বিষয়: Watermelon Peel Benefits, তরমুজ খাওয়ার পর খোসা ফেলে দেন?,তরমুজের খোসার যত উপকারী গুন! জানলে আপনিও চমকে যাবেন,তরমুজের খোসার যত উপকারিতা,
গ্রীষ্মকালে যেসব ফল আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে তরমুজ অন্যতম। গরমের সময় তরমুজ খেলে দেহমনে প্রশান্তি আসে। শুধু তাই নয় পুষ্টি গুণে ভরা তরমুজ দেহের পুষ্টি চাহিদা দ্রুত পূরণ করে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে। আমরা সাধারণত খোসা ও বীজ ফেলে দিয়ে তরমুজের রসাল শাঁসটুকুই খাই৷ সেখানেই এই খাদ্যগুণের অনেকটা বিসর্জন দিয়ে দিই আমরা। কিন্তু অনেক পরিবারেই তরমুজের খোসার তরকারি খাওয়া হয়। আসুন, দেখে নিন তরমুজের খোসার গুণ:
১. লাইকোপেন ও অন্যান্য ফ্ল্যাভনয়েড থাকায় এই ফল প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। এর ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না তরমুজ।
২. তরমুজের খোসায় প্রচুর পটাশিয়াম আছে। ফলে ফলের শাঁসের মতো এর খোসাও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। পাশাপাশি এর ফলে কমে হৃদরোগের আশঙ্কাও।
৩. ভিটামিন সি-এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল তরমুজের খোসা। তাই এই খাবার ডায়েটে থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তরমুজের খোসায় এক দিকে প্রচুর ফাইবার। অন্যদিকে, এতে ক্যালরি খুব কম। তাই যারা ডায়েট করছেন, তারা অবশ্যই এই খাবার ডায়েটে রাখুন।
৪. তরমুজের খোসায় আছে প্রাকৃতিক শর্করা৷ ফলে অন্তঃসত্ত্বাদের মর্নিং সিকনেস সমস্যায় অত্যন্ত কার্যকর এই উপাদান৷ তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এ সময়ে ফুলে যায়৷ তরমুজের খোসার পটাশিয়াম সেই সমস্যাও দূর করে৷
৫. যৌন সম্পর্ক বিঘ্নিত হলে বিঘ্নিত হয় দাম্পত্য বা প্রেম। কিন্তু জীবনে স্ট্রেস বেড়ে যাওয়ায় লিবিডো কমে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন অনেক পুরুষই। লিবিডো বাড়াতে ডায়েটে রাখুন তরমুজের খোসা। ইরেক্টাইল ডিসফাংশনসহ একাধিক সমস্যা দূর করে এই উপাদান। ভায়াগ্রা না হলেও যৌনক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর তরমুজের খোসা।
৬. তরমুজের খোসা দিয়ে নিরামিষ তরকারি রান্না করে খেতে পারেন। অনেকটা পেঁপের মতো স্বাদ পাবেন। চাইলে মেশাতে পারেন চিংড়িও। তৈরি করতে পারেন জ্যাম, জেলি, স্মুদি বা স্যালাড৷ প্রত্যেকটির উপকরণ হতে পারে তরমুজের খোসা।
তরমুজ খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ফল। গরমে প্রশান্তি দিতে তরমুজের তুলনা হয় না। তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশই পানি, তাই, শরীরে পানির অভাব পূরণে তরমুজ একটি চমৎকার ফল। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন এ, সি, বি৬, পটাশিয়াম ও আঁশ। আমরা সাধারণত তরমুজের লাল অংশটুকুই খেয়ে থাকি, যা সম্ভবত তরমুজের মোট ওজনের প্রায় অর্ধেক এবং বাকি অর্ধেক খোসা। অর্থাৎ, একটি দশ কেজি ওজনের তরমুজের পাঁচ কেজিই খোসা বা ফেলনা! এই প্রায় অর্ধেক ওজনের বাইরের খোসাটি সাধারণত আমরা, হয় ফেলে দিই কিংবা গরু-ছাগলকে খাইয়ে থাকি।
গ্রামে গবাদি পশুকে খাওয়ানোর সুযোগ থাকলেও, শহরে সেই সুযোগ নেই বললেই চলে। শহরের মানুষ তাই তরমুজ খাওয়ার পর পুরো খোসাই ফেলে দেন ময়লার বিনে, যা পচে গিয়ে মারাত্মক দুর্গন্ধ তৈরি করে। এটি পরিবেশকে যেমন দূষিত করে তেমনি শহরের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাজ এবং দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়।
অনেকেই হয়তো জানেন না তরমুজের ভেতরের সুস্বাদু অংশের মতো বাইরের খোসাটিও খাওয়ার উপযোগী এবং সেখানেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তরমুজের খোসাকে ইংরেজিতে বলে Watermelon rind. এতে রয়েছে প্রচুর পানি, অল্প পরিমাণ ভিটামিন সি, এবং বি৬। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে ভরপুর এই তরমুজের খোসা—এটি হলো সিট্রালিন। সিট্রালিন এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড যা আমাদের শরীরে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হার্ট এবং রক্তনালীকে সুস্থ রাখতে সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও এটি খাওয়া হয়। আমাদের কিডনি সিট্রালিনকে রাসায়নিকভাবে রূপান্তর করে আরজিনিন নামক আরেকটি অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে। নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের রক্তনালীসমূহকে প্রসারিত করে এবং রক্তের সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। তাই এটি উচ্চ-রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে সিট্রালিন পুরুষদের যৌন সমস্যা ইরেকটাইল ডিসফাঙ্কশনেও বেশ কার্যকরী।
কিভাবে খাবেন?
পড়তে পড়তে হয়তো ভাবতে শুরু করেছেন, তরমুজের খোসা খাব, কিন্তু কিভাবে? এটি রান্না করেও যেমন খাওয়া যেতে পারে। তেমনি কাঁচা অবস্থায় সালাদ বা জুস হিসেবে খাওয়া যায়। তরমুজের খোসা দিয়ে আঁচার ও হালুয়াও তৈরি করা যায়।
তরমুজের খোসা লাউয়ের মতো ছোট ছোট টুকরো করে ডাল, টমেটো, শুটকি মাছ ইত্যাদির সাথে রান্না করে খেতে পারেন। খেতে অনেকটা চাল কুমড়ার মতো লাগবে। তবে রান্নার চেয়ে কাঁচা খেতে পারলে বেশি উপকারী।
সালাদ হিসেবে খেতে হলে প্রথমেই উপরের সবুজ অংশটুকু ফেলতে হবে। তারপর ছোট ছোট টুকরো করে লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ এবং অলিভ বা সরিষার তেল মাখিয়ে নিতে হবে। সঙ্গে গাজর যুক্ত করলে পুষ্টিগুণ বেড়ে যাবে অনেকগুণ।
জুস করতে হলে উপরের সবুজ অংশ না ছাড়ালেও চলবে। ভালো করে ধুয়ে, ছোট ছোট পিস করে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করলেই হবে। গুগল বা ইউটিউবে ‘watermelon rind recipes’ লিখে সার্চ করলে তরমুজের খোসার মজার সব রেসিপি পেয়ে যাবেন।
করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে তরমুজের খোসার তরকারি আমাদের সবজির চাহিদা যেমন মেটাবে পাশাপাশি সালাদ বা জুস করে খেলে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। তাই, তরমুজের খোসা ফেলে না দিয়ে নিজে খাই, অন্যদেরও খেতে উৎসাহিত করি।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
- যে কারণে পুরুষের গোপন অঙ্গের ক্ষমতা নষ্ট হয়
- হাঁপানি রোগী জন্য পরামর্শ ও হাঁপানি রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসা উপায়গুলো
- পুরুষের যৌনাঙ্গের রহস্য
- করোনা কি ভাবে ফুসফুস আক্রান্ত করে এবং তার প্রতিকার বিস্তারিত
- সেক্স প্রশ্ন: লজ্জা নয় সেক্স- সর্ম্পকিত যা
- লেবু কি পারে করোনাধ্বংস করতে !!!