বিষয়: Bangladesh Railways Brief History,বাংলাদেশ রেলওয়ে সংক্ষেপ ইতিহাস,বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং স্বর্ণালী ইতিহাস, রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে,তথ্য ও রহস্য – বাংলাদেশ রেলওয়ে ইতিহাস
বাংলাদেশ রেলওয়ে বাংলাদেশে যতগুলো পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে, তন্মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশে রেলব্যবস্থা চালু হয়েছে, সেই ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৬২ সালে।
ইতিহাস ঐতিহ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে
বাংলাদেশে ব্রিটিশ শাসনামল চলাকালীন উনবিংশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন কোম্পানি ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে ব্যবসায়িক কাজের জন্য ক্ষুদ্র পরিসরে রেলপথ স্থাপন করতে থাকে। বাংলাদেশে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কাজ পরিচালনার জন্য ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি প্রথম রেলপথ স্থাপন করে, যেখান থেকে ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশ রেল যুগে পদার্পণ করে।
নামকরণ ও নাম-পরিবর্তন
ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (১৮৬২) প্রথন তার যাত্রা শুরু করার পর বিভিন্ন জেলায় জংশন স্থাপন করে থাকে। পরবর্তীতে, চা শিল্পের অগ্রগতির জন্য আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার মূলে ছিল আসাম রাজ্যের বিভিন্ন চা-প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। এরপরে বিভিন্ন সময়ে অনেক জেলা-উপজেলায় আরও কিছু জংশন স্থাপন করে রেলপথ সুগম করা হয়।
দেশভাগের পরে, অর্থাৎ ১৯৪৭ সালে বেঙ্গল – আসাম রেলওয়ে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। পূর্ব পাকিস্তান উত্তরাধিকার সূত্রে পায় ২,৬০৬.৫৯ কিলোমিটার রেললাইন, যার নামকরণ করা হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (ইবিআর)।
বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পরে রেলওয়ে এর নাম পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে তে পরিচিতি লাভ করে, যা উত্তরাধিকার সূত্রে ২,৮৫৮.৭৩ কিলোমিটার রেলপথ এবং ৪৬৬ টি স্টেশন পায়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ’র বিস্তৃতি
সর্বশেষ ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে সর্বমোট স্টেশন এবং জংশন রয়েছে ৪৫৮ টি। যুগের সাথে তাল মিলয়ে রেলব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে ই- টিকেটিং এর মত বেশ কিছু অত্যাধুনিক সুবিধাদি। এছাড়া আরও আছে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী ২ টি ট্রেন; একটি মৈত্রী এক্সপ্রেস যেটি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ভারতের কলকাতা স্টেশন পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়টি বন্ধন এক্সপ্রেস যেটি খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ থেকে মিতালী এক্সপ্রেস নামে আরেকটি আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করার জন্য ট্রেনের উদ্বোধন করা হয় যেটি ঢাকা-শিলিগুড়ি রুটে চলাচল করে।
আরো ও সাজেশন:-
রেল গাড়ীতে কেউ চড়ুক বা না উঠুক, এর প্রতি অধিকাংশ মানুষের আকর্ষণ কিংবা আগ্রহ রয়েছে। বাঙ্গালীরা এর ব্যতিক্রম নয়। ছোট বড় সবার স্মৃতিতেই রেলগাড়ী একটি বিশেষ জায়গা রয়েছে।
রেলওয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো পরিবহন সংস্থা । ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর চুয়াডাংগা জেলার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়া জেলার জগতি পযর্ন্ত ৫৩:১১ কি:মি: ব্রডগেজ রেল লাইন চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রেলওয়ে যাত্রা শুরু হয়।
রেল খাতের টেকসই উন্নয়ন এবং সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বর্তমান ও ভবষ্যিত্ রেল পরিবহন চাহিদা মেটাতে রেলপথ মন্ত্রণালয় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং সরকারি রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তর রেলপথ মন্ত্রণালয়াধীন দুটি সংস্থা রয়েছে ।
রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস-
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে রেলওয়ের সম্পদ ও জনবলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে নতুন যাত্রা শুরু হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত “রেলওয়ে বোর্ড” কর্তৃক পরিচালিত হতো এবং ১৯৭৩ সালে “যোগাযোগ মন্ত্রণালয়” এর সাথে রেলওয়ে সংযুক্ত হয়।
তত্কালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক নির্দেশনায় যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুতে ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন রেল সংযোগ চালু করার ফলে পশ্চিমাঞ্চলের সাথে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয় হতে “রেলপথ মন্ত্রণালয়” গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্ব ও পশ্চিম, এ দুটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে।
পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর চট্টগ্রামে আর পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহীতে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, পাকশী (পাবনা) ও লালমনিরহাট-এ চারটি বিভাগে বিভক্ত।
বাংলাদেশের ৪৪টি জেলায় রেলপথ রয়েছে. আরো ১৩টি জেলায় রেলপথ নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণের কাজ চলছে (মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা, বান্দরবান ও কক্সবাজার)। ২০৪৫ সাল নাগাদ অন্যান্য জেলাকেও রেলপথ নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে (লক্ষীপুর, শেরপুর, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও ভোলা)।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ২১৫১.৭৯ কিঃমিঃ ও পশ্চিমাঞ্চলে ২১৮৯.৭৯ কিঃমিঃ মোট ৪,৩৪১.৫৮ কিঃ মিঃ রেল লাইন রয়েছে।
সারাদেশে মোট ৪৬৭টি স্টেশন, ১৮০২ টি লেভেল ক্রসিং গেইট রয়েছে। রয়েছে ২০৭টি সচল লোকোমোটিভ ও ৬৩ টি অচল।
বাংলাদেশে ব্রডগেজ ও মিটার গেজ দুই ধরণের রেলপথ রয়েছে। ব্রড গেজের দৈর্ঘ পাশাপাশি ১মিটারের বেশী ও মিটার গেজের দৈর্ঘ্য ১মিটারের কম।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২০৬টি মিটার গেজ ও ১৪৮টি ব্রডগেজসহ মোট ৩৫৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন আছে যার ৬টি আন্ত:দেশীয় ও ৯০টি আন্ত:নগর।
রেলওয়েকে একটি জনবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ৩০.০৬.২০১৩ তারিখে ২০ বছর মেয়াদী একটি মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করে।মাস্টার প্ল্যানে (২০১৬–২০৪৫) ৬ টি পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ৫,৫৩,৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ২৩০টি প্রকল্প অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতি রেখে রেলওয়ে মাস্টার প্ল্যানে অর্ন্তভূক্ত প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
- এক নজরে বাংলাদেশ রেলওয়েঃ
-সারাদেশে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা- ৩৫০ টি।
-মোট আন্তঃনগর ট্রেন- ৯০টি।
-মোট মেইল এক্সপ্রেস এবং কমিউটার ট্রেন- ১৩২ টি।
-মোট লোকাল ট্রেন- ১২৬ টি।
-পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চলাচলকারী মোট আন্তঃনগর ট্রেন- ২৪ টি।
-পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চলাচলকারী মোট মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেন- ০২টি।
-পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চলাচলকারী লোকাল ট্রেন- ০২টি।
-আন্তঃদেশীয় ট্রেন (বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস)- ০৪টি।
-সর্বমোট স্টেশন- ৪৬০টি। - বাংলাদেশ রেলওয়ের সাম্প্রতিক অর্জন সমূহ:
-বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্জিত সাফল্যের সার-সংক্ষেপ:
-নতুন রেল লাইন নির্মাণ ৩৩০.১৫ কি: মি:
-মিটারগেজ রেল লাইন ডুয়েলগেজে রূপান্তর ২৪৮.৫০ কি: মি:
-রেল লাইন পুনর্বাসন/পুন: নির্মাণ ১১৩৫.২৩ কি:মি:
-স্টেশন বিল্ডিং নতুন নির্মাণ ১টি
-স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন/পুন: নির্মাণ ১৭৭টি।
-নতুন রেল সেতু নির্মাণ ২৯৫টি।
-রেল সেতু পুনর্বাসন/পুন:নির্মাণ ৬৪৪টি।
-লোকোমোটিভ সংগ্রহ ৪৬টি (২০টি এমজি ও ২৬টি বিজি) এবং ২০ সেট ডিইএমইউ।
-যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ ২৭০ (১৭০টি বিজি ও ১০০টি এমজি)
-যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন ৪৩০টি ।
-মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ ৫১৬টি এবং ৩০টি ব্রেক ভ্যান।
-মালবাহী ওয়াগন পুনর্বাসন ২৭৭ টি।
-সিগন্যালিং ব্যবস্থা উন্নয়ন ও আধুনিকিকরন ৯০টি স্টেশন।
-সিগন্যালিং ব্যবস্থা পুনর্বাসন ৯টি স্টেশন।
-নতুন ট্রেন চালুকরণ ১১৭টি।
-চলমান ট্রেন সার্ভিস বর্ধিতকরন ৩৬টি
-হুইল লেদ মেশিন (ডুয়েলগেজ) স্থাপন ১টি।
-বঙ্গবন্ধু সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনের জন্য লোড মনিটরিং ডিভাইস সংগ্রহ ২টি।
-দুর্ঘটনা রিলিফ ক্রেন সংগ্রহ ২টি।
-বন্ধ রেলওয়ে সেকশন চালুকরণ ২টি (কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া ও পাঁচুরিয়া-ফরিদপুর)
-অন লাইন এবং মোবাইল টিকেটিং চালুকৃত
-ট্রেনে ট্র্যাকিং ও মনিটরিং সিস্টেম এবং হেল্প লাইন (১৩১)চালুকৃত - বর্তমান বার্ষিক উন্নয়ন র্কমসূচি :
বর্তমান (২০১৮-২০১৯)বার্ষিক উন্নয়ন র্কমসূচিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪০টি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং ০৩টি কারিগরী প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত রয়েছে উক্ত ৪০টি বিনিয়োগ প্রকল্পের মধ্যে জিওবি র্অথায়নে ২১ টি এডিবি অর্থায়নে ৬টি জাইকা অর্থায়নে ২টি ডিআরজিএ অর্থায়নে ২টি এলওসি অর্থায়নে ৫টি ইডিসিএফ অর্থায়নে ১টি ভারতীয় সরকারের অনুদানে ১টি টেন্ডারার্স ফাইন্যান্সিং ১টি এবং চায়না অর্থায়নে ১টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলমান রয়ছে। এছাড়া জিওবি অর্থায়নে ১টি এবং এডিবি অর্থায়নে ২টি কারিগরী প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
রচনা ,প্রবন্ধ | উত্তর লিংক | ভাবসম্প্রসারণ | উত্তর লিংক |
আবেদন পত্র | উত্তর লিংক | অনুচ্ছেদ রচনা | উত্তর লিংক |
চিঠি ও ইমেল | উত্তর লিংক | প্রতিবেদন | উত্তর লিংক |
Paragraph | উত্তর লিংক | Composition | উত্তর লিংক |
Application | উত্তর লিংক | উত্তর লিংক | |
Essay | উত্তর লিংক | Letter | উত্তর লিংক |
এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
- বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা কোনটি?
- ২০২৫ এর সেরা ১০ জন তারকারা গুগলিং সার্চে করে
- বাংলাদেশের সংবিধানের প্রনয়ণের প্রক্রিয়া শুরু হয় কবে? উত্তর-২৩ মার্চ, ১৯৭২,বাংলাদেশের সংবিধান কবে উত্থাপিত হয়? উত্তর- ১২ অক্টোবর, ১৯৭২,গনপরিষদে কবে সংবিধান গৃহীত হয়? উত্তর-০৪ নভেম্বর,১৯৭২,কোন তারিখে বাংলাদেশের সংবিধান বলবৎ হয়? উত্তর-১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২