বাংলাদেশের কয়েকটি প্রাচীন নগর সভ্যতার নাম, অবস্থান, প্রাপ্ত নিদর্শন, বানিজ্যিক গুরুত্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে ছকের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত কর এবং বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নির্দেশনাঃ
উপরের ছবিতে উল্লেখিত অনুযায়ী-
১. অনুরূপ ছক তৈরি করো।
২. উপরিউক্ত ছকের আলোকে এ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করবে।
৩. পাঠ্যপুস্তুক থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসরণ করবে।
৪. প্রয়োজনে একাধিক কাগজ ব্যবহার করতে পারবে।
৫. প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিটি সভ্যতার একটি চিত্র ব্যবহার করবে।
উত্তর সমূহ:
তারিখ : ১৪ আগস্ট , ২০২১ খ্রি .
বরাবর , প্রধান শিক্ষক রাকিবুল স্কুল ,ঢাকা।
বিষয় : বাংলাদেশের প্রাচীন নগর সভ্যতার তালিকা এবং বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিয়ে প্রতিবেদন।
জনাব,
বিনতি নিবেদন এই যে , আপনার আদেশ নং বা.উ.বি.৩৫৫-১ তারিখ ১৩/৮/২০২১ অনুসারে উপরােক্ত বিষয়ের উপর আমার স্বব্যখ্যাত প্রতিবেদনটি নিন্মে পেশ করলাম ।
জনাব,
বাংলাদেশের প্রাচীন নগর সভ্যতার তালিকা এবং বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য আদিষ্ট হয়ে নিচের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করছি।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
সভ্যতার নাম | অবস্থান | প্রাপ্ত নিদর্শন | বানিজ্যিক গুরুত্ব | সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ঠ্য |
ওয়ারী বটেশ্বর | ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নগর সভ্যতার( সিন্ধু) পর সভ্যতার ইতিহাসে এটি প্রাচীন বাংলার দ্বিতীয় নগর সভ্যতা।প্রাচীন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত নরসিংদী জেলার । বেলাব উপজেলার দুটি গ্রামের বর্তমান নাম । উয়ারী-বটেশ্বর। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে উঠেছিল একমাত্র মাটির নিচে প্রাপ্ত এই নগর সভ্যতা উয়ারী-বটেশ্বর । | ধাতব অলংকারস্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাচের পুঁতিচুন-সুরকির রাস্তাইট নির্মিত স্থাপত্য ও দুর্গছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রাপাথরের বাটখারাহাইটিন ব্রেজ নির্মিত পাত্র ও রােলেটেড মৃৎপাত্রপ্রাচীন চিত্রশিল্পহাতিয়ার । | ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা এবং নয়নাভিরাম বাটখারা বাণিজ্যের পরিচায়ক। এখানে ছিল একটি নদীবন্দর। হাইটিন ব্রোঞ্জ নির্মিত পাত্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে উয়ারীবটেশ্বর এর বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা বলা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের | শিক্ষক ড. সুফি মােস্তাফিজুর রহমানের মতে, উয়ারী-বটেশ্বর ছিল একটি সমৃদ্ধ, সুপরিকল্পিত, প্রাচীন গঞ্জ বা বাণিজ্য কেন্দ্র । সমুদ্র বাণিজ্যের। সাথে এ অঞ্চলটি যুক্ত ছিল। “সৌনাগড়া ” যা গ্রিক ভূগােলবিদ, টলেমী তার বই ” জিওগ্রাফিয়াতে”। উল্লেখ করেছিলেন | উয়ারী-বটেশ্বরে প্রাপ্ত ধাতব অলংকার, স্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাচের পুঁতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় বহন করে। এখান থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন চিত্রকলা তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের ধারনা দেয়। |
মহাস্থানগড় (পুণ্ড্রনগর) | ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নগর সভ্যতার( সিন্ধু) পর সভ্যতার ইতিহাসে। এটি প্রাচীন বাংলার দ্বিতীয় নগর সভ্যতা। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলােমিটার উত্তরে করতােয়া নদীর তীরে মহাস্থানগড় (পুণ্ড্রনগর) অবস্থিত। | প্রাচীন ব্রাহ্মী লিপিপােড়ামাটির শিল্পকর্মপ্রাচীন বৌদ্ধবিহার নগরের রাস্তাঘাটঘরবাড়িঅলংকার ও মুদ্রভাস্কর্যবিভিন্ন যুগের মুদ্রাকুপমন্দিরতৈজসপত্র মন্দির ও মসজিদতােরণবুরুজরৌপ্য ও তাম্র মুদ্রাকালাে মসৃণ মৃৎপাত্রপােড়ামাটির ফলক মূর্তি সহমাটি ও ধাতব দ্রব্যাদি | ১৫০০ সাল পর্যন্ত করতােয়া নদীর পশ্চিম তীরে গড়ে ওঠা এ মহাস্থানগড়ই ছিল। তখনকার মানুষের রাজধানী প্রসিদ্ধ এই নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল। যখন ইউরােপ – আমেরিকা সভ্য হতে শেখেনি, তখন থেকেই এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য করেত লােক আসত । পৃথিবীর অধিকাংশ নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল নদীর তীরে কারণ নদী থাকায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে নদী বড় ভূমিকা রাখে। নদীর সাথে সমুদ্র যােগাযােগ সুবিধা, নগর সভ্যতা এবং কৃষি ফসল এশিয়া ইউরােপ বণিকদের কাছে ছিল এটি গুরুত্বপুর্ণ বানিজ্য নগরী। পুন্ড্রনগরের সঙ্গে বাণিজ্যিক কারণে ভারত উপমহাদেশের অনেক নগর বন্দরে যােগাযােগ ছিল ফলে বহু বাণিজ্যিক ব্য” পুন্ড্রনগরের সঙ্গে বাণিজ্যিক কারণে ভারত উপমহাদেশের অনেক নগর বন্দরে যােগাযােগ ছিল ফলে বহু বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক লেনদেন ঘটেছিল। | মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের রাজধানী মহাস্থানগড়ের নাম ছিল পুণ্ড্রনগর। এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।প্রাচীন ব্রাহ্মী লিপি, পােড়ামাটির শিল্পকর্ম, প্রাচীন ব্রাহ্মী লিপি, পােড়ামাটির শিল্পকর্ম, প্রাচীন বৌদ্ধবিহার, অলংকার , কাচের পুঁতি, মাটির তৈজসপত্র, মসজিদ, মন্দির, মাজার শরীফ, শীলাদেবীর ঘাট, বেহুলার বাসর ঘর ইত্যাদি বাংলার ইতিহাস, সাহিত্য ও ঐতিহ্যের প্রাচীন। সাংস্কৃতির রুপরেখা হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে মহাস্থানগড় কে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘােষনা করা হয়েছিল। |
নিম্নে বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য তুলে ধরা হলােঃ
আজকের বাংলাদেশে যে জীবনব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তার শুরু ও বিকাশ হঠাৎ করে হয়নি। প্রাচীন বাংলার মানুষের হাতে রচিত হয়েছে এর ভিত।”আর কালে কালে নানা পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে এর বিকাশ ঘটেছে। তাই আজকের বাংলাদেশের সমাজে অনেক পরিবর্তন এলেও আগের দিনের অনেক বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রয়েছে।
কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে একেবারে আলাদা ধারাও লক্ষ করা যায়। মানুষের জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটে। আজকের বাংলাদেশের সংস্কৃতি গভীরভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে এতে প্রাচীন বাঙালি সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে বাঙালির মধ্যে অসাম্প্রদায়িক জীবনধারা বিকাশে প্রাচীন বাংলার প্রভাব স্পষ্ট।
সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ধর্ম। বাংলাদেশের মানুষের বেশির ভাগ মুসলমান। কিন্তু এদেশে ইসলাম ধর্ম এসেছে মধ্যযুগে। তাই প্রাচীন বাংলায় ইসলামের প্রভাব ছিল না। তখন হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মই ছিল সমাজের প্রধান ধর্ম। এখানে প্রাচীন বাংলা বলতে বর্তমান বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের সীমানাকে বােঝানাে হচ্ছে।
ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকেও আমাদের দেশে বৈচিত্র্য কম নয়। ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্ম এখানে পালিত হচ্ছে । ইসলাম ধর্ম প্রচারে মুসলিম সুফি ও সাধকরাই প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন। এভাবেই আজ বাংলাদেশ মুসলিমপ্রধান দেশ।
প্রাচীন বাংলার অর্থনীতি ছিল কৃষিনির্ভর। এ সময় কৃষিতে উদ্বৃত্ত ছিল। ধান ছিল প্রধান ফসল। প্রাচীন বাংলায় উৎপাদিত গুড় ও চিনি বিদেশে রপ্তানি হতাে। তুলা সরিষা ও পান চাষের জন্য বাংলাদেশের খ্যাতি ছিল। অর্থাৎ প্রাচীন বাংলার কৃষিতে সমৃদ্ধ ছিল। বর্তমান বাংলার কৃষির সাথে প্রাচীনকালে উৎপাদিত ফসলের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে বিদেশি নানা জাতের ফসল এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
প্রাচীন যুগ থেকেই বাংলাদেশের তাতিরা মিহি সুতি ও রেশমি কাপড় বুনতে পারদর্শী ছিল। প্রাচীন বাংলার মসলিন কাপড় ছিল পৃথিবী বিখ্যাত তখন উন্নত মানের মৃৎপাত্র, ধাতব পাত্র, অলংকার নির্মাণ হত। বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে মসলিন কাপড়ের অস্তিত্ব না থাকলেও যারা মসলিন কাপড় তৈরি করতেন তাদের বংশধররা বর্তমানে জামদানি শাড়ি তৈরি করছেন। বর্তমান বাংলাদেশ এখন পােশাক শিল্পে পৃথিবীর অন্যতম অবস্থানে রয়েছে।
প্রাচীন যুগে বাংলাদেশ বিনােদন ও ধর্ম-কর্মের অংশ হিসেবে নাচ-গান, নাটক, মল্লযুদ্ধ ও কুস্তি খেলার প্রচলন ছিল। বাদ্যযন্ত্র হিসেবে কাসর, করতাল, বীণা, বাঁশি, মৃদঙ্গ দেখা যায়। তবে বর্তমানে এসব পুরাতন বাদ্যযন্ত্রের কয়েকটি সাথে মিল খুঁজে পাওয়া গেলেও বর্তমান বাঙালি বাদ্যযন্ত্র হিসেবে রয়েছে ঢাক-ঢােল, হারমােনিয়াম, পিয়ানাে, বেহালা ইত্যাদি। প্রাচীন যুগের মঞ্চনাটকের প্রচলন ছিল। কিন্তু বর্তমান সংস্কৃতির আগ্রহ টেলিভিশন কিংবা মােবাইলে নাটক দেখায়। বর্তমানে মঞ্চ নাটকের প্রচলন থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেলিভিশন কিংবা মােবাইল প্রযুক্তির উপর বেশিরভাগ দর্শক নির্ভরশীল।বিভিন্ন ধর্মের কাছ থেকে পাওয়া প্রেরণা। এসব মিলে জনবৈচিত্র্যের মতােই বাঙালি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকেও লালন করে আসছে।
চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা বলব। এখানে প্রকৃতি যেমন সমৃদ্ধ তেমনি তার রয়েছে ভাঙাগড়ার খামখেয়ালিপনা। একে কোনভাবেই এড়িয়ে চলা সম্ভব ছিল না, এখনও অসম্ভব। তাই বলা যায় যে, প্রাচীন বাংলার ও বর্তমান বাংলার সংস্কৃতির মধ্য বেশ কিছু বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাদৃশ্য আজও বিদ্যমান।
প্রতিবেদকের নাম : রাকিব হোসেন সজল
প্রতিবেদনের ধরন : প্রাতিষ্ঠানিক
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বাংলাদেশের প্রাচীন নগর সভ্যতার তালিকা এবং বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিয়ে প্রতিবেদন।
প্রতিবেদন তৈরির স্থান : ঢাকা
তারিখ : ১৩.০৮.২০২১ ইং
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
- ২০২১ সালের SSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের HSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের ৯ম/১০ শ্রেণি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
- ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
- ৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
- ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।