dakhil (দাখিল) হাদিস শরীফ ১২তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, dakhil hadis sharif assignment answer 12th week 2022, দাখিল ১২তম সপ্তাহের হাদিস শরীফ অ্যাসাইনমেন্ট ২০২২, dakhil hadis sharif 12th week assignment answers 2022

শ্রেণি: দাখিল/SSC/ 2022 বিষয়: হাদিস শরীফ এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2022
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 02 বিষয় কোডঃ 102
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ মুসলিমদের মাঝে সুসম্পর্ক বৃদ্ধিতে সালামের গুরুত্ব : একটি পর্যালােচনা (নিদের্শনার আলােকে বর্ণনা কর)

শিখনফল/বিষয়বস্তু :

  • অধ্যায় : সালাম

নির্দেশনা :  

  • সালামের পরিচয়
  • সালামের শরয়ীহুকুম।
  • সালামের নিয়মপদ্ধতি
  • সালামের গুরুত্ব ও উপকারিতা

  • সালামের পরিচয়

উত্তর:

সালাম আরবি শব্দ, এর অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, শুভকামনা। সালাম একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন পরিপূর্ণ ইসলামি অভিবাদন। ‘সালাম’ আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম। (সুরা-৫৯ হাশর, আয়াত: ২৪)। আল্লাহ তাআলা প্রথমে আদি মানব হজরত আদম (আ.)–কে সালাম শিক্ষা দেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা হজরত আদম (আ.)–কে সৃষ্টি করে বলেন, যাও ফেরেশতাদের সালাম দাও এবং তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেয়, মন দিয়ে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। সে অনুযায়ী হজরত আদম (আ.) গিয়ে ফেরেশতাদের বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’, অর্থ ‘আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’ ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, ‘আসলামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’, অর্থ ‘আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।’ (মিশকাত: ৪৬২৮)।

অন্যের গৃহে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করা নিষেধ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না করো এবং গৃহবাসীদের সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখো।’ (সুরা-২৪ নূর, আয়াত: ২৭)।

  • সালামের শরয়ী হুকুম।

উত্তর:

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক স্থানে নামাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। এ নামাজ মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য ফরজ ইবাদত। কিন্তু যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার হুকুম কি? যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তাকে নামাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে মুসলমান হিসেবে আপনি কি করবেন?

এমনই একটি প্রশ্নের সুন্দর জবাব দিয়েছেন হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালি রহমাতুল্লাহি-

যুবকের জিজ্ঞাসা
হুজ্জাতুল ইসলাম হজরত ইমাম গাজ্জালি রহমাতুল্লাহি আলাইহি-কে এক যুবক জিজ্ঞাসা করল- হে শায়খ! নামাজ তরককারীর হুকুম কি? অথ্যাৎ যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার প্রতি আমাদের করণীয় কি?

তিনি উত্তর দিলেন-
নামাজ তরককারী ব্যক্তির প্রতি হুকুম হলো- তুমি তাকে তোমার সঙ্গে করে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে নিয়ে যাবে।’ কাজির (শাসকের) ভূমিকায় নয় বরং আল্লাহর পথে আহ্বানকারী হিসেবে।

যারা নামাজ পড়ে না; ইসলামের প্রতি আহ্বানকারীরা যদি চেষ্টা করে তবে তাকে নামাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে এবং সমাজে নামাজ প্রতিষ্ঠা করতে এর বিকল্প নেই।’

হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ তরককারীর ব্যাপারে কঠোর সতর্কবার্তা প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিল সে কুফরি করল।’

অন্য হাদিসে এসেছে- ‘ইসলাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য নিরূপনকারী হচ্ছে নামাজ।’

সুতরাং কোনোভাবেই নামাজ তরক করা উচিত নয়। কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমান নারী-পুরুষের জন্য আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেককে ইসলামের পথের দায়ি তথা আহ্বানকারী হিসেবে কবুল করুন। প্রত্যেককে যথাযথভাবে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।

ইসলামে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাম শান্তির প্রতীক। সালামে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সালাম এভাবে দিতে হয়, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

‘ সালাম মুসলমানদের পরস্পরে ভালোবাসা, হৃদ্যতা সৃষ্টি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর ইমানদার হতে পারবে না পরস্পরে ভালোবাসা না হলে। তোমাদের কি এমন একটি বিষয়ের কথা বলব, যা করলে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও। ‘ (মুসলিম : ৫৪)

এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ইসলামের কোন কাজ সবচেয়ে ভালো? রাসুল (সা.) বললেন, ‘খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া। ‘ (বোখারি : ১২)

সালামের প্রতিটি বাক্যে দশ নেকি। সালামে মোট তিনটি বাক্য আছে। সুতরাং যে পূর্ণ সালাম দেবে তার ত্রিশটি নেকি অর্জন হবে। একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম’, রাসুল তার উত্তর দিলেন, তারপর সে বসল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘দশ নেকি। ‘ অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। ‘ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। পরে ওই ব্যক্তি বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘বিশ নেকি। ‘ অতঃপর অন্য একজন এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। ‘ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। সেও বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘ত্রিশ নেকি। ‘ (তিরমিজি : ২৬৮৯)

সালামের বিধান ও তার পদ্ধতি : প্রথমে সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত, উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। যদি সালামের দ্বারা কোনো দলকে উদ্দেশ্য করা হয়, তাহলে তার উত্তর দেওয়া ওয়াজিবে কেফায়া। অর্থাৎ একজন উত্তর দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে, তবে সবারই উত্তর দেওয়া উত্তম।

উত্তর দেওয়ার সময় সালামের চেয়ে বাড়িয়ে উত্তর দেওয়া সুন্নাত। যেমন কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলবে। কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’ বলবে।

চিঠি বা মেসেজ ইত্যাদির শুরুতে সালাম দেওয়া সুন্নাত। এর মৌখিক বা লিখিত উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। (তিরমিজি ২/১০১)

সালামের আদবসমূহ : মানুষের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো প্রয়োজন, যাতে তা মুসলমানদের প্রতীকে পরিণত হয়। বিশেষ কোনো দলকে সালাম দেওয়া বা শুধু বড়দের দেওয়া কিংবা ছোটদের না দেওয়া উচিত নয়। অনুরূপভাবে অপরিচিতকে বাদ দিয়ে শুধু পরিচিতকে সালাম দেওয়াও কাম্য নয়। (বুখারি : ১২)

উত্তম হলো- ছোট বড়কে প্রথমে সালাম দেবে। পথচারী উপবিষ্টকে সালাম দেবে। আরোহণকারী পথচারীকে সালাম দেবে। কম লোক বেশি লোককে সালাম দেবে। (বুখারি : ৬২৩১)

উচ্চ স্বরে সালাম দেওয়া ও উত্তর দেওয়া সুন্নাত। কেননা সালাম উচ্চারণ করতে হয়। হাত বা মাথার ইশারা ইত্যাদি সালাম বলে বিবেচিত হবে না। হ্যাঁ, দূরে হলে বা উত্তর শুনতে কোনো কিছু বাধা হলে মুখে উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে হাত বা মাথার ইশারায় উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়ে দেবে। কাছে হলে সালামে হাত ওঠানো অপ্রয়োজনীয় ও সুন্নাতের খেলাফ। (তিরমিজি ২/৯৯)

সুন্নাত হলো দুজন আলাদা হওয়ার পর পুনরায় সাক্ষাৎ হলে আবার সালাম দেওয়া। সাহাবায়ে কেরাম যখন হাঁটতেন, তখন তাঁদের সামনে কোনো গাছ অথবা স্তূপ পড়ত, তাঁরা ডানে-বাঁয়ে আলাদা হয়ে যেতেন। অতঃপর আবার সাক্ষাৎ হলে একে অন্যকে সালাম দিতেন।

সালাম শুধু মুমিনদের অভিবাদন, কাফেরদের সালাম দেওয়া বৈধ নয়। হ্যাঁ, যদি এমন জায়গায় উপস্থিত হয় যেখানে কাফের-মুসলমান একত্রে থাকে, সেখানে সালাম দেওয়ার সময় মুসলমানের নিয়ত করবে। (সুনানে আবি দাউদ : ৫২০৫) যদি কোনো অমুসলিম সালাম দেয় তাহলে তার জবাবে ‘আস্সালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলবে। (মুসনাদে আহমাদ : ২৪৩০৪) কিংবা ‘ওয়ালাইকা’ বা ওয়ালাইকুম’ বলবে। অমুসলিমদের বিশেষ প্রয়োজনে সালাম ছাড়া অন্য কোনোভাবে অভিবাদন জানানো বৈধ। যেমন শুভ সকাল বা শুভ রাত্রি ইত্যাদি।

তবে এমন বাক্য ব্যবহার করা যাবে না, যা অন্য ধর্মের জন্য নির্ধারিত। অন্যের মাধ্যমে কারো কাছে সালাম পৌঁছানোও সুন্নাত। যার কাছে সালাম পৌঁছানো হবে উত্তর দেওয়া তার দায়িত্ব। (তিরমিজি ২/৯৯)

মাহরাম (যাদের দেখা বৈধ) নারীদের বা স্ত্রীদেরও সালাম দেওয়া সুন্নাত। আর ফেতনা থেকে নিরাপদ হলে পরনারীদেরও সালাম দেওয়া জায়েজ। অনুরূপ নারীরাও পরপুরুষদের ফেতনার আশঙ্কা না হলে সালাম দিতে পারবে। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬৯)

কাউকে ঝুঁকে সালাম দেওয়া জায়েজ নেই। (তিরমিজি : ২৭২৮)

যেসব অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ : যে ব্যক্তি সালামের উত্তর দিতে অক্ষম তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ। যথা : নামাজ, আজান-ইকামত, জিকির, তিলাওয়াত, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা, খানাপিনা ও ইস্তিঞ্জারত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ। (রদ্দুল মুহতার ১/৪১৪)

  • সালামের নিয়ম পদ্ধতি

উত্তর:

সালাম দেওয়া সুন্নত এবং উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। আমাদের অনেকেরই সালাম দিতে গিয়ে বা সালামের উত্তর দিতে গিয়ে অজান্তেই ভুল হয়ে যায়। আমরা প্রতিদিন অনেককেই এভাবে সালাম দিতে শুনি যে, স্লামালাইকুম, আস সালামালাইকুম, সেলামালাইকুম, ইত্যাদি। আবার উত্তর দেয়ার সময়ও শোনা যায় ভুল শব্দের ব্যবহার।যেমন, অলাইকুম সালাম, অলাইকুম আস-সালাম ইত্যাদি।

সালাম একটি দুআ। ইসলামের শেআর ও প্রতিক পর্যায়ের একটি আমল। এর সহীহ উচ্চারণের প্রতি গুরুত্ব দেয়া জরুরি। কমপক্ষে এতটুকু বিশুদ্ধ উচ্চারণ অবশ্যই জরুরি, যার দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সালামের শরিয়ত সম্মত তিনটি স্তর রয়েছে:

১. পূর্ণাঙ্গ ও সর্বোচ্চ স্তর: ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। (অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক)

২. এর চেয়ে নিম্নস্তর: “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” (অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি এবং আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হোক)।

৩. সবচেয়ে নিম্নস্তর: “আসসালামু আলাইকুম” (অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক)।

ইমাম নওবি রহ. বলেন,

” اعلم أن الأفضل أن يقول المُسَلِّم : السَّلامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، فيأتي بضمير الجمع وإن كان المسلَّم عليه واحداً ، ويقولُ المجيب : وَعَلَيْكُمُ السَّلامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَركاتُه .

“জেনে রাখো, সালাম দাতার জন্য সবচেয়ে উত্তম হলো, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” বলা। বহু বচনের সর্বনাম ব্যবহার করবে যদিও যাকে উদ্দেশ্য করে সালাম দেয়া হচ্ছে সে একজন ব্যক্তি হয়। আর উত্তর দাতা বলবে, “ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। ” (আল আযকার, পৃষ্ঠা: ৩৫৬-৩৫৮)

উল্লেখ্য যে, মাঝেমধ্যে ‘সালামুন আলাইকুম’, “সালামুন আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ”, সালামুন আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ” ইত্যাদি বাক্য দ্বারাও সালাম প্রদান করা জায়েজ আছে।
এ বাক্য দ্বারা ফেরেশতাগণ জান্নাতবাসীদেরকে সম্ভাষণ জানাবেন বলে কুরআনের একাধিক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। দেখুন: (সূরা যুমার/৭৩, সূরা নাহল/৩২)।

অনুরূপভাবে সূরা কাসাস এর ৫৫ নং এবং সূরা আনআমের ৫৪ নং আয়াতের মাধ্যমেও এ সব বাক্য দ্বারা সালাম দেয়ার বৈধতা প্রমাণিত হয়। তাছাড়াও এসব বাক্য দ্বারা আমাদের পারস্পারিক সালাম লেনদেন প্রসঙ্গে আলাদা সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

‘স্লামালিকুম’ এর কি কোনও অর্থ আছে? এভাবে কি সালাম দেয়া যাবে?

‘স্লামালিকুম’ মূলত: ‘আসসালামু আলাইকুম’ এর বিকৃত রূপ। আমাদের সমাজের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানহীন কতিপয় মানুষ বা তথাকথিত উচ্চ ডিগ্রীধারী শিক্ষিত মূর্খরা এভাবে বলে থাকে। এর কোনও অর্থ নাই। তাই জেনেবুঝে ‘স্লামালিকুম’ এ বিকৃত শব্দ দ্বারা সালাম দেয়া বৈধ নয়। বরং আমাদের কতর্ব্য, সঠিক পদ্ধতি ও বিশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেয়া।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন এবং। আমিন।

  • সালামের গুরুত্ব ও উপকারিতা

উত্তর:

সালাম আরবি শব্দ। এর অর্থ-শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, ইত্যাদি। মুসলমানদের পরস্পর সাক্ষাতে সম্ভাষণ করাকে সালাম বুঝায়। এই সম্ভাষণের পদ্ধতি বিভিন্ন জাতিতে বিভিন্ন প্রকার। ইসলাম ধর্মের পবিত্র কিতাবে মুসলমানদের পরস্পর সালাম-বিনিময় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ইসলাম হল আল্লাহ তাআলার একমাত্র মনোনীত একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। কুরআন মাজিদ হল পরিপর্ণ হেদায়েত গ্রন্থ। আর ইসলামি শিষ্টাচারের মধ্যে সালাম হল অভিভাদনের অন্যতম মাধ্যম। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা তৈরির প্রধান উপাদেয়ও সালাম। সালামের মাধ্যমে সমাজে শান্তি আনা সম্ভব, কারণ সালামের মাধ্যমে একে অপরের প্রতি শান্তি কামনা করে থাকেন।

আল্লাহ তাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ পৃথিবীতে চলার পথে কিরূপে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে পরস্পরের মধ্যে ভাব বিনিময়, সাদর-সম্ভাষণ ও অভিবাদন করে চলবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এই শিক্ষা দিয়েছেন।

ইসলামে সালাম শুধু সম্মানার্থেই ব্যবহার হয় না বরং এটি কল্যাণের একটি বিশেষ দোয়া। দেখা সাক্ষাতে পরস্পর শান্তি ও কল্যাণ কামনায় দোয়া করেন। সালাম শব্দের শাব্দিক অর্থ শান্তি ও নিরাপত্তা। ইসলামের বিধানানুসারে দেখা সাক্ষাতে পরস্পর পরস্পরের জন্য শান্তি নিরাপত্তা কামনা করে যে দোয়া করা হয় তার নামই সালাম। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর যখন ওই সব লোক তোমার কাছে আসে যারা আমাদের আয়াতসমূহের ওপর ঈমান আনে, তখন তুমি বল- তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’ (সুরা আল-আনআম : আয়াত ৫৫)

মানব সৃষ্টির পর থেকে যত নবি-রাসুল এসেছেন সবাই পৃথিবীতে শান্তি-প্রতিষ্ঠার জন্যই কাজ করেছেন। একমাত্র ইসলাম ধর্মেই এই অনিন্দ্য বার্তাটি রয়েছে। ইসলাম ধর্মের ন্যায় অন্যান্য ধর্মেও একে অপরকে সম্মান জানানোর নিয়ম রয়েছে কিন্তু তা দুনিয়াতে নিয়ম পালনার্থে করা হয়।

কিন্তু এক্ষেত্রে ইসলামই ব্যতিক্রম। কেননা সালাম প্রদান করার মাধ্যমে ইসলাম একটি আধ্যাত্মিক উন্নতির ইঙ্গিত প্রদান করে। সালাম প্রদান করার মাধ্যমে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগিয়ে তোলে। ভালোবাসার সুসম্পর্ক বাড়ায়। হাদিসে এসেছে-
এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কথা বলার আগে সালাম দাও। যখন দুইজন পরস্পরের সম্মুখীন হও তখন যে কেউ আগে সালাম দেয় সে আল্লাহর সবচয়ে বেশি কাছাকাছি।’ (মেশকাত)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছোট, বড় সবাইকেই সালাম দিতেন। ছোট হলে তাকে সালাম দেয়া যাবে না; এমনটি ইসলামের শিক্ষা নয়। কারণ আপনি সালাম দিলে সে আপনার কাছ থেকে এই মহামূল্যবান অভিভাদনের ভাষা ও সংস্কৃতি শিখবে। অতএব এই সুযোগ হাতছাড়া করার কোনো অবকাশ নেই। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সালামের প্রসার ঘটাতে হবে। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিজেদের মধ্যে সালামের ব্যাপকতা প্রদান কর।’

নিজের ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেয়া, স্ত্রী-সন্তান-সন্তুতির সামনে সালাম বিনিময় করাসহ কারও বাড়িতে প্রবেশের সময় সালাম দেয়া এবং ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেয়া সবচেয়ে উত্তম কাজ। হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের কোন কাজ সর্বোত্তম? উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘ক্ষুধার্তকে খাবার দেয়া এবং চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম করা।’ (মেশকাত)

সালাম শুধু ঘরে অনুমতি নেয়া আর পারস্পরিক অভিভাদন ও দোয়ায় সীমাবদ্ধ নয়। সালাম দেয়ার মাঝে রয়েছে অনেক বরকত ও সাওয়াব। হাদিসে পাকে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একবার এক ব্যক্তি এসে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। তখন তিনি বললেন, লোকটির জন্য ১০টি নেকি লেখা হয়েছে।
তারপর অন্য এক ব্যক্তি এসে (একটু বাড়িয়ে) বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’। তখন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তার জন্য ২০টি নেকি লেখা হয়েছে।

তারপর অন্য এক ব্যক্তি এসে (আরও একটি শব্দ বাড়িয়ে) বললেন-‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার (সালামের) উত্তর দিয়ে বললেন, লোকটির জন্য ৩০টি নেকি লেখা হয়েছে।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ, মেশকাত)

তাছাড়া এক মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের যেসব হক বা অধিকার রয়েছে তন্মধ্যে অন্যতম একটি হলো কারো সঙ্গে দেখা হলেই সালাম বিনিময় করা। কেননা সালাম মানুষকে আপন করে তোলে। দূরত্ব ঘুচিয়ে কাছাকাছি করে দেয়।

সালাম আদান প্রদানেই মানুষ হয়ে ওঠে নম্র, ভদ্র ও বিনয়ী। প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর সমাজ।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, পরস্পরের মাঝে বেশি বেশি সালামের প্রচলন ঘটানো। কুরআনের নির্দেশ মেনে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা।

আসুন, সালামের মাধ্যমে পাস্পরিক বন্ধন মজবুত করি। চেনা-অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে বেশি বেশি সালাম বিনিময় করে শান্তি ও কল্যাণ লাভ করি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ব্যাপকভাবে সালাম বিনিময় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ও


অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • Class: 6 To 9 Assignment Answer Link

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/


2 thoughts on “dakhil (দাখিল) হাদিস শরীফ ১২তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, dakhil hadis sharif assignment answer 12th week 2022, দাখিল ১২তম সপ্তাহের হাদিস শরীফ অ্যাসাইনমেন্ট ২০২২, dakhil hadis sharif 12th week assignment answers 2022”

  1. এখানে প্রশ্ন সালামের নিয়ম আর আপনি উওর নামাজের নিয়ম দিছেন

    Reply

Leave a Comment