এবং এত ব্যাপক আকারে সেগুলো ছড়ায় যে, আজো পর্যন্ত তাদের এ মিথ্যা প্রচারণার প্রভাব দেখা যায় ।
*অন্যের পুত্রকে নিজের পুত্র বানিয়ে নেয়া এবং পরিবারের মধ্যে তাকে পুরোপুরি ঔরশজাত সন্তানের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা ।
এরপর দ্বিতীয় হামলা করা হয় বনীল মুসতালিক যুদ্ধের সময় । প্রথম হামলার চাইতে এটি ছিল বেশী মারাত্মক । বনীল মুসতালিক গোত্রটি বনী খুযা’আর একটি শাখা ছিল । তারা বাস করতো লোহিত সাগর উপকূলে জেদ্দা ও রাবেগের মাঝখানে কুদাইদ এলাকায় । যে ঝরণাধারাটির আশপাশে এ উপজাতীয় লোকেরা বাস করতো তার নাম ছিল মরাইসী । এ কারণে হাদীসে এ যুদ্ধটিকে মুরাইসী’র যুদ্ধও বলা হয়েছে । চিত্রের মাধ্যমে তাদের সঠিক অবস্থানস্থল জানা যেতে পারে ।
৬ হিজরীর শাবান মাসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খবর পান, তারা মুসলমানদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং অন্যান্য উপাজাতিরকেও একত্র করার চেষ্টা করছে । এ খবর পাওয়ার সাথে সাথে তিনি ষড়যন্ত্রটিকে অংকুরেই গুঁড়িয়ে দেবার জন্য একটি সেনাদল নিয়ে সেদিকে রওয়ানা হয়ে যান । এ অভিযানে আবুদল্লাহ ইবনে উবাইও বিপুল সংখ্যক মুনাফিকদের নিয়ে তাঁর সহযোগী হয় । ইবনে সা’দের বর্ণনা মতে, এর আগে কোন যুদ্ধেই মুনাফিকরা এত বিপুল সংখ্যায় অংশ নেয়নি । মুরাইসী নামক স্থানে রসূলুল্লাহ (সা) হঠাৎ শত্রুদের মুখোমুখি হন । সামান্য সংঘর্ষের পর যাবতীয় সম্পদ-সরঞ্জাম সহাকারে সমগ্র গোত্রটিকে গ্রেফতার করে নেন । এ অভিযান শেষ হবার পর তখনো মুরাইসীতেই ইসলামী সেনা দল অবস্থান করছিল এমন সময় একদিন হযরত উমরের (রা) একজন কর্মচারী (জাহজাহ ইবনে মাসউদ গিফারী) এবং খাযরাজ গোত্রের একজন সহযোগীর (সিনান ইবনে ওয়াবর জুহানী) মধ্যে পানি নিয়ে বিরোধ বাধে । একজন আনসারদেরকে ডাকে এবং অন্যজন মুহাজিরদেরকে ডাক দেয় । উভয় পক্ষ থেকে লোকেরা একত্র হয়ে যায় এবং ব্যাপারটি মিটমাট করে দেয়া হয় । কিন্তু আনসারদের খাযরাজ গোত্রের সাথে সম্পর্কিত আবদুল্লাহ ইবনে উবাই তিলকে তাল করে দেয় । সে আনসারদেরকে একথা বলে উত্তেজিত করতে থাকে যে, “এ মুহাজিররা আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে এবং আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছে । আমাদের এবং এ কুরাইশী কাঙালদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে এই যে, কুকুরকে লালন পালন করে বড় করো যাতে সে তোমাকেই কামড়ায় । এসব কিছু তোমাদের নিজেদেরই কর্মফল । তোমরা নিজেরাই তাদেরকে ডেকে এনে নিজেদের এলাকয় জায়গা দিয়েছো এবং এবং নিজেদের ধন-সম্পত্তিতে তাদেরকে অংশীদার বানিয়েছো । আজ যদি তোমরা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে দেখবে তারা পগার পার হয়ে গেছে । ” তারপর সে কসম খেয়ে বলে, “মদীনায় ফিরে যাওয়ার পর আমাদের মধ্যে যারা মর্যাদা সম্পন্ন তারা দীন-হীন-লাঞ্ছিতদেরকে বাইরে বের করে দেবে । ” * তার এসব কথাবার্তার খবর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পৌঁছুলে হযরত উমর (রা) তাঁকে পরামর্শ দেন, এ ব্যক্তিকে হত্যা করা হোক । কিন্তু রসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ (আরবী) (হে উমর! দুনিয়ার লোকেরা কি বলবে? তারা বলবে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজেরই সংগী-সাথীদেরকে হত্যা করছে । ) তারপর তিনি তখনই সে স্থান থেকে রওয়ানা হবার হুকুম দেন এবং দ্বিতীয় দিন দুপুর পর্যন্ত কোথাও থামেননি, যাতে লোকেরা খুব বেশী ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং কারোর এক জায়গায় বসে গল্পগুজব করার এবং অন্যদের তা শোনার অবকাশ না থাকে । পথে উসাইদ ইবনে হুদ্বাইর (রা) বলেন, “হে আল্লাহর নবী! আজ আপনি নিজের স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে অসময়ে রওয়ানা হবার হুকুম দিয়েছেন? তিনি জবাব দেন , “তুমি শোননি তোমাদের সাথী কিসব কথা বলছে?” তিনি জিজ্ঞেস করেন, “কোন সাথী?” জবাব দেন, “আবদুল্লাহ ইবনে উবাই । ” তিনি বলেন, “হে আল্লাহর রসূল! ঐ ব্যক্তির কথা বাদ দিন । আপনি যখন মদীনায় আগমন করেন তখন আমরা তাকে নিজেদের বাদশাহ বানাবার ফায়সালা করেই ফেলেছিলাম এবং তার জন্য মুকুট তৈরী হচ্ছিল । আপনার আগমনের ফলে তার বাড়া ভাতে ছাই পড়েছে । তারই ঝাল সে ঝাড়ছে” ।
*সূরা মুনাফিকুনে আল্লাহ নিজেই তার এ উক্তিটি উদ্বৃত করেছেন।
এ হীন কারসাজির রেশ তখনো মিলিয়ে যায়নি । এরি মধ্যে একই সফরে সে আর একটি ভয়াবহ অঘটন ঘটিয়ে বসে । এমন পর্যায়ের ছিল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর নিবেদিত প্রাণ সাহাবীগণ যদি পূর্ণ সংযম ধৈর্যশীলতা এবং জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় না দিতেন তাহলে মদীনার এ নবগঠিত মুসলিম সমাজটিতে ঘটে যেতো মারাত্মক ধরনের গৃহযুদ্ধ । এটি ছিল হযরত আয়েশার (রা) বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদের ফিতনা । এ ঘটনার বিবরণ হযরত আয়েশার মুখেই শুনুন । তাহলে যথার্থ অবস্থা জানা যাবে । মাঝখানে যেসব বিষয় ব্যাখ্যা সাপেক্ষ হবে সেগুলো আমি অন্যান্য নির্ভরযোগ্য বর্ণনার মাধ্যমে ব্রাকেটের মধ্যে সন্নিবিশেতি করে যেতে থাকবো । এর ফলে হযরত আয়েশার (রা) বর্ণনার ধারাবাহিকতা ব্যাহত হবে না । তিনি বলেনঃ
“রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়ম ছিল, যখনই তিনি সফরে যেতেন তখনই স্ত্রীদের মধ্য থেকে কে তাঁর সংগে যাবে তা ঠিক করার জন্য লটারী করতেন । ” *বনীল মুসতালিক যুদ্ধের সময় লটারীতে আমার নাম ওঠে । ফলে আমি তাঁর সাথী হই । ফেরার সময় আমরা যখন মদীনার কাছাকাছি এসে গেছি তখন এক মনযিলে রাত্রিকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফেলার যাত্রা বিরত্রি করেন । এদিকে রাত পোহাবার তখনো কিছু সময় বাকি ছিল এমন সময় রওয়ানা দেবার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় । আমি উঠে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবার জন্য যাই । ফিরে আসার সময় অবস্থান স্থলের কাছাকাছি এসে মনে হলো আমার গলার হারটি ছিঁড়ে কোথাও পড়ে গেছে । আমি তার খোঁজে লেগে যাই । ইত্যবসরে কাফেলা রওয়ানা হয়ে যায় । নিয়ম ছিল, রওয়ানা হবার সময় আমি নিজের হাওদায় বসে যেতাম এবং চারজন লোক মিলে সেটি উঠিয়ে উঠের পিঠে বসিয়ে দিতো । সে যুগে আমরা মেয়েরা কম খাবার কারণে বড়ই হালকা পাতলা হতাম । আমার হাওদা উঠাবার সময় আমি যে তার মধ্যে নেই একথা লোকেরা অনুভবই করতে পারেনি । তারা না জেনে খালি হাওদাটি উঠিয়ে উঠের পিঠে বসিয়ে দিয়ে রওয়ানা হয়ে যায় । আমি হার নিয়ে ফিরে এসে দেখি সেখানে কেউ নেই । কাজেই নিজের চাদর মুড়ি দিয়ে আমি সেখানেই শুয়ে পড়ি । মনে মনে ভাবি, সামনের দিকে গিয়ে আমাকে হাওদার মধ্যে না পেয়ে তারা নিজেরাই খুঁজতে খুঁজতে আবার এখানে চলে আসবে । এ অবস্থায় আমি ঘুমিয়ে পড়ি । সকালে সাফওয়ান ইবনে মু’আত্তাল সালামী আমি যেখানে শুয়ে ছিলাম সেখানে দিয়ে যেতে থাকেন । তিনি আমাকে দেখতেই চিনে ফেলেন । কারণ পরদার হুকুম নাযিল হবার পূর্বে তিনি আমাকে বহুবার দেখেন । (তিনি ছিলেন একজন বদরী সাহাবী । সকালে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকা ছিল তাঁর অভ্যাস । **তাই তিনিও সেনা শিবিরের কোথাও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এবং এখন ঘুম থেকে উঠে মদীনার দিকে রওয়ানা দিয়েছিলেন । ) আমাকে দেখে তিনি উট থামিয়ে নেন এবং স্বতষ্ফূর্তভাবে তাঁর মুখ থেকে বের হয়ে পড়ে, (আরবী) “রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী এখানে রয়ে গেছেন । ” তাঁর এ আওয়াজে আমার চোখ খুলে যায় এবং আমি উঠে সংগে সংগেই আমার মুখ চাদর দিয়ে ঢেকে নিই । তিনি আমার সাথে কোন কথা বলেননি, সোজা তাঁর উটটি এনে আমার কাছে বসিয়ে দেন এবং নিজে দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন । আমি উটের পিঠে সওয়ার হয়ে যাই এবং তিনি উটের রশি ধরে এগিয়ে যেতে থাকেন । দুপুরের কাছাকাছি সময়ে আমরা সেনাবাহিনীর সাথে যোগ দেই । সে সময় সেনাদল এক জায়গায় গিয়ে সবেমাত্র যাত্রা বিরতি শুরু করেছে । তখনো তারা টেরই পায়নি আমি পেছনে রয়ে গেছি । এ ঘটনার কুচক্রীরা মিথ্যা অপবাদ রটাতে থাকে এবং এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ছিল সবার আগে । কিন্তু আমার সম্পর্কে কিসব কথাবার্তা হচ্ছে সে ব্যাপারে আমি ছিলাম একেবারেই অজ্ঞ ।
* এ লটারীর ধরনটি প্রচলিত লটারীর মতো ছিলো না । আসলে সকল স্ত্রীর অধিকার সমান ছিল । তাদের একজনকে অন্যজনের প্রাধান্য দেবার কোন যুক্তিযুক্ত কারণ ছিল না । এখন যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই কাউকে বেছে নিতেন তাহলে স্ত্রীরা মনে ব্যাথা পেতেন এবং এতে পারস্পরিক রেষারেষি ও বিদ্বেষ সৃষ্টির আংশকা থাকতো। তাই তিনি লটারীর মাধ্যমে এর ফয়সালা করতেন । শরীয়তে এমন অবস্থার জন্য লটারীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে । যখন কতিপয় লোকের বৈধ অধিকার হয় একেবারে সমান সমান এবং তাদের মধ্য থেকে একজনকে অন্যজনের ওপর অগ্রাধিকার দেবার কোন ন্যায়সংগত কারণ থাকে না অথচ অধিকার কেবল মাত্র একজনকে দেয়া যেতে পারে।
** আবু দাউদ ও অন্যান্য সুনান গ্রন্থে এ আলোচনা এসেছে, তাঁর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ করেন যে, তিনি কখনো ফজরের নামায যথা সময় পড়েন না । তিনি ওজর পেশ করেন, হে আল্লাহর রসূল! এটা আমার পারিবারিক রোগ । সকালে দীর্ঘসময় পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকার এ দূর্বলতাটি আমি কিছুতেই দূর করতে পারি না। একথায় রসূলূল্লাহ (সা) বলেনঃ ঠিক আছে, যখনই ঘুম ভাঙবে, সংগে সংগে নামাজ পড়ে নিবে। কোন কোন মুহাদ্দিস তাঁর কাফেলার পেছনে থেকে যাওয়ার এ কারণ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু অন্য কতিপয় মুহাদ্দিস এর কারণ বর্ণনা করে বলেন, রাতের অন্ধকারে রওয়ানা হবার কারণে যদি কারোর কোণ জিনিস পেছনে থেকে গিয়ে থাকে তাহলে সকালে তা খুঁজে নিয়ে আসার দায়িত্ব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ওপর অর্পণ করেছিলেন ।
[অন্যান্য হাদীসে বলা হয়েছে, সে সময় সফওয়ানের উটের পিঠে চড়ে হযরত আয়েশা (রা) সেনা শিবিরে এসে পৌঁছেন এবং তিনি এভাবে পেচনে রয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা যায় তখন আবদুল্লাহ ইবনে উবাই চিৎকার করে ওঠে, “আল্লাহর কসম, এ মহিলা নিষ্কলংক অবস্থায় আসেনি । নাও, দেখো তোমাদের নবীর স্ত্রী আর একজনের সাথে রাত কাটিয়েছে এবং সে এখন তাকে প্রকাশ্যে নিয়ে চলে আসছে । ”]
মদীনায় পৌঁছেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং প্রায় এক মাসকাল বিছানায় পড়ে থাকি । শহরে এ মিথ্যা অপবাদের খবর ছড়িয়ে পড়ে । রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কানেও কথা আসতে থাকে । কিন্তু আমি কিছুই জানতাম না । তবে যে জিনিসটি আমার মনে খচখচ করতে থাকে তা হচ্ছে এই যে, অসুস্থ অবস্থায় যে রকম দৃষ্টি দেয়া দরকার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৃষ্টি আমার প্রতি তেমন ছিল না । তিনি ঘরে এলে ঘরের লোকদের জিজ্ঞেস করতেন (আরবী) (ও কেমন আছে?)
নিজে আমার সাথে কোন কথা বলতেন না । এতে আমার মনে সন্দেহ হতো, নিশ্চয়ই কোন ব্যাপার ঘটেছে । শেষে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমি নিজের মায়ের বাড়িতে চলে গেলাম যাতে তিনি আমার সেবা শুশ্রূষা ভালোভাবে করতে পারেন ।
এক রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবার জন্য আমি মদীনার বাইরে যাই । সে সময় আমাদের বাড়িঘরে এ ধরনের পায়খানার ব্যবস্থা ছিল না । ফলে আমরা পায়খানা করার জন্য বাইরে জংগলের দিকে যেতাম । আমার সাথে ছিলেন মিসতাহ ইবনে উসাসার মা । তিনি ছিলেন আমার মায়ের খালাত বোন । [অন্য হাদীস থেকে জানা যায়, তাদের সমগ্র পরিবারের ভরণপোষণ হযরত আবু বকর সিদ্দিকের (রা) জিম্মায় ছিল । কিন্তু এ সত্ত্বেও মিসতাহ এমন লোকদের দলে ভিড়ে গিয়েছিলেন যারা হযরত আয়েশার (রা) বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছিল । ] রাস্তায় তাঁর পায় ঠোকর লাগে এবং তিনি সংগে সংগে স্বতষ্ফূর্তভাবে বলে ওঠেনঃ “ধ্বংস হোক মিসতাহ । ” আমি বললাম, “ভালই মা দেখছি আপনি, নিজের পেটের ছেলেকে অভিশাপ দিচ্ছেন, আবার ছেলেও এমন যে বদরের যুদ্ধে অংশ নিয়েছে । ” তিনি বলেন, “মা, তুমি কি তার কথা কিছুই জানো না?” তারপর তিনি গড়গড় করে সব কথা বলে যান । তিনি বলে যেতে থাকেন, মিথ্যা অপবাদদাতারা আমার বিরুদ্ধে কিসব কথা রটিয়ে বেড়াচেছ । [মুনাফিকরা ছাড়া মুসলমানদের মধ্য থেকেও যারা এ ফিতনায় শামিল হয়ে গিয়েছিল তাদের মধ্যে মিসতাহ, ইসলামের প্রখ্যাত কবি হাসসান ইবনে সাবেত ও হযরত যয়নবের (রা) বোন হামনা বিনতে জাহশের অংশ ছিল সবচেয়ে বেশী উল্লেখযোগ্য । ] এ কাহিনী শুনে আমার শরীরের রক্ত যেন শুকিয়ে গেল । যে প্রয়োজন কারণের জন্য আমি বের হয়েছিলাম তাও ভুলে গেলাম । সোজা ঘরে চলে এলাম । সারা রাত আমার কাঁদতে কাঁদতে কেটে যায় । ”
সামনের দিকে এগিয়ে হযরত আয়েশা (রা) বলেনঃ “আমি চলে আসার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী (রা) ও উসামাহ ইবনে যায়েদকে (রা) ডাকেন । তাদের কাছে পরামর্শ চান । উসামাহ (রা) আমার পক্ষে ভালো কথাই বলে । সে বলে, ‘হে আল্লাহর রসূল! ভালো জিনিস ছাড়া আপনার স্ত্রীর মধ্যে আমি আর কিছুই দেখিনি । যা কিছু রটানো হচ্ছে সবই মিথ্যা ও বানোয়াট ছাড়া আর কিছুই নয় । ’ আর আলী (রা) বলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! মেয়ের অভাব নেই । আপনি তাঁর জায়গায় অন্য একটি মেয়ে বিয়ে করতে পারেন । আর যদি অনুসন্ধান করতে চান তাহলে সেবিকা বাঁদীকে ডেকে অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করুন । ’ কাজেই সেবিকাকে ডাকা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয় । সে বলে, ‘সে আল্লাহর কসম যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন, আমি তাঁর মধ্যে এমন কোন খারাপ জিনিস দেখিনি যার ওপর অংগুলি নির্দেশ করা যেতে পারে । তবে এতটুকু দোষ তাঁর আছে যে, আমি আটা ছেনে রেখে কোন কাজে চলে যাই এবং বলে যাই, বিবি সাহেবা! একটু আটার দিকে খেয়াল রাখবেন, কিন্তু তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং বকরি এসে আটা খেয়ে ফেলে । ’ সেদিনই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবায় বলেন, ‘হে মুসলমানগণ! এক ব্যক্তি আমার পরিবারের ওপর মিথ্যা দোষারোপ করে আমাকে অশেষ কষ্ট দিচ্ছে! তোমাদের মধ্যে কে আছে যে, তার আক্রমণ থেকে আমার ইজ্জত বাঁচাতে পারে? আল্লাহর কসম, আমি তো আমার স্ত্রীর মধ্যেও কোন খারাপ জিনিস দেখিনি এবং সে ব্যক্তির মধ্যেও কোন খারাপ জিনিস দেখিনি যার সম্পর্কে অপবাদ দেয়া হচ্ছে । সে তো কখনো আমার অনুপস্থিতিতে আমার বাড়ীতে আসেনি । ’ একথায় উসাইদ ইবনে হুদ্বাইর (কোন কোন বর্ণনা অনুযায়ী সা’দ ইবনে মু’আয) * উঠে বলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি সে আমাদের গোত্রের লোক হয় তাহলে আমরা তাকে হত্যা করবো আর যদি আমাদের ভাই খাযরাজদের লোক হয় তাহলে আপনি হুকুম দিন আমরা হুকুম পালন করার জন্য প্রস্তুত । ’ একথা শুনতেই খাযরাজ প্রধান সা’দ ইবনে উবাদাহ (রা) দাঁড়িয়ে যান এবং বলতে থাকেন , ‘মিথ্যা বলছো, তোমরা তাকে কখনোই হত্যা করতে পারো না । তোমরা তাকে হত্যা করার কথা শুধু এ জন্যই মুখে আনছো যে সে খাযরাজদের অন্তরভুক্ত । যদি সে তোমাদের গোত্রের লোক হতো তাহলে তোমরা কখনো একথা বলতে না, আমরা তাকে হত্যা করবো । ’ ** উসাইদ ইবনে হুতাইর জবাব দেন, ‘তুমি মুনাফিক, তাই মুনাফিকদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছো । ’ একথায় মসজিদে নববীতে একটি হাংগামা শুরু হয়ে যায় । অথচ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে বসে ছিলেন । মসজিদের মধ্যেই আওস ও খাযরাজের লড়াই বেঁধে যাবার উপক্রম হয়েছিল কিন্তু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে শান্ত করেন এবং তারপর তিনি মিম্বার থেকে নেমে আসেন । ”
* সম্ভবত নামের ক্ষেত্রে এ বিভিন্নতার কারণ এ যে, হযরত আয়েশা (রা) নাম উল্লেখ করার পরিবর্তে আওস সরদার শব্দ ব্যবহার করে থাকবেন । কোন বর্ণনাকারী এ থেকে সা’দ ইবনে মু’আয মনে করেছেন । কারণ নিজের জীবদ্দশায় তিনিই ছিলেন আওস গোত্রের সরদার এবং ইতিহাসে আওস সরদার হিসেবে তিনিই বেশী পরিচিত। অথচ আসলে এ ঘটনার সময় তাঁর চাচাত ভাই উসাইদ ইবনে হুদাইর ছিলেন আওসের সরদার।
** হযরত সা’দ ইবনে উবাদাহ যদিও অত্যন্ত সৎ ও মুখলিস মুসলমান ছিলেন, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পোষন করতেন এবং মদীনায় যাদের সাহায্যে ইসলাম বিস্তার লাভ করে তাদের মধ্যে তিনিও একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব তবুও এতসব সৎ গুন সত্ত্বেও তাঁর মধ্যে স্বজাতিপ্রীতি ও জাতীয় স্বার্থবোধ (আর আরবে সে সময় জাতি বলতে গোত্রই বুঝাতো) ছিল অনেক বেশী । এ কারণে তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উমরের পৃষ্টপোষকতা করেন, যেহেতু সে ছিল তার গোত্রের লোক । এ কারণে মক্কা বিজয়ের সময় তাঁর মুখ থেকে এ কথা বের হয়ে যায়ঃ ————————————————-(আজ ও রক্ত প্রবাহের দিন । আজ এখানে হারামকে হালাল করা হবে । ) এর ফলে ক্রোধ প্রকাশ করে রসূলুল্লাহ (সা) তাঁর কাছ থেকে সেনাবাহিনীর ঝান্ডা ফিরিয়ে নেন । আবার এ কারণেই তিনি রসূলুল্লাহর (সা) ইন্তিকালের পর সাকীফায়ে বনি সায়েদায় খিলাফত আনসারদের হক বলে দাবী করেন। আর যখন তাঁর কথা অগ্রাহ্য করে আনসার ও মুজাহির সবাই সম্মিলিতভাবে হযরত আবু বকরের (রা) হাতে বাইআত করেন তখন তিনি একাই বাই’আত করতে অস্বীকার করেন। আমৃত্যু তিনি কুরাইশী খলীফায় খিলাফত স্বীকার করেননি । (দেখুন আল ইসাবাহ লিইবনে হাজার এবং আল ইসতিআব লিইবনে আবদিল বার এবং সা’দ ইবনে উবাদাহ অধ্যায়, পৃষ্টা ১০-১১ )
হযরত আয়েশার (রা) অবশিষ্ট কাহিনীর বিস্তারিত বিবরণ আমি এতদসংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসংগে বণৃনা করবো যেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর ত্রুটি মুক্তির কথা ঘোষণা করা হয়েছে । এখানে আমি যা কিছু বলতে চাই তা হচ্ছে এই যে, আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এ অপবাদ রটিয়ে একই গুলীতে কয়েকটি পাখি শিকার করার প্রচেষ্টা চালায় । একদিকে সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আবু বকর সিদ্দীকের (রা) ইজ্জতের ওপর হামলা চালায় অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলনের উন্নততর নৈতিক মর্যাদা ও চারিত্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে । তৃতীয় সে এর মাধ্যমে এমন একটি অগ্নিশিখা প্রজ্জলিত করে যে, যদি ইসলাম তার অনুসারীদের জীবন ও চরিত্র সম্পূর্ণ পরিবর্তিত করে না ফেলে থাকতো তাহলে মুহাজির ও আনসার এবং স্বয়ং আনসারদেরই দু’টি গোত্র পরস্পর লড়াই করে ধ্বংস হয়ে যেতো ।
বিষয়বস্তু ও কেন্দ্রীয় বিষয়
এ ছিল সে সময়কার পরিস্থিতি । এর মধ্যে প্রথম হামলার সময় সূরা আহযাবের শেষ ৬টি রুকূ’ নাযিল হয় এবং দ্বিতীয় হামলার সময় নাযিল হয় সূরা নূর । এ পটভূমি সামনে রেখে এ দু’টি সূরা পর্যায়ক্রমে অধ্যয়ন করলে এ বিধানগুলোর মধ্যে যে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা নিহিত রয়েছে তা ভালোভাবে অনুধাবন করা যায় ।
মুনাফিকরা মুসলমানদেরকে এমন এক ময়দানে পরাজিত করতে চাচ্ছিল যেটা ছিল তাদের প্রাধান্যের আসল ক্ষেত্র । আল্লাহ তাদের চরিত্রে হননমূলক অপবাদ রটনার অভিযানের বিরুদ্ধে একটি ক্রুদ্ধ ভাষণ দেবার বা মুসলমানদেরকে পাল্টা আক্রমণে উদ্বুদ্ধ করার পরিবর্তে মুসলমানদেরকে এ শিক্ষা দেবার প্রতি তাঁর সার্বিক দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন যে, তোমাদের নৈতিক অংগনে যেখানে যেখানে শূন্যতা রয়েছে সেগুলো পূর্ণ কর এবং এ অংগনকে আরো বেশী শক্তিশালী করো । একটু আগেই দেখা গেছে যয়নবের (রা) বিয়ের সময় মুনাফিক ও কাফেররা কী হাংগামাটাই না সৃষ্টি করেছিল । অথচ সূরা আহযাব বের করে পড়লে দেখা যাবে সেখানে ঠিক সে হাংগামার যুগেই সামাজিক সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত নির্দেশগুলো দেয়া হয়ঃ
একঃ নবী করীমের (সা) পবিত্র স্ত্রীগণকে হুকুম দেয়া হয়ঃ নিজেদের গৃহমধ্যে মর্যাদা সহকারে বসে থাকো, সাজসজ্জা করে বাইরে বের হয়ো না এবং ভিন পুরুষদের সাথে কথা বলার প্রয়োজন হলে বিনম্র স্বরে কথা বলো না, যাতে কোন ব্যক্তি কোন অবাঞ্ছিত আশা পোষণ না করে বসে । ( ৩২ ও ৩৩ আয়াত)
দুইঃ নবী করীমের (সা) গৃহে ভিন পুরুষদের বিনা অনুমতিতে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং নির্দেশ দেয়া হয়, তাঁ
- নামাজে আমরা যা বলি তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
সুরা নং- ০২৪ : সুরা আন-নুর
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।
سُورَةٌ أَنزَلۡنَـٰهَا وَفَرَضۡنَـٰهَا وَأَنزَلۡنَا فِيہَآ ءَايَـٰتِۭ بَيِّنَـٰتٍ۬ لَّعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ ١
আরবি উচ্চারণ ২৪.১। সূরাতুন্ আন্যাল্না-হা-অ ফারদ্ব্না-হা-অ আন্যাল্না-ফীহা য়আ-ইয়া-তিম্ বাইয়্যিনা-তিল্ লা‘আল্লাকুম্ তাযাক্কারূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১ এটি একটি সূরা, যা আমি নাযিল করেছি এবং এটাকে অবশ্য পালনীয় করেছি। আর আমি এতে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছি, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
ٱلزَّانِيَةُ وَٱلزَّانِى فَٱجۡلِدُواْ كُلَّ وَٲحِدٍ۬ مِّنۡہُمَا مِاْئَةَ جَلۡدَةٍ۬ۖ وَلَا تَأۡخُذۡكُم بِہِمَا رَأۡفَةٌ۬ فِى دِينِ ٱللَّهِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأَخِرِۖ وَلۡيَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآٮِٕفَةٌ۬ مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.২। আয্যা-নিয়াতু অয্যা-নী ফাজুলিদূ কুল্লা অ-হিদিম্ মিন্হুমা-মিয়াতা জ্বাল্দাতিঁও অলা-তাখুয্কুম্ বিহিমা-রফাতুন্ ফীদীনিল্লা-হি ইন্ কুন্তুম্ তুমিনূনা বিল্লা-হি অল্ইয়াওমিল্ আ-খিরি অল্ ইয়াশ্হাদ্ ‘আযা-বা হুমা-ত্বোয়া-য়িফাতুম্ মিনাল্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২ ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী তাদের প্রত্যেককে একশ’টি করে বেত্রাঘাত কর। আর যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান এনে থাক তবে আল্লাহর দীনের ব্যাপারে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে পেয়ে না বসে। আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের আযাব প্রত্যক্ষ করে।
ٱلزَّانِى لَا يَنكِحُ إِلَّا زَانِيَةً أَوۡ مُشۡرِكَةً۬ وَٱلزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَآ إِلَّا زَانٍ أَوۡ مُشۡرِكٌ۬ۚ وَحُرِّمَ ذَٲلِكَ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩। আয্যা-নী লা-ইয়ান্কিহুহা য় ইল্লা-যা-নিয়াতান্ আও মুশ্রিকাতাঁও অয্যা-নিয়াতু লা-ইয়ান্কিহুহা য় ইল্লা-যা-নিন্ আওমুশ্রিকূন্ অর্হুরিমা যা-লিকা ‘আলাল্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩ ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিক নারীকে ছাড়া বিয়ে করবে না এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ছাড়া বিয়ে করবে না। আর মুমিনদের উপর এটা হারাম করা হয়েছে।
وَٱلَّذِينَ يَرۡمُونَ ٱلۡمُحۡصَنَـٰتِ ثُمَّ لَمۡ يَأۡتُواْ بِأَرۡبَعَةِ شُہَدَآءَ فَٱجۡلِدُوهُمۡ ثَمَـٰنِينَ جَلۡدَةً۬ وَلَا تَقۡبَلُواْ لَهُمۡ شَہَـٰدَةً أَبَدً۬اۚ وَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪। অল্লাযীনা ইর্য়ামূনাল্ মুহ্ছোয়ানা-তি ছুম্মা লাম্ ইয়া’তূ বির্আবা‘আতি শুহাদা-য়া ফাজলিদূহুম্ ছামা-নীনা জ্বাল্দাতাঁও অলা তাকবালূ লাহুম্ শাহা-দাতান্ আবাদান্ অ উলা-য়িকা হুমুল্ ফা- সিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪ আর যারা সচ্চরিত্র নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর তারা চারজন সাক্ষী নিয়ে আসে না, তবে তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত কর এবং তোমরা কখনই তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করো না। আর এরাই হলো ফাসিক।
إِلَّا ٱلَّذِينَ تَابُواْ مِنۢ بَعۡدِ ذَٲلِكَ وَأَصۡلَحُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ۬ رَّحِيمٌ۬ ٥
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫। ইল্লাল লাযীনা তা-বূ মিম্ বা’দি যা-লিকা অআছ্লাহূ ফা ইন্নাল্লা-হা গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫ তবে যারা এরপরে তাওবা করে এবং নিজদের সংশোধন করে, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَٱلَّذِينَ يَرۡمُونَ أَزۡوَٲجَهُمۡ وَلَمۡ يَكُن لَّهُمۡ شُہَدَآءُ إِلَّآ أَنفُسُهُمۡ فَشَهَـٰدَةُ أَحَدِهِمۡ أَرۡبَعُ شَہَـٰدَٲتِۭ بِٱللَّهِۙ إِنَّهُ ۥ لَمِنَ ٱلصَّـٰدِقِينَ ٦
আরবি উচ্চারণ ২৪.৬। অল্লাযীনা ইর্য়ামূনা আয্ওয়া-জ্বাহুম্ অলাম্ ইয়াকুল্লাহুম্ শুহাদা-য়ু ইল্লা য় আন্ফুসুহুম্ ফাশাহা-দাতু আহাদিহিম্ র্আবা‘উ শাহা-দা-তিম্ বিল্লা-হি ইন্নাহূ লামিনাছ্ ছোয়া-দ্বিকীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৬ আর যারা নিজদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, অথচ নিজেরা ছাড়া তাদের আর কোন সাক্ষী নেই, তাহলে তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য হবে আল্লাহর নামে চারবার সাক্ষ্য দেবে যে, সে নিশ্চয়ই সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
وَٱلۡخَـٰمِسَةُ أَنَّ لَعۡنَتَ ٱللَّهِ عَلَيۡهِ إِن كَانَ مِنَ ٱلۡكَـٰذِبِينَ ٧
আরবি উচ্চারণ ২৪.৭। অল্খ-মিসাতু আন্না লা’নাত ল্লা-হি ‘আলাইহি ইন্ কা-না মিনাল্ কা-যিবীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৭ আর পঞ্চমবারে সাক্ষ্য দেবে যে, সে যদি মিথ্যাবাদী হয়, তবে নিশ্চয় তার উপর আল্লাহর লা‘নত।
وَيَدۡرَؤُاْ عَنۡہَا ٱلۡعَذَابَ أَن تَشۡہَدَ أَرۡبَعَ شَہَـٰدَٲتِۭ بِٱللَّهِۙ إِنَّهُ ۥ لَمِنَ ٱلۡكَـٰذِبِينَ ٨
আরবি উচ্চারণ ২৪.৮। অ ইয়াদ্রায়ু ‘আন্হাল্ ‘আযা-বা আন্ তাশ্হাদা র্আবা‘আ শাহা-দা-তিম্ বিল্লা-হি ইন্নাহূ লামিনাল্ কা-যিবীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৮ আর তারা স্ত্রীলোকটি থেকে শাস্তি রহিত করবে, যদি সে আল্লাহর নামে চারবার সাক্ষ্য দেয় যে, নিশ্চয় তার স্বামী মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
وَٱلۡخَـٰمِسَةَ أَنَّ غَضَبَ ٱللَّهِ عَلَيۡہَآ إِن كَانَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِينَ ٩
আরবি উচ্চারণ ২৪.৯। অল্ খ-মিসাতা আন্না গদ্বোয়াবাল্লা-হি ‘আলাইহা য় ইন্ কা-না মিনাছ্ ছোয়া-দিক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৯ আর পঞ্চমবারে সাক্ষ্য দেবে যে, যদি তার স্বামী সত্যবাদী হয়, তবে নিশ্চয় তার উপর আল্লাহর গযব।
وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُ ۥ وَأَنَّ ٱللَّهَ تَوَّابٌ حَڪِيمٌ ١٠
আরবি উচ্চারণ ২৪.১০। অলাওলা- ফাদ্ব্লুল্লা-হি ‘আলাইকুম্ অরহ্মাতুহূ অআন্নাল্লা-হা তাউওয়া-বুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১০ যদি তোমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া না থাকত, (তাহলে তোমরা ধ্বংস হয়ে যেতে) আর নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা গ্রহণকারী, প্রজ্ঞাময়।
إِنَّ ٱلَّذِينَ جَآءُو بِٱلۡإِفۡكِ عُصۡبَةٌ۬ مِّنكُمۡۚ لَا تَحۡسَبُوهُ شَرًّ۬ا لَّكُمۖ بَلۡ هُوَ خَيۡرٌ۬ لَّكُمۡۚ لِكُلِّ ٱمۡرِىٍٕ۬ مِّنۡہُم مَّا ٱكۡتَسَبَ مِنَ ٱلۡإِثۡمِۚ وَٱلَّذِى تَوَلَّىٰ كِبۡرَهُ ۥ مِنۡہُمۡ لَهُ ۥ عَذَابٌ عَظِيمٌ۬ ١١
আরবি উচ্চারণ ২৪.১১। ইন্না ল্লাযীনা জ্বা-য়ূ বিল্ইফ্কি উছ্বাতুম্ মিন্কুম্; লা-তাহ্সাবূহু র্শারাল্লাকুম্; বাল্ হুঅ খইরুল্লাকুম্; লিকুল্ লিম্ রিয়িম্ মিন্হুম্ মাক্তাসাবা মিনাল্ ইছ্মি অল্লাযী তাওয়াল্লা-কিব্রাহূ মিন্হুম্ লাহূ ‘আযা-বুন্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১১ নিশ্চয় যারা এ অপবাদ রটনা করেছে, তারা তোমাদেরই একটি দল। এটাকে তোমরা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর মনে করো না, বরং এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাদের থেকে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য রয়েছে, যতটুকু পাপ সে অর্জন করেছে। আর তাদের থেকে যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে, তার জন্য রয়েছে মহাআযাব।
لَّوۡلَآ إِذۡ سَمِعۡتُمُوهُ ظَنَّ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتُ بِأَنفُسِہِمۡ خَيۡرً۬ا وَقَالُواْ هَـٰذَآ إِفۡكٌ۬ مُّبِينٌ۬ ١٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.১২। লাওলা য় ইয্ সামি’তুমূহু জোয়ান্নাল্ মুমিনূনা অল্ মুমিনা-তু বি আন্ফুসিহিম্ খইরঁও অ ক্ব-লূ হা-যা য় ইফ্কুম্ মুবীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১২ যখন তোমরা এটা শুনলে, তখন কেন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা তাদের নিজদের সম্পর্কে ভাল ধারণা পোষণ করল না এবং বলল না যে, ‘এটাতো সুস্পষ্ট অপবাদ’?
لَّوۡلَا جَآءُو عَلَيۡهِ بِأَرۡبَعَةِ شُہَدَآءَۚ فَإِذۡ لَمۡ يَأۡتُواْ بِٱلشُّہَدَآءِ فَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ عِندَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡكَـٰذِبُونَ ١٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৩। লাওলা জ্বা-য়ূ ‘আলাইহি বির্আবা‘আতি শুহাদা-য়া ফাইয্ লাম্ ইয়াতূ বিশ্শুহাদা-য়ি ফাউলা-য়িকা ‘ইন্দাল্লা-হি হুমুল্ কা-যিবূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৩ তারা কেন এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী নিয়ে আসল না? সুতরাং যখন তারা সাক্ষী নিয়ে আসেনি, তখন তারাই আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী।
وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُ ۥ فِى ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأَخِرَةِ لَمَسَّكُمۡ فِى مَآ أَفَضۡتُمۡ فِيهِ عَذَابٌ عَظِيمٌ ١٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৪। অলাওলা-ফাদ্ব্লুল্লা-হি ‘আলাইকুম্ অ রহ্মাতুহূ ফিদ্দুন্ইয়া-অল্ আ-খিরাতি লামাস্সাকুম্ ফীমা য় আফাদ্ব্তুম্ ফীহি ‘আযা-বুন্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৪ আর যদি দুনিয়া ও আখেরাতে তোমাদের উপর আল্লাহর দয়া ও তাঁর অনুগ্রহ না থাকত, তবে তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে, তার জন্য তোমাদেরকে অবশ্যই কঠিন আযাব স্পর্শ করত।
إِذۡ تَلَقَّوۡنَهُ ۥ بِأَلۡسِنَتِكُمۡ وَتَقُولُونَ بِأَفۡوَاهِكُم مَّا لَيۡسَ لَكُم بِهِۦ عِلۡمٌ۬ وَتَحۡسَبُونَهُ ۥ هَيِّنً۬ا وَهُوَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِيمٌ۬ ١٥
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৫। ইয্ তালাকক্বও নাহূ বিআল্সিনাতিকুম্ অতাকু লূনা বিআফ্ওয়া-হিকুম্ মা-লাইসা লাকুম্ বিহী ই’ল্মুঁও অ তাহ্সাবূনাহূ হাইয়িনাঁও অহুওয়া ‘ইন্দাল্লা-হি ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৫ যখন এটা তোমরা তোমাদের মুখে মুখে ছড়াচ্ছিলে এবং তোমরা তোমাদের মুখ দিয়ে এমন কথা বলছিলে, যাতে তোমাদের কোন জ্ঞান ছিল না; আর তোমরা এটাকে খুবই তুচ্ছ মনে করছিলে, অথচ এটা আল্লাহর নিকট খুবই গুরুতর।
وَلَوۡلَآ إِذۡ سَمِعۡتُمُوهُ قُلۡتُم مَّا يَكُونُ لَنَآ أَن نَّتَڪَلَّمَ بِہَـٰذَا سُبۡحَـٰنَكَ هَـٰذَا بُہۡتَـٰنٌ عَظِيمٌ۬ ١٦
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৬। অ লাওলা য় ইয্ সামি’তুমূহু কুল্তুম্ মা-ইয়াকূনু লানা য় আন্না তাকাল্লামা বিহা-যা- সুব্হা-নাকা হাযা- বুহ্তা- নুন্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৬ আর তোমরা যখন এটা শুনলে, তখন তোমরা কেন বললে না যে, ‘এ নিয়ে কথা বলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তুমি অতি পবিত্র মহান, এটা এক গুরুতর অপবাদ’।
يَعِظُكُمُ ٱللَّهُ أَن تَعُودُواْ لِمِثۡلِهِۦۤ أَبَدًا إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ١٧
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৭। ইয়া‘ইজুকুমুল্লা-হু আন্ তা‘ঊদূ লিমিছ্লিহী য় আবাদান্ ইন্ কুন্তুম্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৭ আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন যে, যদি তোমরা মুমিন হও, তাহলে আর কখনো এর পুনরাবৃত্তি করবে না।
وَيُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلۡأَيَـٰتِۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ ١٨
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৮। অ ইয়ুবাইয়্যিনুল্লা-হু লাকুমুল্ আ-ইয়া-ত্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৮ আর আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করছেন এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ ٱلۡفَـٰحِشَةُ فِى ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ۬ فِى ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأَخِرَةِۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ١٩
আরবি উচ্চারণ ২৪.১৯। ইন্নাল্লাযীনা ইয়ুহিবুনা আন্ তাশী‘আল্ ফা-হিশাতু ফিল্লাযীনা আ-মানূ লাহুম্ ‘আযা-বুন্ আলীমুন্ ফিদ্দুন্ইয়া-অল্ আ-খিরা-হ; অল্লা-হু ইয়া’লামু অ আন্তুম্ লা-তা’লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.১৯ নিশ্চয় যারা এটা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়–ক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।
وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَيۡڪُمۡ وَرَحۡمَتُهُ ۥ وَأَنَّ ٱللَّهَ رَءُوفٌ۬ رَّحِيمٌ۬ ٢٠
আরবি উচ্চারণ ২৪.২০। অলাওলা-ফাদ্ব্লু ল্লা-হি ‘আলাইকুম্ অরহ্মাতুহূ অআন্নাল্লা-হা রায়ূর্ফু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২০ আর যদি তোমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া না থাকত, (তাহলে তোমরা ধ্বংস হয়ে যেতে) আর নিশ্চয় আল্লাহ বড় মেহেরবান, পরম দয়ালু।
۞ يَـٰٓأَيُّہَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّبِعُواْ خُطُوَٲتِ ٱلشَّيۡطَـٰنِۚ وَمَن يَتَّبِعۡ خُطُوَٲتِ ٱلشَّيۡطَـٰنِ فَإِنَّهُ ۥ يَأۡمُرُ بِٱلۡفَحۡشَآءِ وَٱلۡمُنكَرِۚ وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُ ۥ مَا زَكَىٰ مِنكُم مِّنۡ أَحَدٍ أَبَدً۬ا وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ يُزَكِّى مَن يَشَآءُۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ۬ ٢١
আরবি উচ্চারণ ২৪.২১। ইয়া য় আইয়্যুহা ল্লাযীনা আ-মানূ লা-তাত্তাবিঊ’ খুতুওয়া-তিশ্ শাইত্বোয়া-ন্; অমাইঁ ইয়াত্তাবি’ খুতুওয়া-তিশ্ শাইত্বোয়া-নি ফাইন্নাহূ ইয়ামুরু বিলফাহ্শা-য়ি অল্মুর্ন্কা; অ লাওলা-ফাদ্ব্লু ল্লা-হি ‘আলাইকুম্ অ রহ্মাতুহূ মা-যাকা- মিন্কুম্ মিন্ আহাদিন্ আবাদাঁও অলা-কিন্নাল্লা-হা ইয়ুযাক্কী মাইঁ ইয়াশা-য়্; অল্লা-হু সামী‘ঊন্ ‘আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২১ হে মুমিনগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্কসমূহ অনুসরণ করো না। আর যে শয়তানের পদাঙ্কসমূহ অনুসরণ করবে, নিশ্চয় সে অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেবে। আর যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া না থাকত, তাহলে তোমাদের কেউই কখনো পবিত্র হতে পারত না; কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন, পবিত্র করেন। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।
وَلَا يَأۡتَلِ أُوْلُواْ ٱلۡفَضۡلِ مِنكُمۡ وَٱلسَّعَةِ أَن يُؤۡتُوٓاْ أُوْلِى ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِينَ وَٱلۡمُهَـٰجِرِينَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِۖ وَلۡيَعۡفُواْ وَلۡيَصۡفَحُوٓاْۗ أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغۡفِرَ ٱللَّهُ لَكُمۡۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ۬ رَّحِيمٌ ٢٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.২২। অলা-ইয়াতালি উলুল্ ফাদ্ব্লি মিন্কুম্ অস্সা‘আতি আই ইয়ুতূ য় উলিল ক্বর্ ুবা-অল্ মাসাকীনা অল্ মুহা-জ্বিরীনা ফী সাবীলিল্লা-হি অল্ ইয়া’ফূ অল্ ইয়াছ্ফাহূ; আলা-তুহিবুনা আইঁ ইয়াগ্ফিরল্লা-হু লাকুম্; অল্লা-হু গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২২ আর তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদা ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন এমন কসম না করে যে, তারা নিকটাত্মীয়দের, মিসকীনদের ও আল্লাহর পথে হিজরতকারীদের কিছুই দেবে না। আর তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করে দেন? আর আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَرۡمُونَ ٱلۡمُحۡصَنَـٰتِ ٱلۡغَـٰفِلَـٰتِ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ لُعِنُواْ فِى ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأَخِرَةِ وَلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِيمٌ۬ ٢٤٢٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৩। ইন্নাল্লাযীনা ইর্য়ামূনাল্ মুহ্ছোয়ানা-তিল্ গ-ফিলা-তিল্ মুমিনাতি লু‘ইনূ ফিদ্দুন্ইয়া- অল্ আ-খিরতি অলাহুম্ ‘আযা-বুন্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৩ যারা সচ্চরিত্রা সরলমনা মুমিন নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত। আর তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব।
يَوۡمَ تَشۡہَدُ عَلَيۡہِمۡ أَلۡسِنَتُهُمۡ وَأَيۡدِيہِمۡ وَأَرۡجُلُهُم بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٢٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৪। ইয়াওমা তাশ্হাদু ‘আলাইহিম্ আল্সিনাতুহুম্ অআইদীহিম্ অর্আজুলুহুম্ বিমা-কানূ ইয়া’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৪ যেদিন তাদের জিহ্বাগুলো, তাদের হাতগুলো ও তাদের পাগুলো তারা যা করত, সে ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে।
يَوۡمَٮِٕذٍ۬ يُوَفِّيہِمُ ٱللَّهُ دِينَهُمُ ٱلۡحَقَّ وَيَعۡلَمُونَ أَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡحَقُّ ٱلۡمُبِينُ ٢٥
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৫। ইয়াওমায়িযিইঁ ইয়ুওয়াফ্ফী হিমু ল্লা-হু দীনাহুমুল্ হাকক্ব অ ইয়া’লামূনা আন্নাল্লা-হা হুওয়াল্ হাককুল্ মুবীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৫ সেদিন আল্লাহ তাদেরকে তাদের ন্যায্য প্রতিদান পুরোপুরি দিয়ে দেবেন, আর তারা জানবে যে, আল্লাহই সুস্পষ্ট সত্য।
ٱلۡخَبِيثَـٰتُ لِلۡخَبِيثِينَ وَٱلۡخَبِيثُونَ لِلۡخَبِيثَـٰتِۖ وَٱلطَّيِّبَـٰتُ لِلطَّيِّبِينَ وَٱلطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَـٰتِۚ أُوْلَـٰٓٮِٕكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَۖ لَهُم مَّغۡفِرَةٌ۬ وَرِزۡقٌ۬ ڪَرِيمٌ۬ ٢٦
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৬। আল্ খবীছা-তু লিল্খবীছীনা অল্ খবীছূনা লিল্ খবীছা-তি অত্ত্বোয়াইয়্যিবা-তু লিত্ত্বোয়াইয়্যিবীনা অত্ত্বোয়াইয়্যিবূনা লিত্ত্বোয়াইয়্যিবা-তি উলা-য়িকা মুর্বারায়ূনা মিম্মা-ইয়াকু লূন্; লাহুম্ মাগ্ফিরাতুঁও অরিয্কুন্ কারীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৬ দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য। আর সচ্চরিত্রা নারীরা সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা নারীদের জন্য; লোকেরা যা বলে, তারা তা থেকে মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক।
يَـٰٓأَيُّہَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَدۡخُلُواْ بُيُوتًا غَيۡرَ بُيُوتِڪُمۡ حَتَّىٰ تَسۡتَأۡنِسُواْ وَتُسَلِّمُواْ عَلَىٰٓ أَهۡلِهَاۚ ذَٲلِكُمۡ خَيۡرٌ۬ لَّكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ ٢٧
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৭। ইয়া য় আইয়্যু হাল্লাযীনা আ-মানূ লা-তাদ্খুলূ বুইয়ূতান্ গইরা বুইয়ূতিকুম্ হাত্তা-তাস্তানিসূ অতুসাল্লিমূ ‘আলা য় আহ্লিহা-; যা-লিকুম্ খইরুল্লাকুম, লা‘আল্লাকুম্ তাযাক্কারূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৭ হে মুমিনগণ, তোমরা নিজদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহে প্রশে করো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
فَإِن لَّمۡ تَجِدُواْ فِيهَآ أَحَدً۬ا فَلَا تَدۡخُلُوهَا حَتَّىٰ يُؤۡذَنَ لَكُمۡۖ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ٱرۡجِعُواْ فَٱرۡجِعُواْۖ هُوَ أَزۡكَىٰ لَكُمۡۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ عَلِيمٌ۬ ٢٨
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৮। ফাইল্লাম্ তাজ্বিদূ ফীহা য় আহ্দান্ ফালা-তাদ্খুলূহা-হাত্তা-ইয়ূ যানা লাকুম্ অইন্ ক্বীলা লাকুর্মুজ্বি‘ঊ র্ফাজ্বি‘ঊ হুঅ আয্কা-লাকুম্ অল্লা-হু বিমা-তা’মালূনা ‘আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৮ অতঃপর যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি তোমাদেরকে বলা হয়, ‘ফিরে যাও’ তাহলে ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্র। তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।
لَّيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٌ أَن تَدۡخُلُواْ بُيُوتًا غَيۡرَ مَسۡكُونَةٍ۬ فِيہَا مَتَـٰعٌ۬ لَّكُمۡۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ مَا تُبۡدُونَ وَمَا تَكۡتُمُونَ ٢٩
আরবি উচ্চারণ ২৪.২৯। লাইসা ‘আলাইকুম্ জুনা-হুন্ আন্ তাদ্খুলূ বুইয়ূতান্ গইর মাস্কূনাতিন্ ফীহা-মাতা-‘উল্ লাকুম্; অল্লা-হু ইয়া’লামু মা-তুব্দূনা অমা- তাক্তুমূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.২৯ যে ঘরে কেউ বাস করে না, তাতে তোমাদের কোন ভোগসামগ্রী থাকলে, সেখানে তোমাদের প্রবেশে কোন পাপ হবে না। আর আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ কর আর যা তোমরা গোপন কর।
قُل لِّلۡمُؤۡمِنِينَ يَغُضُّواْ مِنۡ أَبۡصَـٰرِهِمۡ وَيَحۡفَظُواْ فُرُوجَهُمۡۚ ذَٲلِكَ أَزۡكَىٰ لَهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا يَصۡنَعُونَ ٣٠
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩০। কুল্ লিল্মুমিনীনা ইয়াগুদ্ব্দ্বূ মিন্ আব্ছোয়া-রিহিম্ অইয়াহ্ফাজূ ফুরূজ্বাহুম্ যা- লিকা আয্কা-লাহুম্ ইন্নাল্লা-হা খবীরুম্ বিমা-ইয়াছ্নাঊ’ন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩০ মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।
وَقُل لِّلۡمُؤۡمِنَـٰتِ يَغۡضُضۡنَ مِنۡ أَبۡصَـٰرِهِنَّ وَيَحۡفَظۡنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَاۖ وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِہِنَّۖ وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوۡ ءَابَآٮِٕهِنَّ أَوۡ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوۡ أَبۡنَآٮِٕهِنَّ أَوۡ أَبۡنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوۡ إِخۡوَٲنِهِنَّ أَوۡ بَنِىٓ إِخۡوَٲنِهِنَّ أَوۡ بَنِىٓ أَخَوَٲتِهِنَّ أَوۡ نِسَآٮِٕهِنَّ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَـٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّـٰبِعِينَ غَيۡرِ أُوْلِى ٱلۡإِرۡبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفۡلِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يَظۡهَرُواْ عَلَىٰ عَوۡرَٲتِ ٱلنِّسَآءِۖ وَلَا يَضۡرِبۡنَ بِأَرۡجُلِهِنَّ لِيُعۡلَمَ مَا يُخۡفِينَ مِن زِينَتِهِنَّۚ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٣١
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩১। অকুল্ লিল্মুমিনা-তি ইয়াগ্দ্বুদ্ব্না মিন্ আব্ছোয়া- রিহিন্না অইয়াহ্ফাজ্না ফুরূজ্বাহুন্না অলা-ইয়ুব্দীনা যীনাতাহুন্না ইল্লা-মা- জোয়াহারা মিন্হা-অল্ইয়াদ্ব্রিব্না বিখুমুরিহিন্না ‘আলা-জুইয়ূবিহিন্না অলা-ইয়ুব্দীনা যীনাতাহুন্না ইল্লা-লিবু‘ঊলাতিহিন্না আও আ-বা-য়ি হিন্না আও আ-বা-য়ি বু‘ঊলাতিহিন্না আও আব্না- য়িহিন্না আও আব্না-য়ি বু‘ঊ লাতিহিন্না আও ইখ্ওয়া-নিহিন্না আও বানীয় ইখ্ওয়ানিহিন্না আও বানী য় আখাওয়া-তিহিন্না আও নিসা-য়িহিন্না আও মা-মালাকাত্ আইমা-নুহুন্না আওয়িত্তা-বি‘ঈনা গইরি উলিল্ র্ইবাতি মির্না রিজ্বা-লি আওয়িত্ত্বিফ্লি ল্লাযীনা লাম্ ইয়াজ্ হারূ ‘আলা-‘আওরা-তিন নিসা-য়ি অলা- ইয়াদ্ব্রিব্না বির্আজুলিহিন্না লিইয়ু’লামা মা-ইয়ুখ্ফীনা মিন্ যীনাতিহিন্না; অতূবূ য় ইলা ল্লা-হি জ্বামী‘আন্ আইইয়ুহাল্ মুমিনূনা লা‘আল্লাকুম্ তুফ্লিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩১ আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
وَأَنكِحُواْ ٱلۡأَيَـٰمَىٰ مِنكُمۡ وَٱلصَّـٰلِحِينَ مِنۡ عِبَادِكُمۡ وَإِمَآٮِٕڪُمۡۚ إِن يَكُونُواْ فُقَرَآءَ يُغۡنِهِمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۗ وَٱللَّهُ وَٲسِعٌ عَلِيمٌ۬ ٣٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩২। অআন্কিহুল্ আইয়া-মা-মিন্কুম্ অছ্ছোয়া-লিহীনা মিন্ ‘ইবা-দিকুম্ অইমা-য়িকুম্; ইঁ ইয়াকূনূ ফুক্বার-য়া ইয়ুগ্নিহিমুল্লা-হু মিন্ ফাদ্ব্লিহ্; অল্লা-হু ওয়া-সি‘উন্ ‘আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩২ আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।
وَلۡيَسۡتَعۡفِفِ ٱلَّذِينَ لَا يَجِدُونَ نِكَاحًا حَتَّىٰ يُغۡنِيَہُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۗ وَٱلَّذِينَ يَبۡتَغُونَ ٱلۡكِتَـٰبَ مِمَّا مَلَكَتۡ أَيۡمَـٰنُكُمۡ فَكَاتِبُوهُمۡ إِنۡ عَلِمۡتُمۡ فِيہِمۡ خَيۡرً۬اۖ وَءَاتُوهُم مِّن مَّالِ ٱللَّهِ ٱلَّذِىٓ ءَاتَٮٰكُمۡۚ وَلَا تُكۡرِهُواْ فَتَيَـٰتِكُمۡ عَلَى ٱلۡبِغَآءِ إِنۡ أَرَدۡنَ تَحَصُّنً۬ا لِّتَبۡتَغُواْ عَرَضَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۚ وَمَن يُكۡرِههُّنَّ فَإِنَّ ٱللَّهَ مِنۢ بَعۡدِ إِكۡرَٲهِهِنَّ غَفُورٌ۬ رَّحِيمٌ۬ ٣٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৩। অল্ ইয়াস্তা’ ফিফিল্লাযীনা লা-ইয়াজ্বিদূনা নিকা-হান্ হাত্তা-ইয়ুগ্নিয়াহুমুল্ লা-হু মিন্ ফাদ্ব্লিহ্; অল্লাযীনা ইয়াব্তাগূনাল্ কিতা-বা মিম্মা-মালাকাত্ আইমা-নুকুম্ ফাকা-তিবূহুম্ ইন্ ‘আলিম্তুম্ ফীহিম্ খইরঁও অ আ-তূহুম্ মিম্মা-লিল্লা-হিল্লাযী য় আ-তা-কুম্; অলা-তুক্রিহূ ফাতাইয়া-তিকুম্ ‘আলাল্ বিগা-য়ি ইন্ আরাদ্না তাহাছ্ছুনাল্লি তাব্তাগূ ‘আরাদ্বোয়াল্ হাইয়া-তি দ্দুন্ইয়া-; অ মাইঁ ইয়ুক্রিহ্ হুন্না ফাইন্না ল্লা-হা মিম্ বা’দি ইক্র-হিহিন্না গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৩ আর যাদের বিবাহের সামর্থ্য নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে। আর তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চায় তাদের সাথে তোমরা লিখিত চুক্তি কর, যদি তোমরা তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে বলে জানতে পার এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদেরকে দাও। তোমাদের দাসীরা সতীত্ব রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের কামনায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না। আর যারা তাদেরকে বাধ্য করবে, নিশ্চয় তাদেরকে বাধ্য করার পর আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
وَلَقَدۡ أَنزَلۡنَآ إِلَيۡكُمۡ ءَايَـٰتٍ۬ مُّبَيِّنَـٰتٍ۬ وَمَثَلاً۬ مِّنَ ٱلَّذِينَ خَلَوۡاْ مِن قَبۡلِكُمۡ وَمَوۡعِظَةً۬ لِّلۡمُتَّقِينَ ٣٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৪। অলাক্বদ্ আন্যাল্না য় ইলাইকুম্ আ-ইয়া-তিম্ মুবাইয়্যিনা-তিঁও অমাছালাম্ মিনাল্লাযীনা খলাও মিন্ ক্বব্লিকুম্ অমাও‘ইজোয়াতাল্লিল্ মুত্তাক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৪ আর নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে নাযিল করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ এবং তোমাদের পূর্বে যারা চলে গেছে তাদের দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ।
۞ ٱللَّهُ نُورُ ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ مَثَلُ نُورِهِۦ كَمِشۡكَوٰةٍ۬ فِيہَا مِصۡبَاحٌۖ ٱلۡمِصۡبَاحُ فِى زُجَاجَةٍۖ ٱلزُّجَاجَةُ كَأَنَّہَا كَوۡكَبٌ۬ دُرِّىٌّ۬ يُوقَدُ مِن شَجَرَةٍ۬ مُّبَـٰرَڪَةٍ۬ زَيۡتُونَةٍ۬ لَّا شَرۡقِيَّةٍ۬ وَلَا غَرۡبِيَّةٍ۬ يَكَادُ زَيۡتُہَا يُضِىٓءُ وَلَوۡ لَمۡ تَمۡسَسۡهُ نَارٌ۬ۚ نُّورٌ عَلَىٰ نُورٍ۬ۗ يَہۡدِى ٱللَّهُ لِنُورِهِۦ مَن يَشَآءُۚ وَيَضۡرِبُ ٱللَّهُ ٱلۡأَمۡثَـٰلَ لِلنَّاسِۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيمٌ۬ ٣٥
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৫। আল্লা-হু নূরুস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্ব্; মাছালু নূরিহী কামিশ্কা-তিন্ ফীহা-মিছ্বাহ্; আল্ মিছ্বা-হু ফী যুজ্বা-জ্বাহ্; আয্যুজ্বা-জ্বাতু কাআন্নাহা-কাওকাবুন্ র্দুরিইয়ুঁই ইয়ূক্বদু মিন্ শাজারতিম্ মুবা-রকাতিন্ ইতূনাতিল্লা-র্শাক্বিয়্যাতিঁও অলা-র্গবিয়াতিঁ ইয়াকা-দু যাইতুহা-ইয়ুদ্বী-য়ু অলাও লাম্ তাম্সাস্হু নার্-; নূরুন্ ‘আলা র্নূ; ইয়াহ্দিল্লা-হু লিনূরিহী মাই ইঁয়াশা-য়্; অইয়াদ্ব্রিবুল্লা-হুল্ আম্ছা-লা লিন্না-স্; অল্লা-হু বিকুল্লি শাইয়িন্ ‘আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৫ আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনের নূর। তাঁর নূরের উপমা একটি তাকের মতই। তাতে রয়েছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি রয়েছে একটি চিমনির মধ্যে। চিমনিটি উজ্জ্বল তারকার মতই। প্রদীপটি বরকতময় যাইতূন গাছের তেল দ্বারা জ্বালানো হয়, যা পূর্ব দিকেরও নয় এবং পশ্চিম দিকেরও নয়। এর তেল যেন আলো বিকিরণ করে, যদিও তাতে আগুন স্পর্শ না করে। নূরের উপর নূর। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিদায়াত করেন তাঁর নূরের দিকে। আর আল্লাহ মানুষের জন্য উপমাসমূহ উপস্থাপন করেন। আর আল্লাহ প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
فِى بُيُوتٍ أَذِنَ ٱللَّهُ أَن تُرۡفَعَ وَيُذۡڪَرَ فِيہَا ٱسۡمُهُ ۥ يُسَبِّحُ لَهُ ۥ فِيہَا بِٱلۡغُدُوِّ وَٱلۡأَصَالِ ٣٦
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৬। ফী বুইয়ূতিন্ আযিনাল্লা-হু আন্ তুরফা‘আ অ ইয়ুয্কারা ফীহাস্মুহূ ইয়ুসাব্বিহু লাহূ ফীহা-বিল্গুদুওয়্যি অল্ আ-ছোয়া-ল্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৬ সেসব ঘরে যাকে সমুন্নত করতে এবং যেখানে আল্লাহর নাম যিক্র করতে আল্লাহই অনুমতি দিয়েছেন। সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর তাসবীহ পাঠ করে-
رِجَالٌ۬ لَّا تُلۡهِيہِمۡ تِجَـٰرَةٌ۬ وَلَا بَيۡعٌ عَن ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَإِقَامِ ٱلصَّلَوٰةِ وَإِيتَآءِ ٱلزَّكَوٰةِۙ يَخَافُونَ يَوۡمً۬ا تَتَقَلَّبُ فِيهِ ٱلۡقُلُوبُ وَٱلۡأَبۡصَـٰرُ ٣٧
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৭। রিজ্বা-লু ল্লা-তুল্হীহিম্ তিজ্বা-রতুঁও অলা-বাই‘উন্ ‘আন্ যিক্রিল্লা-হি অইক্বা-মিছ্ ছলা-তি অই-তা-য়িয্ যাকা- তি ইয়াখা ফূনা ইয়াওমান্ তাতাক্বাল্লাবু ফীহিল্ কুলূবু অল্ আব্ছোয়ার্-।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৭ সেসব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিক্র, সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে না। তারা সেদিনকে ভয় করে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে।
لِيَجۡزِيَہُمُ ٱللَّهُ أَحۡسَنَ مَا عَمِلُواْ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضۡلِهِۦۗ وَٱللَّهُ يَرۡزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيۡرِ حِسَابٍ۬ ٣٨
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৮। লিইয়াজ যিয়াহুমুল্লা-হু আহ্সানা মা-‘আমিলূ অ ইয়াযীদাহুম্ মিন্ ফাদ্ব্লিহ্; অল্লা-হু ইর্য়াযুকু মাইঁ ইয়াশা-য়ু বিগাইরি হিসা-ব্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৮ যাতে তাদের কৃত উত্তম আমলের জন্য আল্লাহ তাদেরকে প্রতিদান দেন এবং তিনি স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন অপরিমিত রিয্ক দান করেন।
وَٱلَّذِينَ ڪَفَرُوٓاْ أَعۡمَـٰلُهُمۡ كَسَرَابِۭ بِقِيعَةٍ۬ يَحۡسَبُهُ ٱلظَّمۡـَٔانُ مَآءً حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَهُ ۥ لَمۡ يَجِدۡهُ شَيۡـًٔ۬ا وَوَجَدَ ٱللَّهَ عِندَهُ ۥ فَوَفَّٮٰهُ حِسَابَهُ ۥۗ وَٱللَّهُ سَرِيعُ ٱلۡحِسَابِ ٣٩
আরবি উচ্চারণ ২৪.৩৯। অল্লাযীনা কাফারূ য় আ’মা-লুহুম্ কাসার-বিম্ বিক্বীআতিঁ ইয়াহ্সাবুহুজ্ জোয়াম্য়া-নু মা-য়্; হাত্তা য় ইযা-জ্বা-য়াহূ লাম্ ইয়াজিদ্হু শাইয়াঁও অঅজ্বাদা ল্লা-হা ‘ইন্দাহূ ফাওয়াফ্ফা-হু হিসা-বাহ্; অল্লাহু সারীউ’ল্ হিসাব্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৩৯ আর যারা কুফরী করে, তাদের আমলসমূহ মরুভূমির মরিচিকার মত, পিপাসিত ব্যক্তি যাকে পানি মনে করে। অবশেষে যখন সে তার কাছে আসবে, তখন সে দেখবে সেটা কিছুই নয়। আর সে সেখানে আল্লাহকে দেখতে পাবে। অতঃপর তিনি তাকে তার হিসাব পরিপূর্ণ করে দেবেন। আর আল্লাহ অতি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
أَوۡ كَظُلُمَـٰتٍ۬ فِى بَحۡرٍ۬ لُّجِّىٍّ۬ يَغۡشَٮٰهُ مَوۡجٌ۬ مِّن فَوۡقِهِۦ مَوۡجٌ۬ مِّن فَوۡقِهِۦ سَحَابٌ۬ۚ ظُلُمَـٰتُۢ بَعۡضُہَا فَوۡقَ بَعۡضٍ إِذَآ أَخۡرَجَ يَدَهُ ۥ لَمۡ يَكَدۡ يَرَٮٰهَاۗ وَمَن لَّمۡ يَجۡعَلِ ٱللَّهُ لَهُ ۥ نُورً۬ا فَمَا لَهُ ۥ مِن نُّورٍ ٤٠
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪০। আও কাজুলুমা-তিন্ ফী বাহ্রিল্লুজ্জ্বিয়্যিইঁ ইয়াগ্শাহু মাওজুম্ মিন্ ফাওক্বিহী মাওজ্বুম্ মিন্ ফাওক্বিহী সাহা-ব্; জুলুমা-তুম্ বা’দ্বুহা-ফাওক্ব বা’দ্ব্; ইযা য় আখ্রজ্বা ইয়াদাহূ লাম্ ইয়াক্বাদ্ ইয়ার-হা-; অমাল্ লাম্ইয়াজ্ব্ ‘আলিল্লা-হু লাহূ নূরান্ ফামা লাহূ মিন্ র্নূ।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪০ অথবা (তাদের আমলসমূহ) গভীর সমূদ্রে ঘনিভূত অন্ধকারের মত, যাকে আচ্ছন্ন করে ঢেউয়ের উপরে ঢেউ, তার উপরে মেঘমালা। অনেক অন্ধকার; এক স্তরের উপর অপর স্তর। কেউ হাত বের করলে আদৌ তা দেখতে পায় না। আর আল্লাহ যাকে নূর দেন না তার জন্য কোন নূর নেই।
أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يُسَبِّحُ لَهُ ۥ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱلطَّيۡرُ صَـٰٓفَّـٰتٍ۬ۖ كُلٌّ۬ قَدۡ عَلِمَ صَلَاتَهُ ۥ وَتَسۡبِيحَهُ ۥۗ وَٱللَّهُ عَلِيمُۢ بِمَا يَفۡعَلُونَ ٤١
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪১। আলাম্ তারা আন্নাল্লা-হা ইয়ুসাব্বিহু লাহূ মান্ ফিস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্বি অত্ব ্ত্বোয়াইরু ছোয়া-ফ্ ফা-ত্; কুল্লুন্ ক্বাদ্ ‘আলিমা ছলা-তাহূ অ তাস্বীহাহ্; অল্লা-হু ‘আলীমুম্ বিমা-ইয়াফ্‘আলূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪১ তুমি কি দেখনি যে, আসমান ও যমীনে যারা আছে তারা এবং সারিবদ্ধ হয়ে উড়ন্ত পাখিরা আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করে? প্রত্যেকেই তাঁর সালাত ও তাসবীহ জানে। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত।
وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلۡمَصِيرُ ٤٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪২। অ লিল্লা-হি মুল্কুস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্বি অ ইলাল্ লা-হিল্ মার্ছী।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪২ আর আসমান ও যমীনের মালিকানা আল্লাহর জন্যই। আর আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তন।
أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يُزۡجِى سَحَابً۬ا ثُمَّ يُؤَلِّفُ بَيۡنَهُ ۥ ثُمَّ يَجۡعَلُهُ ۥ رُكَامً۬ا فَتَرَى ٱلۡوَدۡقَ يَخۡرُجُ مِنۡ خِلَـٰلِهِۦ وَيُنَزِّلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مِن جِبَالٍ۬ فِيہَا مِنۢ بَرَدٍ۬ فَيُصِيبُ بِهِۦ مَن يَشَآءُ وَيَصۡرِفُهُ ۥ عَن مَّن يَشَآءُۖ يَكَادُ سَنَا بَرۡقِهِۦ يَذۡهَبُ بِٱلۡأَبۡصَـٰرِ ٤٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৩। আলাম্ তার আন্নাল্লা-হা ইয়ুয্জ্বী সাহা-বান্ ছুম্মা ইয়ুআল্লিফু বাইনাহূ ছুম্মা ইয়াজ‘আলুহূ রুকা-মান্ ফাতারল্ অদ্ক ইয়াখ্রুজুমিন্ খিলা-লিহী অইয়ুনায্যিলু মিনাস্ সামা-য়ি মিন্ জ্বিবা-লিন্ ফীহা- মিম্ বারদিন্ ফাইয়ুছীবু বিহী মাইঁ ইয়াশা-য়ু অইয়াছ্রিফুহূ ‘আঁম্ মাইঁ ইয়াশা-য়্; ইয়াকা-দু সানা-র্বাক্বিহী ইয়ায্হাবু বিল্ আব্ছোয়ার্-।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৩ তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ মেঘমালাকে পরিচালিত করেন, তারপর তিনি সেগুলোকে একত্রে জুড়ে দেন, তারপর সেগুলো স্তুপীকৃত করেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার মধ্য থেকে বৃষ্টির ফোঁটা বের হয়। আর তিনি আকাশে স্থিত মেঘমালার পাহাড় থেকে শিলা বর্ষণ করেন। তারপর তা দ্বারা যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন। আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা সরিয়ে দেন। এর বিদ্যুতের ঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়।
يُقَلِّبُ ٱللَّهُ ٱلَّيۡلَ وَٱلنَّهَارَۚ إِنَّ فِى ذَٲلِكَ لَعِبۡرَةً۬ لِّأُوْلِى ٱلۡأَبۡصَـٰرِ ٤٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৪। ইয়ুক্বল্লিবু ল্লা-হুল্ লাইলা অন্নাহার্-; ইন্না ফী যা-লিকা লা-‘ইব্রতাল্লি উলিল্ আব্ছোয়ার্-।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৪ আল্লাহ দিন ও রাতের আবর্তন ঘটান, নিশ্চয়ই এতে অন্তরদৃষ্টিসম্পন্নদের জন্য শিক্ষা রয়েছে।
وَٱللَّهُ خَلَقَ كُلَّ دَآبَّةٍ۬ مِّن مَّآءٍ۬ۖ فَمِنۡہُم مَّن يَمۡشِى عَلَىٰ بَطۡنِهِۦ وَمِنۡہُم مَّن يَمۡشِى عَلَىٰ رِجۡلَيۡنِ وَمِنۡہُم مَّن يَمۡشِى عَلَىٰٓ أَرۡبَعٍ۬ۚ يَخۡلُقُ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ ڪُلِّ شَىۡءٍ۬ قَدِيرٌ۬ ٤٥
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৫। অল্লা-হু খলাক্ব কুল্লা-দা-ব্বাতিম্ মিম্ মা-য়িন্ ফামিন্হুম্ মাইঁ ইয়াম্শী ‘আলা য় বাত্ব্্িনহী অ মিন্হুম্ মাইঁ ইয়াম্শী ‘আলা-রিজলাইনি অ মিন্হুম্ মাইঁ ইয়াম্শী ‘আলা য় র্আবা’; ইয়াখ্লুকুল্লা-হু মা- ইয়াশা-য়্; ইন্নাল্লা-হা ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বর্দী।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৫ আর আল্লাহ প্রত্যেক জীবকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাদের কোনটি পেটে ভর দিয়ে চলে, কোনটি চলে দু’পায়ের উপর, আবার কোনটি চার পায়ের উপর চলে। আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
لَّقَدۡ أَنزَلۡنَآ ءَايَـٰتٍ۬ مُّبَيِّنَـٰتٍ۬ۚ وَٱللَّهُ يَہۡدِى مَن يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٲطٍ۬ مُّسۡتَقِيمٍ۬ ٤٦
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৬। লাক্বদ্ আন্যাল্না য় আ-ইয়া-তিম্ মুবাইয়্যিনা-ত্; অল্লা-হু ইয়াহ্দী মাই ঁইয়াশা-য়ু ইলা-ছির-ত্বিম্ মুস্তাক্বীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৬ অবশ্যই আমি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছি। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল সঠিক পথ দেখান।
وَيَقُولُونَ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَبِٱلرَّسُولِ وَأَطَعۡنَا ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٌ۬ مِّنۡہُم مِّنۢ بَعۡدِ ذَٲلِكَۚ وَمَآ أُوْلَـٰٓٮِٕكَ بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٤٧
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৭। অ ইয়াকুলূনা আ-মান্না-বিল্লা-হি অর্বিরসূলি অ আত্বোয়া’না ছুম্মা ইয়াতাওয়াল্লা-ফারীক¦ ুম্ মিন্হুম্ মিম্ বা’দি যা-লিক্; অমা য় উলা-য়িকা বিল্ মুমিনীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৭ তারা বলে, ‘আমরা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি এবং আমরা আনুগত্য করেছি’, তারপর তাদের একটি দল এর পরে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর তারা সত্যিকার মুমিন নয়।
وَإِذَا دُعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ لِيَحۡكُمَ بَيۡنَہُمۡ إِذَا فَرِيقٌ۬ مِّنۡہُم مُّعۡرِضُونَ ٤٨
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৮। অ ইযা-দু‘ঊ য় ইলাল্লা-হি অরসূলিহী লিইয়াহ্কুমা বাইনাহুম্ ইযা-ফারীকুম্ মিন্হুম্ মু’রিদ্বূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৮ আর যখন তাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি এ মর্মে আহ্বান করা হয় যে, তিনি তাদের মধ্যে বিচারমীমাংসা করবেন, তখন তাদের একটি দল মুখ ফিরিয়ে নেয়।
وَإِن يَكُن لَّهُمُ ٱلۡحَقُّ يَأۡتُوٓاْ إِلَيۡهِ مُذۡعِنِينَ ٤٩
আরবি উচ্চারণ ২৪.৪৯। অ ইঁ ইয়াকু ল্লাহুমুল্ হাককু ইয়াতূ য় ইলাইহি মুয্‘ঈনীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৪৯ কিন্তু যদি সত্য তাদের পক্ষে থাকে, তাহলে তারা তার কাছে একান্ত বিনীতভাবে ছুটে আসে।
أَفِى قُلُوبِہِم مَّرَضٌ أَمِ ٱرۡتَابُوٓاْ أَمۡ يَخَافُونَ أَن يَحِيفَ ٱللَّهُ عَلَيۡہِمۡ وَرَسُولُهُ ۥۚ بَلۡ أُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٥٠
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫০। আ ফী কুলূবিহিম্ মারাদ্ব ুন্ আর্মি তাবূ য় আম্ ইয়াখ-ফূনা আইঁ ইয়াহীফাল্লা-হু ‘আলাইহিম্ অ রসূলুহ্; বাল্ উলা-য়িকা হুমুজ্ জোয়া-লিমূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫০ তাদের অন্তরে কি ব্যাধি রয়েছে? নাকি তারা সন্দেহ পোষণ করে, না তারা ভয় করে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের উপর যুলম করবেন? বরং তারাই তো যালিম।
إِنَّمَا كَانَ قَوۡلَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذَا دُعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ لِيَحۡكُمَ بَيۡنَهُمۡ أَن يَقُولُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۚ وَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ٥١
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫১। ইন্নামা-কা-না ক্বওলাল্ মুমিনীনা ইযা-দু‘ঊ য় ইলাল্লা-হি অরসূলিহী লিইয়াহ্কুমা বাইনাহুম্ আইঁ ইয়াকু লূ সামি’না- অ‘আত্বোয়া’না-; অউলা-য়িকা হুমুল্ মুফ্লিহূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫১ মুমিনদেরকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি এ মর্মে আহ্বান করা হয় যে, তিনি তাদের মধ্যে বিচার, মীমাংসা করবেন, তাদের কথা তো এই হয় যে, তখন তারা বলে: ‘আমরা শুনলাম ও আনুগত্য করলাম।’ আর তারাই সফলকাম।
وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُ ۥ وَيَخۡشَ ٱللَّهَ وَيَتَّقۡهِ فَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلۡفَآٮِٕزُونَ ٥٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫২। অ মাইঁ ইউত্বি‘ঈল্লা-হা অ রসূলাহূ অ ইয়াখ্শাল্লা-হা অ ইয়াত্তাকহি ফাউলা-য়িকা হুমুল্ ফা-য়িযূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫২ আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর তাকওয়া অবলম্বন করে, তারাই কৃতকার্য।
۞ وَأَقۡسَمُواْ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَيۡمَـٰنِہِمۡ لَٮِٕنۡ أَمَرۡتَہُمۡ لَيَخۡرُجُنَّۖ قُل لَّا تُقۡسِمُواْۖ طَاعَةٌ۬ مَّعۡرُوفَةٌۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ٥٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৩। অ আক্ব্সামূ বিল্লাহি জ্বাহ্দা আইমা-নিহিম্ লায়িন্ আর্মাতাহুম্ লাইয়াখ্রুজুন্; কুল্ লা-তুকসিমূ ত্বোয়া-আ’তুম্ মা’রূফাহ্; ইন্নাল্লা-হা খবীরুম্ বিমা-তা’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৩ আর তারা তাদের সুদৃঢ় শপথের মাধ্যমে আল্লাহর নামে কসম করে বলে যে, ‘তুমি যদি তাদের আদেশ কর তবে তারা বের হবেই। তুমি বল, ‘তোমরা কসম করো না। [তোমাদের] আনুগত্য তো জানাই আছে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত’।
قُلۡ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنَّمَا عَلَيۡهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيۡڪُم مَّا حُمِّلۡتُمۡۖ وَإِن تُطِيعُوهُ تَهۡتَدُواْۚ وَمَا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلۡبَلَـٰغُ ٱلۡمُبِينُ ٥٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৪। কুল্ আত্বী ‘উল্লা-হা অ আত্বী‘র্উ রসূলা ফাইন্ তাওল্লাও ফাইন্নামা- ‘আলাইহি মা-হুম্মিলা অ ‘আলাইকুম্ মা-হুম্মিল্তুম্; অইন্ তুত্বী‘ঊহু তাহ্তাদূ; অমা-‘আর্লা রসূলি ইল্লাল্ বালা-গুল্ মুবীন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৪ বল, ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর।’ তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তবে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَيَسۡتَخۡلِفَنَّهُمۡ فِى ٱلۡأَرۡضِ ڪَمَا ٱسۡتَخۡلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمۡ دِينَہُمُ ٱلَّذِى ٱرۡتَضَىٰ لَهُمۡ وَلَيُبَدِّلَنَّہُم مِّنۢ بَعۡدِ خَوۡفِهِمۡ أَمۡنً۬اۚ يَعۡبُدُونَنِى لَا يُشۡرِكُونَ بِى شَيۡـًٔ۬اۚ وَمَن ڪَفَرَ بَعۡدَ ذَٲلِكَ فَأُوْلَـٰٓٮِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ٥٥
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৫। অ‘আদাল্লা-হু ল্লাযীনা আ-মানূ মিন্কুম্ অ ‘আমিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি লাইয়াস্তাখ্লিফান্নাহুম্ ফিল্ র্আদ্বি কামাস্ তাখ্লাফাল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিহিম্ অলা ইয়ুমাক্কিনান্না লাহুম্ দীনা হুমু ল্লার্যী তাদ্বোয়া-লাহুম্ অলাইয়ুবাদ্দি লান্নাহুম্ মিম্ বা’দি খাওফিহিম্ আম্না-; ইয়া’বুদূ নানী লা- ইয়ুশ্রিকূনা বী শাইয়া-; অমান্ কাফারা বা’দা যা-লিকা ফাউলা-য়িকা হুমুল্ ফা-সিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৫ তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে এ মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে যমীনের প্রতিনিধিত্ব প্রদান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদের এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দীনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তিনি তাদের ভয়-ভীতি শান্তি-নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন। তারা আমারই ইবাদাত করবে, আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আর এরপর যারা কুফরী করবে তারাই ফাসিক।
وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ لَعَلَّڪُمۡ تُرۡحَمُونَ ٥٦
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৬। অআক্বীমুছ্ ছলা-তা অআ-তুয্ যাকা-তা-অ আত্বী‘র্ঊ রসূলা-লা‘আল্লাকুম্ র্তুহামূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৬ আর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হতে পার।
لَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مُعۡجِزِينَ فِى ٱلۡأَرۡضِۚ وَمَأۡوَٮٰهُمُ ٱلنَّارُۖ وَلَبِئۡسَ ٱلۡمَصِيرُ ٥٧
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৭। লা-তাহ্সাবান্নাল্লাযীনা কাফারূ মু’জ্বিযীনা ফিল্ র্আদ্বি অমাওয়া হুমুন্নার্-; অলাবিসাল্ মার্ছী।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৭ তুমি কাফিরদেরকে যমীনে অপারগকারী মনে করো না; তাদের আশ্রয়স্থল আগুন। আর কতই না নিকৃষ্ট এই প্রত্যাবর্তনস্থল!
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لِيَسۡتَـٔۡذِنكُمُ ٱلَّذِينَ مَلَكَتۡ أَيۡمَـٰنُكُمۡ وَٱلَّذِينَ لَمۡ يَبۡلُغُواْ ٱلۡحُلُمَ مِنكُمۡ ثَلَـٰثَ مَرَّٲتٍ۬ۚ مِّن قَبۡلِ صَلَوٰةِ ٱلۡفَجۡرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُم مِّنَ ٱلظَّهِيرَةِ وَمِنۢ بَعۡدِ صَلَوٰةِ ٱلۡعِشَآءِۚ ثَلَـٰثُ عَوۡرَٲتٍ۬ لَّكُمۡۚ لَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ وَلَا عَلَيۡهِمۡ جُنَاحُۢ بَعۡدَهُنَّۚ طَوَّٲفُونَ عَلَيۡكُم بَعۡضُڪُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٍ۬ۚ كَذَٲلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلۡأَيَـٰتِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ۬ ٥٨
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৮। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ লিইয়াস্তা যিন্কুমুল্ লাযীনা মালাকাত্ আইমা-নুকুম্ অল্লাযীনা লাম্ ইয়াব্লুগুল্ হুলুমা মিন্কুম্ ছালা-ছা র্মার-ত্; মিন্ ক্বব্লি ছলা-তিল্ ফাজ¦্রি অ হীনা তাদ্বোয়া‘ঊনা ছিয়া-বাকুম্ মিনাজ্ জোয়াহীরতি অমিম্ বা’দি ছলা-তিল্ ইশা-য়্; ছালা-ছু ‘আওরা-তিল্লাকুম্; লাইসা ‘আলাইকুম্ অলা-‘আলাইহিম্ জুনা হুম্ বা’দা হুন্; ত্বোয়াওয়া- ফূনা ‘আলাইকুম্ বা’দ্বুকুম্ ‘আলা-বা’দ্ব্ কাযা-লিকা ইয়ুবাইয়্যিনু ল্লা-হু লাকুমুল্ আ-ইয়া-ত্; অল্লা-হু আ’লীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৮ হে মুমিনগণ, তোমাদের ডানহাত যার মালিক হয়েছে এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তারা যেন অবশ্যই তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফজরের সালাতের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ, এবং ‘ইশার সালাতের পর; এই তিনটি তোমাদের [গোপনীয়তার] সময়। এই তিন সময়ের পর [অন্য কোন সময়ে বিনা অনুমতিতে আসলে] তোমাদের এবং তাদের কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অন্যের কাছে যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
وَإِذَا بَلَغَ ٱلۡأَطۡفَـٰلُ مِنكُمُ ٱلۡحُلُمَ فَلۡيَسۡتَـٔۡذِنُواْ ڪَمَا ٱسۡتَـٔۡذَنَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَذَٲلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَڪُمۡ ءَايَـٰتِهِۦۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَڪِيمٌ۬ ٥٩
আরবি উচ্চারণ ২৪.৫৯। অ ইযা-বালাগাল্ আত্ব ফা-লূ মিন্কুমুল্ হুলুমা ফাল্ইয়াস্তাযিনূ কামাস্তাযানাল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিহিম্; কাযা-লিকা ইয়ুবাইয়্যিনুল্লা-হু লাকুম্ আ-ইয়া-তিহ্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৫৯ আর তোমাদের সন্তান-সন্ততি যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তখন তারাও যেন অনুমতি প্রার্থনা করে যেমনিভাবে তাদের অগ্রজরা অনুমতি প্রার্থনা করত। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
وَٱلۡقَوَٲعِدُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ ٱلَّـٰتِى لَا يَرۡجُونَ نِكَاحً۬ا فَلَيۡسَ عَلَيۡهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعۡنَ ثِيَابَهُنَّ غَيۡرَ مُتَبَرِّجَـٰتِۭ بِزِينَةٍ۬ۖ وَأَن يَسۡتَعۡفِفۡنَ خَيۡرٌ۬ لَّهُنَّۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ۬ ٦٠
আরবি উচ্চারণ ২৪.৬০। অল্ ক্বওয়া-‘ইদু মিনান্নিসা-য়িল্লা-তী লা-ইর্য়া জু না নিকা-হান্ ফালাইসা ‘আলাইহিন্না জুনা-হুন্ আইঁ ইয়াদ্বোয়া’না ছিয়া-বা হুন্না গইর মুতার্বারিজ্বা-তিম্ বিযীনাহ্; অআইঁ ইয়াস্তাফিফ্না খইরুল্লাহুন্; অল্লা-হু সামী‘উন্ ‘আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৬০ আর বৃদ্ধা নারীরা, যারা বিয়ের প্রত্যাশা করে না, তাদের জন্য কোন দোষ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের কিছু পোশাক খুলে রাখে এবং এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।
لَّيۡسَ عَلَى ٱلۡأَعۡمَىٰ حَرَجٌ۬ وَلَا عَلَى ٱلۡأَعۡرَجِ حَرَجٌ۬ وَلَا عَلَى ٱلۡمَرِيضِ حَرَجٌ۬ وَلَا عَلَىٰٓ أَنفُسِڪُمۡ أَن تَأۡكُلُواْ مِنۢ بُيُوتِڪُمۡ أَوۡ بُيُوتِ ءَابَآٮِٕڪُمۡ أَوۡ بُيُوتِ أُمَّهَـٰتِكُمۡ أَوۡ بُيُوتِ إِخۡوَٲنِڪُمۡ أَوۡ بُيُوتِ أَخَوَٲتِڪُمۡ أَوۡ بُيُوتِ أَعۡمَـٰمِڪُمۡ أَوۡ بُيُوتِ عَمَّـٰتِڪُمۡ أَوۡ بُيُوتِ أَخۡوَٲلِكُمۡ أَوۡ بُيُوتِ خَـٰلَـٰتِڪُمۡ أَوۡ مَا مَلَڪۡتُم مَّفَاتِحَهُ ۥۤ أَوۡ صَدِيقِڪُمۡۚ لَيۡسَ عَلَيۡڪُمۡ جُنَاحٌ أَن تَأۡڪُلُواْ جَمِيعًا أَوۡ أَشۡتَاتً۬اۚ فَإِذَا دَخَلۡتُم بُيُوتً۬ا فَسَلِّمُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِكُمۡ تَحِيَّةً۬ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ مُبَـٰرَڪَةً۬ طَيِّبَةً۬ۚ ڪَذَٲلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَڪُمُ ٱلۡأَيَـٰتِ لَعَلَّڪُمۡ تَعۡقِلُونَ ٦١
আরবি উচ্চারণ ২৪.৬১। লাইসা ‘আলাল্ ‘আমা-হারাজ্বঁও অলা- ‘আলাল্ আ’রজ্বি হারজঁও অলা- ‘আলাল্ মারীদ্বি হারজুও অলা- ‘আলা য় আন্ফুসিকুম্ আন্ তাকুলূ মিম্ বুইয়ূতিকুম্ আও বুইয়ূতি আ-বা-য়িকুম্ আও বুইয়ূতি উম্মাহা-তিকুম্ আও বুইয়ূতি ইখ্ওয়া-নিকুম্ আও বুইয়ূতি আখাওয়া-তিকুম্ আও বুইয়ূতি আ’মা-মিকুম্ আও বুইয়ূতি ‘আম্মা-তিকুম্ আও বুইয়ূতি আখ্ওয়া-লিকুম্ আও বুইয়ূতি খ-লা-তিকুম্ আও মা-মালাক্তুম্ মাফা-তিহাহূ য় আও ছোয়াদ্বীক্বিকুম্; লাইসা ‘আলাইকুম্ জুনা-হুন্ আন্ তাকুলূ জ্বামী‘আন্ আও আশ্তা-তা-; ফাইযা-দাখল্তুম্ বুইয়ূতান্ ফাসাল্লিমূ ‘আলা য় আন্ফুসিকুম্ তাহিয়্যাতাম্ মিন্ ‘ইন্দিল্লা-হি মুবা-রাকাতান্ ত্বোয়াইয়্যিবাহ্; কাযা-লিকা ইয়্যুবাইয়্যিনুল্লা-হু লাকুমুল্ আ-ইয়া-তি লা‘আল্লাকুম্ তা’ক্বিলূন্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৬১ অন্ধের জন্য কোন দোষ নেই, পঙ্গুর জন্য কোন দোষ নেই, রোগাক্রান্তের জন্য কোন দোষ নেই এবং তোমাদের নিজদের জন্যও কোন দোষ নেই যে তোমরা খাবে তোমাদের নিজদের ঘরে, অথবা তোমাদের পিতাদের ঘরে, অথবা তোমাদের মায়েদের ঘরে, অথবা তোমাদের ভাইদের ঘরে, অথবা তোমাদের বোনদের ঘরে, অথবা তোমাদের চাচাদের ঘরে, অথবা তোমাদের ফুফুদের ঘরে, অথবা তোমাদের মামাদের ঘরে, অথবা তোমাদের খালাদের ঘরে, অথবা সেসব ঘরে যার চাবি তোমাদের অধিকারে রয়েছে, অথবা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে। তোমরা একত্রে খাও অথবা আলাদা আলাদা খাও তাতে কোনও দোষ নেই। তবে তোমরা যখন কোন ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা নিজদের উপর সালাম করবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকতপূর্ণ ও পবিত্র অভিবাদনস্বরূপ। এভাবে আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَإِذَا ڪَانُواْ مَعَهُ ۥ عَلَىٰٓ أَمۡرٍ۬ جَامِعٍ۬ لَّمۡ يَذۡهَبُواْ حَتَّىٰ يَسۡتَـٔۡذِنُوهُۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسۡتَـٔۡذِنُونَكَ أُوْلَـٰٓٮِٕكَ ٱلَّذِينَ يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۚ فَإِذَا ٱسۡتَـٔۡذَنُوكَ لِبَعۡضِ شَأۡنِهِمۡ فَأۡذَن لِّمَن شِئۡتَ مِنۡهُمۡ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمُ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ۬ رَّحِيمٌ۬ ٦٢
আরবি উচ্চারণ ২৪.৬২। ইন্নামাল্ মুমিনুনাল্লাযীনা আ-মানূ বিল্লা-হি অরসূলিহী অইযা-কা-নূ মা‘আহূ ‘আলা য় আম্রিন্ জ্বা-মি‘ইল্ লাম্ ইয়ায্হাবূ হাত্তা-ইয়াস্তাযিনূহ্; ইন্নাল্লাযীনা ইয়াস্তাযিনূনাকা উলা-য়িকাল্ লাযীনা ইয়ুমিনূনা বিল্লা-হি অ রসূলিহী ফাইয়াস্ তা’যানূকা লিবা’দ্বি শা’নিহিম্ ফা’যা ল্লিমান্ শি’তা মিন্হুম্ অস্তাগ্ র্ফিলাহুমুল্লা-হ্; ইন্নাল্লা-হা গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৬২ মুমিন শুধু তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান আনে এবং তাঁর সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে থাকলে অনুমতি না নিয়ে চলে যায় না। নিশ্চয় তোমার কাছে যারা অনুমতি চায় তারাই কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে; সুতরাং কোন প্রয়োজনে তারা তোমার কাছে বাইরে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে তোমার যাকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দেবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
لَّا تَجۡعَلُواْ دُعَآءَ ٱلرَّسُولِ بَيۡنَڪُمۡ كَدُعَآءِ بَعۡضِكُم بَعۡضً۬اۚ قَدۡ يَعۡلَمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمۡ لِوَاذً۬اۚ فَلۡيَحۡذَرِ ٱلَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنۡ أَمۡرِهِۦۤ أَن تُصِيبَہُمۡ فِتۡنَةٌ أَوۡ يُصِيبَہُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٦٣
আরবি উচ্চারণ ২৪.৬৩। লাতাজ‘আলূ দু‘আ-র্য়া রসূলি বাইনাকুম্ কাদু‘আ-য়ি বা’দ্বিকুম্ বা’দ্বোয়া-; ক্বাদ্ ইয়া’লামুল্লা-হুল্ লাযীনা ইয়াতাসাল্লালূনা মিন্কুম্ লিওয়া-যান্ ফাল্ইয়াহ্যারি ল্লাযীনা ইয়ুখা-লিফূনা ‘আন্ আম্রিহী য় আন্ তুছীবাহুম্ ফিত্নাতুন্ আও ইয়ুছীবাহুম্ ‘আযা-বুন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৬৩ তোমরা পরস্পরকে যেভাবে ডাকো রাসূলকে সেভাবে ডেকো না; তোমাদের মধ্যে যারা চুপিসারে সরে পড়ে আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে জানেন। অতএব যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে।
أَلَآ إِنَّ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ قَدۡ يَعۡلَمُ مَآ أَنتُمۡ عَلَيۡهِ وَيَوۡمَ يُرۡجَعُونَ إِلَيۡهِ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُواْۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيمُۢ ٦٤
আরবি উচ্চারণ ২৪.৬৪। আলা য় ইন্না লিল্লা-হি মা-ফিস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্ব্; ক্বদ্ ইয়া’লামু মা য় আনতুম্ ‘আলাইহ্; অইয়াওমা ইর্য়ুজ্বা‘ঊনা ইলাইহি ফাইয়ুনাব্বিয়ুহুম্ বিমা-‘আমিলূ; অল্লা-হু বিকুল্লি শাইয়িন্ ‘আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ২৪.৬৪ সাবধান, আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই; তোমরা যে অবস্থায় আছ তা তিনি অবশ্যই জানেন এবং যেদিন তাদেরকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে নেয়া হবে সেদিন তারা যা করত তিনি তাদেরকে তা জানিয়ে দেবেন। আল্লাহ সব কিছু সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
- নামাজে আমরা যা বলি তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
- ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব ও বিধান,ইসলামে কোরবানির যত ফজিলত গুরুত্ব ও শিক্ষা
- বৃষ্টির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, বৃষ্টির নামাজের পর আমল
- ইসতিসকার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, ইসতিসকার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, ইসতিসকার নামাজের পর আমল
- বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান,বাসর রাতের নামাজ
- তাসবিহ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, তাসবিহ সালাতের ফজিলত