দেড় বছর বয়সী রাইসা সারাটা সময় ঘর মাতিয়ে রাখে। আর হাঁটা শেখার পর থেকে সারাক্ষণ শুধু এ ঘর ও ঘর দৌড়ে বেড়ায়। শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করার উপায়
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সর্দি আর কাঁশির কারণে একেবারে নেতিয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে রাতের বেলায় জ্বরও আসছে।
শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করার উপায়, কখন সন্দেহ করবেন শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে?
চার দিন পর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় তার মা-বাবা। ডাক্তার দেখেই বুঝতে পারে শিশুটি নিউমোনিয়ায় ভুগছে। তবে এখনো প্রাথমিক স্টেজে। কিছু ওষুধ আর খাবারের কথা বলে তিন দিন পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বললেন।
Table of Contents
ওষুধ আর পর্যাপ্ত খাওয়ার পর রাইসার মা সোমা বুঝতে পারে এখন তার মেয়ে অনেকটা সুস্থ। তারপরও তিন দিন পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় তাকে। ডাক্তার ওষুধগুলো আরো পাঁচদিন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
ডা. মুরাদ হোসেন বলেন, নিউমোনিয়া মূলত ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ। বিভিন্ন ভাইরাস, ছত্রাক, জীবাণুজনিত কারণেই এই রোগের বিস্তার ঘটে। নিউমোনিয়ার কারণে ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার মতে অপরিণত শিশুর জন্ম, বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণ
আরো পড়ুন: ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে শিশুকে দূরে,ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে শিশুকে দূরে রাখতে করণীয়
নিউমোনিয়াতে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২৫ হাজার শিশু মারা যায়। এছাড়াও সারা বিশ্বে ৫ মাসের কম বয়সি ১৬ ভাগ শিশু মৃত্যু হয় নিউমোনিয়ার কারণে।
অর্থাৎ পৃথিবীতে প্রায় প্রতি ৩৫ সেকেন্ডে একটি শিশু নিউমোনিয়াতে মারা যায়। তবে, সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই মৃত্যুগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিউমোনিয়া মোকাবেলায় জেনে নিতে হবে এটি কীভাবে ছড়ায়:
- বাচ্চাদের নাকে যেসব জীবাণু থাকে সেগুলোও ফুসফুসে নেমে গিয়ে প্রদাহ তৈরি করতে পারে,
- আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশি থেকে বের হওয়া শ্লেষ্মা থেকে,
- জন্মের পরপর রক্ত থেকেও ছড়াতে পারে।
নিউমোনিয়া থেকে শিশুকে রক্ষা করার সবথেকে কার্যকরী উপায় হলো শিশুকে নিউমোনিয়ার টিকা দেওয়া। বাংলাদশে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করার উপায়
আওতায় শিশুদেরকে নিউমোনিয়ার টিকা প্রদান করা হয়। এর বাইরে নিউমোভ্যাক্স-২৩ নামের একটি ভ্যাকসিন বাজারে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি যেসব শিশুর অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদেরকে প্রতি বছরই ফ্লু ভ্যাকসিন দেওয়া নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করার ভালো উপায়।
আরো পড়ুন: শিশুর চঞ্চলতা কি এডিএইচডি, শিশুর চঞ্চলতার সঙ্গে এডিএইচডি রোগের সম্পর্ক কী
এগুলোর সাথে সাথে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যথাযথ পুষ্টি নিশ্চিত করা, বুকের দুধ পান করানো এবং প্রচুর শক্তি সমৃদ্ধ বাড়তি খাবার দেওয়া প্রয়োজন।
অভিভাবকদেরকে অবশ্যই শিশুকে পরিচ্ছন্ন থাকার উপায়গুলো শেখাতে হবে এবং নিজেদেরকেও তা পালন করতে হবে। ছোটো থেকেই শিশুকে শেখাতে হবে যে
হাঁচি এলে টিস্যু বা জামার হাতা দিয়ে নাক আড়াল করে ধরে হাঁচি দিতে হবে, ব্যবহার শেষে টিস্যুটাকে ফেলে দিতে হবে এবং নিয়মিত হাত ধুতে হবে।
বড়োদেরকেও যেকোনো ছোটো শিশুকে ধরার আগেই ভালোমতো হাত ধুতে হবে।
শিশুরা যেসব জিনিস বেশি ধরে যেমন খেলনা, টেবিল ইত্যাদি সাবান এবং পানি দিয়ে নিয়মিত মুছে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। এর পাশাপাশি বাসায় যেন
কেউ ধূমপান না করে এবং কোনো কিছু থেকে বেশি ধোঁয়া উৎপন্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।
আরো পড়ুন: শিশুর অটিজম অভিভাবকদের করণীয়, অটিস্টিক শিশুর অভিভাবকদের করণীয়
প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ সবসময়ই উত্তম। নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক কিন্তু এত সহজেই প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ থেকে বাঁচতে, পর্যাপ্ত সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।
পরিশেষে : শিশুর নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়,নিউমোনিয়া রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার নাম কি?
আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট