শ্রেণি: ১০ম ভোকেশনাল দাখিল 2022 বিষয়: হাদীস শরীফ ও ফিকাহ ২ এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021 |
---|
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 01 বিষয় কোডঃ 1718 |
বিভাগ: ভোকেশনাল শাখা |
এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ সকল কাজে আত্মসংযম, সতর্কতা, ধীরস্থিরতা, ক্রোধ ও অহংকারের বিবরণ বর্ণনা।।
শিখনফল/বিষয়বস্তু :
- কাজে আত্মসংযম, সতর্কতা এবং ধীরস্থিরতার ধারণা।
- ক্রোধ ও অহংকারের বিবরণ
- খাস ও আম-এর বর্ণনা।
নির্দেশনা (সংকেত/ ধাপ/ পরিধি):
- আত্মসংযম, সতর্কতা, ধীরস্থিরতার উপকারিতার বর্ণনা করতে হবে।
- ক্রোধ ও অহংকারের অপকারিতার বর্ণনা করতে হবে।
- উসুলে ফিকাহ:
- খাস -এর সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করতে হবে।
- উসুলে ফিকাহ:
- আম-এর সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করতে হবে।
এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
- আত্মসংযম, সতর্কতা, ধীরস্থিরতার উপকারিতার বর্ণনা করতে হবে।
আত্মসংযম অর্থ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। যারা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে, তারা যোগ্য মানুষের মর্যাদা পায়। সুনাগরিকের আত্মসংযম থাকা উচিত। নিজেকে সবধরনের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে রেখে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করা। অর্থাৎ সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করার নাম আত্মসংযম। আত্মসংযমী ব্যক্তি যাবতীয় অনাচার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থাকে।
কোরআনে কারিমে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘আর আপনি অবশ্যই তাদের জীবনের প্রতি অন্য সব লোকের চেয়ে বেশি লোভী দেখতে পাবেন, এমনকি মুশরিকদের চাইতেও। তাদের প্রত্যেকে আশা করে যদি হাজার বছর আয়ু দেওয়া হতো, অথচ দীর্ঘায়ু তাকে শাস্তি থেকে নিষ্কৃতি দিতে পারবে না। তারা যা করে আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।’ সুরা বাকারা : ৯৬
পৃথিবীতে খুশি ও আনন্দ, সুখ ও দুঃখ হচ্ছে আপেক্ষিক বিষয়। উভয় অবস্থায় মানুষের উচিত আত্মসংযম অবলম্বন করা। অর্থাৎ নিজেকে এমনভাবে সংযত রাখা, খুশি ও আনন্দের ফলে যেন মনেপ্রাণে অহংকার ও অহমিকার ভাব সৃষ্টি না হয়। অপরদিকে দুঃখ ও বেদনার সময়ও যেন অধিক উদাস ও বিষন্নতা না আসে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
এই উভয় অবস্থায় সীমার ভেতরে থাকার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে দৃঢ়তা ও আত্মসংযম। মানব জীবনের বহুমুখী প্রবৃত্তিকে সুসংহত করার এটাই একমাত্র পথ। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘যদি আমি নিজের পক্ষ থেকে মানুষকে কোনো রহমত ও মেহেরবানি দান করি এবং পরে তা উঠিয়ে নেই, তাহলে সে নিরাশ অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়। আর যদি কোনো মুসিবতের পরে নেয়ামতের আস্বাদ গ্রহণ করে, তখন বলে সব অমঙ্গল দূর হয়ে গেছে। অবশ্যই সে তখন খুশি ও আনন্দে নিমগ্ন হয়। কিন্তু যারা নফসের ওপর ক্ষমতাবান এবং পুণ্যকর্মে যতœশীল, তাদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা এবং বৃহত্তর বিনিময়।’ সুরা হুদ : ১০
দুনিয়াতে বহু অনিষ্টের কারণ হলো রাগ। মানুষ রাগের বশবর্তী হয়ে অনেক নির্দয় ও অত্যাচারমূলক কাজ করে। রাগের ফলে মানুষ সম্মানিত হওয়ার পরিবর্তে লজ্জা ও অবজ্ঞার শিকার হয়। তাই কারও দ্বারা কোনো ক্ষতি কিংবা অন্যায়মূলক কাজ হয়ে গেলে রাগ না করে ক্ষমা করা, ধৈর্যধারণ করা উচিত। কারণ রাগ নয় ক্ষমায় রয়েছে মুমিনের সাফল্য। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ (প্রকৃত) বলবান সে নয়, যে কুস্তিতে (অপরকে পরাজিত করে)। প্রকৃত বলবান (কুস্তিগির) তো সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে।Ñ সহিহ্ বোখারি : ৬১১৪
- ক্রোধ ও অহংকারের অপকারিতার বর্ণনা করতে হবে।
অহংকার ও দম্ভ সব আত্মিক রোগের মূল। আরবিতে একে উম্মুল আমরাজ বলা হয়।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অহংকারিদের পছন্দ করেন না। (সুরা: নাহল, আয়াত: ২৩) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম শরীফ)
অহংকার ও বিনয়, কোনটি ভালো? এ প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন অহংকারীদের নামের তালিকায় কে কে আছেন? আর বিনয়ীদের নামের তালিকায় কারা আছেন?
আমরা দেখতে পাই অহংকারীদের ভেতর শীর্ষে আছে ইবলিস। ইবলিস শয়তান বলেছিল, আমি আদমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ বললেন, অহংকার করা তোমার উচিত নয়, যাও লাঞ্ছিত হয়ে বের হয়ে যাও এখান থেকে। (সুরা আরাফ)
মানুষের ভেতর অহংকারী ছিল নমরুদ, ফেরাউন, আবু জাহেল। অহংকারে ফেরাউন বলেছিল, আমি তোমাদের বড় রব। নমরুদ আবু জাহেল আবু লাহাব উতবা শায়বা আরও অসংখ্য লোক দম্ভ ভরে সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এর বিপরীতে বিনয়ী ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সব মনীষীরা। হযরত আদম (আ.) থেকে নিয়ে আখেরি পয়গম্বর পর্যন্ত সব নবী রাসূল অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। সাহাবী তাবেয়ি ও আল্লাহর ওলিরা সবাই বিনয়ের চর্চা করতেন। অহংকার থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতেন।
দাম্ভিকদের শেষ পরিণতি মোটেও শুভ হয় না। বিনয়ী মানুষকে সবাই ভালোবাসে। মানুষের এবং আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে।
বিনয়ী বিনয় প্রকাশ করার কারণে তার সম্মান কমে যায় না। যে আল্লাহর জন্য বিনয় অবলম্বন করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (তাবারানি)
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
আর যারা অহংকার করে কাল কেয়ামতে তাদেরকে বিন্দুর আকৃতি দেয়া হবে, সব মানুষ তাদেরকে পদদলিত করবে। আল্লাহর কাছে দাম্ভিক লোক এতটাই অপছন্দের।
অহংকার থেকেই হিংসা, ক্রোধ, বিদ্বেষ ও শত্রুতার দোষ ঘর করে মনের ভেতর। আভ্যন্তরীণ এমন অসংখ্য রোগ অহংকারীর ভেতরটাকে শেষ করে দেয়। ভালো কোনো গুণই আর সে ধরে রাখতে পারে না।
কারো কাছ থেকে ভালো কোনো উপদেশ গ্রহণের মত তার অবস্থা থাকে না। সবাইকে সে নিজের চেয়ে ছোট মনে করতে থাকে। নিজেকে বড় মনে করার রোগ একবার গেড়ে বসলে ধীরে ধীরে এটা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে সে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সা.-এর নির্দেশনা মান্য করার গুণ থেকেও বঞ্চিত হয়।
অহংকার হৃদয়ের রোগ হলেও এর প্রকাশ বাহ্যিক আচরণের মাধ্যমেই হয়। অন্যদের প্রতি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য প্রকাশের মাধ্যমে সে তার অহংকার প্রকাশ করতে থাকে। কপাল কুচকে থাকে সব সময়। চেহারায় অন্য রকম একটা ভাব নিয়ে আসে। অন্যদের প্রতি চরম এক ঘৃণা ফুটে ওঠে তার কথাবার্তা ও আচরণে।
হযরত ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, লোকে বলে আমি সম্ভ্রান্ত। অথচ সম্ভ্রান্ত হওয়া বা আভিজাত্য অর্জন করতে হয় তাকওয়ার মাধ্যমে।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন, আল্লাহর নিকট তোমাদের ভেতর সবচেয়ে সম্মানিত হচ্ছে তাকওয়ার অধিকারী। (হুজুরাত, আয়াত: ১৩)
কেউ তাকওয়ার গুণ অর্জন ছাড়া অভিজাত হতে পারে না। সম্পদ, সৌন্দর্য, জ্ঞান, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও অন্য কোনো গুণ নয়, একমাত্র তাকওয়া মানুষকে অভিজাত করে।
আর তাকওয়া যার অর্জিত হবে সে কখনও অন্যকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে না। নিজেকে সে কখনও অভিজাত বা সম্ভ্রান্ত দাবি করবে না। কারণ গর্ব করা ও দাম্ভিকতা প্রদর্শন আল্লাহর কাছে খুবই অপছন্দনীয়।
অবশ্য সুন্দর ভাবে চলা ও পরিপাটি হয়ে থাকার নাম অহংকার নয়। রাসূল (সা.) বলেন, আল্লাহ সুন্দর, তাই সৌন্দর্য পছন্দ করেন। সুন্দর পোষাক পরার নাম অহঙ্কার নয়, অহঙ্কার হচ্ছে, সত্য অস্বীকার করা আর মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। (তিরমিযি)
রাসূল (সা.) খুব বিনয়ী ছিলেন। খুব সাধারণভাবে চলা ফেরা করতেন। খাবার খাওয়ার সময় গোলামের মত বসে খাবার খেতেন। দীর্ঘ দিন যাবৎ নিজের জন্য পৃথক কোনো আসনও তিনি গ্রহণ করেননি। যার ফলে দূর থেকে কেউ এসে সাহাবিদের থেকে রাসূলকে (সা.) আলাদা করতে পারত না।
একটা বাদিও রাসূলকে (সা.) যদি মদীনার পথের মাঝে দাঁড় করিয়ে কথা বলত; রাসূল (সা.) তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
- খাস -এর সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করতে হবে। আম-এর সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করতে হবে।
আল্লাহর রাস্তার আম ও খাস কোন অর্থ আছে কি ? আল্লাহ রাস্তা বিষয়ক হাদিসগুলো কি শুধুই জিহাদের জন্য প্রযোজ্য এবং আল্লাহর রাস্তায় বের হলে যে ফজিলতগুলো বর্নিত হয়েছে এগুলো কি শুধুই জিহাদের জন্য প্রযোজ্য ? আর এই ফজিলত কি তাবলিগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য নয় কি???উত্তরঃ–
জিহাদ সংক্রান্ত কিছু সংশয় নিরসন — মুফতী সাইদ আহমাদ পালনপুরী (হাফিযাহুল্লাহ) শাইখুল হাদীস ও মুফতী দারুল উলুম দেওবন্দ।
জিহাদ কুরআন ও হাদিসের একটি বিশেষ পরিভাষা। তাঁর অর্থ হল দ্বীন ইসলামের প্রতিরক্ষা ও সমুন্নত করার লক্ষ্যে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
শব্দ বিবেচনায় জিহাদ শব্দটির দু ধরনের ব্যবহার পাওয়া যায়,
১) جاهد العدو مجاهدة جهادا অর্থাৎ শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করা।
২) جاهد في الامر অর্থাৎ কোন কাজে পূর্ণ শক্তি ব্যয় করা ও প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালানো। এই অর্থেই বলা হয়ে থাকে মোজাহাদা।
কুরআন ও হাদীসে জিহাদ শব্দের বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার পাওয়া যায়, কোথাও শুধু جهاد و مجاهدة এসেছে। কোথাও তার পরে في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ- অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায়) যুক্ত হয়েছে। কোথাও আবার الله في (ফি আল্লাহ) ও فينا যুক্ত হয়েছে।
এমনকি سبيل الله (সাবিলিল্লাহ) শব্দটিও কখনো একাকী ব্যবহার করা হয়েছে কখনো جهاد এর সাথে মিলে ব্যবহৃত হয়েছে।
এক্ষেত্রে জিহাদের অর্থ বিভ্রাট থেকে বাঁচার জন্যে একটি একটি মূলনীতি অনুসরণ করা যেতে পারে। যা মূলত নুসূসের আলোকে গৃহিত ও অধিক নিরাপদ। এতে ভয়াবহ বিভ্রান্তি ও অনর্থক ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
যেখানে শুধু مجاهدة শব্দ এসেছে কিংবা তারপর الله في (ফি আল্লাহ) বা فينا এসেছে, সে আয়াতগুলো “আম” (ব্যাপক)। অর্থাৎ সেখানে জিহাদ শব্দটির আভিধানিক যে অর্থে ব্যাপকতা আছে তা উদ্দেশ্য হতে পারবে। যেমন আল্লাহর বাণী — وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ حَقَّ جِهَادِهঅর্থঃ আর তোমরা আল্লাহর পথে সর্বশক্তি ব্যয় করো। (সূরা হজ্জ, আয়াত ৭৮) অর্থাৎ ‘যারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য পূর্ণশক্তি ব্যয় করে’।
অনুরূপ আল্লাহর বাণী — وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِين অর্থঃ যারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালায় আমি তাদের বহু পথের সন্ধান দেই। (সূরা আনকাবূত, আয়াত ৬৯)
এই আয়াতদ্বয় এবং এ জাতীয় অন্যান্য আয়াত দ্বীনের সকল প্রচেষ্টাকে শামিল করে। যে কেউ যে কোনো পদ্ধতিতে দ্বীনের জন্য কোন প্রচেষ্টা করবে, সে এই আয়াতগুলোর উদ্দেশ্য হতে পারবে।
কিন্তু যেখানে জিহাদ শব্দ এসেছে কিংবা مجاهدة মূল ধাতুর সাথে في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) যুক্ত হয়েছে, অথবা কোথাও শুধু في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ ) বলা হয়েছে (যেমনটা যাকাতের হক্বদার ও আল্লাহর রাস্তায় খরচের আলোচনায় এসেছে) — এ সকল আয়াত দ্বারা جهاد (জিহাদ) এর খাস (বিশেষ) অর্থ (অর্থাৎ যুদ্ধ) উদ্দেশ্য করা হয়েছে।
এ কারনেই সূরা তাওবাহর যেখানেই جهاد শব্দ এসেছে সেখানেই শাহ আব্দুল কাদের দেহলবী (রহঃ) এবং তার অনুসরণে শাইখুল হিন্দ (রহঃ) যুদ্ধ করা অর্থ লিখেছেন।
এমনিভাবে হাদিস গ্রন্থগুলোতে ابواب الجهاد ও فضائل الجهاد নামে যে শিরোনাম গুলো এসেছে সেখানেও এই বিশেষ অর্থ উদ্দেশ্য। আপনি চিন্তা শক্তিকে জাগ্রত রেখে অধ্যায়গুলো পাঠ করুন। দেখবেন في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) এর বর্ননাগুলো যেখানে উল্লেখ আছে, সেখানেই জিহাদ উদ্দেশ্য।
এতে বোঝা গেল في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) শব্দটিও ইসলামের একটি বিশেষ পরিভাষা। যার সুনির্দিষ্ট অর্থ হল আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করা। কিন্তু শত দুঃখের বিষয় আমাদের তাবলীগী ভায়েরা এই আয়াতগুলোকে “আম” (ব্যাপক) করে দিয়েছেন।
এমনকি শুধু “আম”ই নয় বরং নিজেদের সাথে “খাস” (সীমাবদ্ধ) করে নিয়েছেন। কারন তারা দ্বীনের কাজগুলোর মধ্যে শুধু তাবলীগকেই জিহাদ বলেন। অন্যান্য দ্বীনি কাজ যেমন তা’লীম, তাদরীস, তাফসীর, তা’লিফ ইত্যাদি কিছুকেই জিহাদ বলেন না। বরং তাবলীগের কিছু সাধারণ সাথী ভাই তো এমন আছে, যারা এগুলোকে দ্বীনের কাজই মনে করে না। আর যখন তারা নিজেদের কাজকেই জিহাদ নাম দিয়ে দিয়েছে তখন কুরআন ও হাদিসের জিহাদের যেসব ফজিলত বর্ণিত হয়েছে তা ঢালাওভাবে নিজেদের কাজের জন্য ব্যবহার করা শুরু করেছে। আজ বাধ্য হয়ে শত আক্ষেপের সাথে বলতে হয় তাবলীগী ভাইদের এই কাজগুলো কোনভাবেই সহীহ হচ্ছে না।
জিহাদ ইসলামের একটি বিশেষ পরিভাষা। কুরআন ও হাদীসে যখন এই শব্দ উল্লেখ করা হয় তখন এর দ্বারা قتال في سبيل الله (ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ) উদ্দেশ্য হয়।তবে হ্যাঁ কিছু কিছু কাজকে জিহাদের সাথে মিলানো হয়েছে। এ মিলানোটুকুই এ কাজগুলোর ফজিলতের জন্য যথেষ্ট।
যেমন হাদীসে আছেঃ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে ইলমের খোঁজার জন্য বের হয় সে ফিরে আসা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায় আছে। এখানে রাসূলুল্ললাহ সাঃ ইলম অন্বেষণের পথকে في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) আখ্যা দিয়ে জিহাদের সাথে তুলনা করলেন। এই তুলনা করাটাই তালেবে ইলমের জন্য ফজিলত। এর থেকে আগে বাড়ার কোন অধিকার কারো নেই।
এমনিভাবে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজকেও في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) এর সাথে মিলানো যেতে পারে। আর মিলানোটাই তার ফজিলত হবে।
কিন্তু তাই বলে জিহাদের সমস্ত ফজিলত তার সাথে প্রয়োগ করা في سبيل الله جهاد (জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ) কে তাবলীগের সাথে ‘খাস’ করা বা في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) কে ‘আম’ করে তাবলীগকেও এর উদ্দেশ্য বানানো সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন দাবি ছাড়া আর কিছুই নয়। এ কথাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সর্বদা স্মরণ রাখা জরুরী।
মোট কথা এই في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) পরিভাষাটি কুরআন ও হাদীসে ‘আম’ (ব্যাপক) না ‘খাস’ (বিশেষ) এ ব্যাপারে মতানৈক্য আছে। তবে আলোচনা পর্যালোচনার পরে মাসরাফে যাকাতের (যাকাতের ব্যয়ের খাত) আলোচনায় এই কথাই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) একটি বিশেষ পরিভাষা অর্থাৎ ‘খাস’ এবং সকল মুহাদ্দিসীনের কর্ম পদ্ধতিও এটাই ছিল (অর্থাৎ সকল মুহাদ্দিসীন ফি সাবিলিল্লাহকে কে বিশেষ পরিভাষা হিসেবে ব্যবহার করেছেন)।
তারা সকলেই في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) শব্দ সম্বলিত সকল হাদীসকে কিতাবুল জিহাদ অর্থাৎ জিহাদ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। তার মানে তাদের নিকটও এটা বিশেষ পরিভাষা এবং এর সাথে সম্পৃক্ত ফযিলতসমূহ একটি বিশেষ কাজের জন্য নির্ধারিত।
কিন্তু তাবলীগ জামাতের ভাইয়েরা في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) সংক্রান্ত হাদীসগুলোকে ‘আম’ করে ফেলেছেন। বরং তারা নিজেদের কাজকেই ঐ সকল হাদীসের مصداق বা প্রয়োগ ক্ষেত্র সাব্যস্ত করেছেন।
তারা মেশকাতুল মাসাবীহ হাদীসের কিতাব থেকে তাবলীগী কাজের জণ্য যে মুন্তাখাব নির্বাচিত সংকলন রচনা করেছেন, তাতে জিহাদের অধ্যায় পুরোটাই শামিল করেছেন।
এর দ্বারা স্পষ্ট উদ্দেশ্য এটাই যে , তাদের কাজও একটি জিহাদ। এ বিষয়ে মাওলানা ওমর পালনপুরী রহঃ এর সাথে অধমের আলোচনা ও চিঠি আদান প্রদান হয়েছে। হযরতের মনোভাব এমন ছিল যে, আমাদের তাবলীগী কাজও জিহাদ। তিনি এক চিঠিতে দলিল হিসাবে এ কথা আমাকে লিখেছেন যে, তিরমিযি শরীফের একটি রেওয়ায়েতে তাবেঈ উবায়াহ্* রহঃ মসজিদে যাওয়াকে في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) এর প্রয়োগ ক্ষেত্রে সাব্যস্ত করেছেন। তাহলে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে কেন তা প্রয়োগ করা যাবে না? আমি উত্তরে লিখেছি যে —
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
প্রথমতঃ
উবায়াহ্* রহঃ কোন সাহাবী নন। হানফী আলেমদের নিকট সাহাবীদের কথা حجتবা দলিল। কিন্তু তাবেঈদের ব্যাপারে স্বয়ং ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কথা হল هم رجال ونحن رجال — তারাও মানুষ আমরাও মানুষ।
অর্থাৎ তাঁদের কথা আমাদের হানফী আলেমদের নিকট حجت বা স্বতন্ত্র দলিল নয়। যদি কোন সাহাবী এই পরিভাষাটি “আম” (ব্যাপক) করতেন তাহলে একটা কথা ছিল।
দ্বিতীয়তঃ
একমাত্র দাওয়াত ও তাবলীগই কেন এর প্রয়োগ ক্ষেত্র হবে? যদিও কোন কোন ভাইকে বলতে শুনা যায় — তাবলীগই দ্বীনি কাজ। হযরত রহঃ এমন বলতেন না। যদিও তিনি বলতেন তাবলীগও দ্বীনি কাজ। কিন্তু তাবলীগ জামাতের ভায়েরা “ও” কে “ই” দ্বারা পাল্টে দিয়েছেন।
মোটকথা, তারা নিজেদের কাজকেই জিহাদ বলেন। বরং তারা হয়তো হাকীকী জিহাদকেও জিহাদ মনে করেন না। তাঁদের মতে জিহাদের ফজিলতগুলোও দাওয়াত ও তাবলীগের মাঝে সীমাবদ্ধ।
তৃতীয়তঃ
অন্য সকল দ্বীনি কাজ সম্পাদনকারীরা যেমন দ্বীনি শিক্ষাদান ও লেখালেখীতে ব্যস্ত আলেমরা নিজেদের কাজের জন্য في سبيل الله (ফি সাবিলিল্লাহ) ও জিহাদের ফজিলত সাব্যস্ত করেন না। এরপরেও কেন তাবলীগের ভাইরা এসকল হাদীসগুলোকে তাদের কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন?
এই চিঠির পর মাওলানা ওমর পালনপুরী সাহেবের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আর কোন চিঠি আসেনি। কোন এক চিঠিতে শ্রদ্ধেয় মাওলানা সাহেব একটি যুক্তি পেশ করেছিলেন যে, জিহাদ হল حسن لغيره অর্থাৎ সত্ত্বাগতভাবে ভালো নয় অন্য কারনে ভালো।
বাহ্যিক দৃষ্টিতে জিহাদ হল জমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা। আর দাওয়াত তাবলীগ স্বয়ং حسن لذاته حسن (সত্ত্বাগত ভালো) এটা হল আল্লাহ তা’আলা ও সৎকাজের প্রতি দাওয়াত। সুতরাং যে সব ফজিলত ও সওয়াব حسن لغيره এর জন্যে তা حسن لذاته حسن এর জন্যে কেন হবে না?
আমি উত্তরে আরজ করলাম এভাবে ক্বিয়াস (যুক্তি) দ্বারা সওয়াব সাব্যস্ত করা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা ক্বিয়াসটা শরঈ আহকামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সওয়াব বা ফাজায়েল এবং এ জাতীয় অন্যান্য توقيفي বিষয়ে ক্বিয়াস চলে না।(তাওক্বীফী বলা হয় এমন বিষয়কে যার বাস্তবতা বান্দার বিবেক দ্বারা নিরূপণ করা যায় না। যেমন কোন সূরা পাঠে কি সওয়াব, কোন আমলে কি সওয়াব ও কোন আমলে কত গুনাহ এক্ষেত্রে আকল ব্যবহার করে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছার অধিকার শরীয়ত কাউকে দেয়নি। বরং কুরআন ও হাদীসে যতটুকু বলা হয়েছে তা সেভাবেই বহাল রাখতে হবে )
অর্থাৎ এসকল স্পষ্ট বিষয়ে কুরআন হাদীসের প্রমান আবশ্যক। তাছাড়া সওয়াবের কম বেশী কষ্টের অনুপাতে হয়ে থাকে। (যেমন হাদীসে দূর থেকে মসজিদে আগমনকারীর সওয়াবের কথা বলা হয়েছে) আর আল্লাহই ভালো জানেন, কোন কাজে কি পরিমাণ কষ্ট ও এর সওয়াব কি হবে। দুনিয়ার মানুষ এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
স্পষ্ট কথা হল, কষ্টের বিবেচনায় পারিভাষিক في سبيل الله جهاد (জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ) এর ধারে কাছেও তাবলীগী কাজ পৌছাতে পারবে না।
এরপরও কিভাবে জিহাদের সওয়াব ও ফজিলত ঐ কাজের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে। আজ পর্যন্ত মুহাক্কিক আলেমদের কেউই এ সকল বর্ণনাকে অন্য কোন দ্বীনি কাজে ব্যবহার করেন নি।
ফায়দাঃ
উপরোক্ত আলোচনায় “ও” এবং “ই” এর কথা হয়েছে (“তাবলীগও দ্বীনি কাজ”/ “তাবলীগই দ্বীনি কাজ” )। এটা একটা উদাহরণ দ্বারা ভালোভাবে বোঝা যায়। হিন্দুস্তানের একটি বড় হীরক খন্ড, কোহিনুর। এটা অত্যন্ত মূল্যবান হীরা। যদি তা হাত থেকে পড়ে ছোট বড় পাঁচ টুকরা হয়ে যায় তাহলেও এ টুকরাগুলো মুল্যহীন হবে না। প্রতিটি টুকরার কিছু না কিছু মূল্য থাকবেই।
কিন্তু কোন টুকরার এ অধিকার নেই যে সে বলবে, “আমিই ঐ কোহিনুর”। হ্যাঁ, প্রতিটি টুকরা এই কথা বলতে পারবে যে, “আমিও কোহিনুর” মানে কোহিনুরের একটি অংশ।
উক্ত উদাহরণ দ্বারা একথা স্পষ্ট হয় যে, নবী সাঃ এবং সাহাবায়ে কেরাম রাযিঃ এর সকল কাজ একটি পূর্ণ কোহিনুর ছিল। তাঁরা একই সাথে দাঈ, মুবাল্লিগ, মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফকিহ, মুজাহিদ ছিলেন এবং তাঁরা রাজ্যও চালাতেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই সব কাজ পৃথক পৃথক হয়ে গেছে। সুতরাং যে কোন দ্বীনি কাজকারীরা এ কথা বলতে পারেন যে, আমিও সাহাবী ওয়ালা কাজ করি। কিন্তু কারোরই এক থাবলার অধিকার নেই যে, সে বলবে, আমিই একমাত্র সাহাবী ওয়ালা কাজ করি।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে এ বিষয়টি বোঝার তাউফীক দান করুন এবং যে সব ভুল-ত্রুটি হচ্ছে তার সংশোধন করুন। আমীন।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন
এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-
- ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,
৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :
- বিজ্ঞান ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- ব্যবসায় ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- মানবিক ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :
- মানবিক ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- বিজ্ঞান ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক
- ব্যবসায় ১ম ও ২য় বর্ষের এসাইনমেন্ট লিংক