BCS গ্রন্থ সমালোচনা ক্রীতদাসের হাসি,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা ক্রীতদাসের হাসি, ক্রীতদাসের হাসি কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ক্রীতদাসের হাসি

আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা ক্রীতদাসের হাসি,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা ক্রীতদাসের হাসি, ক্রীতদাসের হাসি কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ক্রীতদাসের হাসি

গ্রন্থ সমালোচনা
প্রিলি+লিখিত প্রস্তুতি
গ্রন্থ সমালোচনা: ক্রীতদাসের হাসি

লেখক: শওকত ওসমান
বিসিএস লিখিত পরীক্ষার এক্সামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গ্রন্থ-সমালোচনা। লিখিত পরীক্ষায় গ্রন্থ সমালোচনার উপর ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে।

আবার ইদানীং দেখা যাচ্ছে বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর চরিত্র থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন থাকে। গল্প/উপন্যাস না পড়া থাকলে চরিত্র মনে রাখা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে উপন্যাসের কাহিনি জানলে একসাথে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষার জন্য কাজে দিবে।

শওকত ওসমানের লেখা রূপকধর্মী উপন্যাস ক্রীতদাসের হাসি’। এ উপন্যাসটি আরব্য রজনী আলিফ লায়লা ওয়া লায়লা-এর শেষ গল্প ‘জাহাকুল আবদ’ এর অনুবাদ। এ উপন্যাসে রূপকাকারে আইয়ুবি স্বৈরশাসনের স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছে।

উপন্যাসের মূল চরিত্র হাবশী গোলাম তাতারী। আব্বাসীয় খলিফা হারুণ অর রশীদের হাবশী ক্রীতদাস ও আর্মেনীয় দাসী মেহেরজান পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট। তাদের ভালবাসাকে স্বীকৃতি দেন খলিফার স্ত্রীর জুবায়দা। খলিফার অজান্তেই রাজমহিষী তাদের দুজনের বিয়ে দেন। তারা খলিফার স্ত্রীর অনুমতিক্রমেই প্রতিরাতে দাসদের বসবাসের নির্ধারিত স্থানে দেখা করত।

খলিফা হারুনুর রশীদ বাগদাদের অধিপতি। উজিরে আজম জাফর বামাকীর হত্যার আদেশ কার্যকর হওয়ার পর তার মধ্যে মানসিক অস্থিরতা তৈরি হয়।


আরো ও সাজেশন:-

রাতে এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে একদিন ক্রীতদাসপল্লী অতিক্রম করার সময় দেখতে পান গোলাম তাতারী ও তার স্ত্রী মেহেরজানের প্রণয় দৃশ্য এবং শোনেন তাতারীর প্রাণখোলা হাসি। চরম দারিদ্র্যে বসবাস করলেও তাদের এই হাসি থামে না।
বাদশাহ হারুণ রূপবতী দাসী মেহেরজানকে রাণীর মর্যাদা দিয়ে প্রাসাদে নিয়ে আসেন। তাতারীকেও প্রাসাদে নিয়ে আসা হলো। তাতারীকে একটি রাজ্যের রাজত্ব দেওয়া হলো। আরো অন্যান্য সুবিধা দিয়ে বলা হলো এর বিনিময়ে খলিফা প্রাণখোলা হাসি শুনতে চান কিন্তু তাতারী আর হাসে না। তাতারীর প্রাণখোলা হাসির উৎস ছিল প্রিয়া মেহেরজান। সে এখন খলিফার রাণী। প্রিয়া বিরহে তাতারী প্রাণখোলা হাসি তো দূরের কথা, সামান্য হাসিও হাসতে পারে না শত চেষ্টা করে।

বিফল হয়ে খলিফা হারুণ দুঃখে, ক্ষোভে চরম উত্তেজিত হয়ে তাতারীকে চাবুক মারার আদেশ দেন। তাতারীকে কোড়া (চাবুক) মারা হয়। বাদশাহ হারুনের সব রকমের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সবশেষে তাতারী বলে- ‘শোন, হারুনুর রশীদ, ‘দিরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দী কেনা সম্ভব-! কিন্তু কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না না-না-না।”
এ উক্তিটিই উপন্যাসের জীবনদর্শন।

খলিফা বুঝলেন স্বাধীনতার চেয়ে মূল্যবান আর কিছু নেই। একমাত্র স্বাধীনতাই পারে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে।
রূপকাশ্রয়ী এ উপন্যাসের পটভূমি হচ্ছে- ষাটের দশকের পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ। তখন আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট পূর্ব পাকিস্তান। এ সময় সব ধরণের বাক্ স্বাধীনতা হরন করা হয়েছিল। তৎকালীন পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে ব্যঙ্গ করে এ উপন্যাস রচিত হয়েছে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আরব্য রজনীর খলিফা হারুন আর রশিদ ও তার ক্রীতদাস তাতারীর ঘটনার মাধ্যমে শওকত সেই সময় গণতন্ত্র ছিল অনুপস্থিত আর বাক স্বাধীনতা ছিল চরম সঙ্কটে। ওসমান রূপকার্থে আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন।
গণতান্ত্রিক চেতনাকে ভয় পায় এ স্বৈরাচারি শাসক। এ চেতনাকে দমন করার জন্য অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তবুও লেখকের প্রতিবাদ স্তব্ধ থাকেনি। রূপকের মধ্য দিয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে এই প্রতিবাদ। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’র তাতারী।

এ উপন্যাসে আরব্য রজনীর কাহিনীর আড়ালে লেখক এটাই বুঝিয়েছেন। আইয়ুব খানের স্বৈরশাসন যতই জাঁকজমকভাবে উন্নয়নের দশক পালন করুক, বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ব্যতীত মানুষ কখনো সুখী হতে পারে না। তাদের মুখে কখনোই হাসি ফুটবে না ।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

নাট্যিরীতিতে রচিত এ উপন্যাসটির বর্ণনা উত্তম পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে শুরু হলেও বেশিরভাগ বর্ণনায় সর্বজ্ঞদৃষ্টিকোণ ব্যবহৃত হয়েছে। তবে কখনো কখনো বিভিন্ন চরিত্রের দৃষ্টিকোণও ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন উপন্যাসে ধৃত জীবনদর্শনের উপর আলো ফেলেছেন তাতারীর দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে।

খলিফা হারুনুর রশিদের ভাষা ও এক স্বতন্ত্র জীবন-সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে শওকত ওসমান উপন্যাস বর্ণনার ভাষা নির্মাণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মাত্রায় আরবি ফারসি শব্দ ব্যবহার করেছেন।

সময় ও রূপক-ফ্যান্টাসির শিল্পকে ধারণ করে ‘ক্রীতদাসের হাসি’ বাংলা উপন্যাসের ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। উপন্যাসটি মূলত বাংলাদেশের ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক-বুদ্ধিবৃত্তিক-ঐতিহাসিক বাস্তবতার শিল্পিত রূপ। আর এ বিষয়বস্তু ফুটিয়ে তোলার জন্যই আঙ্গিক কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছেন রূপক এবং কাহিনীর আদল হিসেবে কল্পনা করেছেন আরব্য উপন্যাসের আদল। উদ্দেশ্য শাসকদের বিভ্রান্ত করা।

এক্ষেত্রে তিনি সফলও হয়েছিলেন। তখনকার শাসকগণ
এ উপন্যাসের রূপকী ব্যঞ্জনা অনুধাবন না করেই এ উপন্যাসের জন্যই তাকে ‘আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬)’ প্রদান করেছিল।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment