আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা আগুন পাখি,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা আগুন পাখি, আগুন পাখি কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি আগুন পাখি,আগুন পাখি বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,আগুন পাখি
গ্রন্থ সমালোচনা: আগুন পাখি
লেখক: হাসান আজিজুল হক
বিসিএস লিখিত পরীক্ষার এক্সামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গ্রন্থ-সমালোচনা। লিখিত পরীক্ষায় গ্রন্থ সমালোচনার উপর ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে।
আবার ইদানীং দেখা যাচ্ছে বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর চরিত্র থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন থাকে। গল্প/উপন্যাস না পড়া থাকলে চরিত্র মনে রাখা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে উপন্যাসের কাহিনি জানলে একসাথে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষার জন্য কাজে দিবে।
বাংলা কথাসাহিত্যের একজন শক্তিমান লেখক হাসান আজিজুল হক (১৯৩৯)। দেশভাগের পটভূমিতে লেখা তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আগুনপাখি’।
আরো ও সাজেশন:-
‘আগুনপাখি’ উপন্যাসটি বর্ণিত হয়েছে উত্তম পুরুষে। যার বয়ানে আমরা পুরো উপন্যাসটা শুনি, তিনি একজন গ্রাম্য নারী। তিনিই উপন্যাসের কথক-চরিত্র, সাহিত্যের ভাষায় মূল প্রটাগনিস্ট। দশজন গ্রাম্য নারীর মতো চার দেয়ালের মাঝেই আবদ্ধ যার জীবন। তিনি একটি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে, আবার বিরাট একান্নবর্তী পরিবারের গৃহবধূ। তার স্বামীরা পাঁচ ভাই, তাদের বউ-ছেলে-মেয়ে এবং একটি বাল্যবিধবা বোন নিয়ে শ্বশুরবাড়ির বিরাট সংসার। সেখানে নতুন স্বামীকে নিয়ে যেমন স্বল্পবয়স্কা মেয়েটির মুগ্ধতার শেষ নেই, তেমনই সে চমৎকৃত তার শাশুড়ি-মায়ের ব্যক্তিত্বে এবং নেতৃত্ব দেবার স্বাভাবিক ক্ষমতায়।
সংসার-জ্বালা কখনো তাকে পীড়িত করে, কিন্তু তার বাৎসল্যের খামতি হয় না কখনো। খুব কাছ থেকে সে দেখে সংসারের ক্রমোন্নতি, ধনে-জনে-মানে-শস্যে-সম্পদে ধীরে ধীরে পরিবারটির শ্রীবৃদ্ধি। তুমুল সুখের মধ্যে হঠাৎ শোনা যায় বিশ্বযুদ্ধের রণভেরী। টান পড়ে নিত্যকার প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির যোগানে।
এর মধ্যেই একসময় দেখা দেয় কলেরা-বসন্তের প্রাদুর্ভাব। পরপর দু’বছর ফসলহানি হয়- একবার খরায়, তো আরেকবার অতিবৃষ্টিতে। নিয়তির করাল গ্রাসে সেই একান্নবর্তী পরিবারই ভেঙে হয় ছত্রখান, দুর্ভিক্ষের আক্রমণে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সম্পর্ক দ্রুত শেষ হয়ে প্রকট হয় স্বার্থের নগ্নরূপ।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
সেই আকাল কাটতে না কাটতেই আসে নতুন দুর্দৈব। স্বাধীনতার রোল তুলে শতবর্ষীয় সম্প্রীতি-সহাবস্থানের ইতিহাস ভুলে ধর্মোন্মত্ত হিন্দু-মুসলমান অবতীর্ণ হয় ভ্রাতৃঘাতী দ্বন্দ্বে। নিদারুণ দুঃখে কথক প্রত্যক্ষ করেন তার প্রতিবেশী হিন্দু-মুসলমানেরা, যারা এতদিন পরস্পরের পাশে দাঁড়িয়েছে সবসময়, হয়েছে সুখ-দুঃখের সাথী- তারাই কীভাবে রামদা, ছুরি নিয়ে লিপ্ত হচ্ছে মারামারিতে। নুয়ে পড়ে ভ্রাতৃত্বের কেতন, জয় হয় সাম্প্রদায়িকতার। দু’টুকরো হয় ভারতভূমি।
উপন্যাসের শেষে কর্তা পরিবার নিয়ে পাড়ি দিতে যান পাকিস্তানে, কিন্তু সবাইকে অবাক করে বেঁকে বসেন কথক। তিনি থেকে যেতে চান শ্বশুরবাড়ির ভিটেতেই। কিছুতেই রাজি হয় না স্বামী সন্তানদের সাথে মুসলমানদের জন্য আলাদা দেশ পাকিস্তান যেতে। সে কিছুতেই যাবে না। সে বলে আমাকে কেউ বুঝাইতে পারলে না কেনো আলাদা একটা দেশ কেন প্রয়োজন? এ দেশটি আমার নয়?
সেই মেয়েটির মুখে আটপৌঢ়ে ভাষায় বলা- এ এক বুক ভাঙ্গা দেশ ভাগের গল্প। স্বামীর রক্তচক্ষু, পুত্র-কন্যার আবেগ-বিহ্বল অশ্রু- কিছুই নিরস্ত করতে পারে না তাকে। দেশভাগের ভ্রান্ত রাজনীতির বিরুদ্ধে নিজের অজান্তেই প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন তিনি। এই প্রতিবাদ কেবলই নিজের জন্য, আপন অস্তিত্বের জন্যে।
Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Stories | উত্তর লিংক |
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেল | উত্তর লিংক |
এভাবেই একটি পরিবারের উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে লেখক আঁকেন গোটা সমাজের উত্থান-পতনের চিত্র।
উপন্যাসটি আমাদের ইতিহাসেরই রক্তক্ষরণের দলিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, বিলেতী পণ্য বর্জন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ, সাতচল্লিশের দেশ বিভাগ এবং দুটো সম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে অনেক মুসলিম পরিবারের পশ্চিম বাংলা থেকে পূর্ব বাংলা আগমন, এবং অগণিত হিন্দু পরিবারের পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিমবাংলায় গমনের মধ্য দিয়ে কাহিনীর পরিসমাপ্তি ঘটে।
এ উপন্যাসের কাহিনীতে সেই অর্থে কোন গল্প ফাঁদা নেই, বলার মতো প্রণয় নেই, ন্যূনতম কোনো যৌনতা নেই, এমনকি যে ভাষায় উপন্যাসটি কথিত হয়েছে, সেই ভাষাটির সাথেও এদেশের অধিকাংশ পাঠকের বিশেষ কোন যোগযোগ নেই। একটি সাধারণ মুসলিম পরিবারের শিক্ষাদীক্ষাহীন এক নারীর আঞ্চলিক বয়ানে বিশিষ্ট হয়ে উঠা এক ইতিহাস।
বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনৈতিক ইতিহাসে বারবার রূপান্তর ঘটেছে। আর হাসান আজিজুল হকের লেখায় সে রূপান্তরের চমকপ্রদ ছবি ফুটে উঠেছে। তাতে শৈল্পিক নান্দনিকতাবোধের পাশপাশি রয়েছে ব্যক্তিক যন্ত্রণাবোধের প্রবল উপস্থিতি।
উপমহাদেশের রাজনৈতিক সংকট তো কেবল শহুরে বাবুদের নয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাধারণ সদস্যেরও। এটি কেবল পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পুরুষদের নয়, অবলা নারীরও। এ সত্যটা লেখক গ্রামের এক অশিক্ষিতা নারীর ভাবনার মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রেডিং ব্যবস্থা আলোচনা করো
- খিলাফত রাষ্ট্র ও আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য । খিলাফত রাষ্ট্র vs আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য
- What do you near by Business communication?, Explain the concept of business communication
- Describe the barriers to effective communication in business organization
- সমাজদর্শন ও রাষ্ট্র দর্শনের সম্পর্ক, সমাজদর্শ ও রাষ্ট্রদর্শনের সম্পর্ক, Relation between Social Philosophy & Political Philosophy
- দর্শনের বিষয়বস্তুকে প্রধানত কয় ভাগে ভাগ করা যায়?, দর্শনের বিষয়বস্তু হিসেবে অধিবিদ্যা আলোচনা করুন।