শ্রেণি: ৯ম/ ssc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: ব্যবসায় উদ্যোগ এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021 |
---|
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 02 বিষয় কোডঃ 1663 |
বিভাগ: ব্যবসায় শাখা |
এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায়ের প্রকারভেদ বিশ্লেষণ। (নির্দেশনাএক মালিকানা, অংশীদারী, যৌথ-মূলধনী ব্যবসায়ের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, সুবিধা-অসুবিধা ব্যাখ্যা করতে হবে।) ।
এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায়ের প্রকারভেদ (Different Types of Business on the Basis of Ownership)
মানুষের বিভিন্নমুখী চাহিদা পূরণের জন্য যুগে যুগে মালিকানা ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে বিভিন্ন প্রকারের ব্যবসায় সংগঠন গড়ে উঠেছে। মুনাফা অর্জনের সাধারণ উদ্দেশ্যের মধ্যে মিল থাকলেও প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, আওতা, আয়তন ও কার্যক্ষেত্রের ভিত্তিতে এদের মধ্যে পার্থ্ক্য পরিলক্ষিত হয়। মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায় সংগঠনগুলোকে নিম্নোক্তভাবে ভাগ করা যায় :
১. এক মালিকানা ব্যবসায়
২. অংশীদারি ব্যবসায়
৩. যৌথ মূলধনী ব্যবসায় বা কোম্পানী সংগঠন
৪. সমবায় সমিতি
৫. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়
একমালিকানা ব্যবসায়ের ধারণা ( Concept of Sole Proprietorship Business)
সাধারণভাবে একজন ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। একক মালিকানায় পৃথিবীতে সর্বপ্রথম ব্যবসায় কার্য্ক্রম শুরু হয়েছিল।এজন্য এটিকে সবচেয়ে প্রাচীনতম ব্যবসায় সংগঠন বলা যায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা যায়,মুনাফা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে যখন কোনো ব্যক্তি নিজ দায়িত্বে মূলধন যোগাড় করে কোনো ব্যবসা গঠন ও পরিচালনা করে এবং উক্ত ব্যবসায়ে অর্জিত সকল লাভ নিজে ভোগ করে বা ক্ষতি হলে নিজেই তা বহন করে, তখন তাকে একমালিকানা ব্যবসায় বলে।একমালিকানা ব্যবসায় গঠন অত্যন্ত সহজ।যে কোনো ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে স্বল্প অর্থ নিয়ে এ জাতীয় কারবার শুরু করতে পারেন এবং অধিক অর্থও বিনিয়োগ করতে পারেন।
আইনের চোখে একমালিকানা ব্যবসায়ের তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজার বা রাস্তার পাশে কিংবা নিজ বাড়িতে যে কেউ ছোট-খাটো ব্যবসা শুরু করতে পারে।তবে শহরে বা পৌরসভা এলাকায় উদ্যোক্তাকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে ব্যবসা আরম্ভ করতে হয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যবসায় সংগঠন একমালিকানার ভিত্তিতে গঠিত। শুধু তাই নয়, ইউরোপ ও আমেরিকার প্রায় ৮০% ব্যবসায় এক মালিকানাভিত্তিক। আমাদের দেশের সাধারণ মুদি দোকান, চায়ের দোকান, সবজি দোকান, অধিকাংশ খুচরা দোকান একক মালিকানার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
একমালিকানা ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য ( Characteristics of Sole Proprietorship Business)
একমালিকানা ব্যবসায় হলো এমন এক ধরনের ব্যবসায় যার উদ্যোক্তা, মালিক, পরিচালক ও অর্থের যোগানদাতা একই ব্যক্তি এবং তিনি নিজেই এককভাবে ব্যবসায়ের সকল ঝুঁকি, দায়, লাভ ও লোকসান বহন করেন। নিম্নে একমালিকানা ব্যবসায়ের বৈশিস্ট্যগুলো চিহ্নিত করা হলো –
একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিক সবসময় একজন ব্যক্তি যিনি নিজ উদ্যোগে পুঁজির সংস্থান করেন, ব্যবসায় পরিচালনা করেন ও ঝুঁকি বহন করেন।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
এ জাতীয় ব্যবসায়ের গঠন বেশ সহজ।আইনগত ঝামেলা না থাকায় যে কেউ ইচ্ছা করলে ও উদ্যোগ নিলে এ ব্যবসায় শুরু করতে পারেন।
স্বল্প মূলধন নিয়ে এ জাতীয় ব্যবসায় গঠন করা যায়।মালিক নিজেই এ মূলধন যোগান দেন। সাধারণত: নিজস্ব সঞ্চয় ও প্রয়োজনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করেন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একমালিকানা ব্যবসায় ক্ষুদ্র আকারের হয়ে থাকে। মূলধনের স্বল্পতা ও একজন ব্যক্তির মালিকানার জন্য এর আয়তন সাধারণত ছোট হয়ে থাকে।
একমালিকানা ব্যবসায়ের সকল ঝুঁকি মালিককে এককভাবে বহন করতে হয়।
আইনের চোখে একমালিকানা ব্যবসায়ের পৃথক কোনো সত্তা নেই। মালিক ও ব্যবসায় অভিন্ন।
এ জাতীয় ব্যবসায়ের সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব মালিকের। ফলে তার দায় অসীম। প্রয়োজনে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রয় করে ব্যবসায়ের দায় পরিশোধ করতে হয়।
পুরো ব্যবসায়ের একক মালিকানার জন্য লাভের সবটা মালিক একা ভোগ করেন।আবার লোকসানের সম্মুখীন হলে মালিককেই এককভাবে তা বহন করতে হয়।
অংশীদারি ব্যবসায়ের ধারণা ( Concept of Partnership Business)
ব্যবসায় জগতে একমালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় হলেও একক মালিকের মূলধনের স্বল্পতা, অসীম দায়, ব্যবসায়ের ক্ষুদ্র আওতা ইত্যাদি সীমাবদ্ধতার জন্য ব্যবসায়ের পরিধি আরো বৃদ্ধি ও ঝুঁকি কমিয়ে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবসায় করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ফলে একাধিক ব্যক্তি মিলে নিজেদের পুঁজি ও সামর্থ্য একত্রিত করে যে নতুন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন গড়ে উঠে তাকেই অংশীদারি ব্যবসায় বলে অভিহিত করা হয়।
মূলত: একমালিকানা ব্যবসায়ের অসুবিধাগুলো দূর করার প্রয়োজনই অংশীদারি ব্যবসায় বলে অভিহিত করা হয়। মূলত একমালিকানা ব্যবসায়ের অসুবিধাগুলো দূর করার প্রয়োজনেই অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়। তবে অংশীদারি ব্যবসায়ে কিছু কিছু সমস্যাও দেখা দেয়। বিশেষ করে মুনাফা বন্টন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, দায়িত্ব ও কর্ম্ বিভাজন, সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক্ নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়ে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে। ফলে অংশীদারি চুক্তিপত্র ও অংশীদারি আইন প্রণয়ন করতে হয়।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
বাংলাদেশের অংশীদারি ব্যবসায় ‘১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন’ দ্বারা পরিচালিত হয়। সাধারণত: দুই বা ততোধিক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মিলিত হয়ে অংশীদারি চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গঠন করেতাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। একের অধিক বলতে ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন ২জন এবং সবোর্চ্চ ২০ জন অংশীদারকে বুঝায়।তবে অংশীদারি ব্যবসায়টি যদি ব্যাংকিং ব্যবসায় হয় তখন সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ১০-এর বেশি হবেনা। বাংলাদেশে প্রচলিত ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৪নং ধারা মতে, ‘সকলের দ্বারা অথবা সকলের পক্ষে একজনের দ্বারা পরিচালিত’ ব্যবসায়ের মুনাফা নিজেদের মধ্যে বণ্টনের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিবর্গের মধ্যকার চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ককে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।যারা এরূপ সম্পর্ক সৃষ্টি করে তাদের প্রত্যেককে ‘অংশীদার’ এবং সম্মিলিতভাবে তাদের ব্যবসায়কে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠন (Formation of Partnership Business)
আমরা জেনেছি যে, অংশীদারি ব্যবসায় হলো মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মধ্যে চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের মাধ্যমে গঠিত এ ধরনের ব্যবসায় যেখানে তারা সকলে অথবা তাদের মধ্য থেকে একজন সবার পক্ষে উক্ত ব্যবসাটি পরিচালিত করে থাকে। একমালিকানার মতো অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠনও অনেক সহজ। এর গঠনেও আইনগত জটিলতা নেই।চুক্তি সম্পাদনের জন্য যোগ্য কমপক্ষে দুজন ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ হয়ে এরূপ ব্যবসায় শুরু করতে পারে।
তবে চুক্তি লিখিত হবার ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।বাংলাদেশে প্রচলিত ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনে চুক্তি ও নিবন্ধনকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি।তাই মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতেও ব্যবসায় পরিচালিত হতে পারে। তবে অংশীদারিত্বের মধ্যে ভবিষ্যতের ভুল বোঝাবুঝি, মনোমালিন্য, বিরোধ এবং মামলা এড়ানোর জন্য চুক্তি লিখিত ও নিবন্ধিত হওয়া যৌক্তিক।এজন্য চুক্তিকে অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি বলে গণ্য করা হয়। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করার জন্য সিটিকর্পোরেশন বা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়।
অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য(Characteristics of Partnership Business)
বর্তমান প্রেক্ষাপটে অংশীদারি ব্যবসায় একমালিকানা ব্যবসায়ের মতোই প্রাচীন ব্যবসায় সংগঠন। তবে একমালিকানা ব্যবসায়ের কিছু সীমাবদ্ধতা দূর করার প্রয়োজনে অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়। একমালিকানা ব্যবসায়ের সাথে এ ব্যবসায়ের কিছু কিছু মিল থাকলেও অংশীদারি ব্যবসায়ের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো একে একমালিকানা ও অন্যান্য যৌথ উদ্যোগী ব্যবসায় থেকে আলাদা করেছে। নিচে
অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করা হলো :
১.আইনগত ঝামেলা না থাকায় অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠনও বেশ সহজ। চুক্তি সম্পাদনের জন্য যোগ্য একাধিক ব্যক্তি মৌখিক বা লিখিত চুক্তির মাধ্যমে এ ব্যবসায় শুরু করতে পারে। একাধিক ব্যক্তি বলকে সর্ব নিম্ন ২জন এবং সর্বোচ্চ ২০জনকে বোঝায়। ব্যবসায়টি যদি ব্যাংকিং সংক্রান্ত হয় তখন সদস্য সংখ্যা ১০ জনের বেশি হতে পারবে না।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
২.অংশীদারদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের আলোকেই এ ব্যবসায় গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়।এরুপ চুক্তি হতে পারে মৌখিক বা লিখিত, নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত।
৩.এ ব্যবসায়ের অংশীদারগণ চুক্তিতে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী মূলধন সরবরাহ করে থাকে।ব্যবসায়ের লাভ-লোকসানও চুক্তি অনুযায়ী বণ্টিত হয়।চুক্তিতে কিছু উল্লেখ না থাকলে সমান হারে লাভ-লোকসান বণ্টিত হবে।আবার চুক্তিতে উল্লেখ থাকলে কেউ মূলধন না দিয়েও অংশীদার হতে পারে।তবে প্রত্যেক অংশীদারের দায় ব্যক্তিগত ও সামস্টিকভাবে অসীম।অর্থাৎ কোনো দেনা পরিশোধের জন্য ব্যবসায়িক সম্পদ যথেষ্ট না হলে অংশীদারগণের ব্যক্তিগত সম্পদ সেজন্য দায়বদ্ধ থাকে।কোনো অংশীদার দেউলিয়া হলেও তার দায় অবশিষ্ট অংশীদারগণকে বহন করতে হয়।
৪.পারষ্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এ ব্যবসায় গড়ে উঠে এবং এ ব্যবসায়ের সফলতা এর উপর র্নিভরশীল। অন্যদিকে অংশীদারগণের মধ্যে আস্থাহীনতা,বিশ্বাসের অভাব ও বিরোধ দেখা দিলে ব্যবসায়ের বিলোপ ঘটে।
৫.অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়।তবে যেসকল অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত হয়,সেগুলো অনিবন্ধিত ব্যবসায় থেকে বেশ কিছু বেশি সুবিধা ভোগ করে থাকে।নিবন্ধিত হলেও এ ব্যবসায়ে কোনো আইনগত সত্তার সৃষ্টি হয় না। ফলে ব্যবসায় নিজস্ব নামে পরিচালিত হতে পারে না।ব্যবসায়ের সকল লেনদেনও অংশীদারদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে হয়েছে বলে ধরা হয়। পৃথক আইনগত সত্তা না থাকায় এ ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অংশীদারদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর র্নিভরশীল।
যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের ধারণা (Concept of Joint Stock Companies)
একমালিকানা ব্যবসায়ের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে ব্যবসায়ের যে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছিল কালক্রমে তা আর একমালিকানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি।একমালিকানা ব্যবসায়ের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা বিশেষ করে মূলধনের স্বল্পতা ও একক পরিচালনা ও ক্ষুদ্র আয়তনের জন্য অংশীদারি ব্যবসায়ের উৎপত্তি হয়। কিন্তু অংশীদারি ব্যবসায়ও মূলধনের সীমাবদ্ধতা, আইনগত সীমাবদ্ধতা, স্থায়িত্বহীনতা ও অসীম দায়ের ভার থেকে মুক্ত হতে পারেনি।
(৪৬)
একসময় মানুষের চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবসায়ের আওতা আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলশ্রুতিতে আইনের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয় অধিক মূলধন ও বৃহদায়তনের যৌথ মূলধনী ব্যবসায় যেটি কোম্পানী সংগঠন নামেও পরিচিত। মূলত শিল্প বিপ্লবের কারণে উৎপাদন ব্যবস্থায় যে ব্যাপক পরিবর্ত্ন সাধিত হয় তার সাথে সাথে ব্যবসায় সংগঠনের প্রকৃতি ও আওতায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। উৎপাদন, বণ্টন ব্যবস্থা,
পারিবারিক গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসে কারখানাতে স্থান নেয়।ফলে জন্ম হয় অধিক মূলধন,সীমিত দায়,যৌথ ব্যবস্থাপনা এবং আইনগত সত্তা ও পৃথক অস্তিত্ব বিশিষ্ট যৌথ মূলদনী ব্যবসায় সংগঠনের।উল্লেখ্য, অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি (১৭৫০-১৮৫০) সময়ে ইউরোপের কৃষিতে, শিল্পকারখানায়, কয়লা উত্তোলনে ও পরিবহন ব্যবস্থায় যে প্রযুক্তিগত পরিবর্ত্ন সাধিত হয় তাকে শিল্প বিপ্লব (Industrial Revolution)নামে অভিহিত করা হয়।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
যৌথ মূলধনী ব্যবসায় আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট ও পরিচলিত হয়। সর্বপ্রথম কোম্পানী আইন পাস হয় ব্রিটেনে ১৮৪৪ সালে যেটি ‘The Joint Stock Company Act 1844’ নামে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ শাসিত ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম কোম্পানী আইন পাস হয় ১৮৫০ সালে। ১৯১৩ সালে ভারতীয় কোম্পানী আইন আবার নতুন করে পাস হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশেও অনেক বছর যাবত ১৯১৩ সালের কোম্পানী আইন চালু ছিল। কোম্পানী আইনের ব্যাপক সংস্কার করে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে নতুন কোম্পানী আইন প্রবর্তন করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল কোম্পানী ব্যবসায় ১৯৯৪ সালের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।১৯৯৪ সালের কোম্পানী আইনে কোম্পানি বলতে ‘অত্র আইনের অধীনে গঠিত ও নিবন্ধিত কোনো কোম্পানী অথবা বিদ্যমান কোনো কোম্পানীকে বুঝায়।’ মূলত কোম্পানি সংগঠন হলো আইন ধারা সৃষ্ট, পৃথক অস্তিত্বসম্পন্ন, কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তার অধিকারী এবং সীমিত দায়ের এমন এ ধরণের প্রতিষ্ঠান যেখানে কতিপয় ব্যক্তি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে যৌথভাবে মূলধন বিনিয়োগ করে।
যৌথ মূলধনের বৈশিষ্ট্য (Features of Joint Stock Company)
বর্তমানের বৃহদায়তন ব্যবসায় জগতে এ জাতীয় ব্যবসায়ের গুরুত্ব অধিক। এ জাতীয় ব্যবসায়ের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেটি তাকে অন্যা্ন্য ব্যবসায় সংগঠন থেকে আলাদা মর্যাদা আছে। নিচে কোম্পানী সংগঠনের বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করা হলো –
১. যৌথ মূলধনী কোম্পানী একটি আইনসৃষ্ট ব্যবসায় সংগঠন। দেশের প্রচলিত কোম্পানি আইনের আওতায় এব্যবসায় গঠিত হয়। আইনি প্রক্রিয়ার অধীনে হয় বলে এর গঠন বেশ জটিল ও আনুষ্ঠানিকতাপূর্ণ্। আইন আনুযায়ী এর সদস্য সংখ্যা নির্ধারিত হয়। প্রাইভেট লিমিটেড ক্ম্পোনির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২জন এবং সর্বোচ্চ ৫০জন এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সদস্য ৭জন এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ।
২. কোম্পানি ব্যবসায় একটি স্বেচ্ছামূলক প্রতিষ্ঠান। কোম্পানি ব্যবসায় করতে আগ্রহী কিছু সংখ্যক ব্যক্তি স্চ্ছোয় সংঘবদ্ধ হয়ে কোম্পানী গঠন করে। তবে সদস্যদের কেউ ইচ্ছাকরলে শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে সহজেই ব্যবসায় থেকে বিদায় নিতে পারে। আবার কেউ ইচ্ছা করলে শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে এর সদস্য পদও লাভ করতে পারে।
৩. আইনের দ্বারা সৃষ্ট বলে এ ব্যবসায়টি কৃত্রিম সত্তার অধিকারী। কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তা বলতে বোঝায়। ব্যক্তি না হয়েও ব্যক্তির ন্যায় আইনগত মর্যাদা ও অধিকার অর্জন করা। কোম্পানী যে কোনো স্বাধীন ব্যক্তির মতো নিজ নামে অন্যের সাথে চুক্তি ও লেনদেন করতে পারে এবং প্রয়োজনে মামলা করতে পারে। আবার অন্য কোন পক্ষও কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে।
৪. কোম্পানি ব্যবসায় যেহেতু আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট তাই এর বিলুপ্তি ঘটাতে চাইলে তা করতে হবে আইনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায়। এভাবে সে চিরন্তন অস্তিত্বের মর্যাদা লাভ করে। কোনো শেয়ার হোল্ডারের মৃত্যু, দেউলিয়াত্ব বা শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে কোম্পানির বিলোপ সাধন হয় না।
৫. কৃত্রিম ব্যক্তি হওয়ার কারণে কোম্পানিকে একটি সিল ব্যবহার করতে হয়। কোম্পানির সকল কাজে ও কাগজপত্রে এ সিলের ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
৬. আইনগতভাবেই কোম্পানির মূলধনকে কতকগুলো সমান অঙ্কের ক্ষুদ্র এককে ভাগ করা হয়। এরুপ প্রত্যেকটি একককে একটি করে শেয়ার বলে। শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে কোম্পানি মূলধন সংগ্রহ করে। এজন্য এগুলোকে শেয়ার মূলধন বলে। ১৮ বছরের উর্ধ্বে যে কোনো ব্যক্তি এবং যে কোনো প্রতিষ্ঠান শেয়ার কিনে এর সদস্যপদ লাভ করতে পারে। সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে এবং শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করার সুযোগ থাকার কারণে কোম্পানি ব্যবসায়ে অধিক মূলদনের সমাবেশ ঘটে।
৭. কোম্পানি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে কোম্পানির মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ আলাদা। একমালিকানা বা অংশীদারি ব্যবসায়ের মতো মালিকেরা সরাসরি ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণ করে না। ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থাকে বেতনভুক্ত অন্য একটি পক্ষের উপর। পরিচালক বা মালিকগণ নীতি নির্ধারণ কাজে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
৮. কোম্পানি ব্যবসায়ের সদস্যগণের দায় সীমিত। একমালিকানা বা অংশীদারি ব্যবসায়ের মতো অসীম নয়। সদস্যগণের দায় সাধারনত শেয়ার মূ্ল্য ও প্রতিশ্রুতি দ্বারা সীমাবদ্ধ। শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমাবদ্ধ বলতে বোঝায় একজন শেয়ার মালিক যে মূল্যমানের শেয়ার কেনে তিনি শুধু সে পরিমাণ অর্থের জন্য দায়ী। অর্থাৎ যদি কোনো শেয়ার মালিক কোনো কোম্পানির ১০০টাকা মূল্যের ১০০টি শেয়ার ক্রয় করেন তাহলে তার দায় শুধু ১০,০০০টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্যদিকে প্রতিশ্রুতি দ্বারা সীমাবদ্ধ কোম্পানিতে একজন শেয়ারমালিক যে পরিমাণ শেয়ার ক্রয়ের জন্য প্রতিশ্রুতি দেন সে পরিমাণ অর্থের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন।
৯. কোম্পানি ব্যবসায়ের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও মূল্যবোধ অনুসরণ করা হয়। শেয়ারমালিকগণ প্রত্যক্ষভাবে ভোট দিয়ে পরিচালনা পরিষদ নিয়োগ করেন এবং পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবসায় পরিচালিত হয়।
যৌথ মূলদনী ব্যবসায়ের গুরুত্ব (Importance of Joint Company)
বর্তমান ব্যবসায় জগতে একমালিকানা ব্যবসায়ের মতো যৌথ মালিকানার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ব্যবসায়ও দেশে দেশে খুব জনপ্রিয়।তাছাড়া বৃহদায়তনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য কোম্পানি সংগঠন সবচেয়ে বেশি উপযোগী। কর্মসংস্থানের সাথে সাথে শুধু বেকারত্বই দূর হয় না, জীবনযাত্রার মানেরও উন্নতি হয় এবং মাথাপিছু আর্ন বাড়ে।আবার একক মালিকানা ও অংশীদারি ব্যবসায়ে ঝুঁকি এবং দায় অসীম হওয়ার কারণে বড় আকারের ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ সম্ভব হয় না, যেটি সম্ভব হয় কোম্পানির সংগঠনে।
তাছাড়া উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে কোম্পানি সংগঠনই বেশি উপযুক্ত। কারণ এ ধরনের ব্যবসায় সংগঠন ও শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য যে বিশাল পরিমাণ মূলধন ও অর্থের প্রয়োজন হয় তা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিগুলো জনগণের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে।ফলে দেশের শিল্প উন্নয়ন বিকাশে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পায়। কোম্পানি সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আর্ন্ত্জাতিক অঙ্গনে ব্যবসায়ের প্রসার বৃদ্ধি পায় ও বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারষ্পরিক সম্পর্কও সুদৃঢ় হয়।বর্তমানে বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানি বিশ্বব্যাপী তাদের ব্যবসায় পরিচালনা করে। আমাদের দেশেও বাটা সু লিমিটেড, ইউনিলিভার ইত্যাদি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এভাবে এক দেশের কোম্পানি অন্য দেশে শাখা খুলে কাজ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্কও গড়ে উঠে। বাংলাদেশে বিগত দুই দশক যাবত অনেকগুলো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেগুলো দেশের অথর্নৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন
এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :
- বিজ্ঞান ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- ব্যবসায় ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- মানবিক ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :
- মানবিক ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- বিজ্ঞান ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- ব্যবসায় ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,
৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/
- Degree 3rd Year Exam Marketing 5th paper Suggestion
- ডিগ্রি ৩য় বর্ষের সাজেশন (১০০% কমন ডাউনলোড করুন), ডিগ্রি ৩য় বর্ষের পরীক্ষার সাজেশন [নিশ্চিত ১০০% কমন সকল বিষয়ে]
- degree 3rd year philosophy 6th paper super suggestion, ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের ১০০% কমন দর্শন ৬ষ্ঠ পত্র সাজেশন, ডিগ্রি ৩য় বর্ষ দর্শন ৬ষ্ঠ পত্র স্পেশাল সাজেশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী ৩য় বর্ষ দর্শন ৬ষ্ঠ পত্র পরিক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান
- degree 3rd year psychology 6th paper super suggestion, ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের ১০০% কমন মনোবিজ্ঞান ৬ষ্ঠ পত্র সাজেশন, ডিগ্রি ৩য় বর্ষ মনোবিজ্ঞান ৬ষ্ঠ পত্র স্পেশাল সাজেশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী ৩য় বর্ষ মনোবিজ্ঞান ৬ষ্ঠ পত্র পরিক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান
- ডিগ্রি ১ম বর্ষের রেজাল্ট NU Degree 1st Year Result
- ডিগ্রী ২য় বর্ষের সাজেশন pdf