আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিও- এর ভূমিকা বর্ণনা কর, আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিও-এর পদক্ষেপ আলোচনা কর

আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিও- এর ভূমিকা বর্ণনা কর, আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিও-এর পদক্ষেপ আলোচনা কর

বিভিন্ন এনজিও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এনজিওসমূহ, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিম্নে বাংলাদেশের আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে এনজিওসমূহের ভূমিকা বর্ণনা করা হলো-

১. আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি : এনজিওসমূহ গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলোকে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান এবং ক্ষেত্রবিশেষে জামানতবিহীন ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে গরিব মানুষকে মূলধন সরবরাহ করছে। ফলে দেশের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

২. শিক্ষা বিস্তার : বাংলাদেশে একটি বিপুল জনগোষ্ঠী আজও অশিক্ষিত ও কুসস্কারে আচ্ছন্ন। এনজিওসমূহ দেশে শিশু ও বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরক্ষরতামুক্ত দেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা : বাংলাদেশের মানুষ প্রতিনিয়ত বন্যা, খরাসহ নানা প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়। এক্ষেত্রে সরকার একা সংকট মোকাবিলা করতে পারে না । এ অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো ত্রাণ কাজে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে ।

৪. নারীর ক্ষমতায়ন : বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। এনজিওসমূহ এসব অজ্ঞ, অশিক্ষিত নারী সমাজকে ঋণদান এবং নানামুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলছে ।

৫. কৃষি উন্নয়ন : এনজিওসমূহ বাংলাদেশের দরিদ্র কৃষকদের ঋণদান, সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, স্বল্প বা বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করে কৃষি উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে ।

৬. কুটিরশিল্পের উন্নয়ন : এনজিওসমূহ গ্রামীণ কুটিরশিল্পের উন্নয়নে ও সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ঋণদান প্রশিক্ষণ ছাড়াও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে এনজিওগুলো সহায়তা দিয়ে থাকে।

৭. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ : বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৪% । এই দ্রুতগতিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস করা, খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে এনজিওসমূহ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে থাকে ।

৮. বেকার সমস্যা সমাধান : এনজিওসমূহ বাংলাদেশে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিজেদের অফিসগুলোতে শিক্ষিত-অশিক্ষিত মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, ঋণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে।

৯. স্বনির্ভরতা অর্জন : এনজিও প্রতিষ্ঠার পূর্বে আমের দরিদ্র নারী ও পুরুষেরা মূলত ধনী কৃষকদের বাড়িতে তাদের শ্রম বিক্রি করতো। কিন্তু এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গ্রামের পুরুষ ও মহিলারা বর্তমানে নিজেদের কুটির শিল্প ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় নিয়োজিত করেছে। ফলে তাদের শ্রমের ফসল এখন নিজেদের ঘরে তুলতে পারছে।

১০. সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি : বর্তমানে সামাজিক মর্যাদা, অনেকটাই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উপর নির্ভর করে। কিন্তু গ্রামীণ এই দরিদ্র জনগোষ্ঠী পুর্বে সামাজিকভাবেও সমাজে নিগৃহীত হতো। তবে এনজিও ঋণ প্রদান করে শুধুমাত্র এদের অর্থনৈতিকভাবেই স্বনির্ভর করেনি সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি করেছে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের গ্রামীণ দরিদ্র ভূমিহীন জনগোষ্ঠীকে জামানতবিহীন ঋণ প্রদানের মাধ্যমে এদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এনজিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিও- এর ভূমিকা বর্ণনা কর, আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিও-এর পদক্ষেপ আলোচনা কর

Leave a Comment