নরম এবং জেল্লাদার ত্বকের স্বপ্ন দেখেন সবাই। বড় পর্দার স্বপ্নসুন্দরীদের দেখেন আর মনে মনে ভাবেন যে, এরকম গ্ল্যামার কী ভাবে পাওয়া সম্ভব? তাঁদের মতো দৈনিক রুটিন আমাদের নেই, তবে প্রত্যেকের নিজস্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে।
নানা কারণে ত্বকের এই প্রাকৃতিক জেল্লা ধীরে ধীরে হারাতে শুরু করে। তবে, সুন্দর ত্বকের স্বপ্ন কে না দেখেন! আপনিও নিশ্চয়ই সুন্দর এবং জেল্লাদার ত্বক চান? সেই ইচ্ছেপূরণ হবে যদি আপনি কয়েকটি ছোট ছোট টিপস মেনে চলতে পারেন।
মোমের মতো মসৃণ ত্বক। মাখনের মতো গায়ের রং। কে-পপ (কোরিয়ান পপ) যাদের দেখার অভ্যাস রয়েছে, কোরিয়ান বিউটি রহস্য নিয়ে তাদের মাতামাতিও কম নয়।
আসলে পৃথিবীতে সবচেয়ে নিখুঁত আর সুন্দর ত্বকের অধিকারী হলো কোরিয়ানরা। সৌন্দর্যচর্চায় কোরিয়ানদের মূলমন্ত্র ‘স্কিন ফার্স্ট, সেকেন্ড মেকআপ’। এটিই তাদের স্বাস্থ্যকর, সুন্দর, টানটান ও উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য।
মসৃণ ত্বক পেতে কী করবেন, যে সব খাবার ত্বক উজ্জ্বলে সহায়তা করে
আজকাল দাগহীন, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে সবাই মজেছে কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্ট ও স্কিন কেয়ার রুটিনে। জেনে নেওয়া যাক, কী কী আছে এতে-
মসৃণ ও দ্যুতিময় ত্বক পেতে জেনে নিন ৯টি টিপস, মসৃণ ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান
মেকআপ রিমুভাল : প্রতিদিন বাইরে বেরোলে রোদ, ধুলা-ধোঁয়ায় নাজেহাল ত্বক। তাই বাইরে থেকে এসেই অয়েল বেসড ক্লিনজার দিয়ে মুখ মুছে নিন। মেকআপ ও ধুলার আস্তর হটানোর জন্য এর বিকল্প নেই। জোজোবার মতো অ্যাসেনশিয়াল অয়েল বা অয়েল বেসড ক্লিনজারও ব্যবহার করতে পারেন।
ওয়াটার বেসড ক্লিনজার : দ্বিতীয় ধাপে ওয়াটার বেজড ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া হয়। যেসব ময়লা অয়েল ক্লিনজার দিয়ে যায় না, সেগুলো পরিষ্কার করতে এটি ওস্তাদ। যা ত্বকের ভিতর থেকে পরিষ্কার করে। গ্রিন টি, চালের নির্যাসসমৃদ্ধ ক্লিনজার ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।
এক্সফোলিয়েশন : মুখের মৃত কোষ দূর করতে দরকার এক্সফোলিয়েশন। ত্বকের মৃত কোষের সঙ্গে রোমকূপে জমে থাকা নাছোড়বান্দা ময়লাকে তাড়ানোর উপায় এই এক্সফোলিয়েশন। চিনির দানা, কমলা লেবুর খোসা বা মসুর ডালের গুঁড়া বেস্ট। তবে সপ্তাহে দুই-এক দিনের বেশি এক্সফোলিয়েশন নয়।
টোনার : কে-বিউটিতে টোনার প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ এমন একটি স্কিন কেয়ার, যা ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে। টোনিং-এর জন্য লিকোরাইস এক্সট্র্যাক্ট ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপ জলের টোনার ব্যবহার সবচেয়ে ভালো।
এসেন্স : এসেন্সের সঙ্গে আমাদের পরিচয়টা খুব বেশি দিনের নয়। এসেন্স খুব হালকা ধাঁচের একটি প্রোডাক্ট, যেটি টোনার ও সিরামের সংমিশ্রণ। টোনারের মতো এটিও ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিতে হবে।
ট্রিটমেন্ট : ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য সিরাম বা অ্যাম্পুল ব্যবহার করা হয়। অ্যাম্পুল সিরামের চেয়ে একটু ভারী হয় এবং এতে সিরামের চেয়ে বেশি কার্যকর উপাদান থাকে। ত্বকের নানা সমস্যা, একগুঁয়ে ব্রণের দাগ, বলিরেখা বা হাইপারপিগমেন্টেশনের মোক্ষম দাওয়াই! টি ট্রি অয়েল বা ভিটামিন ই অয়েল ক্যাপসুল বা অ্যাম্পুল ব্যবহার করতে পারেন।
শিট মাস্ক : এটি ছাড়া কোরিয়ান স্কিন কেয়ার চিন্তাই করা যায় না। ত্বককে জেল্লাদার করে তুলতে এই মাস্কের জুড়ি মেলা ভার! শুধু তাই নয়, সপ্তাহভর স্ট্রেস কাটাতেও এই মাস্কের বিকল্প নেই! শসা বা গ্রিন টি মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
আই ক্রিম : চোখের ত্বকের জন্য জরুরি বাড়তি যত্নের। কারণ, চোখের আশপাশের ত্বক খুবই সেনসেটিভ হয়। তাই তার প্রয়োজন বিশেষ আদর-যত্নের। তাই শুতে যাওয়ার আগে এবং অফিস থেকে বেরোনোর আগে চোখের আশপাশে আই ক্রিম ব্যবহার করুন। ভালো হয় যদি এতে মধু থাকে।
ময়েশ্চারাইজার : ত্বককে আর্দ্র রাখতে, শুষ্কতা দূর করতে প্রয়োজন ময়েশ্চারাইজিং। পাশাপাশি কয়েক ধরনের কোরিয়ান ময়েশ্চারাইজার আছে। যেমন : ক্রিম, জেল, অয়েল ইত্যাদি। ত্বকের ধরন ও চাহিদার কথা চিন্তা করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
সানস্ক্রিন : সর্বশেষ ধাপ সানস্ক্রিন ব্যবহার। যা ত্বককে রোদের দাপট থেকে রক্ষা করে। টাইটেনিয়াম অক্সাইড ও জিঙ্ক অক্সাইডযুক্ত সানস্ক্রিন ত্বকের জন্য ভালো। বাইরে বের না হলেও দিনের বেলা সব সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। সানস্ক্রিন কেনার সময় তাতে যথেষ্ট পরিমাণে এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নিন।
পরিশেষে : শরীরের মসৃণ ত্বকের ৭ টি টিপস, কিভাবে ত্বকের টেক্সচার কমাতে হয়, মসৃণ ও দ্যুতিময় ত্বক পেতে জেনে নিন ৯টি টিপস
আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট