অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস (ALS) এবংপাশ্বর্ীয় স্ক্লেরোসিস উভয় হয়মোটর নিউরন রোগ, বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রগতিশীল ব্যাধি যা ভেন্ট্রাল হর্ন, মেডুলারি মোটর নিউক্লিয়াস এবং কর্টিকোস্পাইনাল ট্র্যাক্টের নিউরনগুলিকে প্রভাবিত করে। ALS, বা Lou Gehrig রোগ, ভেন্ট্রাল-হর্ন কোষের (নিম্ন মোটর নিউরন) ক্ষতির কারণে পেশী নষ্ট হয়ে যায় । পাশ্বর্ীয় স্ক্লেরোসিস হ’ল মেরুদন্ডের পার্শ্বীয় কলামগুলিতে অ্যাক্সনগুলির ক্ষতি (কর্টিকোস্পাইনাল ট্র্যাক্টের উপরের মোটর নিউরন)। উপরের এবং নীচের মোটর নিউরন লক্ষণগুলির সংমিশ্রণ এই রোগগুলির সাথে যুক্ত, তবে পেশী দুর্বলতা এবং দুই বা ততোধিক অঙ্গের অ্যাট্রোফি প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য। মস্তিষ্ক, চোখ এবং সংবেদনশীল সিস্টেম প্রভাবিত হয় না।
স্নায়ু আঘাত
স্নায়ুর আঘাতগুলি কোষের দেহ থেকে দূরে অ্যাক্সনকে প্রভাবিত করে নিউরোনাল নিউরোপ্যাথি হিসাবে কাজ করে। আঘাতের তীব্রতা তিনটি প্রধান গ্রেডের হয়। নিউরাপ্রাক্সিয়ায় আবেগ সঞ্চালনে সাময়িক বাধা থাকে, যদিও অ্যাক্সন অক্ষত থাকে। আরও গুরুতর প্রসারিত বা ছেদন ক্ষতি কিছু অ্যাক্সনকে বাধা দেয় এবং একে অ্যাক্সোনটমেসিস বলা হয়। যে আঘাতটি আসলে স্নায়ু ছিন্ন করে তাকে নিউরোটমেসিস বলে; বিচ্ছিন্ন স্নায়ুর প্রান্তের অস্ত্রোপচার পুনরায় সংযুক্ত করা প্রয়োজন। নিউরোসার্জারি দ্রুত পুনরুদ্ধারের গ্যারান্টি দেয় না, যেহেতু নতুন স্নায়ু স্প্রাউটগুলি স্নায়ু কাঠামোর নীচে সর্বাধিক প্রতিদিন 1 থেকে 2 মিমি (0.04 থেকে 0.08 ইঞ্চি) হারে বৃদ্ধি পায়।
মোটর নিউরন রোগ, মোটর নিউরন রোগের কারণ ও চিকিৎসা, বিরল রোগ মোটর নিউরন কেন হয়, মোটর নিউরন রোগ
মানব শরীরে থাকা প্রতিটি নার্ভে থাকে অসংখ্য মোটর ও সেন্সরি নিউরন। এগুলো অর্থাৎ মোটর নিউরনগুলো মাংসপেশিতে স্নায়ু সরবরাহ করে থাকে। এই নিউরনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত নার্ভ বা স্নায়ুগুলো ঠিকঠাকমতো কাজ করে বলেই আমরা আমাদের হাত ও পায়ের নড়াচড়া, চলাফেরা, খাবার গিলে খাওয়া, কথা বলা ইত্যাদি কাজগুলো ঠিকঠাকভাবে করে যেতে পারি।
মোটর নিউরন রোগে আমাদের মুভমেন্ট, কথা বলা, গিলে খাওয়া, শাস-প্রশ্বাস নেওয়া ইত্যাদির জন্য দায়ী স্নায়ুগুলো (নিউরন) শুকিয়ে যায় বা ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে। ফলে যেসব স্নায়ুর মাধ্যমে চালিত হয়, সেইসব মাংসপেশিগুলো আস্তে আস্তে শুকিয়ে যেতে থাকে। ইংরেজিতে একেই বলে এমায়োট্রফি।
মটর নিউরন রোগে স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন অংশ আক্রান্ত হতে পারে। যেমন- ফ্রন্টাল লোব বা ব্রেইনের সামনের অংশ, ব্রেইনের ভাইটাল সেন্টারের বিভিন্ন অংশ, যেমন- কর্টিকো-বাল্বার ও কর্টিকো-স্পাইনাল ট্র্যাক্ট, ব্রেইন থেকে বের হওয়া ক্রেনিয়াল নার্ভ এর নিউক্লিয়াস এবং মেরুরজ্জুতে অবস্থিত এন্টেরিয়র হর্ন সেল ইত্যাদি। শতকরা ৭৫ ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত পুরুষরা নারীর তুলনায় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। গড়ে ৫৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা এই রোগে আক্রান্ত হয়।
এই রোগে নার্ভ শুকিয়ে যেতে থাকে। ফলে ক্রমাগত নার্ভগুলো তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ঘাড় ও কোমরের নার্ভ এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। গরপৎড়ংপড়ঢ়ু পরীক্ষা করলে দেখা যায়, মোটর নিউরনের সংখ্যা ক্রমাগত কমতে থাকে।
এ রোগের লক্ষণগুলো হলো- হাতের মাংসপেশি শুকিয়ে কংকালসার হয়ে যাওয়া, মাংসপেশিতে কাঁপন ধরা, ঢোক গিলতে না পারা বা ঢোক গিলতে গেলেই পানি বা খাবার নাক দিয়ে বের হয়ে আসা, মাংশপেশিতে দুর্বলতা বোধ করা, দরজার নব খুলতে কষ্ট হওয়া, ছোট ছোট জিনিস হাত দিয়ে তুলতে না পারা, শুয়ে থাকা অবস্থায় শ্বাসকষ্ট হয়। কথা বলতে কষ্ট হওয়া, ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া, অতিরিক্ত থুতু তৈরি হওয়া, হাত ও পায়ের মাংশপেশি শুকিয়ে যাওয়া, চিন্তার সমস্যা অর্থাৎ দ্রুত শব্দ মাথায় না আসা, ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় আড়াই গুণ বেশি এই রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায় না।
রোগ নির্ণয়ে ইএমজি (ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাম), এনসিভি (নার্ভ কন্ডাকশন ভেলোসিটি) ও ঘাড়ের এমআরআই করার প্রয়োজন পড়ে।
এ রোগের সুনির্দিষ্ট ও স্থায়ী কোনো চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। শুধু লক্ষণ ও জটিলতাগুলোর চিকিৎসা করা হয়। তবে ফিজিওথেরাপি কিছুটা উপকারী। লক্ষণ শুরু হওয়ার পর অ্যামায়োট্রফিক ল্যাটেরাল স্কলেরসিস রোগের ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার ২-৫ বছর, প্রগেসিভ বালবার পালসীর ক্ষেত্রে ৮-১০ বছর, প্রগেসিভ মাসকুলার অ্যাট্রোরফির ক্ষেত্রে ২-৪ বছর।
পরিশেষে : মোটর নিউরন রোগ, মোটর নিউরন রোগের কারণ ও চিকিৎসা, বিরল রোগ মোটর নিউরন কেন হয়, মোটর নিউরন রোগ, মোটর নিউরন রোগের কারণগুলি ডিকোডিং,চেষ্টীয় স্নায়ুকোষ রোগ
আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট