পল্লী উন্নয়ন সূচক কি?, পল্লী উন্নয়ন সূচক বলতে কি বুঝ?,বাংলাদেশের পল্পি উন্নয়নে সমস্যাবলি আলােচনা কর, গ্রামীণ উন্নয়নের সমস্যা উল্লেখ কর, বাংলাদেশের পল্পি উন্নয়নের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ কর

প্রশ্ন সমাধান: পল্লী উন্নয়ন সূচক কি?, পল্লী উন্নয়ন সূচক বলতে কি বুঝ?,বাংলাদেশের পল্পি উন্নয়নে সমস্যাবলি আলােচনা কর, গ্রামীণ উন্নয়নের সমস্যা উল্লেখ কর, বাংলাদেশের পল্পি উন্নয়নের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ কর

পল্লী উন্নয়ন সূচক কি?, পল্লী উন্নয়ন সূচক বলতে কি বুঝ?

গ্রামীণ উন্নয়নের সূচক বলতে | গ্রামীণ অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের এবং সামাজিক ও সংস্কৃতির অবকাঠামাের স্তর বুঝায়। পল্লি উন্নয়ন বিশ্বে তথা উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি পরিচিত বিষয় পল্লি উন্নয়ন বা গ্রামীণ উন্নয়ন মূলত একটি ধারণা হিসেবে জন্ম লাভ করেছে। ১৯৫০-এর দশকে বর্তমানে জাতীয় উন্নয়নের নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট নীতি হিসেবে পল্লি উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বিবেচনা করা হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সব।

উন্নয়নশীল দেশের বস্তুত গ্রামীণ উন্নয়ন উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের মূলভিত্তি। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন বলা হয়। গ্রামীণ উন্নয়ন। গ্রামীণ অর্থনীতির কাঠামােগত পরিবর্তনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ব্যাপী জনসাধারণের মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিকেই বলা যায় হয় পল্লি উন্নয়ন সূচক বলে।

বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা গ্রামীণ উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকের কথা উল্লেখ করেন। জাতিসংঘের সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকসমূহ নির্ধারণ করেন।

এদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা,কর্মসংস্থান, শিল্প পণ্যের ব্যবহার, যােগাযােগ ও অপরাপর সেবা স্থায়ী ভােগ্য দ্রব্য, শহরায়ন, মাথাপিছু জাতীয় উৎপাদন ইত্যাদি প্রধান। তবে প্রত্যেকেই উন্নয়নের সূচক দ্বারাই গ্রামীণ উন্নয়নের সূচকসমূহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকের মধ্যেই নিহিত রয়েছে । এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক থেকে গ্রামীণ উন্নয়নের সূচকসমূহ নির্ধারণ করা সম্ভব।

তবে গ্রামীণ খাতগুলােকে | বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। যেমন মাথাপিছু আয় দ্বারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিবেচনা করা হলেও এই আয় গ্রামীণ জনগণের মধ্যে বেশিরভাগ লােকের মধ্যে বিদ্যমান কিনা তা এক্ষেত্রে বিবেচনা করতে হবে।

অতএব গ্রামীণ খাতের উন্নয়নের জন্য যেসব বিষয়গুলাে বিবেচনা করা হয় তাকে গ্রামীণ উন্নয়নের সূচক বলা হয়। ( পরিশেষে বলা যায়, পল্লি উন্নয়ন বলতে মানুষের মৌলিক চাহিদা অপূর্ণ থেকে পরিপূর্ণ করা বেকারত্ব থেকে কর্মমুখী করা নিম্ন আয় থেকে। উচ্চ আয়ে পরিণত করাকে বুঝায়। অর্থাৎ কর্মমুখী কাজের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নকে বলা হয় পল্লি উন্নয়ন সূচক।


আরো ও সাজেশন:-

বাংলাদেশের পল্পি উন্নয়নে সমস্যাবলি আলােচনা কর, গ্রামীণ উন্নয়নের সমস্যা উল্লেখ কর

বাংলাদেশ পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলাের অন্যতম। দারিদ্রক্লিষ্ট বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান খুবই নিচু। এছাড়াও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আগে উন্নয়নশীল হতে পারেনি।

বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নের সমস্যাবলি : নিমে বাংলদেশের পল্লি উন্নয়নের সমস্যাবলি উল্লেখ করা হলাে :

১. রাজনৈতিক পরাধীনতা : ভারতবর্ষ ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় দু’শ বছর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশ ছিল। ইংরেজরা এদেশের কাঁচামালের উৎস ও নিজেদের শিল্পজাত পণ্যের বাজার হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্যে আমাদের কুটিরশিল্পগুলােকে সমূলে বিনষ্ট করে দেয়। বিদেশি শাসন এদেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক বিকাশকে রুদ্ধ করে দেয়।

২. পাকিস্তান সরকারের অবহেলা : পাকিস্তান আমলের ২৪ বছর পাকিস্তানি শাসকবৃন্দ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্ত রায় সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সাহায্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিম পাকিস্তানে শিল্পায়িত করেছে। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তিমিরেই রয়ে গেছে।

৩. অনুন্নত কৃষি ব্যবস্থা : বাংলাদেশ মূলত একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কিন্তু আমাদের কৃষি ব্যবস্থা অত্যন্ত অনুন্নত। প্রাচীন চাষ পদ্ধতি, সেচ ব্যবস্থার অভাব, উত্তম বীজ ও সারের অভাব প্রভৃতি বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ক্ষমতা অত্যন্ত কম। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুবই পশ্চাৎপদ।

৪, শিল্পে-অনগ্রসরতা : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অনন অন্যতম কারণ হলাে শিল্পে অনগ্ৰসৱতা। শিল্পায়ন ছাড়া না দেশের পক্ষেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। গনের স্বল্পতা, কাঁচামালের অভাব, কারিগরি জ্ঞানের অভাব Wভতি বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে শিল্পায়নের গতি অত্যন্ত মন্থর ।

৫ মূলধনের অভাব : বাংলাদেশের মতাে উন্নয়নশীল দেশে মাথাপিছু উৎপাদনের পরিমাণ অত্যন্ত কম। ফলে মাথাপিছু আয় । ফলে দেশে মূলধন গঠিত হয় না। মূলধনের অভাবে বাংলাদেশের মতাে উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৬. প্রাকৃতিক সম্পদের অপূর্ণ ব্যবহার : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অনুন্নতির কারণ হলাে প্রাকৃতিক সম্পদের অপূর্ণ ব্যবহার। বাংলাদেশে যথেষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। কিন্তু মুলধনের অভাব, কারিগরি জ্ঞান ও উদ্যোক্তার অভাবে এসব প্রাকৃতিক সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব হয়নি। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পশ্চাৎপদ।

৭. দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র : বাংলাদেশের মতাে উন্নয়নশীল দেশের সকল দিকেই উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। চক্রাকারে ক্রিয়াশীল এই প্রতিবন্ধকতাগুলােকেই দারিদ্রের দুষ্টচক্র বলা হয়। উৎপাদন কম বলে আয় কম, আর আয় কম বলে সঞ্চয় কম। আবার সঞ্চয় কম বলে বিনিয়োেগ কম। বিনিয়ােগ কম বলে উৎপাদন কম। ফলে অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদ রয়েছে।

৮.ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার অন্যতম কারণ। এখানে জনসংখ্যা অতিদ্রুত গতিতে বাড়ছে। বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা।

৯. শিক্ষার অভাব : বাংলাদেশের অধিকাংশ লােক অশিক্ষিত ও নিরক্ষর। শিক্ষাক্ষেত্রে এ পশ্চাৎপদতা আমাদের জনশক্তির কর্মদক্ষতা খর্ব করে। এজন্য আমাদের শ্রমিকদের উৎপাদন ক্ষমতা কম। শ্রমিকদের স্বল্প উৎপাদন ক্ষমতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার জন্য অনেকাংশে দায়ী।

১০. সামাজিক কারণ : ইংরেজ আমলে ব্রিটিশ সামাজ্যবাদ নীতি এই অঞ্চলের জনগণকে ধনী ও দরিদ্র এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করে দেয়। সমাজের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে মুষ্টিমেয় বিত্তশালী ভূ-স্বামী, স্বৈরাচারী সরকারি কর্মচারী ও দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবসায়ী আর অন্যদিকে রয়েছে অশিক্ষিত ও দরিদ্র জনসাধারণ। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দিক পশ্চাৎপদ।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

১১. দুর্বল অবকাঠামাে : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামাে খুবই দুর্বল। উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট, রেলপথ, বিদ্যুৎ, উন্নত শিক্ষার সুযােগ-সুবিধা ইত্যাদি বিষয়গুলাে অর্থনৈতিক ভন্নয়নের জন্য একান্ত অপরিহার্য। এদেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামাে দুর্বলের কারণে উন্নয়নের গতি ধীর ও মন্থর।

১২. কারিগরি জ্ঞানের অভাব : কারিগরি জ্ঞানের অভাব এদেশের অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার অন্যতম কারণ। এদেশের অধিকাংশ লােক অশিক্ষিত। দক্ষ ও কুশলী শ্রমিকের অভাবে বাংলাদেশে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না।

১৩. দক্ষ উদ্যোক্তার অভাব : বাংলাদেশে দক্ষ উদ্যোক্তার | যথেষ্ট অভাব রয়েছে। পুঁজি বিনিয়ােগ করে ঝুঁকি গ্রহণ করার মতাে উদ্যোক্তার সংখ্যা খুবই কম। দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উদ্যোক্তার স্বল্পতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

১৪. সামাজিক ও ধর্মীয় প্রথা : উন্নয়নশীল দেশের সামাজিক। ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অন্তরায়ের সৃষ্টি করে । মানুষের রক্ষণশীল আচার-আচরণ, ধর্মীয় কুসংস্কার ও অদৃষ্টবাদিতা এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত করছে।

১৫. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব : রাজনৈতিক | স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা গড়ে উঠেনি। বস্তুত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, উপরিউক্ত বিষয়গুলাে বাংলাদেশের অনুন্নতির মূল কারণ। আমাদের পল্লি উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে হলে এ সমস্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধা অপসারণ করে শ্রমের উৎপাদনশীলতা সঞ্চয় ও বিনিয়ােগের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment