আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা কপালকুণ্ডলা,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা কপালকুণ্ডলা, কপালকুণ্ডলা কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি কপালকুণ্ডলা,কপালকুণ্ডলা বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,কপালকুণ্ডলা
উপন্যাস: কপালকুণ্ডলা
রচয়িতা: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উল্লেখযোগ্য চরিত্র: নবকুমার, কপালকুণ্ডলা, কাপালিক, মতিবিবি প্রমূখ।
উনিশ শতকের গোড়াতে বাংলা গদ্য সাহিত্য তথা উপন্যাস শিল্পের সার্থক সূচনা হয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। একাধিক সার্থক উপন্যাস রচনা করে তিনি এ ধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন।
কপালকুণ্ডলা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত দ্বিতীয় উপন্যাস এবং এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক রোমান্টিক উপন্যাস। ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়।
এ উপন্যাসের নিগুঢ় ভাবসঙ্গতির জন্য একে রোমান্সধর্মী উপন্যাস বলা হয়। অরণ্যে কাপালিক পালিতা নারী কপালকুণ্ডলাকে কেন্দ্র করে এই উপন্যাসের কাহিনী গড়ে উঠেছে। সামাজিক সংস্কারের সঙ্গে অপরিচিতা এই নারীর নবকুমারের সাথে বিয়ে এবং তার সমাজ বন্ধনের সাথে দ্বন্দ্বই এর মূল কাহিনী। কপালকুণ্ডলার মধ্যে যে রহস্য, সে রহস্য উদঘাটনই উপন্যাসের বিষয়বস্তু।
আরো ও সাজেশন:-
উপন্যাস শুরু হয় এভাবে- তীর্থ যাত্রীদের নৌকা পথ হারিয়ে এক মোহনায় উপস্থিত হয়। জনবিচ্ছিন্ন সে জায়গায় নৌকার সবার জন্য আহারের ব্যবস্থা করতে নবকুমার বনের মধ্যে কাঠ আনতে যায়। কিন্তু এরই মধ্যে জোয়ার চলে এলে নবকুমারকে রেখেই সবাই চলে যায়। সে বনে নবকুমারের সাথে দেখা হয় এক কাপালিকের।
কাপালিক তাকে ভৈরবীর কাছে বলি দিতে চায়। কিন্তু কাপালিকের আশ্রিতা কন্যা কপালকুণ্ডলার সহায়তায় নবকুমার পালিয়ে যায়। পরে নবকুমার কপালকুণ্ডলাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেয় এবং তারা বাড়ীতে ফিরে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করে।
এখানে শুরু হয় কাহিনির নতুন ধারা। নবকুমারের আগে এক স্ত্রী ছিল। তার নাম ছিল পদ্মাবতী। ঘটনাক্রমে সে পরিবারের সাথে মুসলমান হয় এবং নাম হয় মেহেরুন্নেসা। সে মতি ছদ্মনাম ধারণ করে বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়ায়। সারা উপন্যাস জুড়ে এই মতিবিবির উপস্থিতি রয়েছে। হিন্দুরীতি অনুসারে সে পরিবারসহ পথভ্রষ্ট হয়ে যায়। ফলে সে আর স্বামীর কাছে যেতে পারে না। কিন্তু সে স্বামী নবকুমারকে মন থেকে সরাতে পারে না।
পথিমধ্যে সরাইখানায় কপালকুণ্ডলার সাথে দেখা হলে জানতে পারে নবকুমারের সাথে কপালকুণ্ডলার বিয়ের কথা। এরপর থেকে সে কপালকুণ্ডলা ও নবকুমারের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানোর চেষ্টা করে। এদিকে কাপালিক আসে কপালকুণ্ডলাকে বলি দিতে। মতি কাপালিকের সাথে হাত মিলায় কাপালিকের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কপালকুণ্ডলাকে কৌশলে ঘর থেকে বের করে আনে। একপর্যায়ে নবকুমার সব বুঝতে পারে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
উপন্যাসের শেষে দেখানে হয় স্রোতময় নদীর তীর থেকে কপালকুণ্ডলা হারিয়ে যায়, আর তাকে খুঁজতে নবকুমার নদীতে নামে। তাদের কেউ আর ফিরে আসে না- এখানেই উপন্যাস শেষ হয়। এভাবে এর কাহিনী সবরকম বাহুল্য বর্জন করে বিষাদময় পরিণতির দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে।
উপন্যাসের কাহিনির একদিকে আছে সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়কার আগ্রার নগর ও স্থাপত্য এবং অন্যদিকে আছে অরণ্য ও সমুদ্র। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ইতিহাসের একটি চরিত্রকে (মতি ওরফে মেহেরুন্নেসা) কল্পিত কাহিনির সমান্তরালে স্থাপন করে নির্ভেজাল রোমান্স সৃষ্টি করেছেন।
উপন্যাসে লেখক রোমান্স ব্যবহার করেছেন কিন্তু তা জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করেননি। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কপালকুণ্ডলা, নবকুমার ও কাপালিক। লেখক নির্ভেজাল ইতিহাস নিয়ে উপন্যাস রচনা করেন নি। ইতিহাসের সাথে কল্পনার মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। কিছু চরিত্র কল্পিত আর কিছু চরিত্র ইতিহাস আশ্রিত।
রহস্যময়তা এ উপন্যাসের আরেকটি বৈশিষ্ট্য। কপালকুণ্ডলা, কাপালিক ও মতিবিধি চরিত্রগুলো যথেষ্ট রহস্যময়। উপন্যাসের নারী চরিত্রগুলোকে লেখক সত্যিই অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কপালকুণ্ডলা, মতিবিবি চরিত্র দুটি অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। একই সাথে বিপরীতমুখী গুণাবলী চরিত্রদুটিকে বিশেষভাবে গুণান্বিত করেছে।
প্রকৃতির সৌন্দর্য ও রহস্যময়তা, কপালকুণ্ডলার চরিত্র, কাহিনির ট্রাজিক পরিণতি-এ সব মিলিয়ে ‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাসটি বঙ্কিমের উল্লেখযোগ্য রচনা।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- লিভারেজ ইজারার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ
- লিভারেজ ইজারা বলতে কি বুঝ বিস্তারিত আলোচনা করো
- IAS 17 ও IFRS 16 পার্থক্য, IAS 17 vs IFRS 16 পার্থক্য, IAS 17 ও IFRS 16 মধ্যে পার্থক্য আলোচনা
- আইএফআরএস ১৬ ও আইএসি ১৭ পার্থক্য । আইএফআরএস ১৬ vs আইএসি ১৭ পার্থক্য
- আই এ এস (IAS) অনুযায়ী ইজারা গ্রহীতার হিসাববিজ্ঞানের নীতিসমূহ লেখ
- এসি কারেন্ট ও ডিসি কারেন্ট