সংস্কারক হিসেবে ওয়ারেন হেস্টিংস ও কর্নওয়ালিসের তুলনামূলক আলোচনা কর।
বাংলার দেওয়ানি কোম্পানি লাভ করে ১৭৬৫ সালে। ১৭৬৫ সালে দেওয়ানি কোম্পানি লাভ করার পর কোম্পানি দ্বৈতশাসনের পথ বেছে নেয়। ফলে বাংলার জনসাধারণ কোম্পানির শোষণে ও নির্যাতনে পতিত হয়। তাই কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আবির্ভাব হয় হেস্টিংসের ১৭৭২ সালে। আবার ১৭৮৬ সালে রাজস্ব সমস্যা সমাধানের জন্য আবির্ভাব হয় লর্ড কর্নওয়ালিসের। তবে দুজনের মূল বিষয় ছিল একই যা কোম্পানির রাজস্ব ব্যবস্থার নিশ্চয়তা বিধান করা। কিন্তু দুজন দুদৃষ্টিকোণ থেকে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। তবে দুজনের পরিকল্পনা জানার আগে দুজনের গভর্নর জেনারেল নিয়োগ এর ব্যাপারে জানা দরকার।
গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস : মাত্র ১৮ বছর বয়সে ওয়ারেন হেস্টিংস কোম্পানির সামান্য কর্মচারী হিসেবে ভারতে আসেন। পরে নিজ দক্ষতা, যোগ্যতা ও মেধার জন্য প্রথমে কাশিম বাজারের রেসিডেন্ট ও পরে কলকাতা কাউন্সিলের সদস্য নিযুক্ত হন। পরে ১৭৬৪ সালে তিনি স্বদেশে ফিরে যান। ইতোমধ্যে ১৭৬৫ সালে কোম্পানি দেওয়ানি লাভ করে। কোম্পানির শাসনের কুফলের কথা প্রকাশিত হলে কোর্ট অব ডাইরেক্টরস ক্লাইভকে স্বদেশে ডেকে পাঠান ।
পরে ভেরেলেস্ট ও কাটিয়ায় প্রায় পাঁচ বছর কোম্পানির প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু তারা সুদক্ষ যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেন নি। তাই কোম্পানির শাসনতান্ত্রিক সমস্যা নিরূপণের জন্য ১৭৭২ সালে বাংলার গভর্নর নিযুক্ত হন এবং ১৭৭৩ সালে নিযামক আইন পাস করে গভর্নর জেনারেল পদে উন্নীত হন। অতঃপর গভর্নর জেনারেলের দায়িত্ব নিয়ে সংস্কারকার্যে মনোনিবেশ করেন ।
লর্ড কর্নওয়ালিস ঃ বাংলায় যখন ওয়ারেন হেস্টিংসের শাসনামলে রাজস্ব সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন প্রকার আইন বা বন্দোবস্ত করা হচ্ছিল তখন এক পর্যায়ে ডাইরেক্টর সভা কর্নওয়ালিসের আবির্ভাব কামনা করেন। তাই তার আবির্ভার হয় ১৭৮৬ সালে। পূর্বে বাংলার রাজস্ব সমস্যার সমাধানের জন্য অনেক ঐতিহাসিক মতামত দেন। ওয়ারেন হেস্টিংসের শাসনামলে ফিলিপ ফ্রান্সিস, পরে চার্লস স্টুয়ার্ট চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের স্বপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। রাজস্ব সমস্যার সমাধানের জন্য ১৭৮৪ সালে যে Pitt India Act পাস করা হয় তার ৩৯নং ধারায় এ সম্পর্কে বলা হয়। এভাবে যখন সকল মতামত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অনুকূলে তখন ডাইরেক্টর সভা ১৭৮৬ সালে কর্নওয়ালিসকে গভর্নর (বাংলা) নিয়োগ করেন। গভর্নর নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি রাজস্ব সমস্যার সমাধানে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা কার্যকরী করার জোর প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু তার প্রচেষ্টার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জন শোর। তাই প্রথমে বাস্তবায়িত হয় দশসালা বন্দোবস্ত। পরে দশসালাই ১৭৯৩ সালে ২২ মার্চ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত হয় ।
কর্নওয়ালিস ও গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস তুলনামূলক আলোচনা ঃ নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে ওয়ারেন হেস্টিংস ও কর্নওয়ালিসের সংস্কারসমূহের তুলনামূলক আলোচনা করা হল :
১. হেস্টিংসের বি র সংস্কার : ১৭৭২ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেই হেস্টিংস বিচার সংস্কারে মনোনিবেশ করেন । তিনি Committee Circait-এর সুপারিশ অনুযায়ী প্রত্যেক জেলায় একটি করে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত প্রতিষ্ঠা করেন। নিম্নে এগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল :
ক. মফস্বল দেওয়ানি আদালত : জমিদার ও তালুকদারির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা ভিন্ন অপরাপর যাবতীয় দেওয়ানি অর্থাৎ ভূমি সংক্রান্ত মামলার বিচারের ভার এ আদালতের উপর ন্যস্ত করা হয়। এ আদালতের সভাপতিত্ব করতেন কালেক্টর। জমিদার ও তালুকদারির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত মামলার বিচার ক্ষমতা ছিল সদর দেওয়ানি আদালতের হাতে । গভর্নর ও তার কাউন্সিলের দুজন সদস্য নিয়ে এ আদালত গঠিত ছিল। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এর বিচারালয় স্থাপিত ছিল।
খ. মফস্বল ফৌজদারি আদালত : এ বিচারালয় যাবতীয় ফৌজদারি বিষয়ের মামলার বিচার করার অধিকার প্রাপ্ত ছিল। কেবলমাত্র যেসব মামলায় আসামীকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হতো সেসব মোকদ্দমা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য সদর নিযামত আদালতে প্রেরণ করা হতো। নবাব ছিলেন এ আদালতের সভাপতি। সালে সদর নিয়ামত আদালত মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার হলে গভর্নর জেনাে কাউন্সিল এ আদালত পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গভর্নর জেনারেन কাউকে দেশী সম্পর্কে উপদেশ দেওয়ার জন্য কাজি বা মুফতি নিয়োগ করেন।
দ্বিতীয়ত, সদর নিয়ামত আদালতের অধীনে কর্নওয়ালিস চারটি ভ্ৰাম্যমাণ বিচারালয় স্থাপন করেন। এগুলোর প্রত্যেকটি দুজন ইংরেজ বিচারক দ্বারা পরিচালিত হতো। বিচারকদের দেশীয় আইনকানুন ব্যাখ্যা করে বুঝানোর জন্য কাি ও মুফতি নিয়োগ করেন।
তৃতীয়ত, পূর্বে কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধের জন্য নিষ্ঠুর দণ্ডদানের রীতিনীতি প্রচলিত ছিল। কর্নওয়ালিস ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এসব নিঠুর দতদান প্রথা চিরতরে বহিত করেন।
চতুর্থত, পূর্বে নরহত্যাকে রাষ্ট্র বা সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধ বলে পরিগণিত হতো না। ফলে হত্যাকারীর আত্মীয়স্বজনদেরকে ভীতি দেখিয়ে মামলা মিটিয়ে নেওয়া যেত। কর্নওয়ালিস হত্যার অপরাধীকে রাষ্ট্র বা সমাজবিরোধী বলে ঘোষণা করেন ও শাস্তি দেন।
পঞ্চমত, মুসলিম আইন অনুসারে পূর্বে অমুসলমানদের সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে কোন মুসলমানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া চলত না। আবার কোন কোন অপরাধের বিচারে দুজন মুসলমান সাক্ষীকে একজন মুসলমান সাক্ষীর সমান বলে গণ্য করা হতো। কর্নওয়ালিস বিচার ক্ষেত্রে এসব বৈষম্য তুলে দেন।
খ. দেওয়ানি বিচার সংস্কার। পূর্বে রাজস্ব দেওয়ানির সাথে দেওয়ানি মামলার বিচার জড়িত ছিল। ফলে রাজস্ব ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হয়। ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের সাথে সাথে কর্নওয়ালিস দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থাকে রাজস্ব ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক করেন এবং নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে পর্যায়ক্রমে বিন্যাস করেন। সেজন্য তিনি কয়েকটি প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করেন।
যথা ঃ
i. দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থার সর্বনিম্ন পর্যায়ে সদর আমিন ও মুন্সেফি বিচারালয়গুলোকে স্থান করেন। এসকল বিচারালয়ে সাধারণ শ্রেণীর মামলার বিচারের ব্যবস্থা ছিল।
ii. সদর আমীন ও মুন্সেফ বিচারালয়ের উপরে প্রতি জেলায় একটি করে জেলা বিচারালয় স্থাপন করেন। জেলা বিচারালয়গুলো একজন ইংরেজ জজের অধীন ছিল।
iii. জেলা বিচারালয়ের উপর চারটি প্রাদেশিক বিচারালয় স্থাপন করা হয়। ফলে ঢাকা, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ ও পাটনায় চারটি প্রাদেশিক বিচারালয় স্থাপিত হয়।
iv. সমগ্র দেওয়ানি বিচারের সর্বোচ্চ ছিল সদর দেওয়ানি আদালত। গভর্নর জেনারেল ও কাউন্সিল এ বিচারালয়ের বিচারকার্য পরিচালনা করতেন।
v. পূর্বে জেলা কালেক্টরগণ দেওয়ানি মামলার বিচার করতেন। কর্নওয়ালিস তাদের বিচার ক্ষমতা নাকচ করেন এবং তাদের শাসন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। তবে সাধারণ ধরনের বিচারকার্য তারা পরিচালনা করতেন। ফলে রাজস্ব ক্ষেত্রে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
৩. হেস্টিংসের রাজস্ব সংস্কার : হেস্টিংস দ্বৈতশাসনব্যবস্থার কুফল লক্ষ করে রাজস্ব ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করেন। পূর্বে কোম্পানি সরাসরি রাজস্ব আদায় না করে তাদের নিয়ন্ত্রিত নায়েব নাজিমের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করতেন। এতে সরকার ও জমিদার উভয়ের মনে সন্দেহ ছিল। তাই হেস্টিংস ১৭৭২ সালে রাজস্ব সমস্যার সমাধানের জন্য সরাসরি কোম্পানির হাতে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেন। এছাড়া নায়েব নাজিম রেখা খান ও সেতাব রায়কে পদচ্যুত করে এ দেওয়ান পদের বিলুপ্তি করেন। এছাড়া কালেক্টরের পদ আবার সৃষ্টি করেন। এ কালেক্টরগণ জমিদারদের কাছে গিয়ে পসনা ভিত্তিতে বন্দোবস্ত করতেন। এ ব্যবস্থা ছিল একটি পরীক্ষামূলক। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হতে পারে নি। ফলে হেস্টিংস কিছুদিন পর রাজস্বনীতিতে পরিবর্তন সাধন করেন।
৪. লর্ড কর্নওয়ালিসের রাজস্বনীতি : কর্নওয়ালিসের রাজস্ব ব্যবস্থার মূল বিষয় হল চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। এ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ছিল যে জমিতে জমিদারদের চিরস্থায়ী মালিকানা নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের বিনিময়ে চিরদিনের জন্য। এর কোন পরিবর্তন করা যেত না। এর ফলে জমিদার জমির মালিক হয়, কোম্পানির আয়ের নিশ্চয়তা বিধান হয়। ফলে কোম্পানি বাজেট প্রণয়নে সুবিধা হয় । বাংলায় অনেক পুরাতন জমিদার শ্রেণীর ধ্বংস স্তূপের উপর নতুন জমিদার শ্রেণীর আবির্ভাব হয়।
৫. হেস্টিংসের বাণিজ্য সংস্কার : ১৭৭৩ সালে বোর্ড অব রেভিনিউ-এর নির্দেশে হেস্টিংস এযাবত প্রচলিত দত্তক বা ছাড়পত্র প্রথা বন্ধ করেন। এর ফলে কোম্পানির কর্মচারী ও তাদের এজেন্টদের অবৈধ ও বিনাশুল্কে বণিজ্য করার প্রথার বিলুপ্তি ঘটে। এছাড়া হেস্টিংস জমিদারদের নিজস্ব চৌকি বা শুল্ক আদায়ের ঘাঁটিগুলো বন্ধ করে সমগ্র প্রদেশে বাণিজ্য চলাচল সহজ করেন। লবণ, সুপারি ও তামাকের উপর কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসায় ছিল। কিন্তু অন্যান্য পণ্যসামগ্রীর উপর ২.৫% শুল্ক ধার্য করা হতো। তা স্থানীয় ইউরোপীয় বণিকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। বাণিজ্যের উন্নয়নকল্পে হেস্টিংস বলপ্রয়োগ করেন। ভুটান ও তিব্বতে হেস্টিংস বাণিজ্য মিশন প্রেরণ করেন। বাণিজ্য বিভাগকে শাসন বিভাগ থেকে পৃথক করেন। ফলে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের উন্নতি হয়। পড়ে
৬. কর্নওয়ালিসের বাণিজ্য সংক্রান্ত সংস্কার : কর্নওয়ালিসের সংস্কারনীতি কোম্পানির শাসনব্যবস্থার কোন দিকেও বাদ নি । হেস্টিংসের অদূরদর্শিতার ফলে কোম্পানির বাণিজ্য পরিচালনা সংক্রান্ত ব্যবস্থায় যে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রবেশ লাভ করে, কর্নওয়ালিস ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তা সংস্কারে মনোনিবেশ করেন । পূর্বে ভারতবর্ষ হতে যেসব পণ্য ইংল্যান্ডে রপ্তানি করা হতো তা ক্রয় করার জন্য কোম্পানি নিজ কর্মচারীদের সাথে সন্ধি চুক্তিবদ্ধ হতো। অর্থাৎ ইংরেজ কর্মচারীগণই কোম্পানির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের দায়িত্বভার গ্রহণ করত। তারা দেশীয় বণিক ও দালালদের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করে কিছু লাভ করে কোম্পানির কাছে বিক্রি করত। কর্নওয়ালিস সরাসরি দেশীয় বণিকদের সাথে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার নিয়ম প্রবর্তন করেন। এ ব্যবস্থার ফলে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি কম হয়।
৭. হেস্টিংসের অর্থনৈতিক সংস্কার : কোম্পানির আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য হেস্টিংস যে ব্যয় সংকোচন নীতি ও অর্থসংগ্রহ নীতি গ্রহণ করেন তা অত্যন্ত গর্হিত নীতি বিরুদ্ধ ছিল। তিনি বাংলার নাবালক নবাবের ভাতা ৩২ লক্ষ থেকে কমিয়ে ১৬ লক্ষ করেন। মারাঠা আশ্রয় ও মিত্রতার অজুহাতে শাহ আলমের বাৎসরিক ২৬ লক্ষ টাকা বন্ধ এবং কারা ও এলাহাবাদ কেড়ে নিয়ে ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অযোধ্যার নবাবের কাছে দিয়ে দেন। ৪০ লক্ষ টাকা ও সৈন্যের ব্যয়ভার বহনের শর্তে ইংরেজ সৈন্যরা ভাড়াটিয়া সৈন্য হিসেবে অযোধ্যার নবাবের পক্ষে রোহিলা যুদ্ধে যোগদান করে। বারানসীর নবাব চৈত সিংহকে সিংহাসনচ্যুত করে বাৎসরিক ৪০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তার ভ্রাতুষ্পুত্রকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন । হেস্টিংস এ সমস্ত কার্যের জন্য যথেষ্ট সমালোচিত হলেও কোম্পানির যে রাজস্ব ঘাটতি ছিল তা পূরণ করেও তহবিলে উদ্বৃত্ত দেখাতে সক্ষম হন ।
৮. লর্ড কর্নওয়ালিসের অর্থনৈতিক সংস্কার : লর্ড কর্নওয়ালিস অর্থনৈতিক ভিত্তিকে মজবুত করার জন্য রাজস্ব সম্পর্কে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন। ফলে কোম্পানির আর্থিক দিক সম্পর্কে নিশ্চিত হিসাব রাখা সম্ভব হয়। এছাড়া কোম্পানির বাজেট প্রণয়ন করতে সুবিধা হয়।
উপসংহার : অতএব বলা যায়, ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড কর্নওয়ালিস দুজনের আবির্ভাব হয় ভারতবর্ষে মূলত রাজস্ব সমস্যা তথা কোম্পানি শাসনকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং ব্রিটিশ ভিত্তিকে মজবুত করার জন্য। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় নীতিগত দিক থেকে দুজনেই দুজনের নীতিতে অটল ছিলেন। তাই দেখা যায়, মূল উদ্দেশ্য ঠিক রেখে তারা নিজ নিজ পরিকল্পনা মত অগ্রসর হন। এতে হয় তো হেস্টিংস সফল হতে তেমন পারেন নি, কর্নওয়ালিস পারেছেন এটাই পার্থক্য । তবে তুলনামূলকভাবে হেস্টিংস যে ভিত্তি স্থাপন করেন কর্নওয়ালিস তা মজবুত করেন।