সূরা হুজরাত সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল হুজরাত আলমল ও ফজিলত, সূরা হুজরাত কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা হুজরাত নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৪৯ সূরা আল – হুজরা

আজকের বিষয়: সূরা হুজরাত সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল হুজরাত আলমল ও ফজিলত, সূরা হুজরাত কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা হুজরাত নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৪৯ সূরা আল – হুজরা

নামকরণ

৪ আয়াতের ( ) বাক্যাংশ থেকে এ সূরার নাম গৃহীত হয়েছে । অর্থাৎ যে সূরার মধ্যে আল হুজরাত শব্দ আছে এটি সেই সূরা ।

নাযিল হওয়ার সময়-কাল

বিভিন্ন থেকে জানা যায় এবং সূরার বিষয়বস্তু থেকেও সমর্থন পাওয়া যায় যে, এ সূরা বিভিন্ন পরিবেশ ও ক্ষেত্রে নাযিল হওয়া হুকুম-আহকাম ও নির্দেশনাসমূহের সমষ্টি । বিষয়বস্তুর সাদৃশ্যের কারণে এগুলোকে এখানে একত্রিত করা হয়েছে । তা ছাড়া বিভিন্ন বর্ণনা থেকে একথাও জানা যায় যে, ঐ সব হুকুম -আহকামের বেশীর ভাগই মাদানী যুগের শেষ পর্যায়ে নাযিল হয়েছে । যেমনঃ ৪আয়াত সম্পর্কে তাফসীরকারদের বর্ণনা হচ্ছে আয়াতটি বনী তামীম গোত্রে সম্পর্কে নাযিল হয়েছিলো যার প্রতিনিধি দল এসে নবীর ( সা) পবিত্র স্ত্রীগণের হুজরা বা গৃহের বাইরে থেকে তাকে ডাকাডাকি শুরু করে দিয়েছিলো । সমস্ত সীরাত গ্রন্থে হিজরী ৯ম সনকে এ প্রতিনিধি দলের আগমনের সময় বলে বর্ণনা করা হয়েছে । অনুরূপ ৬ আয়াত সম্পর্কে বহু সংখ্যক হাদীসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, তা ওয়ালী ইবনে উকবা সম্পর্কে নাযিল হয়েছিলো- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকে নবী মুস্তালিক গোত্র থেকে যাকাত আদায় করে আনতে পাঠিয়েছিলেন । একথা সবারই জানা যে, ওয়ালীদ ইবনে উকবা মক্কা বিজয়ের সময় মুসলমান হয়েছিলেন ।

আলোচ্য বিষয়

এ সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে মুসলমানদেরকে এমন আদব-কায়দা, শিষ্টাচার ও আচরণ শিক্ষা দেয়া যা তাদের ঈমানদারসূলভ স্বভাব চরিত্র ও ভাবমূর্তির উপযুক্ত ও মানানসই ।

আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ব্যাপারে যেসব আদব-কায়দা, ও শিষ্টাচারের দিকে লক্ষ রাখতে হবে প্রথম পাঁচ আয়াতে তাদেরকে তা শিখিয়ে দেয়া হয়েছে ।

এরপর নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, প্রতিটি খবরই বিশ্বাস করা এবং সে অনুসারে কোন কর্মকাণ্ড করে বসা ঠিক নয়, যদি কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কওমের বিরুদ্ধে কোন খবর পাওয়া যায় তাহলে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে খবর পাওয়ার মাধ্যম নির্ভরযোগ্য কি না । নির্ভরযোগ্য না হলে তার ভিত্তিতে কোন তৎপরতা চালানোর পূর্বে খবরটি সঠিক কি না তা যাঁচাই বাছাই করে নিতে হবে ।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


এরপর বলা হয়েছে মুসলমানদের দুটি দল যদি কোন সময় পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তবে সে ক্ষেত্রে অন্য মুসলমানদের কর্মনীতি কি হওয়া উচিত ।

তারপর মুসলমানদেরকে সেসব খারাপ জিনিস থেকে আত্মরক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যা সমাজ জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং যার কারণে পারস্পরিক সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় । একে অপরকে ঠাট্রা বিদ্রূপ করা, বদনাম ও উপহাস করা, খারাপ নামে আখ্যায়িত করা, খারাপ ধারণা পোষণ করা, অন্যে গোপনীয় বিষয় খোঁজাখুঁজি ও অনুসন্ধান করা, অসাক্ষাতে মানুষের বদনাম করা এগুলো এমনতিও গোনাহের কাজ এবং সমাজে বিপর্যয়ও সৃষ্টি করে । আল্লাহ তা’আলা এগুলোকে নাম ধরে ধরে হারাম ঘোষণা করেছেন ।

অতপর গোত্রীয় ও বংশগত বৈষম্যের ওপর আঘাত হানা হয়েছে যা সারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে থাকে । বিভিন্ন জাতি, গোত্র ও বংশের নিজ নিজ মর্যাদা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করা, অন্যদেরকে নিজেদের চেয়ে নিম্নস্তরের মনে করা এবং নিজেদের বড়ত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যদের হেয় করা, -এসব এমন জঘন্য খাসলত যার কারণে পৃথিবী জুলুমে ভরে উঠেছে । আল্লাহ তা’আলা অত্যন্ত ছোট্ট একটি আয়াতে একথা বলে এসব অনাচারের মূলোৎপাটন করেছেন যে, “সমস্ত মানুষ এই মূল উৎস থেকে সৃষ্টি হয়েছে । তাদেকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভিক্ত করা হয়েছে পারস্পরিক পরিচয়ের জন্য, গর্ব ও অহংকার প্রকাশের জন্য নয় এবং একজন মানুষের ওপর আরেকজন মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব লাভের জন্য আর কোন বৈধ ভিত্তি নেই । “

সবশেষে মানুষকে বলা হয়েছে যে, ঈমানের মৌখিক দাবী প্রকৃত জিনিস নয়, বরং সরল মনে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে মানা, কার্যত অনুগত হয়ে থাকা এবং আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর পথে জান ও মাল কুরবানী করা । সত্যকার মু’মিন সে যে এ নীতি ও আচরণ গ্রহণ করে । কিন্তু যারা আন্তরিকভাবে মেনে নেয়া ছাড়াই শুধু মৌখিকভাবে ইসলামকে স্বীকার করে এবং তারপর এমন নীতি ও আচরণ অবলম্বন করে যেন ইসলাম গ্রহণ করে তারা কোন মহা উপকার সাধন করেছে, পৃথিবীতে তারা মুসলমান, হিসেবে গণ্য হতে পারে, সমাজে তাদের সাথে মুসলমানের মত আচরণও করা যেতে পারে, কিন্তু আল্লাহর কাছে তারা মুসলমান হিসেবে গণ্য হতে পারে না ।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ49.1

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১। ইয়া য় আইয়্যুহাল্ লাযীনা আ-মানূ লা-তুক্বাদ্দিমূ বাইনা ইয়াদাইয়িল্লা-হি অরাসূলিহী অত্তাকু ল্লা-হ্ ; ইন্না ল্লা -হা সামী‘উন্ ‘আলীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১ হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রবর্তী হয়ো না এবং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَنْ تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنْتُمْ لَا تَشْعُرُونَ49.2

আরবি উচ্চারণ ৪৯.২। ইয়া য় আইয়ুহাল্ লাযীনা আ-মানূ লা-র্তাফা‘ঊ য় আছওয়া তাকুম্ ফাওক্বা ছোয়াওতিন্ নাবিয়্যি অলা- তাজহারূ লাহূ বিল্ক্বওলি কাজ্বাহ্রি বা’দ্বিকুম্ লিবা’দ্বিন্ আন্ তাহ্বাত্বোয়া আ’মা-লুকুম্ লা-তাশ্‘ঊরূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.২ হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো না এবং তোমরা নিজেরা পরস্পর যেমন উচ্চস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না। এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সকল আমল-নিষ্ফল হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না।

إِنَّ الَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَاتَهُمْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ أُولَئِكَ الَّذِينَ امْتَحَنَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَى لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ49.3

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৩। ইন্নাল্ লাযীনা ইয়াগুদদ্বূনা আছওয়া তাহুম্ ‘ইন্দা রসূলি ল্লা-হি উলা-য়িকাল্ লাযীনাম্ তাহানা ল্লা-হু কুলূ বাহুম্ লিত্তাকওয়া-; লাহুম্ মাগ্ফিরাতুঁও অআজরুন্ ‘আজীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৩ নিশ্চয় যারা আল্লাহর রাসূলের নিকট নিজদের আওয়াজ অবনমিত করে, আল্লাহ তাদেরই অন্তরগুলোকে তাকওয়ার জন্য বাছাই করেছেন, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।

إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِنْ وَرَاءِ الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ49.4

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৪। ইন্নাল্ লাযীনা ইয়ুনা-দূনাকা মিওঁ অরা-য়িল্ হুজুর-তি আক্ছারুহুম্ লা-ইয়া’ক্বিলূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৪ নিশ্চয় যারা তোমাকে হুজরাসমূহের পিছন থেকে ডাকাডাকি করে তাদের অধিকাংশই বুঝে না।

وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا حَتَّى تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ49.5

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৫। অলাও আন্নাহুম্ ছোয়াবরূ হাত্তা- তাখ্রুজ্বা ইলাইহিম্ লাকা-না খইরল্ লাহুম্; অল্লা-হু গফূর্রু রহীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৫ তুমি তাদের কাছে বের হয়ে আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্যধারণ করত, তাহলে সেটাই তাদের জন্য উত্তম হত। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ49.6

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৬। ইয়া য় আইয়্যুহাল্ লাযীনা আ-মানূ য় ইন্ জ্বা-য়া কুম্ ফা-সিকুম্ বিনাবায়িন্ ফাতাবাইয়্যানূ য় আন্ তুছীবূ ক্বাওমাম্ বিজ্বাহা-লাতিন্ ফাতুছ্বিহূ ‘আলা-মা-ফা‘আল্তুম্ না- দিমীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৬ হে ঈমানদারগণ, যদি কোন ফাসিক তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তামরা অজ্ঞতাবশত কোন কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।

وَاعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ اللَّهِ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِي كَثِيرٍ مِنَ الْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ الْإِيمَانَ وَلَكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ الْإِيمَانَ وَزَيَّنَهُ فِي قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ أُولَئِكَ هُمُ الرَّاشِدُونَ49.7

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৭। ওয়া’লামূ য় আন্না ফী কুম্ রাসূলা ল্লা-হ্; লাও ইয়ুত্বীঊ’কুম্ ফী কাছীরিম্ মিনাল্ আম্রি লা‘আনিত্তুম্ অলা-কিন্নাল্লা-হা হাব্বাবা ইলাইকুমুল্ ঈমা-না অযাইয়্যানাহূ ফী কুলূ বিকুম্ অ র্কারাহা ইলাইকুমুল্ কুফ্রা অল্ফুসূক্ব অল্ ই’ছ্ইয়া-ন্; উলা-য়িকা হুর্মু র-শিদূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৭ আর তোমরা জেনে রাখ যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন। সে যদি অধিকাংশ বিষয়ে তোমাদের কথা মেনে নিত, তাহলে তোমরা অবশ্যই কষ্টে পতিত হতে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করে দিয়েছেন এবং তা তোমাদের অন্তরে সুশোভিত করেছেন। আর তোমাদের কাছে কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে অপছন্দনীয় করে দিয়েছেন। তারাইতো সত্য পথপ্রাপ্ত।



فَضْلًا مِنَ اللَّهِ وَنِعْمَةً وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ49.8

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৮। ফাদ্ব্লাম্ মিনা ল্লা-হি অনি’মাহ্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৮ আল্লাহর পক্ষ থেকে করুণা ও নিআমত স্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا فَإِنْ بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَى فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّى تَفِيءَ إِلَى أَمْرِ اللَّهِ فَإِنْ فَاءَتْ فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ 49.9

আরবি উচ্চারণ ৪৯.৯। অইন্ ত্বোয়া-য়িফাতা-নি মিনাল্ মুমিনীনাক তাতালূ ফাআছ্লিহূ বাইনাহুমা- ফাইম্ বাগত্ ইহ্দা-হুমা-‘আলাল্ উখ্রা-ফাক্ব-তিলু ল্লাতী তাব্গী হাত্তা-তাফী-য়া ইলা য় আম্রিল্লা-হি ফাইন্ ফা-য়াত্ ফাআছ্লিহূ বাইনাহুমা-বিল্‘আদ্লি অ আকসিতু; ইন্নাল্লা-হা ইয়ুহিব্বুল্ মুক্ব্ সিত্বীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.৯ আর যদি মুমিনদের দু’দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তাহলে যে দলটি বাড়াবাড়ি করবে, তার বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি দলটি ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা কর এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালবাসেন।

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ49.10

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১০। ইন্নামাল্ মুমিনূনা ইখ্ওয়াতুন্ ফাআছ্লিহূ বাইনা আখাওয়াইকুম্ অত্তাকু ল্লা-হা লা‘আল্লাকুম্ র্তুহামূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১০ নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপোষ- মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ49.11

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১১। ইয়া য় আইয়ুহাল্ লাযীনা আ-মানূ লা-ইয়ার্স্খা ক্বওমুম্ মিন্ ক্বওমিন্ ‘আসা য় আইঁ ইয়াকূনূ খইরাম্ মিন্হুম্ অলা-নিসা-য়ুম্ মিন্ নিসা-য়িন্ ‘আসা য় আইঁ ইয়াকুন্না খইরাম্ মিন্হুন্না অলা-তাল্ মিযূ য় আন্ফুসাকুম্ অলা-তানা-বাযূ বিল্আল্ক্ব-ব্; বি’সাল্ ইস্মুল্ ফুসূকু বা’দাল্ ঈমা-নি অমাল্লাম্ ইয়াতুব্ ফায়ুলা-য়িকা হুমুজ্ জোয়া-লিমূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১১ হে ঈমানদারগণ, কোন সম্প্রদায় যেন অপর কোন সম্প্রদায়কে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোন নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো যালিম।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ49.12

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১২। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানুজ তানিবূ কাছীরম্ মিনাজ্ জোয়ান্নি ইন্না বা’দ্বোয়াজ জোয়ান্নি ইছ্মুঁও অলা- তাজ্বাস্ সাসূ অলা-ইয়াগ্তাব্ বা’দ্ব ুকুম্ বাদ্বোয়া-; আইয়ুহিব্বুআহাদুকুম্ আইঁ ইয়াকুলা লাহ্মা আখীহি মাইতান্ ফাকারিহ্ তুমূহ্; অত্তাকুল্লা-হ্; ইন্নাল্লা-হা তাওয়্যা-র্বু রহীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১২ হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবূলকারী, অসীম দয়ালু।

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ 49.13

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১৩। ইয়া য় আইয়ুহান্না-সু ইন্না- খলাক্বনা-কুম্ মিন্ যাকারিঁও অউন্ছা-অজ্বা‘আল্না-কুম্ শু‘ঊবাঁও অক্ববা-য়িলা লিতা‘আ-রফূ; ইন্না আক্রমাকুম্ ‘ইন্দা ল্লা-হি আত্ক্ব-কুম্; ইন্নাল্লা-হা ‘আলীমুন্ খর্বী।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১৩ হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।

قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا قُلْ لَمْ تُؤْمِنُوا وَلَكِنْ قُولُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيمَانُ فِي قُلُوبِكُمْ وَإِنْ تُطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَا يَلِتْكُمْ مِنْ أَعْمَالِكُمْ شَيْئًا إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ49.14

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১৪। ক্ব-লাতিল্ আ’র-বু আ-মান্না-; কুল্ লাম্ তুমিনূ অলা-কিন্ কুলূ য় আস্লাম্না-অলাম্মা- ইয়াদ্খুলিল্ ঈমা-নু ফী কুলূবিকুম্ অইন্ তুত্বী‘ঊল্লা-হা অ রসূলাহূ লা-ইয়ালিত্কুম্ মিন্ আ’মা- লিকুম্ শাইয়া-; ইন্নাল্লা-হা গফূর্রু রহীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১৪ বেদুঈনরা বলল, ‘আমরা ঈমান আনলাম’। বল, ‘তোমরা ঈমান আননি’। বরং তোমরা বল, ‘আমরা আত্মসমর্পণ করলাম’। আর এখন পর্যন্ত তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি। আর যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, তাহলে তিনি তোমাদের আমলসমূহের কোন কিছুই হ্রাস করবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ49.15

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১৫। ইন্নামাল্ মু’মিনূনাল্ লাযীনা আ-মানূ বিল্লা-হি অরসূলিহী ছুম্মা লাম্ ইর্য়াতা-বূ অজ্বা-হাদূ বিআম্ওয়া-লিহিম্ অআন্ফুসিহিম্ ফী সাবীলিল্লা-হ্; উলা-য়িকা হুমুছ্ ছোয়া-দিকুন্। বাংলা অনুবাদ ৪৯.১৫ মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করেনি। আর নিজদের সম্পদ ও নিজদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। এরাই সত্যনিষ্ঠ।

قُلْ أَتُعَلِّمُونَ اللَّهَ بِدِينِكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيم 49.16

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১৬। কুল্ আতু‘আল্লিমূনাল্লা-হা বিদীনিকুম্; অল্লা-হু ইয়া’লামু মা-ফিস্ সামা-ওয়া-তি অমা-ফিল্ র্আদ্ব্; অল্লা-হু বিকুল্লি শাইয়িন্ ‘আলীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১৬ বল, ‘তোমরা কি তোমাদের দীন সম্পর্কে আল্লাহকে শিক্ষা দিচ্ছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু আছে যমীনে। আর আল্লাহ সকল কিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত’।

يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا قُلْ لَا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُمْ بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ49.17

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১৭। ইয়ামুন্নুনা ‘আলাইকা আন্ আস্লামূ; কুল্ লা-তামুন্নু ‘আলাইয়্যা ইস্লা-মাকুম্ বালিল্লা-হু ইয়ামুন্নু ‘আলাইকুম্ আন্ হাদা-কুম্ লিল্ঈমা-নি ইন্ কুন্তুম্ ছোয়া-দিক্বীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১৭ (তারা মনে করে) ‘তারা ইসলাম গ্রহণ করে তোমাকে ধন্য করেছে’। বল, ‘তোমরা ইসলাম গ্রহণ করে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না’। বরং আল্লাহই তোমাদেরকে ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, তোমরা যদি সত্যবাদী হয়ে থাক’।

إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ 49.18

আরবি উচ্চারণ ৪৯.১৮। ইন্নাল্লা-হা ইয়া’লামু গইবাস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্ব; অল্লা-হু বাছীরুম্ বিমা-তা’মালূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৯.১৮ নিশ্চয় আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েব সম্পর্কে অবগত আছেন। আর তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  

আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড

Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !! 

Leave a Comment